‘রান না করলে কী হতে পারে, সেটা লিটন জানে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image
ব্যর্থতার চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছেন লিটন দাস। ছবি: ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ

অফফর্মের বৃত্ত থেকে লিটন দাস বেরিয়ে আসতে পারছেন না কিছুতেই। তিন ওয়ানডে ও দুই টি-টোয়েন্টি-ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চলমান সিরিজে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে পাঁচ ম্যাচের কোনোটিতেই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি লিটন।

প্রথম ম্যাচে গোল্ডেন ডাক মারার পর আজ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ১০ বলে করেন ৩ রান। তবে অফফর্মে থাকা লিটনকে নিয়ে তেমন একটা চিন্তিত নন রাজ্জাক। সিলেটে আজ দুপুরে গণমাধ্যমকে বিসিবি নির্বাচক বলেন, ‘সব সময় রান করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। লিটন নিজেই জানে রান না করলে কী হতে পারে। তবে আমি বিশ্বাস করি, সে দ্রুতই ফর্মে ফিরে আসবে এবং আগের চেয়ে শক্তিশালী হবে।’

ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হলেও অধিনায়ক লিটনের সময়টা ভালো যাচ্ছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচের দুটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। এক ম্যাচ হাতে রেখে এই সিরিজ জয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। বোলিংয়ে যাঁকেই লিটন এনেছেন, তিনিই পেয়েছেন উইকেট। অধিনায়ক লিটনের প্রশংসা করে রাজ্জাক বলেন, ‘দুই ম্যাচে লিটনের নেতৃত্বেই বাংলাদেশ জয় পেয়েছে। তার ম্যাচ পরিচালনার সিদ্ধান্তগুলো খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হিসেবে সে তার দায়িত্ব ভালোভাবেই পালন করছে।’

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ১৩ বলে ২৭ রান করার পর শামীম ঝড় তুলেছেন আজও। সেন্ট ভিনসেন্টে দ্বিতীয় ম্যাচে ১৭ বলে ৩৫ রান করে অপরাজিত থেকেছেন। দুটি ম্যাচেই শামীমের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ পেয়েছে লড়াই করার মতো পুঁজি। ২৪ বছর বয়সী এই মারকুটে ব্যাটারকে নিয়ে রাজ্জাক বলেছেন, ‘শামীমকে আমরা শুরু থেকেই দলে নিয়েছিলাম, কারণ এমন ব্যাটারই আমরা চাইছিলাম। তবে তার ওপর অনেক প্রত্যাশা ছিল, যা তাকে চাপে ফেলেছিল। সেই সময় তার পারফরম্যান্স ভালো হয়নি। কিন্তু এখন সে সেই জায়গায় উন্নতি করেছে। এমন শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে তার পারফরম্যান্স প্রমাণ করে দিচ্ছে, সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য প্রস্তুত।’ রাজ্জাকের মতে শামীম তাঁর উন্নতির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে তাকে ভবিষ্যতে আরও বেশি ম্যাচে দেখা যাবে।

বাংলাদেশের বর্তমান বোলিং আক্রমণকে দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সেরা বলে দাবি করেন আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘আমার ক্রিকেট জীবনের সময়কাল থেকে বলব, আমাদের দল এখন সব থেকে সেরা বোলিং লাইনআপ নিয়ে খেলছে। আগে আমরা স্পিন নির্ভর ছিলাম। কিন্তু এখন সব ধরনের আক্রমণ আমাদের আছে। এমন কি বেঞ্চেও এখন দুর্দান্ত মানের বোলাররা বসে থাকে। পেস বোলিং শক্তিশালী হওয়ায় দলের ভেতরের বন্ধন আরও দৃঢ় হয়েছে।’

ওয়ানডে সিরিজের ব্যর্থতার পেছনে দলের সমন্বয় ভালো না হওয়াটাকে কারণ হিসেবে দেখছেন রাজ্জাক। তবে বোলিং আক্রমণের মান নিয়ে তাঁর কোনো সন্দেহ নেই। তিনি বলেন, ‘ম্যাচের বিভিন্ন সময়ে আমরা মোমেন্টাম পেয়েছিলাম, কিন্তু তা ধরে রাখতে পারিনি। তবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আমরা সেটা ক্লিক করতে পেরেছি। যদি কোনো একটি বিভাগ খারাপ করে, অন্য একটি বিভাগ সেটি কাভার করার চেষ্টা করে। এটাই দলের শক্তিশালী কম্বিনেশন। আজকের ম্যাচে বোলাররা সেটাই করেছে।’

সাকিব আল হাসানের জায়গায় নতুন বাঁহাতি স্পিনার পাওয়া কতটা কঠিন, তা নিয়ে রাজ্জাক বলেন, ‘সাকিব ২০ বছর ধরে যে ধরনের পারফরম্যান্স দিয়ে আসছে, তার জায়গায় কাউকে বসালে সাকিবের মতো ক্রিকেটার পাওয়া খুবই কঠিন। তবে আমি বিশ্বাস করি, আমাদের যেসব ক্রিকেটার লিগে খেলছে, তাদের একটু সময় দিলে তারা সাকিবের জায়গায় পৌঁছাতে পারবে।’ তরুণ স্পিনারদের প্রতি বার্তা দিয়ে রাজ্জাক বলেন, ‘তাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, দায়িত্ব নিতে হবে দলে জায়গা পাওয়ার জন্য। যদি নিজেরা আগে থেকেই চেষ্টা করে, তাহলে অবশ্যই সুযোগ পাবে। আমাদের দলে সেই ধরনের সামর্থ্যবান ক্রিকেটার আছে।’

তাওহিদ হৃদয়ের অভাব জাতীয় দলে অনুভব করছেন কি না—এমন প্রশ্নে রাজ্জাকের উত্তর, ‘যে খেলোয়াড় জাতীয় দলে আছে, সে-ই সেরা। তাওহিদ হৃদয় ফিট থাকলে দলে থাকত। একইভাবে শান্তও। তবে এখন যারা দলে আছে, তারাই আমাদের সেরা ক্রিকেটার। এদের নিয়েই আমরা এগিয়ে যাব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত