পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন যেভাবে গণমাধ্যমের সমালোচনা করেছে তার দায় সরকারের: শাহরিয়ার কবির 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ জুন ২০২৪, ০১: ২৮
Thumbnail image

সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাদের দুর্নীতির খবর প্রকাশ করায় পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বিবৃতিতে যেভাবে গণমাধ্যমের সমালোচনা করেছে তার দায় সরকারের ওপর বর্তায় বলে মনে করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি শাহরিয়ার কবির।

আজ বুধবার (২৬ জুন) শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে নির্মূল কমিটির জাহানারা ইমাম স্মারক বক্তৃতা এবং স্মৃতিপদক প্রদান উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তৃতাকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘গুটিকয় পুলিশ কর্মকর্তার দুর্নীতির দায় কোনো অবস্থায় পুলিশ প্রশাসন বা সরকার নিতে পারে না। সাবেক আইজিপি বেনজিরের দুর্নীতির সংবাদ প্রথম গণমাধ্যমই প্রকাশ করেছে, যার ভিত্তিতে অনেক আগেই বিভাগীয় তদন্ত আরম্ভ করা উচিত ছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। তা না করে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন যেভাবে গণমাধ্যমের সমালোচনা করেছে তার দায় সরকারের ওপরই পড়ে।’

অপরাধীরা হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নির্বিঘ্নে বিদেশে চলে যায়। এ ক্ষেত্রে দুদকের মতো সংস্থাগুলোর গাফিলতি আছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘অপরাধীরা ব্যাংকে সঞ্চিত যাবতীয় অর্থ নিয়ে নিরাপদে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর তাঁদের দেশ ছাড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়, তাদের ব্যাংক লেনদেন বন্ধ করা হয়নি, এটা একটা তামাশায় পরিণত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দুদকও তাঁদের গাফিলতির দায় এড়াতে পারে না। কারা বেনজির ও মতিউরের মতো ভয়ংকর দুর্নীতিবাজদের নির্বিঘ্নে দেশত্যাগ করতে দিয়েছে এরও তদন্ত হওয়া দরকার। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিনাশী অপশক্তি বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য দেশে ও বিদেশে বহু ষড়যন্ত্র করছে। ষড়যন্ত্রকারীরা প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অবস্থান করছে। এদের নির্মূল না করলে মুক্তিযুদ্ধের যাবতীয় অর্জন নস্যাৎ হয়ে যাবে।’

এ বছর ‘জাহানারা ইমাম স্মারক বক্তৃতা’ প্রদান করেন বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতি জনাব ওবায়দুল হাসান। তাঁর বক্তৃতার বিষয় ছিল ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন এবং ৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার’। দাপ্তরিক প্রয়োজনের তাগিদে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলার অধস্তন আদালতসমূহ পরিদর্শনের কার্যক্রম গ্রহণ করায় তিনি শারীরিকভাবে উপস্থিত হতে পারেননি। তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নির্মূল কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শিক্ষাবিদ শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য প্রতিবছরের মতো এ বছরও বরেণ্য ব্যক্তিত্ব ও সংগঠনকে ‘জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক’ প্রদান করা হয়। এ বছর ব্যক্তি হিসেবে বাংলাদেশের মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী নাগরিক আন্দোলনের পুরোগামী নেতা বিশ্ব শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম এবং সংগঠন হিসেবে ‘এম্পাওয়ারমেন্ট থ্রু ল অব দ্য কমন পিপল’ (এলকপ)-কে জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন, বিশ্ব শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম, এলকপের সভাপতি অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট এম সাঈদ আহমেদ রাজা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহীদসন্তান আসিফ মুনীরসহ অনেকেই।

আরও পড়ুন-

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত