Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

পাওয়ার আছে অনিকের, শুধু নার্ভ ধরে রাখা চাই: রাসেল আরনল্ড

পাওয়ার আছে অনিকের, শুধু নার্ভ ধরে রাখা চাই: রাসেল আরনল্ড

বিপিএলে ধারাভাষ্য দিতে এসেছিলেন রাসেল আরনল্ড। ধারাভাষ্য দিচ্ছেন চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজেও। জাকের আলী অনিকের ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ রাসেল। যেহেতু তিনিও ফিনিশারের ভূমিকায় খেলতেন, জাকেরের মতো লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটারের ভূমিকা নিয়ে নিখুঁত বিশ্লেষণ তাঁর পক্ষেই সম্ভব। রাসেল গত পরশু বিকেলে সিলেট স্টেডিয়ামে বসে আজকের পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বললেন আরও কিছু প্রাসঙ্গিক বিষয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রানা আব্বাস

প্রশ্ন: সিলেটে কেমন লাগছে?
রাসেল আরনল্ড: দারুণ, প্রশান্তিময় এক জায়গা। কিছুটা পল্লি অঞ্চল। খুব বেশি ঘুরে দেখার সুযোগ অবশ্য এখনো পাইনি। তবে ক্রিকেট কন্ডিশন দেখেছি। বিশ্বের যেকোনো মাঠের সঙ্গে তুলনা করলে এটাকে ফার্স্ট ক্লাস বলতে হবে। সেদিন দুর্দান্ত একটা ম্যাচও তো হলো।

প্রশ্ন: বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটে বেশ কিছু পরিবর্তন। বাংলাদেশেও কিছু পরিবর্তন এসেছে।
রাসেল: ওয়েল, নতুন ভাবনা, নতুন দিকনির্দেশনা পেতে পরিবর্তন দরকার। ২০২৩ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কা দলের অনেক কিছুই ভালো যায়নি। যেসব জায়গা সত্যি চিহ্নিত করা দরকার। পরিবর্তন অনেক কিছুই হতে পারে। তবে মূল কাজ যাদের, খেলোয়াড়দের সেসব বাস্তবায়ন করতে হবে এবং ভালো করতে হবে। 

প্রশ্ন: দুই দলের প্রেক্ষাপটে এই সিরিজের গুরুত্ব কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
রাসেল: এই তিনটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল গড়ার শেষ সিরিজ (শ্রীলঙ্কার)। দলের সঠিক সমন্বয়, ভারসাম্য ও আত্মবিশ্বাস খুঁজে পেতে সত্যি অনেক গুরুত্বপূর্ণ এ সিরিজ। আর প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ, যেহেতু বাংলাদেশের বিপক্ষে দারুণ একটা দ্বৈরথ তৈরি হয়েছে এখন। সুতরাং, জেতা এবং পারফরম্যান্স খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একই। আপনি প্রতিটি ম্যাচ জিততে চান। কারণ, এটার সঙ্গে গৌরব, আত্ম অহংকার জড়িয়ে। তবে বাংলাদেশ আরও কিছু টি-টোয়েন্টি পাবে (বিশ্বকাপের দল গঠনে)। তবে সঠিক পরিকল্পনা আর সমন্বয় পেতে কাজ এখনই শুরু করতে হবে, তাই না?

প্রশ্ন: বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার দ্বৈরথের কথা বলছিলেন। কেমন উপভোগ করেন এ দ্বৈরথ?
রাসেল: আমার কাছে এসব মাঠের বিষয়। খেলা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হওয়া চাই, যেটি সেদিন (প্রথম টি-টোয়েন্টি) আমরা দেখলাম। এক ইঞ্চিও ছাড়া যাবে না, দেওয়া যাবে না—এটাই দুই দলকে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে নামিয়ে দিচ্ছে।
    
প্রশ্ন: সেদিন জাকের আলী অনিকের ব্যাটিং কেমন লেগেছে? 
রাসেল: যেভাবে সে খেলেছে, উপভোগ্য ছিল। পাওয়ার শট খেলে বাংলাদেশকে আশা দিয়েছিল। যদি শেষ ওভারে সে আউট না হতো, সেদিন বাংলাদেশ জিততেও পারত। সব সময় সে এভাবে খেলতে পারবে না। সুযোগ এলেই যদি ধারাবাহিক ভালো করতে পারে, সে একজন তারকা হবে। নিচের দিকে একজন পাওয়ার হিটার পাওয়া খুবই ভালো।

প্রশ্ন: আপনিও লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করতেন। একই পজিশনের ব্যাটার তরুণ জাকের যদি আপনার কাছে টিপস চাইতে আসেন, কী পরামর্শ দেবেন? 
রাসেল: এখন যদি সে আমার কাছে না আসে, তাহলে ভালোই হবে। সত্যি সে ভালো খেলছে। টি-টোয়েন্টি একটু অন্য রকম খেলা। পাওয়ার আছে, তাকে শুধু নার্ভটা ধরে রাখতে হবে। নিজের শক্তির ওপর আস্থা রাখতে হবে। ৬-৭ নম্বর পজিশনে একজন ব্যাটারকে গেম খুব ভালো বুঝতে হয়। কীভাবে গতি ধরে রাখতে হবে, সেটি বুঝতে ট্যাকটিক্যালি ভালো হতে হয়। একই সঙ্গে আপনার সঙ্গীর কাছ থেকেও সেরাটা বের করে নিয়ে আসতে হবে। খেলাটা শেষ করে আসার সামর্থ্য আছে বলেই এ পজিশনে আপনি ব্যাটিং করেন। আশা করি, সে এসব ঠিকঠাক ধরে রাখতে পারবে। সেদিন সে যখন ব্যাটিং করতে এল, শুরুতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সমর্থন করে যাওয়া ছিল তার মূল কাজ। পরে নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে নিয়েছে। শুধু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেই নয়, ওয়ানডে ক্রিকেটেও এভাবে খেলতে হবে—দ্যাটস হোয়াট ইট ইজ। ওর এটা শুধু ধরে রাখতে হবে। 

 ৬-৭ নম্বর পজিশনে ব্যাটারকে গেম খুব ভালো বুঝতে হয়। কীভাবে গতি ধরে রাখতে হবে, সেটি বুঝতে ট্যাকটিক্যালি ভালো হতে হয়। খেলাটা শেষ করে আসার সামর্থ্য আছে বলেই এ পজিশনে আপনি ব্যাটিং করেন। আশা করি, অনিক এসব ঠিকঠাক ধরে রাখতে পারবে।

প্রশ্ন: দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশ দলে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের এক বছর হলো। তাঁর এক বছর কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
রাসেল: দল ভালো করছে। বিষয়টা হচ্ছে, দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। রেকর্ড ভালো। আমার মনে হয়েছে, গত ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে তারা তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী ভালো করতে পারেনি। তবে তারা নিউজিল্যান্ডে ভালো করেছে। এটাই তো আপনি চাইবেন। ঠিকঠাক উন্নতি চাইবেন। প্রতিটি ম্যাচ বা খেলায় জিততে পারবেন না। তবে যেখানেই খেলতে যান, সঠিক পথে থাকতে হবে। 

প্রশ্ন: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অ্যাপ্রোচ কেমন হওয়া উচিত বা তাদের আর কোথায় কোথায় উন্নতি করতে হবে?
রাসেল: তারা ভালো ক্রিকেট খেলছে। বিপিএল থেকে এসেছে সবাই, খেলোয়াড়েরা ছন্দে। আছে আত্মবিশ্বাসও। সেরা খেলোয়াড়দের নেওয়া হয়েছে। আবারও বলি, স্মার্ট হতে হবে। সঠিক সিদ্ধান্ত সঠিক সময়ে নিতে হবে। সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারলে, কন্ডিশন বুঝে খেললে ভালোভাবে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ। হ্যাঁ, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা বেশি স্পিন খেলে অভ্যস্ত। তবে এখানে (সিলেটে) তো ফাস্ট বোলাররাও ভালো করছে। প্রতিপক্ষের পাওয়ার প্লেতে আরও বেশি উইকেট নিতে হবে। যদি তারা এটা পারে, কন্ডিশন ও পরিস্থিতি বুঝে খেলতে পারে, আরও ভালো দল হয়ে উঠতে পারবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত