ফ্র্যাঞ্জাইজি লিগগুলোর মধ্যে আইপিএল নিয়ে অন্যরকম এক উন্মাদনাই কাজ করে সারা বিশ্বের ক্রিকেটারদের মনে। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাও এর ব্যতিক্রম নন। তবে পার্থক্য হচ্ছে অন্যদের চেয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সুযোগ পাওয়ার বিষয়টা।

আইপিএলের পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা অন্য দেশের তুলনায় খুব কমই সুযোগ পান। বেশির ভাগ সময় বেঞ্চ গরম করতে হয় তাঁদের। এখন পর্যন্ত আইপিএলে সুযোগ পাওয়া ৭ জন বাংলাদেশি ক্রিকেটারের মধ্যে কিছুটা ব্যতিক্রম শুধু সাকিব আল হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমান। এই দুজন বাদে একটি করে ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মোহাম্মদ আশরাফুল ও প্রথমবারের মতো এবার সুযোগ পাওয়া লিটন দাস। অন্যদিকে তামিম ইকবাল একটি ম্যাচও খেলার সুযোগ পাননি।

টুর্নামেন্টের অতীত ইতিহাস থেকেই হয়তো এবারের আইপিএলে লিটন-মোস্তাফিজদের একাদশে সুযোগ পাওয়ার শঙ্কার কথাই জানিয়েছিলেন নাজমুল হাসান পাপন। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের আইপিএলে ম্যাচ পাওয়া নিয়ে কদিন আগে বিসিবি সভাপতি বলেছিলেন, ‘(লিটন-মোস্তাফিজদের খেলাবে না) তেমন কোনো সন্দেহ আমার ছিল না কখনো। জানে সবাই, ওরাও জানে। এটা অজানা কিছু না। যারা গেছে তারাও জানে (খেলাবে না)।’

চট্টগ্রামে গত মার্চে এনওসি দিতে দেরি হওয়ার ব্যাখ্যায় বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড টি-টোয়েন্টি শেষে নাজমুল হাসান পাপন আইপিএলে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের আইপিএলে সুযোগ পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘খেলাবে কি না, সেটাই তো জানি না। এখন আপনারা যদি আমাকে চূড়ান্ত করেন, তাহলে একটা আশা দিতে পারি। এখন যদি না খেলায়, তাহলে কী আশা দেব? আগে দেখি খেলায় কি না।’

এবার বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের আইপিএল অভিযান পর্যালোচনা করলে দেখা যায় পাপনের কথাই আসলে সত্যি হয়েছে। এবারের আইপিএলে প্রথমবারের মতো সর্বোচ্চ তিন ক্রিকেটার সুযোগ পেয়েছিলেন। আগের সর্বোচ্চ ছিল দুজন। শেষ পর্যন্ত যদিও আইপিএল থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন সাকিব। লিটন-মোস্তাফিজ নিজেদের দলের সঙ্গে থাকলেও সুযোগ পাননি তেমন। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই দলের সঙ্গে থাকা কাটার মাস্টার দুই ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলেও প্রথমবার খেলতে যাওয়া লিটনের ভাগ্যে ছিল এক ম্যাচ।

সেই ম্যাচে লিটন প্রথম বলেই দর্শনীয় এক কভার ড্রাইভে চার মেরে অভিষেকটা দুর্দান্তভাবে শুরু করলেও শেষটা হয়েছে হতাশার। ব্যাটিংয়ে ৪ বলে ৪ রান করে আউট হয়েছেন অনভিজ্ঞ এক শটে। আর উইকেটের পেছনে গ্লাভস হাতে পারফরম্যান্স ছিল আরও হতাশার। দুটি নিশ্চিত স্ট্যাম্পিংয়ের সুযোগ হাতছাড়া করে কলকাতা নাইট রাইডার্সের সমর্থকদের ‘চক্ষুশূল’ হয়েছিলেন তিনি। এরপর তো হতাশাকে সঙ্গী করেই নির্ধারিত সময়ের আগেই ফিরে এলেন।

অন্যদিকে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে দুটি ম্যাচে খেলার সুযোগ পাওয়ার পর আর কোনো ম্যাচে একাদশে নামতে পারেননি মোস্তাফিজ। গতকালও একাদশের বাইরে ছিলেন তিনি। আগামী ৯ মে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ থাকায় আর কোনো সুযোগ পাচ্ছেন না তিনি। দেশের হয়ে খেলার জন্য আজ বাংলাদেশে ফিরবেন এই পেসার। আগামীকাল ইংল্যান্ডে রওনা দেবেন তিনি। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ দলের অধিকাংশ খেলোয়াড় ইংল্যান্ডে পৌঁছেছেন। গতকাল রাতে লিটনও ঢাকা ছেড়েছেন।