Ajker Patrika

এবারও ফোর্বসের ১০০ ক্ষমতাধর নারীর তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০: ৪৯
এবারও ফোর্বসের ১০০ ক্ষমতাধর নারীর তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

চলতি বছর বিশ্বের ১০০ ক্ষমতাধর নারীর তালিকায় স্থান পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার বিখ্যাত আমেরিকান বিজনেস ম্যাগাজিন ফোর্বস এই তালিকা প্রকাশ করেছে। এবারের তালিকায় অবশ্য কয়েকজন ক্ষমতাধর নারী বাদ পড়েছেন। কারণ, বছরের শুরুর দিকে তাঁরা পদ হারিয়েছেন অথবা দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রাজনৈতিক নেতৃত্বই বেশি।

জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে রাজনৈতিক নেতা সানা মারিন, জেসিন্ডা আরডার্ন এবং নিকোলা স্টার্জন যথাক্রমে ফিনল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের ক্ষমতা হারিয়েছেন অথবা রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছেন। এ ছাড়া সুসান ওয়াজসিকি ৯ বছর নেতৃত্বে থাকার পর ইউটিউবের সিইও পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। জার্মান সংগঠন থিসেনক্রুপের প্রধান নির্বাহী মার্টিনা মার্জও তা-ই। তাঁদের প্রত্যেকের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন একজন পুরুষ। 

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্ট লেডি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন গত মার্চে ফোর্বসকে বলেছিলেন, ‘একজন নারীর অবস্থানে আরেকজন নারীই প্রতিস্থাপিত হবেন, এমন নয়। নারীদের নেতৃত্বের ভূমিকায় আসার জন্য আমাদের এখনো কাজ করতে হবে।’

তবে বছরের প্রায় মাঝখানে এসে অবস্থার পরিবর্তন এসেছে। নারী নেতৃত্বে নতুন নতুন মুখ যুক্ত হয়েছে। গত মে মাসে রবিন গ্রু ম্যান গ্রুপের নেতৃত্বে আসেন প্রথম নারী। এই প্রতিষ্ঠান মূলত হেজ ফান্ড, এটির সম্পদমূল্য ১৬ কোটি ১০ লাখ ডলার। এমন একটি প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে নারী আসা এ ধরনের শিল্প খাতে লৈঙ্গিক ক্ষমতায়নের ধারণা পরিবর্তনের ইঙ্গিত।

মার্কিন সেনাবাহিনীর অভিজ্ঞ কর্মকর্তা ডেব্রা ক্রু জুনে অ্যালকোহল জায়ান্ট ডিয়াজিওর হাল ধরেন, লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জের ১০০টি বৃহৎ কোম্পানিতে মাত্র কয়েকজন নারী সিইওর একজন তিনি।

গায়িকা টেলর সুইফট, বিয়ন্সে এবং বার্বির ত্রিভূমি বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ভোক্তা ব্যয়ের উপলক্ষ হয়েছেন। এ বছরের বিগত সময়টাতে ভোক্তাদের ওপর তাঁদের প্রভাব এতটাই শক্তিশালী ছিল যে ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান জেরোম পাওয়েল জুলাইয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রসঙ্গের উল্লেখ করেছিলেন।

সেই প্রভাবের ফলে বার্বিসহ এই ত্রয়ী ২০২৩ সালের বিশ্বের সবচেয়ে ১০০ ক্ষমতাধর নারীর তালিকায় স্থান পেয়েছেন। সুইফট এই প্রথম ৫ নম্বরে উঠে এসেছেন। আর বিয়ন্সে ২০২২ সালে ছিলেন ৮০ নম্বরে, এবার ৩৬ নম্বরে উঠে এসেছেন।

বরাবরের মতো, ২০২৩ সালের তালিকাটি চারটি প্রধান মেট্রিকসের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে—অর্থ, মিডিয়া, প্রভাব এবং প্রভাবের ক্ষেত্র। রাজনৈতিক নেতাদের জন্য, মোট দেশীয় পণ্য (জিএনপি) এবং জনসংখ্যার আকার বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এই বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (৭৬) রাজনীতি ও নীতির সূচকে ৪৬ নম্বরে স্থান পেয়েছেন। যেখানে ২০২২ সালে তিনি ছিলেন ৪২তম স্থানে। 

করপোরেট-প্রধানদের ক্ষেত্রে রাজস্ব, মূল্যায়ন ও কর্মচারীর সংখ্যা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁদের সবাই কতটা আলোচিত হয়েছেন, সেটিও বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

ফোর্বস বলছে, এই ১০০ নারী বিশ্বকে আলাদাভাবে সংজ্ঞায়িত করে এমন নীতি, পণ্য এবং রাজনৈতিক লড়াইয়ের ক্ষেত্র তৈরি করেছেন। 

সেই লড়াইগুলোর মধ্যে রয়েছে আমেরিকায় নারীদের জন্য প্রজনন স্বায়ত্তশাসন; আফগানিস্তানে মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ এবং ইরানে ব্যক্তিগত অধিকার; ইউক্রেন ও গাজার মতো সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে লৈঙ্গিকভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে সুরক্ষা এবং কার্যকর জলবায়ু নীতি; যা নিম্ন আয়ের এবং কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিতে নারীদের স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন নিশ্চিত করে। 

ফোর্বস পত্রিকাকে বিলিয়নিয়ার জনহিতৈষী মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটস বলেছেন, ‘আমরা এখন আর লক্ষ্যে পৌঁছাতে পৃথিবীর কোথাও অতটা দূরে নেই।’ ২০২৪ এবং এরপরের সময়গুলোর জন্যও তাঁর পরামর্শ হলো, ‘আপনি যখন বিশ্বের একাধিক জায়গায় নারীদের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করেন, তখনই সবকিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত