Ajker Patrika

সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে এল নতুন রাজনৈতিক দল

 বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৫, ২৩: ৪৮
সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে এল নতুন রাজনৈতিক দল

‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদকে’ আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে ‘সাম্য ন্যায্যতা প্রগতি’ স্লোগান নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। ‘জনতার দল’ নামে দলটির নেতৃত্বে বেশির ভাগেই থাকছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর খামারবাড়িতে আত্মপ্রকাশ করেছে দলটি।

অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম কামাল এই দলের আহ্বায়ক। মেজর (অব.) ডেল এইচ খানকে দলের প্রধান সমন্বয়ক ও মুখপাত্র করা হয়েছে। দলটির আহ্বায়ক ও সমন্বয়ক ছাড়া আর কোনো নেতার নাম ঘোষণা করা হয়নি। জনতার দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে ঈদের পর।

দলের শীর্ষ নেতৃত্ব জানান, সাবেক সামরিক কর্মকর্তাদের প্রাধান্য থাকলেও নতুন দলে সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষদের অংশগ্রহণ থাকবে। জনতার দল দেশের ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে। যাঁদের নিয়ে সমাজে বিতর্ক নেই— এমন ব্যক্তিদের প্রার্থী করতে চান নেতারা।

এই দলের বেশির ভাগ অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা; তাঁদের সঙ্গে আছেন সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা। তাঁদের মধ্যে গণমাধ্যমের মালিকানা আছে, এমন ব্যবসায়ীও আছেন।

বৃহস্পতিবার জনতার দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। এতে বক্তব্য দেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টির) সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, সাবেক মন্ত্রী নাজিম উদ্দীন আল আজাদ, সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, রাজনীতিবিদ আজম খান, মেজর জেনারেল (অব.) ফজল ইবনে শারেখুজ্জামান, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) সাব্বির আহমেদ, মেজর জেনারেল (অব.) ইসমাইল ফারুক চৌধুরী ও সাবেক ছাত্রনেতা মাস্তুক হাসান জয়।

দলের আহ্বায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. শামীম কামাল বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক দর্শন ফিলিস্তিন। ফিলিস্তিনে নেতা তৈরি হতে দুই ঘণ্টাও সময় লাগে না। আমরা ঐতিহাসিকভাবে মীমাংসিত বিষয় নিয়ে অহেতুক তর্কে জড়াতে চাই না। আমরা শুধু সৎ, সাহসী, শিক্ষিত, দেশপ্রেমিক নিষ্ঠাবান মানুষ নিয়ে এগোতে চাই।

Janatar-Dal

জনতার দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দল ঘোষণার আগে কয়েক মাসে দেশের বিভিন্ন পেশাজীবী ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেছেন। তাঁদের মধ্যে বিএনপির বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা ছাড়াও জাতীয় পার্টি, গত সংসদে নির্বাচিত স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা রয়েছেন। দলটি আত্মপ্রকাশের জন্য ৭ মার্চ ঢাকা ক্লাবে ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। সেখানে দেশের বিভিন্ন পেশাজীবী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন।

দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি বড় অংশ নতুন এই দলে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে নিজেদের প্রতারিত মনে করছেন। তাঁরাও এই দলে যোগ দেবেন বলে নেতারা মনে করছেন।

এ বিষয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ এক সমন্বয়ক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘৩ আগস্ট থেকে আন্দোলন করেছি আমরা, অথচ আমাদের কোথাও রাখা হয়নি। এটা বাজে রকম বৈষম্য হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিশ্রীভাবে তারা পিটিয়েছে আমাদের প্রতিনিধিদের, যাঁদের মধ্যে নারীরাও ছিলেন। এসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে নেয়নি।

জানা গেছে, নতুন দল গঠনে সব থেকে বেশি কাজ করেছেন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম কামাল। শামীম কামালের বাবা লালমনিরহাটের প্রয়াত সংসদ সদস্য মুজিবর রহমানের মেজ ছেলে।

মজিবর রহমান ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মনোনয়ন নিয়ে তৎকালীন রংপুর-৬ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর আসন বদলে লালমনিরহাট-২ থেকে টানা ২০০৮ জাতীয় নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৬ সালে এই সংসদ সদস্য প্রয়াত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত