Ajker Patrika

মিয়ানমার সীমান্তে সুরক্ষা জোরদার করতে চায় বিজিবি

আয়নাল হোসেন, ঢাকা 
আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২৫, ১৩: ০৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অনুপ্রবেশ ও মাদক পাচার প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে মিয়ানমার সীমান্তে সুরক্ষা জোরদার প্রয়োজন বলে মনে করছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কথাও ভাবা হচ্ছে।

গত জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত বিজিবির মাসিক সমন্বয় সভার প্রতিবেদন থেকে বিষয়টি জানা গেছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিজিবির পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

জানতে চাইলে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদারে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে ভাবা হচ্ছে। মাদক ও রোহিঙ্গা নাগরিকদের কীভাবে অনুপ্রবেশ ঠেকানো যায়, তা নিয়ে বিভিন্ন পন্থা বের করার চেষ্টা চলছে। কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মত আছে।

বিজিবির জানুয়ারির সমন্বয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভবিষ্যতে মিয়ানমারের নাগরিকদের অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ ও মাদক পাচার প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা জরুরি। অনুপ্রবেশ রোধ ও আভিযানিক তৎপরতা বাড়াতে সীমান্ত সড়ক নির্মাণকাজ শুরুর পাশাপাশি আধুনিক নজরদারিব্যবস্থা স্থাপন ও হাইস্পিডবোট ও ফাস্ট ক্র্যাফট কেনা হয়েছে।

বিজিবির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বলপূর্বক বাস্তচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকেরা চোরাচালান ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। এ সমস্যার সমাধান না হলে কক্সবাজারের পর্যটন খাতসহ দেশের পূর্ব-দক্ষিণাঞ্চল মারাত্মক হুমকির মধ্যে পড়বে। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যাপক হুমকির মধ্যে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বিজিবি জানায়, গত জানুয়ারি মাসে কক্সবাজার ও আশপাশের এলাকা থেকে দেড় হাজারের অধিক মিয়ানমার নাগরিক আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৪৯৯ পুরুষ, ৪২৫ নারী, ৭৭৬টি শিশু। এদের মধ্যে ১ হাজার ৬৯৫ জনকে ফেরত পাঠানো হয় এবং ৫ জনকে থানায় দেওয়া হয়।

মাদক চোরাচালানের বিষয়ে বিজিবি জানায়, মিয়ানমারের রাখাইনের পরিস্থিতির কারণে নিয়মিত ইয়াবা ও আইস নামক মাদক দেশে দেদার ঢুকছে। মিয়ানমার সীমান্তে অভিযান চালিয়ে জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৬ হাজার ১৭৯টি ইয়াবা, ১ কেজি ৪৮৭ গ্রাম কোকেন, ২৯ হাজার ৪২১ বোতল ফেনসিডিল জব্দ করা হয়েছে।

কক্সবাজার ও আশপাশের এলাকায় প্রায়ই অপহরণের ঘটনা ঘটছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, অপহরণকারীরা প্রায়ই বিভিন্ন ব্যক্তিকে আটক করে মুক্তিপণ দাবি করছে। এসব প্রতিরোধে বিজিবির পক্ষ থেকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে।

এদিকে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ জরুরি বলে মনে করছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নও। তারা জানিয়েছে, আগে যে বেড়া নির্মাণ করা হয়েছিল, তা নষ্ট হয়ে গেছে। এতে রোহিঙ্গারা অপরাধ করে দ্রুত পালিয়ে যাচ্ছে।

জানতে চাইলে এফডিএমএন (বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক) বিষয়ক উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) প্রলয় চিসিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, রোহিঙ্গা শিবিরের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া ছিল। সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। নষ্ট বেড়ার ভেতর দিয়ে রোহিঙ্গারা অপরাধ করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করছে। এ জন্য বেড়াগুলো মেরামতের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত