দেশে সেনাশাসন আসার প্রেক্ষিত নেই: লক্ষ্মীপুরে মাহফুজ আলম

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
Thumbnail image
উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশে এখন এক–এগারোর আশঙ্কা নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে আলোচনা তুঙ্গে। ‘সংস্কারের নামে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করে নির্বাচনে বিলম্ব’ মেনে নেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন বিএনপি নেতারা। এ প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, বাংলাদেশে সেনা শাসন আসার কোন প্রেক্ষিত নেই। আমরা এক–এগারো চাই না। একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে।

আজ শনিবার সন্ধ্যার দিকে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন মাহফুজ আলম।

মাহফুজ আলম বলেন, ‘আমরা এবার কোনো রাষ্ট্রের মদদে হাসিনাকে উৎখাত করিনি। আমরা ছাত্র–জনতার রক্ত দিয়ে হাসিনাকে উৎখাত করেছি। আমাদের কারও তাঁবেদারি করার আর দরকার নেই। হাসিনার তাঁবেদারি করার যে প্রক্রিয়া সেটিকে নস্যাৎ করে দিয়ে নিজেদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা এনেছি। আমরা কারও কাছে আর মাথানত করব না। আমরা ৩ আগস্টেই বলেছিলাম, ওয়ান–ইলেভেন চাই না। ওয়ান–ইলেভেন নিয়ে মিছে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে বলব, আসুন বাংলাদেশ পন্থার মধ্য দিয়ে আমরা যারা ফ্যাসিবাদ–বিরোধী শক্তি আছি, ঐক্যবদ্ধ হই, সরকারকে সহযোগিতা করি এই সংস্কারগুলো করার জন্য। সংস্কার কার্যক্রম শেষে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করব।’

আওয়ামী লীগের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মাহফুজ আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আবারও যদি দিল্লির কোলে আশ্রয় নিয়ে আমাদের দিকে চোখ রাঙাতে চায়, আমরা বসে থাকব না। শহীদদের পথ অনুসরণ করে আমরা শাহাদাতের পথ বেছে নেব। আমরা আবার লড়াই করব। আমরা শুধু আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট শাসন ব্যবস্থা উৎখাত করে সন্তুষ্ট নই। বরং আওয়ামী লীগ ফ্যাসিজমের যত বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন প্রান্তে, প্রশাসনে, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে রয়ে গেছে, তাদেরও আমরা বিচারের আওতায় আনব। তাদের বিচারের আওতায় এনে শহীদদের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাব।’

চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে সরকারের এ উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেকগুলো কমিশন সংস্কারের প্রস্তাবনা প্রস্তুত করেছে। খুব শিগগিরই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে সংস্কার না করলেই নয়, নির্বাচনের আগে সেসব সংস্কার করতে চাই। এই সংস্কারগুলো মুখের বুলি নয়। শেখ হাসিনা যে প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে, যে প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দেওয়ার কারণে আমাদের মা–বোনেরা গুম-খুন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, বাচ্চারা গুমের শিকার হয়েছে, বিএনপি-জামায়াতসহ রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীরা আক্রমণের শিকার হয়েছেন, আহত হয়েছেন, পঙ্গুত্ববরণ করেছেন, জেল খেটেছেন, যে প্রতিষ্ঠানগুলো হাসিনাকে টিকিয়ে রেখেছে, সেই প্রতিষ্ঠানগুলোকে একই রকম রেখে আমরা নির্বাচন করতে পারি না। নির্বাচন করার আগে অবশ্যই হাসিনার ওই প্রতিষ্ঠান ও দালালেরা আছে, তাদের উৎখাত করে এবং খুনিদের বিচার করে আমাদের নির্বাচনের দিকে এগোতে হবে।’

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক দিদারুল ইসলাম। সংবর্ধনা শেষে উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে উপজেলা হলরুমে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত