Ajker Patrika

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে জিয়াউলের আবেদন খারিজ

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯: ০৯
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে জিয়াউলের আবেদন খারিজ

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার করার এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে আবেদন খারিজ করা হয়েছে। এই আদালতের অধীনে বিচারাধীন সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানের পক্ষে আবেদনটি করা হয়েছিল। সেটির শুনানি শেষে আজ বুধবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল খারিজের আদেশ দেন।

আদালতে জিয়াউল আহসানের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট নাজনীন নাহার দীপু। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কৌঁসুলি শাইখ মাহদী ও তারেক আব্দুল্লাহ।

আদেশের পর তাজুল বলেন, জিয়াউল আহসানের পক্ষ থেকে আবেদনে বলা হয়েছিল, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের পূর্বশত হলো সংশ্লিষ্ট মানবতাবিরোধী অপরাধ যুদ্ধকালীন সংঘটিত হতে হবে। জুলাই-আগস্টে যেহেতু কোনো যুদ্ধ হয়নি, তাই তখন সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার এই ট্রাইব্যুনালে হবে না।

তিনি আরো বলেন, ‘তাঁরা বলেছিল, যেহেতু সংসদ নেই, তাই অধ্যাদেশ জারি করে আইনের যে সংশোধনী আনা হয়েছে, তা অবৈধ। এজন্য তাঁর (জিয়াউল) বিচার এখানে হবে না। এ ছাড়া গুম শব্দটি ঘটনার পর আইন সংশোধন করে যুক্ত করা হয়। তারা বলেছে, ভূতাপেক্ষতা দিয়ে এখানে গুমের বিচার করা যাবে না। তাদের এসব আবেদন খারিজ করে দিয়ে আদালত বলেছেন, যে আইন দ্বারা এই ট্রাইব্যুনাল গঠিত, তা চ্যালেঞ্জ করার জায়গা এই ট্রাইব্যুনাল নয়।’

জিয়াউলের পক্ষ থেকে তোলা প্রশ্নকে ‘অপ্রাসঙ্গিক’ হিসেবে দাবি করেন ২০১৩ সালে মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধীদের পক্ষে এই ট্রাইব্যুনালের কৌঁসুলি হিসেবে কাজ করা এই আইনজীবী। তিনি বলেন, ‘এখানে (ট্রাইব্যুনাল) সাংবিধানিক কোনো বিষয়ে শুনানির সুযোগ নেই। ১৯৭৩ সালের আইনে বলা হয়েছে, আগে বা পরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ বা আন্তর্জাতিক আইনে কোনো অপরাধের বিচার করা যাবে।’

আদালতের আদেশের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জিয়াউলের আইনজীবী নাজনীন নাহার বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের অপরাধের বিচারের জন্য এই ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছিল। জুলাই–আগস্টে যা হয়েছিল, তা রাজনৈতিক সংঘাত। সেই সংঘাতের বিচারের জন্য প্রচলিত আইন ও আদালতেই ব্যবস্থা আছে। প্রয়োজনে ট্রাইব্যুনালও করা যেতে পারে। আমরা সিনিয়রের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’

ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের নিয়োগ ও ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জসহ মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে জিয়াউল আহসানের পক্ষে এই আবেদন করা হয়।

অব্যাহতির আগে জিয়াউল আহসান জাতীয় টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক ছিলেন। এর আগে তিনি জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক (অভ্যন্তরীণ বিষয়ক) ও র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে কোটা বাতিলের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভের মধ্যে সহিংসতায় সহস্রাধিক নিহতের ঘটনায় এবং গুমের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হয়। ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর জিয়াউল আহসানকে সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে গ্রেপ্তার করে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত