Ajker Patrika

হকারের দখলে রাস্তা

সম্পাদকীয়
হকারের দখলে রাস্তা

আজকের পত্রিকার তিনের পাতায় রাজধানী ঢাকার গুলিস্তানের একটা ছবি ছাপা হয়েছে। তিন সারিতে দখল হয়ে গেছে গুলিস্তানের রাস্তা। সামান্য সরু একচিলতে রাস্তা রয়েছে ফাঁকা, সেখান দিয়েই অতিকষ্টে চলছে যানবাহন। হানিফ উড়ালসেতু থেকে নামছে যে যান, সে যান জানে না, কতক্ষণে পার হতে পারবে এই রাস্তাটুকু।

হকার সমস্যা শুধু গুলিস্তান বা ঢাকা শহরে নয়, হকারদের দৌরাত্ম্য রয়েছে দেশজুড়েই। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিনই জনস্রোত রাজধানীমুখী হওয়ায় এখানে হকাররাও কেন্দ্রীভূত হয়েছে। এই হকারদের বড় একটি অংশ অর্থনৈতিক কারণে গ্রামে টিকতে না পেরে শহরে এসে ব্যবসার চেষ্টা করছে। সামান্য পুঁজি নিয়েই এই ব্যবসা চালাচ্ছে তারা। ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে একধরনের একটি অর্থনৈতিক সম্পর্কও গড়ে উঠেছে হকারপাড়ায়।

পৃথিবীর বহু দেশেই নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এ রকম রাস্তার দোকান গড়ে ওঠে। তবে যানবাহনের চলাচলের জন্য যে রাস্তা তৈরি হয়েছে, সেই রাস্তা বন্ধ করে হকার বসার ঘটনা সেসব দেশে বিরল। আমাদের দেশে রাস্তাজুড়ে হকার বসার ঐতিহ্য আজকের নয়। কখনো কখনো হকার উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়, কিন্তু অভিযানের পরপরই তারা আবার দখল করে নেয় রাস্তা।

হকার উচ্ছেদের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁদের কার্যক্রম চালান। কিন্তু সেই সময়টিতে হকার তার বসার জায়গাটি ছেড়ে দিলেও অভিযান শেষে আবার ফিরে আসে। কেউ কেউ বলছে, একসময় চাঁদা দিতে হতো। এখন হকার হিসেবে বসতে হলে চাঁদা দিতে হয় না বলে নাকি হকারের সংখ্যাও বেড়েছে। আগে শোনা যেত, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কেউ কেউ হকারদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা তুলতেন। ফলে চাইলেই হকারদের উচ্ছেদ করা সম্ভব ছিল না। কিন্তু এখন যদি চাঁদাবাজিই না থাকে, তাহলে রাস্তাজুড়ে কয়েক সারিতে কী করে হকাররা বসে যেতে পারছে?

মানছি, উচ্ছেদ করা হলে এই অসহায় মানুষের পেটে লাথি মারা হবে। সেটা যেন না হয়, সে জন্য সুদূরপ্রসারী কর্মপরিকল্পনা থাকা দরকার। হকারদের পুনর্বাসন করা সে রকম একটি কাজ হতে পারে। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, কোনো কোনো হকারকে পুনর্বাসন করা হলে নতুন করে আবার হকার সৃষ্টি হয়। তাদের কাজের জায়গা ওই ফুটপাত আর রাস্তাই!

রাস্তাঘাট দখল করে হকারদের ব্যবসা করতে দিলে জনদুর্ভোগই বাড়বে। দেশে বেকারত্ব বাড়ছে, নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্ত মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে। এ রকম পরিস্থিতিতে হকার বাড়বেই। কিন্তু তারা তাদের ব্যবসা কোথায় করবে, কীভাবে করবে, সে বিষয়গুলো নিয়েও ভাবতে হবে। বারবার পুনর্বাসনের মাধ্যমে এই সংকট থেকে বের হয়ে আসা যাবে না। বেকারত্ব বিমোচনের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করা এই সংকট মোকাবিলার একটি বড় পদক্ষেপ হতে পারে। তবে আরও অনেকগুলো পথের সন্ধান করতে হবে সংশ্লিষ্টদের, নইলে রাস্তা-হকার দ্বন্দ্ব থেকে বের হয়ে আসা যাবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চীনের আগে ভারত সফরে যেতে চেয়েছিলেন ড. ইউনূস: দ্য হিন্দুকে প্রেস সচিব

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর ওপর নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ মার্কিন ফেডারেল সংস্থার

চেয়ার দখল করে চাকরি হারালেন বিএমডিএ প্রকৌশলী

কালো টাকা সাদা করেছেন সাবেক প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ

ভারত নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে রিকশাচালকের সঙ্গে তর্ক, বাংলাদেশিকে ফেরত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত