ভোট ছেড়ে গেছেন জাপার ১৮ জনসহ ২৩ প্রার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০১: ২৮

নানা অভিযোগ ও অসন্তোষে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনী মাঠ থেকে একে একে সরে দাঁড়াচ্ছেন জাতীয় পার্টি, তৃণমূল বিএনপি, তরীকত ফেডারেশনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের তালিকায় অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থীও রয়েছেন। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন চারজন প্রার্থী।

সব মিলিয়ে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২৩ জন প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন। তাঁদের মধ্যে ১৮ জনই জাপার প্রার্থী।

গতকাল যে চার প্রার্থী ভোট থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁরা হলেন যশোর-৫ (মনিরামপুর) আসনের জাতীয় পার্টির এম এ হালিম ও তৃণমূল বিএনপির মেজর (অব.) আ ন ম মোস্তফা বনি, গাজীপুর-২ (গাজীপুর সদর-টঙ্গী) আসনের বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের সৈয়দ আবু দাউদ মছনবী হায়দার এবং ফেনী-৩ (দাগনভূঞা-সোনাগাজী) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জাতীয় পার্টির ফেনী জেলার সাবেক সভাপতি রিন্টু আনোয়ার।

এর আগে তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের প্রার্থী সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি এবং সুনামগঞ্জ-৪ আসনের বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্টের (বিএনএম) প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য দেওয়ান শামছুল আবেদীন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।

নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের বিষয়ে আ ন ম মোস্তফা বনি গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘তৃণমূল বিএনপি থেকে মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার শুরু থেকেই অত্যন্ত হীনমন্যতায় ভুগছি এবং আত্মদহনে দগ্ধ হচ্ছি। প্রকৃতপক্ষে তৃণমূল বিএনপি একটি তলাবিহীন ঝুড়ির মতো দল। একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তার জন্য সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে এমন একটি দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা অত্যন্ত বেমানান এবং অমর্যাদাকর।’

যশোর-৫ আসনের জাপা প্রার্থী এম এ হালিম অভিযোগ করেন, ‘ভোটের শুরু থেকে দেখছি, আমার দলের কেন্দ্রীয় নেতারা রহস্যজনক ভূমিকা পালন করছেন। দলের কিছু প্রার্থীর নির্বাচনী পোস্টার নিয়েও ইতিমধ্যে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। মনোনয়ন দেওয়ার পর কেন্দ্রের কোনো নেতা আমাদের ভোটের খবর নেননি। এতে করে স্থানীয় পর্যায়ে আমাদের নেতা-কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।’

ফেনী-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী রিন্টু আনোয়ার দাবি করেছেন, ‘গণসংযোগে মানুষকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে মানুষ ভোট দিতে যাওয়ার জন্য রাজি নয়। তারা বলছে, ভোট দিয়ে কী হবে? এমপি তো নির্ধারণ হয়েই আছে! শুধু ঘোষণা বাকি।’ তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয় জনগণ এখানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি পুরোপুরি আস্থা হারিয়ে ফেলছে। তাই আমি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছি।’

এর আগে বুধবার সিলেট এবং চুয়াডাঙ্গায় জাতীয় পার্টির তিনজন প্রার্থী নির্বাচন না করার ঘোষণা দেন। ভোটের প্রচার শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত জাপার ১৮ জন প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন। তবে ১ জানুয়ারি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের রংপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত তিনি থাকবেন কি না, তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

ভোটের মাঠ থেকে প্রার্থীদের সরে যাওয়ার বিষয়ে গতকাল কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে এক নির্বাচনী সভায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের টাকার সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে না পেরে জাপার প্রার্থীরা নির্বাচন ছেড়ে দিচ্ছেন।’

[প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন যশোর প্রতিনিধি, সোনাগাজী (ফেনী), টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি ও মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি]

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত