অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে পুরো বিচারব্যবস্থা জিম্মি, গ্রেনেড হামলার মামলার রায় বাতিল প্রসঙ্গে হানিফ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮: ৩০
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯: ৩০
মাহবুব উল আলম হানিফ। ফাইল ছবি

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামিকে খালাস দেওয়ায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। তিনি বলেছেন, ‘আজকের এই রায় প্রমাণ করে, সরকার বিচারব্যবস্থাকে পুরোপুরি জিম্মি করে রেখেছে।’ আজ রোববার হোয়াটসঅ্যাপে দেওয়া এক বার্তায় এ কথা বলেন মাহবুব উল আলম হানিফ।

ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স), আপিল এবং জেল আপিলের রায় আজ রোববার অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। রায়ে তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

রায়ের সমালোচনা করে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘ড. ইউনূসের রিসেট বাটনের যথাযথ কার্যকারিতা আমরা দেখতে পেলাম আজকের এই রায়ের মাধ্যমে। উনি আমাদের সবকিছু ভুলিয়ে দিতে চেয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ২১ আগস্টের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনাকে পুরোপুরি মুছে ফেলার এই অপচেষ্টা।’

হানিফ বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। এতে কী প্রমাণিত হলো? দেশে কি ২১ আগস্টে কিছুই ঘটেনি?’

হানিফ আরও বলেন, ‘পাকিস্তান থেকে নিয়ে আসা আর্জেস গ্রেনেডগুলো কি আকাশ থেকে আওয়ামী লীগের সমাবেশস্থলে পড়েছিল? ২৪ জন মানুষের নিহত হয়েছিল, ৫০০ জন আহত হয়েছিল—এমনি এমনিতেই?’

রায়ের প্রমাণিত হলো সরকার বিচারব্যবস্থাকে পুরোটাই জিম্মি করে রেখেছে বলে দাবি করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশে মব জাস্টিসের নামে মব কিলিং করে বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি চালু হয়েছে, এটার মূল্য অচিরেই চুকাতে হবে।’

সুস্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট প্রমাণ থাকার পরও এই প্রহসনের রায় জাতির জন্য লজ্জার বলে দাবি করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালের নভেম্বর মাসে হরকাতুল জিহাদের নেতা মুফতি আবদুল হান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আদালতে উপস্থাপিত মুফতি হান্নানের জবানবন্দিতে বলা হয়—বিএনপি-জামায়াত সরকারের শীর্ষ কয়েকজন ব্যক্তির সহায়তায় তিনি আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিলেন।’

হানিফ আরও বলেন, ‘জবানবন্দিতে উল্লেখ করা হয়—বিএনপি সরকারের উপমন্ত্রী আবদুল সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দীনের মাধ্যমে পিন্টুর সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ হয়। এরপর তার মাধ্যমে তারা তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের কাছে যায়। লুৎফুজ্জামান বাবর এবং কুমিল্লার তৎকালীন সংসদ সদস্য কায়কোবাদকে সঙ্গে নিয়ে তারা হাওয়া ভবনে যায়।’

আওয়ামী লীগের এ শীর্ষ নেতা বলেন, ‘মুফতি হান্নান তাঁর জবানবন্দিতে জানিয়েছেন—হাওয়া ভবনের বৈঠকে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, হারিছ চৌধুরী, লুৎফুজ্জামান বাবর, ডিজিএফআইয়ের তৎকালীন প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী এবং ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবদুর রহিম উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের উপস্থিতির কিছুক্ষণ পর তারেক রহমান সেখানে আসেন। এমনটাই জানা গেছে আদালতে দেওয়া মুফতি হান্নানের জবানবন্দি থেকে।’

হানিফ বলেন, ‘মুফতি হান্নানের ভাষ্য অনুযায়ী—তাঁর সহযোগীরা যাতে হাওয়া ভবনে আর না আসে, সেটি জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “আপনারা বাবর সাহেব এবং আব্দুস সালাম পিন্টুর সঙ্গে যোগাযোগ করে কাজ করবেন।”’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত