আব্দুর রাজ্জাক (প্রকৌশলী)
মাসখানেক ধরে দেশের আকাশে-বাতাসে, পথে-প্রান্তরে, মাঠে-ময়দানে, চায়ের টেবিলে অথবা বসার ঘরে হাঁকডাক শোনা যাচ্ছিল, একটা কিছু হতে যাচ্ছে ২৮ অক্টোবর অথবা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে। এই হাঁকডাক শুরু হয়েছিল অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে।
আমাদের দেশের হিন্দুধর্মাবলম্বী মানুষদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজার কারণে ফাইনাল তারিখ ঠিক করা হয়েছিল ২৮ অক্টোবর। তা-ও ভালো, দেশের জনগণ এবং সরকারপক্ষ কিছুটা নিশ্বাস নেওয়ার সময় পেয়েছিল এই হুমকি মোকাবিলার। নেতারা মঞ্চে, সভা-সমাবেশে যতই আশ্বস্ত করুন না কেন, সাধারণ জনগণ মনে মনে ভেবেছিল একটা জ্বালাও-পোড়াও হবেই হবে। বাস্তবে তা-ই হলো ২৮ অক্টোবর। সেখানে ধ্বংস করা হলো সাধারণ মানুষের যানবাহন, জীবন হরণ হলো পুলিশের, ভাঙচুর করা হলো প্রধান বিচারপতির বাসভবনসহ রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি, রক্ষা পেলেন না সাংবাদিকেরাও।
এই ডিজিটাল যুগে কোনো অপরাধ করে সহজে অস্বীকার করা খুবই মুশকিলের ব্যাপার। যেভাবে ডিজিটাল ক্যামেরা সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে, মানুষের হাতে তো আছেই, তা ছাড়াও আছে বিভিন্ন ভবনের ফটকে, লাইটপোস্টে, গাছে। কেউ স্বীকার করুক বা অস্বীকার করুক, আমজনতার কাছে সত্য পরিষ্কার। এই সব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য সরকারপক্ষ দায়ী করছে বিরোধী শক্তিকে (বিরোধী শক্তি বলতে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো)। এর সূত্র ধরে গ্রেপ্তার হয়ে চলেছে বর্তমানে দেশে থাকা সর্বোচ্চ নেতা থেকে তৃণমূলের নেতা পর্যন্ত। এসবের প্রতিবাদে চলছে অবরোধ, সেই জ্বালাও-পোড়াও। বিরোধীপক্ষ মনে করছে, আমরা কিছু একটা করে ফেলেছি। সরকারপক্ষ মনে করছে, এসব সামান্য নখের আঁচড়ে আওয়ামী লীগের বা সরকারের কিছু আসে-যায় না।
এবার আসি ঘটনার মূল বিশ্লেষণে। বিরোধীপক্ষ তাদের কর্মীদের স্লোগান, শারীরিক ভাষা ও প্রতিশ্রুতি দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়েছিল। বিরোধী নেতারা মনে করেছিলেন, আমাদের এই সূর্য সন্তানেরা, অর্থাৎ ক্যাডার বাহিনী সরকারকে ওলট-পালট করে দেবে।
এই সব বর্ষীয়ান নেতা সাধারণ মানুষের মন একটু যাচাই করে দেখেনি। সাধারণ মানুষ আন্দোলন চায়, পরিবর্তন চায়, বিরোধীপক্ষের এ ধরনের গতানুগতিক আন্দোলন আদৌ পছন্দ করে কি না, এসবের কোনো পরিসংখ্যান তাদের কাছে নেই। তারা মনে করেছিল, নিত্যপণ্যের কিছুটা ঊর্ধ্বগতি মানুষকে বিদ্রোহী করে তুলেছে। সাধারণ মানুষ কিছুটা বিরক্ত সরকারের ওপর, কিন্তু বিরোধী দলের ওপর যে তারা বেজায় খুশি বা তাদের ওপর আস্থা আছে, এ রকম কোনো ইঙ্গিতও তো জনগণ তাদের দেয়নি। কেন যে আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতাদের একটা মনোবৃত্তি এ রকম হয়েছে যে সাধারণ জনগণ কোনো ব্যাপার না, আমরা যা বলব, সেটাই জনগণ মেনে নেবে। এটাই ছিল বিএনপিসহ বিরোধীপক্ষের সবচেয়ে অবিবেচনাপ্রসূত পদক্ষেপ।
বিরোধীপক্ষকে তাদের নেতা ঠিক করতে হবে, যে নেতা হবেন সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য, শুধু পার্টির নেতা-কর্মীদের কাছে নয়। নেতা হবেন যোগ্য, ত্যাগী, শিক্ষিত, সৎ মার্জিত এবং আস্থাশীল। তিনি সাধারণ জনগণসহ দেশের ভাগ্য পরিবর্তন করবেন। বর্তমান জীবনমানের চেয়ে উন্নত জীবনমান দান করবেন। বর্তমান আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি অর্থনীতির দিক থেকেও দেশকে স্বাবলম্বী করবেন, দূর করবেন বেকার সমস্যা। এ ধরনের শিক্ষা যোগ্যতা ও ক্যারিশমাটিক নেতৃত্ব জনগণ প্রত্যাশা করে।
বিএনপির মূল নেতা খালেদা জিয়া, দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ এবং বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। বিএনপির নেতারা গত কয়েক বছরে সাধারণ জনগণের কাছে প্রমাণ করেছে, তাদের নেত্রী যে অবস্থায় পৌঁছেছেন স্বাস্থ্যগত কারণে, এখান থেকে তিনি আর জনগণের মাঝে ফিরে আসতে পারবেন না। বিএনপির নেতৃত্ব তাঁকে এই পর্যায়ে নিয়ে গেছে। এখন বাকি থাকে তারেক রহমান। তিনিও বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। ২০০১ থেকে ০৬ সাল পর্যন্ত তাঁর কার্যকলাপ ও সরকারের সমান্তরাল সরকার পরিচালনা করার জন্য মানুষ তাঁর ওপর থেকে সম্পূর্ণ আস্থা হারিয়ে ফেলেছিল। এ দেশের বেশির ভাগ জনগণ মনে করে, তারেক রহমান ক্ষমতালোভী, একুশে আগস্টের নৃশংসতার পেছনে তাঁর একটা মূল ভূমিকা আছে। বিএনপি বা সমমনা দলগুলো এই যুক্তি খণ্ডন করার কোনো প্রমাণ বা তথ্য জনগণের সামনে হাজির করতে পারেনি।
সাধারণ মানুষের মধ্য থেকে বেড়ে ওঠা মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে। প্রথমে স্কুলের গণ্ডি পার হওয়ার জন্য গরিব ঘরের মানুষ তাদের সহায়-সম্পত্তি এমনকি হালের গরুটা বিক্রি করে ছেলের পরীক্ষার ফি জোগাড় করেন। স্কুলের গণ্ডি পার হয়ে লজিং থেকে অথবা জায়গির থেকে, টিউশনি করে হলেও কলেজের গণ্ডি পার হয়। মেধাবী ছেলেরা পরবর্তী ধাপে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়ে, টিউশনি করে অথবা খণ্ডকালীন কাজ করে পড়াশোনা চালিয়ে যায়, এভাবে তারা মানুষ হয়ে দেশের সেবা করে, পরিবারের সেবা করে, নিজে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়। এ রকম উদাহরণ আমাদের দেশের প্রতিটি অঞ্চলে, প্রতিটি থানায়, প্রতিটি ইউনিয়নে বহু আছে।
তারেক রহমান সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ঢাকার অভিজাত এলাকায় থেকেছেন, সাধারণ মানুষের তুলনায় লক্ষ গুণ সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন, দুঃখের বিষয় হলো, এই নেতা কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হতে পারেননি। সাধারণ মানুষ যদি মনে করে তাঁর মেধা ও যোগ্যতার ঘাটতি প্রথম জীবন থেকেই ছিল, তাহলে তাদের দোষ দেওয়া যাবে কি? বিএনপির নেতৃত্ব ঠিক নেই, এ জন্য দায়ী বিএনপি নিজেই। তাই নির্বাচনে মনোনয়ন দিতে গেলে তাদের উচিত হবে দেশপ্রেমী, দক্ষ মানুষকে খুঁজে বের করা।
এখন আসি আওয়ামী লীগের প্রশ্নে। সত্যি কথা বলতে কি, মানুষ বিএনপি ও এর সমমনা দলগুলোর প্রতি আস্থাশীল নয়, তাই বলে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী দলগুলোর ওপরও যে বিরক্ত, সেটা আওয়ামী লীগের উপলব্ধি করতে হবে।
পরবর্তী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভেতর থেকেই শিক্ষিত, সৎ মার্জিত যোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিয়ে সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এখানে বঙ্গবন্ধুর নীতি অনুসরণ করতে হবে, বঙ্গবন্ধু নিজের দল থেকেই যোগ্য ও সৎ ব্যক্তিকে নির্বাচিত করেছিলেন। আওয়ামী লীগে যোগ্য লোকের অভাব নেই, বর্তমানে প্রচুর আওয়ামী লীগার আছেন প্রতিটি আসনে। এখান থেকে সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে যেন আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয়, যে ব্যক্তি দেশের কথা ভাবেন, সমাজ পরিবর্তনের কথা ভাবেন ভালোর দিকে, উন্নতির দিকে, প্রগতির দিকে, তাঁকেই যেন মনোনয়ন দেয়।
একটা কথা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে মনে রাখতে হবে, এই ডিজিটাল যুগে শুধু বক্তৃতা-বিবৃতি, রাস্তাঘাটে মাস্তানি, গায়ের জোর একমাত্র বৈতরণি পারের বিষয় নয়। এখানে যোগ্যতার মাপকাঠি হবে সততা, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা। নেতাদের উচিত সাধারণ জনগণের আস্থা অর্জন করা, তাঁদের কাজের মাধ্যমে। জনগণের হৃদয়ে তাঁদের স্থায়ী আসন গড়া।
মাসখানেক ধরে দেশের আকাশে-বাতাসে, পথে-প্রান্তরে, মাঠে-ময়দানে, চায়ের টেবিলে অথবা বসার ঘরে হাঁকডাক শোনা যাচ্ছিল, একটা কিছু হতে যাচ্ছে ২৮ অক্টোবর অথবা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে। এই হাঁকডাক শুরু হয়েছিল অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে।
আমাদের দেশের হিন্দুধর্মাবলম্বী মানুষদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজার কারণে ফাইনাল তারিখ ঠিক করা হয়েছিল ২৮ অক্টোবর। তা-ও ভালো, দেশের জনগণ এবং সরকারপক্ষ কিছুটা নিশ্বাস নেওয়ার সময় পেয়েছিল এই হুমকি মোকাবিলার। নেতারা মঞ্চে, সভা-সমাবেশে যতই আশ্বস্ত করুন না কেন, সাধারণ জনগণ মনে মনে ভেবেছিল একটা জ্বালাও-পোড়াও হবেই হবে। বাস্তবে তা-ই হলো ২৮ অক্টোবর। সেখানে ধ্বংস করা হলো সাধারণ মানুষের যানবাহন, জীবন হরণ হলো পুলিশের, ভাঙচুর করা হলো প্রধান বিচারপতির বাসভবনসহ রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি, রক্ষা পেলেন না সাংবাদিকেরাও।
এই ডিজিটাল যুগে কোনো অপরাধ করে সহজে অস্বীকার করা খুবই মুশকিলের ব্যাপার। যেভাবে ডিজিটাল ক্যামেরা সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে, মানুষের হাতে তো আছেই, তা ছাড়াও আছে বিভিন্ন ভবনের ফটকে, লাইটপোস্টে, গাছে। কেউ স্বীকার করুক বা অস্বীকার করুক, আমজনতার কাছে সত্য পরিষ্কার। এই সব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য সরকারপক্ষ দায়ী করছে বিরোধী শক্তিকে (বিরোধী শক্তি বলতে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো)। এর সূত্র ধরে গ্রেপ্তার হয়ে চলেছে বর্তমানে দেশে থাকা সর্বোচ্চ নেতা থেকে তৃণমূলের নেতা পর্যন্ত। এসবের প্রতিবাদে চলছে অবরোধ, সেই জ্বালাও-পোড়াও। বিরোধীপক্ষ মনে করছে, আমরা কিছু একটা করে ফেলেছি। সরকারপক্ষ মনে করছে, এসব সামান্য নখের আঁচড়ে আওয়ামী লীগের বা সরকারের কিছু আসে-যায় না।
এবার আসি ঘটনার মূল বিশ্লেষণে। বিরোধীপক্ষ তাদের কর্মীদের স্লোগান, শারীরিক ভাষা ও প্রতিশ্রুতি দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়েছিল। বিরোধী নেতারা মনে করেছিলেন, আমাদের এই সূর্য সন্তানেরা, অর্থাৎ ক্যাডার বাহিনী সরকারকে ওলট-পালট করে দেবে।
এই সব বর্ষীয়ান নেতা সাধারণ মানুষের মন একটু যাচাই করে দেখেনি। সাধারণ মানুষ আন্দোলন চায়, পরিবর্তন চায়, বিরোধীপক্ষের এ ধরনের গতানুগতিক আন্দোলন আদৌ পছন্দ করে কি না, এসবের কোনো পরিসংখ্যান তাদের কাছে নেই। তারা মনে করেছিল, নিত্যপণ্যের কিছুটা ঊর্ধ্বগতি মানুষকে বিদ্রোহী করে তুলেছে। সাধারণ মানুষ কিছুটা বিরক্ত সরকারের ওপর, কিন্তু বিরোধী দলের ওপর যে তারা বেজায় খুশি বা তাদের ওপর আস্থা আছে, এ রকম কোনো ইঙ্গিতও তো জনগণ তাদের দেয়নি। কেন যে আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতাদের একটা মনোবৃত্তি এ রকম হয়েছে যে সাধারণ জনগণ কোনো ব্যাপার না, আমরা যা বলব, সেটাই জনগণ মেনে নেবে। এটাই ছিল বিএনপিসহ বিরোধীপক্ষের সবচেয়ে অবিবেচনাপ্রসূত পদক্ষেপ।
বিরোধীপক্ষকে তাদের নেতা ঠিক করতে হবে, যে নেতা হবেন সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য, শুধু পার্টির নেতা-কর্মীদের কাছে নয়। নেতা হবেন যোগ্য, ত্যাগী, শিক্ষিত, সৎ মার্জিত এবং আস্থাশীল। তিনি সাধারণ জনগণসহ দেশের ভাগ্য পরিবর্তন করবেন। বর্তমান জীবনমানের চেয়ে উন্নত জীবনমান দান করবেন। বর্তমান আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি অর্থনীতির দিক থেকেও দেশকে স্বাবলম্বী করবেন, দূর করবেন বেকার সমস্যা। এ ধরনের শিক্ষা যোগ্যতা ও ক্যারিশমাটিক নেতৃত্ব জনগণ প্রত্যাশা করে।
বিএনপির মূল নেতা খালেদা জিয়া, দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ এবং বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। বিএনপির নেতারা গত কয়েক বছরে সাধারণ জনগণের কাছে প্রমাণ করেছে, তাদের নেত্রী যে অবস্থায় পৌঁছেছেন স্বাস্থ্যগত কারণে, এখান থেকে তিনি আর জনগণের মাঝে ফিরে আসতে পারবেন না। বিএনপির নেতৃত্ব তাঁকে এই পর্যায়ে নিয়ে গেছে। এখন বাকি থাকে তারেক রহমান। তিনিও বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। ২০০১ থেকে ০৬ সাল পর্যন্ত তাঁর কার্যকলাপ ও সরকারের সমান্তরাল সরকার পরিচালনা করার জন্য মানুষ তাঁর ওপর থেকে সম্পূর্ণ আস্থা হারিয়ে ফেলেছিল। এ দেশের বেশির ভাগ জনগণ মনে করে, তারেক রহমান ক্ষমতালোভী, একুশে আগস্টের নৃশংসতার পেছনে তাঁর একটা মূল ভূমিকা আছে। বিএনপি বা সমমনা দলগুলো এই যুক্তি খণ্ডন করার কোনো প্রমাণ বা তথ্য জনগণের সামনে হাজির করতে পারেনি।
সাধারণ মানুষের মধ্য থেকে বেড়ে ওঠা মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে। প্রথমে স্কুলের গণ্ডি পার হওয়ার জন্য গরিব ঘরের মানুষ তাদের সহায়-সম্পত্তি এমনকি হালের গরুটা বিক্রি করে ছেলের পরীক্ষার ফি জোগাড় করেন। স্কুলের গণ্ডি পার হয়ে লজিং থেকে অথবা জায়গির থেকে, টিউশনি করে হলেও কলেজের গণ্ডি পার হয়। মেধাবী ছেলেরা পরবর্তী ধাপে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়ে, টিউশনি করে অথবা খণ্ডকালীন কাজ করে পড়াশোনা চালিয়ে যায়, এভাবে তারা মানুষ হয়ে দেশের সেবা করে, পরিবারের সেবা করে, নিজে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়। এ রকম উদাহরণ আমাদের দেশের প্রতিটি অঞ্চলে, প্রতিটি থানায়, প্রতিটি ইউনিয়নে বহু আছে।
তারেক রহমান সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ঢাকার অভিজাত এলাকায় থেকেছেন, সাধারণ মানুষের তুলনায় লক্ষ গুণ সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন, দুঃখের বিষয় হলো, এই নেতা কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হতে পারেননি। সাধারণ মানুষ যদি মনে করে তাঁর মেধা ও যোগ্যতার ঘাটতি প্রথম জীবন থেকেই ছিল, তাহলে তাদের দোষ দেওয়া যাবে কি? বিএনপির নেতৃত্ব ঠিক নেই, এ জন্য দায়ী বিএনপি নিজেই। তাই নির্বাচনে মনোনয়ন দিতে গেলে তাদের উচিত হবে দেশপ্রেমী, দক্ষ মানুষকে খুঁজে বের করা।
এখন আসি আওয়ামী লীগের প্রশ্নে। সত্যি কথা বলতে কি, মানুষ বিএনপি ও এর সমমনা দলগুলোর প্রতি আস্থাশীল নয়, তাই বলে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী দলগুলোর ওপরও যে বিরক্ত, সেটা আওয়ামী লীগের উপলব্ধি করতে হবে।
পরবর্তী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভেতর থেকেই শিক্ষিত, সৎ মার্জিত যোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিয়ে সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এখানে বঙ্গবন্ধুর নীতি অনুসরণ করতে হবে, বঙ্গবন্ধু নিজের দল থেকেই যোগ্য ও সৎ ব্যক্তিকে নির্বাচিত করেছিলেন। আওয়ামী লীগে যোগ্য লোকের অভাব নেই, বর্তমানে প্রচুর আওয়ামী লীগার আছেন প্রতিটি আসনে। এখান থেকে সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে যেন আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয়, যে ব্যক্তি দেশের কথা ভাবেন, সমাজ পরিবর্তনের কথা ভাবেন ভালোর দিকে, উন্নতির দিকে, প্রগতির দিকে, তাঁকেই যেন মনোনয়ন দেয়।
একটা কথা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে মনে রাখতে হবে, এই ডিজিটাল যুগে শুধু বক্তৃতা-বিবৃতি, রাস্তাঘাটে মাস্তানি, গায়ের জোর একমাত্র বৈতরণি পারের বিষয় নয়। এখানে যোগ্যতার মাপকাঠি হবে সততা, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা। নেতাদের উচিত সাধারণ জনগণের আস্থা অর্জন করা, তাঁদের কাজের মাধ্যমে। জনগণের হৃদয়ে তাঁদের স্থায়ী আসন গড়া।
‘গণতন্ত্র মঞ্চ’র অন্যতম নেতা সাইফুল হক বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্র ঐক্য ফোরামের নেতা ছিলেন। তিনি পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লেখেন। এখন পর্যন্ত ২০টি বই লিখেছেন। অন্তর্বর্তী সরকার এবং দেশের রাজনীতি নিয়ে...
৯ ঘণ্টা আগেসদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না, তা নিয়ে নানা মাত্রিক আলোচনার মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন: ‘গণহত্যার বিচারের আগে আওয়ামী লীগকে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেব না। প্রয়োজনে দ্বিতীয় অভ্যুত্থান হবে।’
৯ ঘণ্টা আগেতিন মাস পার হলো, আমরা একটি অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলের অধীনে আছি। জুলাই-আগস্টে সংঘটিত অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী সরকারের অবসান ঘটেছে। অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে জনমনে আশার সঞ্চার হয়েছিল—সামাজিক সব বৈষম্যের অবসান ঘটবে, আমাদের সামগ্রিক অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন সূচিত হবে, প্রকৃত স্বাধীনতা..
১০ ঘণ্টা আগেচট্টগ্রামের আকবরশাহ থানার নাছিয়াঘোনা এলাকায় যাওয়া-আসা করতে গেলে বোঝা যায় সেটি দুর্গম এলাকা। এ কারণেই সেখানে বসানো হয়েছিল ফাঁড়ি। কিন্তু ৫ আগস্টে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর পুলিশের থানা ও ফাঁড়িগুলোয় যখন আক্রমণ করা হচ্ছিল, তখন নুরু আলম নুরু নামের এক সন্ত্রাসীও সে সুযোগ নেন। তিনি পুলিশের ফাঁড়ি দখল করে...
১০ ঘণ্টা আগে