শরীফুলের ৫০, শান্তর ৮ রানের আক্ষেপ

ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩: ৫৭
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৪: ৩৯

নিউজিল্যান্ডকে দেশের মাটিতে ওয়ানডেতে ধবলধোলাই করার অভিজ্ঞতা রয়েছে বাংলাদেশের। কিন্তু প্রতিপক্ষের মাঠে এত দিন একটা জয়ও ছিল না। দীর্ঘ ১৬ বছরের অপেক্ষা অবশেষে ফুরিয়েছে আজ নেপিয়ারে কিউইদের ৯ উইকেটে হারিয়ে। 

ইতিহাস গড়া এই জয়ে আরও কিছু মাইলফলক ছুঁয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজের শেষ ও তৃতীয় ওয়ানডেতে শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রতিপক্ষ এবং ক্রিকেটাররাও বেশ কিছু রেকর্ড ও মাইলফলক অর্জন করেছে। চলুন জেনে নেই সেই কীর্তিগুলো কী—

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এর আগে ১৮ ম্যাচ খেলে কখনো জিততে পারেনি বাংলাদেশ। আজ সংখ্যাটি ১৯ করতে দেননি শরীফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব ও সৌম্য সরকাররা। তিন পেসারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রতিপক্ষকে এক শর নিচে অলআউট করেছে বাংলাদেশ। 

৯৮ রানের ইনিংসটি বাংলাদেশের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের সর্বনিম্ন স্কোর। আগের সর্বনিম্ন ছিল ২০১৩ সালে মিরপুরে, ১৬২ রানের। নিজেদের মাঠে দ্বিতীয়বার বাংলাদেশের বিপক্ষে অলআউট হয়েছে তারা। অন্যদিকে সব মিলিয়ে এই সংস্করণে নবমবারের মতো এক শর নিচে অলআউট হয়েছে কিউইরা। 

বাংলাদেশের ১৪ তম বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে ৫০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন শরীফুল ইসলাম। ছবি: এএফপিতৃতীয় প্রতিপক্ষ হিসেবে নিউজিল্যান্ডকে প্রথমবার ওয়ানডেতে এক শর নিচে অলআউট করেছে বাংলাদেশ। আগের দুই শিকার হচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ে। ২০১১ সালে চট্টগ্রামে ক্যারিবিয়ানদের ৬১ রানে অলআউট করেছিল বাংলাদেশ। আর প্রথম প্রতিপক্ষ হিসেবে এই চট্টগ্রামেই ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়েকে ৪৪ রানে অলআউট করেছিল বাংলাদেশ। 

গত মার্চে সিলেটে বিরল এক কীর্তি গড়েছিল বাংলাদেশের পেসাররা। প্রথমবারের মতো কোনো প্রতিপক্ষের ১০ উইকেটই নিয়েছে পেসাররা। সেদিন আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সব কটি উইকেট নেওয়ার পথে ৫ উইকেট নেওয়া হাসান মাহমুদের সঙ্গে তাসকিন আহমেদ ৩টি আর বাকি ২টি ইবাদত হোসেন নিয়েছিলেন। এবার দ্বিতীয়বারের মতো এই কীর্তি গড়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা। আজ ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন তানজিম সাকিব, শরীফুল ও সৌম্য। বাকি উইকেটটি মোস্তাফিজুর রহমানের। 

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়টি বাংলাদেশ পেয়েছে ২০৯ বল হাতে রেখে, যা ওয়ানডেতে তৃতীয় সর্বোচ্চ। আগের দুই সর্বোচ্চ জয় হচ্ছে ২২১ ও ২২৯ বলের। ২০২৩ সালে সিলেটে আয়ারল্যান্ডকে ২২১ বল হাতে রেখে হারানোর আগে ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়েকে হারায় ২২৯ বল বাকি রেখে। 

বাংলাদেশের রেকর্ডের ম্যাচে মাইলফলক ছুঁয়েছেন পেসার শরীফুল। বাংলাদেশের ১৪তম বোলার হিসেবে ৫০ উইকেটের কীর্তি গড়েছেন তিনি। দলের হয়ে তৃতীয় দ্রুততম। কীর্তি গড়তে ৩৩ ম্যাচ লেগেছে বাঁহাতি পেসারের। দ্রুততম মোস্তাফিজ ২৭ ম্যাচে ৫০ উইকেট নিয়েছিলেন। তাঁর আগে ৩২ ম্যাচে রেকর্ডটি গড়েছিলেন আবদুর রাজ্জাক। 

বাংলাদেশের হয়ে কমপক্ষে ৮০০ রান করেছে এমন ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ গড় শান্তর। ছবি: এএফপি নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহটা যদি আরেকটু বড় হতো তাহলে কীর্তিটা গড়তে পারতেন নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু সংগ্রহ কম হওয়ায় বাংলাদেশি অধিনায়কের ৮ রানের আক্ষেপ থেকে গেল। বছরের শেষ ওয়ানডেতে ৫১ রানে অপরাজিত থাকলেও ৯৯২ রানে আটকে যেতে হলো তাঁকে। ৮ রান করতে পারলেই শাহরিয়ার নাফীসের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এক পঞ্জিকাবর্ষে ১ হাজার রানের কীর্তি গড়তেন তিনি। ২০০৬ সালে এই রেকর্ড গড়েছিলেন বাংলাদেশের সাবেক ওপেনার। 

রানে নাফীসের পাশে বসতে না পারলেও তাঁকে এক জায়গায় ছাড়িয়ে গেছেন শান্ত। এক পঞ্জিকাবর্ষে বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে কমপক্ষে ৮০০ রান করা খেলোয়াড়দের মধ্যে বেশি গড় এখন তাঁর। তবে শীর্ষ দুই ব্যাটারের পার্থক্য সামান্যই। শান্তর ৪১.৩৩ গড়ের বিপরীতে নাফীসের ৪১.৩২। 

 ৮ রানের জন্য শান্ত যে কীর্তি গড়তে পারেননি, সেই মাইলফলক ছুঁয়েছেন উইল ইয়াং। নিউজিল্যান্ডের ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে এক পঞ্জিকাবর্ষে ১ হাজার রান পূর্ণ করেছেন তিনি। আজ ২৬ রান করার পথে এই মাইলফলক স্পর্শ করেছেন তিনি। এতে করে রজার টুজ, মার্টিন গাপটিল, রস টেলর, কেইন উইলিয়ামসন ও ড্যারিল মিচেলের পাশে বসার সুযোগ হয়েছে তাঁর। 

ইয়াং নিউজিল্যান্ডের সাবেক ও বর্তমান ব্যাটারদের কীর্তিতে ভাগ বসাতে পারলেও দল হিসেবে কিউইরা অস্ট্রেলিয়ার পাশে বসতে পারেনি। আজ জিতলেই ঘরের মাঠে টানা ১৮ জয় পেত কিউইরা। কিন্তু বাংলাদেশের কাছে ৯ উইকেটের হার অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ড টানা ১৮ জয়ে ভাগ বসাতে দেয়নি। ১৭ ম্যাচে থামতে হলো কিউইদের।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত