Ajker Patrika

সাড়ে ৩ মাস কারাভোগ শেষে মুক্ত মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরু

নিজস্ব প্রতিবেদক ও কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭: ৩১
সাড়ে ৩ মাস কারাভোগ শেষে মুক্ত মির্জা ফখরুল ও আমীর খসরু

সাড়ে তিন মাস কারাভোগ শেষে জামিনে কারামুক্ত হয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ৪টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (কেরানীগঞ্জ) থেকে তাঁরা বের হন। কারাগার থেকে বের হলে কারা ফটকে বিএনপির এই দুই নেতাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী। এ সময় পুরো এলাকা স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরানীগঞ্জ) সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ তাঁদের জামিনের তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিকেল পৌনে চারটার দিকে মহাসচিব ফখরুল ও আমির খসরু কারাগারের মূল ফটক থেকে বেরিয়ে যান। তারা দুজনই কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হলেন।’

একই দিন দলের প্রচার বিষয়ক সম্পাদক ও মিডিয়া সেলের সদস্য শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানীও কারামুক্ত হন। গত ১১ অক্টোবর রাতে নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এ্যানীকে। এরপর থেকে কাশিমপুর কারাগারে বন্দী ছিলেন বিএনপির এই নেতা।

প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গতকাল বুধবার তাঁদের জামিন মঞ্জুর করা হয়। এর আগে সকালে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছিলেন, বেলা ২টার দিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্তি পেতে পারেন। 

গতকাল বুধবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ফয়সাল আতিক বিন কাদের দুজনকে জামিন দেন। 

এ দিন বিএনপির দুই শীর্ষ নেতার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন মেজবাহ আজকের পত্রিকাকে জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন নাশকতার মামলায় দুই বিএনপির নেতাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মির্জা ফখরুলকে ১১ মামলায় ও আমীর খসরুকে ১০ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। অন্যান্য মামলায় আগে দুজনই জামিন পেয়েছেন। সর্বশেষ মামলায় আজ জামিন পাওয়ায় তাঁদের কারামুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই। 

ফুলের পাপড়ী ছিটিয়ে দলীয় নেতা–কর্মীরা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে অভিনন্দন জানান। ছবি: আজকের পত্রিকাপ্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় এর আগে দুজনেরই জামিনের আবেদন কয়েক দফা নামঞ্জুর হয়। হাইকোর্টও মির্জা ফখরুলকে জামিন দেননি। 

 ৬ ফেব্রুয়ারি দুজনের পক্ষে জামিনের আবেদন করার পর আজ শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। আজ জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী জয়নাল আবেদীন, মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, জয়নুল আবেদীন মেজবাহ প্রমুখ। 

মির্জা ফখরুলকে গত বছর ২৯ অক্টোবর সকালে আটক করার পর বিকেলে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। ওই দিন তাঁর জামিন নামঞ্জুর হয়। পরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত তাঁর জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন। গত ১০ জানুয়ারি হাইকোর্ট মির্জা ফখরুলের জামিন নামঞ্জুর করেন। 

মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বেলা ১টার দিকে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালান। 

প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা: মির্জা ফখরুলের জামিন আবারও নামঞ্জুরপ্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা: মির্জা ফখরুলের জামিন আবারও নামঞ্জুর প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার অভিযোগে রমনা থানার পুলিশ পরিদর্শক মফিজুর রহমান মামলা দায়ের করেন। 

 ২৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গুলশানের বাসভবন থেকে মির্জা ফখরুলকে আটক করে ডিবি পুলিশ। ৩ নভেম্বর আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আটক করা হয় এবং একই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ছয় দিনের রিমান্ড শেষে ১০ নভেম্বর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। 

এই মামলায় মির্জা আব্বাস, মির্জা ফখরুল, বরকত উল্লা বুলুসহ ৭২ জনকে আসামি করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামিও রয়েছেন। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর পল্টন, শাহজাহানপুর ও রমনা থানায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত