Ajker Patrika

৩ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেবে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য

ঢাবি প্রতিনিধি:
আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০২৩, ২১: ৫৭
৩ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেবে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য

গত ২৮ জুলাই আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত হন নিরপরাধ মাদ্রাসা শিক্ষার্থী হাফেজ রেজাউল। আজ বৃহস্পতিবার তাঁর হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবিতে সমাবেশ করেছে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য। সমাবেশ থেকে তাঁরা যেকোনো সংকটে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার ছাত্রনেতা ও কারাবন্দী উলামায়ে কেরামের মুক্তিও দাবি করেছেন তাঁরা। 

বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে হাফেজ রেজাউল হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি প্রদানে ঘোষণা দেওয়া হয়। 

সভাপতির বক্তব্যে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের মুখপাত্র ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ বলেন, নিরপরাধ নিরীহ মাদ্রাসা শিক্ষার্থী হাফেজ রেজাউলকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা রাজপথে নির্মমভাবে খুন করেছে। খুনের সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা জড়িত, তা এখন জাতির কাছে স্পষ্ট। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেশের ছাত্রসমাজ প্রত্যাশিত কোনো পদক্ষেপ দেখেনি। যা ছাত্রসমাজের মাঝে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার জন্ম দিয়েছে। দেশের প্রতিটি নাগরিক রাষ্ট্রের কাছে ন্যায়বিচারের অধিকার রাখে। হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক বিবেচনায় না দেখে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে খুনিদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে এবং হাফেজ রেজাউলের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অন্যথায় দেশব্যাপী ছাত্রসমাজ গণ-আন্দোলন গড়ে তুলবে। 

শরিফুল ইসলাম রিয়াদ বলেন, সরকার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। নির্বাচন কমিশন আওয়ামী সরকারের পকেট কমিশনে পরিণত হয়েছে। বর্তমান কমিশনের মাধ্যমে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। দুর্নীতি দমন কমিশন দুর্নীতি রোধের পরিবর্তে দুর্নীতিবাজদের আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে। ক্যাম্পাসের ভিসি পদের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদকে বর্তমান সরকার দলীয় পদে পরিণত করছে। 

ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে ছাত্রলীগ; যেখানে খুন, ধর্ষণ, টেন্ডারবাজি চাঁদাবাজি সেখানেই ছাত্রলীগ। একটি ছাত্রসংগঠনের পক্ষে নির্মমভাবে অন্য ছাত্রকে হত্যা করা সম্ভব নয়, কিন্তু ছাত্রলীগ বারবার শিক্ষার্থীদের খুন ও নির্যাতন করে পশু চরিত্রের পরিচয় দিচ্ছে। ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে ছাত্রলীগকে সম্মিলিতভাবে বয়কট করতে হবে—বলে মন্তব্য করেন রিয়াদ। 

রিয়াদ বলেন, ক্যাম্পাসে যখন ছাত্রলীগ অস্ত্রের মহড়া দেয়, শিক্ষার্থীদের নিপীড়ন করে তখন প্রশাসন কাঠের চশমা পরে থাকে। কিন্তু বিরোধী দল ও মত দমনে প্রশাসন আওয়ামী লীগের মতো আচরণ করে। চোর-ডাকাতদের আদালতে তোলা হয় জামাই আদর করে, আর উলামায়ে কেরামকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে অপমান করা হয়। এই অপমান বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা কখনোই সহ্য করবে না। অবিলম্বে গ্রেপ্তার ছাত্রদল, ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মী ও কারাবন্দী উলামায়ে কেরামের মুক্তি দাবি করেন রিয়াদ। 

সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের প্রধান সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিশের সভাপতি পরিষদের সদস্য মুহাম্মাদ কামাল উদ্দীনের সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি নিজাম উদ্দিন আল আদনান, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিশের সভাপতি মুহাম্মদ খালেদ সাইফুল্লাহ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মাসুদ রানা জুয়েল, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিশের সভাপতি মোল্লা মুহাম্মাদ খালিদ সাইফুল্লাহ, বাংলাদেশ মুসলিম ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ নূর আলম, বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষের আহ্বায়ক মুহাম্মদ প্রিন্স, ভাসানী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আহাম্মেদ শাকিল, বাংলাদেশ ছাত্র মিশনের সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ মিলন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজের মহাসচিব বি এম আমির জিহাদী, বাংলাদেশ কওমি ছাত্র ফোরামের সদস্যসচিব জামিল সিদ্দিকীসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত