বাংলাদেশের বিপক্ষে ১০ বছরের অপেক্ষা ফুরোল ওয়েস্ট ইন্ডিজের

ক্রীড়া ডেস্ক     
প্রকাশ : ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩: ০৫
বাংলাদেশের বিপক্ষে ১০ বছর পর ওয়ানডে সিরিজ জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ছবি: ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ

শারফেন রাদারফোর্ডের বল সেন্ট কিটসের গ্যালারিতে আছড়ে পড়তেই ক্যামেরার লেন্স খুঁজে নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডাগআউট। উইন্ডিজ ক্রিকেটাররা তখন হাসছেন এবং একে অপরের সঙ্গে করমর্দন করছেন।ঘটনাটা আর কিছুই নয়। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে হেসেখেলে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতল উইন্ডিজ।

টি-টোয়েন্টি ও টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ জয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ অভ্যাস বানিয়ে ফেললেও ওয়ানডে সেটা হচ্ছিল না। ২০১৪ সালের পর উইন্ডিজরা টানা চারটি ওয়ানডে সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে। পঞ্চমবারে এসে সেই ডেডলক ভেঙেছে। সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে আজ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৭ উইকেটের জয়ে উইন্ডিজের ফুরোল ১০ বছরের অপেক্ষা৷ বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ক্যারিবীয়রা এগিয়ে গেল ২-০ ব্যবধানে।

২২৮ রানের লক্ষ্যে নেমে সাবলীলভাবে এগোতে থাকেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার ব্র্যান্ডন কিং ও এভিন লুইস। পাওয়ার প্লেতে (প্রথম ১০ ওভারে) কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৪ রান করে ক্যারিবীয়রা।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী জুটি অবশ্য ভাঙতে পারত ৭৪ রানে।১৪তম ওভারের চতুর্থ বলে মেহেদী হাসান মিরাজকে পুল করতে যান লুইস। লংঅন থেকে দৌড়ে এসে বলে হাত ছোঁয়ালেও শেষ পর্যন্ত তালুবন্দী করতে পারেননি সৌম্য সরকার।

সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর ভেঙেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী জুটি। ২১তম ওভারের প্রথম বলে লুইসকে কট এন্ড বোল্ড করে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট এনে দেন রিশাদ হোসেন।৬২ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৯ রান করে লুইস ফিরলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর হয়ে যায় ২০.১ ওভারে ১ উইকেটে ১০৯ রান।

উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর বিধ্বংসী হয়ে ওঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৫তম ওভারে তানজিম হাসান সাকিবের ওভার থেকে ১৩ রান নিয়েছে উইন্ডিজ। এই ওভারে কিং মারেন একটি ছক্কা ও একটি চার মারেন কিসি কার্টি।

একটা পর্যায়ে মনে হচ্ছিল কিংয়ের ৪র্থ ওয়ানডে সেঞ্চুরি সময়ের ব্যাপার। শেষ পর্যন্ত তিন অঙ্ক ছুঁতে পারেননি তিনি। ২৯তম ওভারের চতুর্থ বলে কিংকে বোল্ড করেন নাহিদ রানা। ৭৬ বলে ৮ চার ও ৩ ছক্কায় ৮২ রান করেন কিং। দ্বিতীয় উইকেটে কার্টি ও কিংয়ের ৬৬ রানের জুটিটা হয়েছে ৪৮ বলে।

৩০ বল পর কার্টিকে ফিরিয়েছেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। ৪৭ বলে ৭ চারে কার্টি করেন ৪৫ রান। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের পথে সেটা তেমন বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। হাতে ৭ উইকেট নিয়ে ১০১ বলে ৩১ রানের সমীকরণ সহজেই মিলিয়ে দিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক শাই হোপ ও শারফেন রাদারফোর্ড। চতুর্থ উইকেটে ২২ বলে ৩৩ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়ে মাঠ ছাড়েন তাঁরা। ৩৭তম ওভারের পঞ্চম বলে শরীফুল ইসলামকে ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মেরে তুলির শেষ আঁচড় দিয়েছেন রাদারফোর্ড।

৭৯ বল হাতে রেখে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৭ উইকেটের জয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন জেইডেন সিলস। ক্যারিবীয় পেসার ৯ ওভারে ২২ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। একটা ওভার মেডেনও দিয়েছেন। ম্যাচে উইন্ডিজের সেরা বোলার তিনি।

এর আগে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথমে ব্যাটিং পেয়ে বাংলাদেশ চোখে সর্ষেফুল দেখতে থাকে উইন্ডিজের আক্রমণাত্মক বোলিংয়ে। একটা পর্যায়ে সফরকারীদের স্কোর হয়ে যায় ২৫.৩ ওভারে ৭ উইকেটে ১১৫ রান। খাদের কিনারা থেকে তখন বাংলাদেশকে টেনে তোলেন তানজিম সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অষ্টম উইকেটে তানজিম সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ গড়েন ১০৬ বলে ৯২ রানের জুটি।

অষ্টম উইকেটের জুটিটি ভাঙার পর বাংলাদেশের ইনিংস গুটিয়ে যেতে এরপর বেশিক্ষণ লাগেনি।২০ রানে শেষ ৩ উইকেট হারিয়ে ৪৫.৫ ওভারে ২২৭ রানে অলআউট বাংলাদেশ। ইনিংস সর্বোচ্চ ৬২ রান করেছেন মাহমুদউল্লাহ। ৯২ বলের ইনিংসে মেরেছেন ২ চার ও ৪ ছক্কা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত