Ajker Patrika

ধর্মীয় উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিলে গণতন্ত্রের কবর রচিত হবে: তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ফাইল ছবি
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ফাইল ছবি

দেশের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক চরিত্র সমুন্নত রাখতে চরমপন্থা এবং ধর্মীয় উগ্রবাদী অপশক্তিকে প্রতিহত করার তাগিদ দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, ‘ধর্মীয় উগ্রবাদীদের অপতৎপরতা এবং চরমপন্থা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার পরিচয় দিলে, উগ্রবাদী জনগোষ্ঠী এবং পরাজিত অপশক্তি দেশে পুনরায় গণতন্ত্রের কবর রচনা করবে। অপরদিকে গণতান্ত্রিক বিশ্বে ভাবমূর্তি সংকটে পড়তে পারে বাংলাদেশ।’

আজ বুধবার রাজধানীর লেডিস ক্লাবে এক ইফতার মাহফিলে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সম্মানে বিএনপির পক্ষ থেকে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ইফতার মাহফিলে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, গণঅধিকার পরিষদ, এবি পার্টি, এলডিপি, জাতীয় পার্টিসহ (জাফর) বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

তারেক রহমান বলেন, গণহত্যাকারী পলাতক মাফিয়া চক্রকে যেকোনো মূল্যে বিচারের সম্মুখীন করার মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক বিধি ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে। বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষে শক্তির আগামী দিনের রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এটাই।

বরাবরের মত নির্বাচনে গুরুত্বারোপ করে তারেক রহমান বলেন, শুধুমাত্র একটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্যই মাফিয়া সরকারের পতন ঘটেনি-এ কথা যেমন সত্য, তার চেয়েও আরও চরম সত্য হয়তো একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন না করার জন্যই মাফিয়া সরকারের নির্মম পতন হয়েছিল। সুতরাং একটি নির্বাচনকে শুধুমাত্র কোনো একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় যাওয়া না যাওয়ার বিষয় হিসেবেই বিবেচনা করার অবকাশ নেই। প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে জনগণ যার যার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করার সুযোগ পান।

তিনি বলেন, ‘জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সোচ্চার। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টা, এমনকি দু-একটি রাজনীতিক দলকেও জাতীয় নির্বাচনের ব্যাপারে ইদানীং কিছুটা ভিন্ন সুরে কথা বলতে শোনা যায়। আমরা মনে করি জনপ্রত্যাশার প্রতি শ্রদ্ধা না দেখিয়ে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের নামে গৌণ ইস্যুকে মুখ্য করে, অকারণে সময়ক্ষেপণের চেষ্টা হলে, সেটি জনমনে ভুল বার্তা পৌঁছালে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা এবং সরকারের কার্যক্রমের প্রতি জনগণের আস্থার সংকট সৃষ্টি হলে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাকরণে যাত্রা পথ বিপদসংকুল হয়ে উঠতে পারে। অপরদিকে এ ধরনের পরিস্থিতি শেষ পর্যন্ত পলাতক মাফিয়া চক্রের দোসরদের পুনরুদ্ধারের পথকে সুগম করবে।’

এ সময় রাজনীতিবিদদের উদ্দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের সকলের চিন্তাভাবনা হয়তো এক নয়। আমাদের মধ্যে ভিন্ন রাজনৈতিক চিন্তা রয়েছে, ভিন্ন দল-মত-দর্শন রয়েছে। তবে মতে ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও আমরা কিন্তু সবাই একসঙ্গে বসেছি। এটাই আমাদের বাংলাদেশ, এটাই আবহমানকালের ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের এক অনন্য প্রতিফলন। তবে দুঃখজনকভাবে গত দেড় দশকের ফ্যাসিবাদী শাসন শোষণে দেশের শুধুমাত্র শিক্ষা ব্যবস্থা, রাজনীতি, অর্থনীতি এসব কিছুকেই ধ্বংস করে দেয়নি, বাংলাদেশের ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকেও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। সামাজিক সম্প্রতি ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে নষ্ট করে দিয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত