৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ: এস আলম গ্রুপকে নথি দাখিলের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬: ১৫

ইসলামি ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনায় ঋণ সংক্রান্ত সব নথি চেয়েছেন হাইকোর্ট। এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানকে ওই নথি দাখিল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সম্পর্কেও তাঁকে জানাতে বলা হয়েছে।

আজ রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেন।

ইসলামি ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংক ও ফাস্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা অনুসন্ধান করতে বিএফআইইউ, দুদক এবং সিআইডিকে নির্দেশও দিয়েছেন হাইকোর্ট। অনুসন্ধান করে আগামী চার মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে তিন ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের তালিকাও চেয়েছেন আদালত।

এছাড়া ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। অর্থ সচিব, দুদক, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএফআইইউ ও সিআইডিসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদগুলো নিয়ে এস আলম গ্রুপের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন আদালত। পাশাপাশি যারা ঋণ দিয়েছে তাদেরও এর ব্যাখ্যা দিতে হবে।’

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, ‘ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ গ্রহণের বিষয়টি নিয়ে পত্রিকায় যে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে, সেই প্রতিবেদনগুলো আমলে নিয়ে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেছেন।’

এর আগে তিন ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে এনেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। পরে হাইকোর্ট তাঁকে রিট করতে বলেন। তবে শিশির মনির রিট না করে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে চিঠি দেন।

গত বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশন এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বরাবর এই চিঠি দেন সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবীসহ পাঁচ গ্রাহক। তারা হলেন—আইনজীবী মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ, আবদুল্লাহ সাদিক এবং গ্রাহক শাইখুল ইসলাম ইমরান ও যায়েদ বিন আমজাদ। তারা সবাই ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

চিঠিতে বলা হয়, একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে নভেম্বর মাসের ১ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংক থেকে ২ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। আর একটি ইংরেজি দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়, এস আলম গ্রুপ একাই ৩০ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছে। তাই এসব ঋণের বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে চিঠিতে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, জামানত ছাড়া ঋণ প্রদান, নামসর্বস্ব কোম্পানিকে ঋণ প্রদানের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠে এসেছে। ব্যাংকের কর্মচারীসহ প্রত্যক্ষদর্শী ব্যবসায়ী ও সুধীজনের ভাষ্যমতে রিপোর্টে উল্লেখিত সংখ্যার চেয়ে প্রকৃত অসাধু লেনদেনের পরিমাণ আরও অনেক গুন বেশি। বর্তমানে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করছে। আর এই ধরনের অসাধু লেনদেন আর্থিক ব্যবস্থাপনায় অধিকতর অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে বলে এতে উল্লেখ করা হয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত