আবারও কোপার ফাইনালে আর্জেন্টিনা

ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৪, ০৮: ১৩
আপডেট : ১০ জুলাই ২০২৪, ১৫: ১৭

গ্রুপ পর্বে কানাডাকে হারিয়েই এবারের কোপা আমেরিকায় শিরোপা রক্ষার অভিযান শুরু করে আর্জেন্টিনা। নিউজার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে আজ সেমিফাইনালটা ছিল কানাডার জন্য ‘প্রতিশোধের’ মিশন। এবারও ফলটা গ্রুপ পর্বের মতোই।  কানাডাকে ২-০ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠেছে আর্জেন্টিনা।

নিউজার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামের গ্যালারি আজ ছিল কানায় কানায় পরিপূর্ণ। গ্যালারির যেদিকে চোখ যায়, সেদিকেই ছিল আকাশি-নীলদের ভক্ত-সমর্থকদের সমারোহ। যে লিওনেল মেসিকে নিয়ে শঙ্কা ছিল, তিনি আজ খেলেছেন শুরুর একাদশে। পুরো ৯০ মিনিট খেলেছেন এবং একটি গোলও তিনি করেছেন। ম্যাচের শেষভাগে এসে কানাডা প্রায় গোল দিয়েই গিয়েছিল। তবে এমিলিয়ানো মার্তিনেজ যখন থাকেন, তখন এই ‘দুর্ভেদ্য দেওয়াল’ টপকে গোল করার সাধ্য কার! ৮৯ মিনিটে গোল বাঁচানোর পর মার্তিনেজের মুষ্টিবদ্ধ উদযাপনই যে বলে দেয় সবকিছু।    

শেষ বাঁশি বাজতেই নিশ্চিত হয়ে যায় আর্জেন্টিনার আরও একটি ফাইনালে ওঠা। ২০২১ কোপা আমেরিকা, ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপ, ২০২৪ কোপা আমেরিকা—টানা তিনটি মেজর টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠল আলবিসেলেস্তেরা। ফাইনালে ওঠার আনন্দে তো চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি রদ্রিগো দি পল।  টানা তৃতীয় মোজর শিরোপা জিততে আর্জেন্টিনা মাত্র একটি জয় দূরে। নর্থ ক্যারোলিনায় আগামীকাল উরুগুয়ে-কলম্বিয়ার জয়ী দল শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে খেলবে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। ১৫ জুলাই বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে শুরু হবে কোপা আমেরিকার ফাইনাল।

পরিসংখ্যান অবশ্য বলবে যে সমানে সমানে লড়াই ছিল কানাডা ও আর্জেন্টিনার। ৫১ শতাংশ বল দখল রেখে প্রতিপক্ষের লক্ষ্য বরাবর আর্জেন্টিনা নেয় ৩ শট। কানাডার বল দখলে ছিল ৪৯ শতাংশ। প্রতিপক্ষের লক্ষ্য বরাবর তারা নিয়েছে ২ শট। তবে আর্জেন্টিনার রক্ষণ দেওয়াল এখানে দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছে। কানাডাও বারেবারে তাই খেই হারিয়েছে।

ম্যাচের ৫ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল কানাডা। কাইল লেরিনের অ্যাসিস্টে কানাডার ফরোয়ার্ড জ্যাকব শাফলবার্গ বাঁ পায়ে শট নিলেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি।  ৭ মিনিটে শ্যাফলবার্গ আরও একটি সুযোগ হাতছাড়া করেছেন। ১২ মিনিটে আর্জেন্টিনা এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি। দি মারিয়ার পাস থেকে রিসিভ করা শট বাঁ পায়ে বক্সের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন মেসি। ১৭ মিনিটে হুলিয়ান আলভারেজ গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেছেন।

একের পর এক সুযোগ মিসের মহড়ায় ম্যাচে প্রথম গোলমুখ খোলে আর্জেন্টিনা। ২২ মিনিটে রদ্রিগো ডি পলের থ্রু বল রিসিভ করে ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে কানাডার রক্ষণদুর্গে পৌঁছে যান আলভারেজ। কানাডার গোলরক্ষককে একা পেয়ে দারুণ এক ভলিতে লক্ষ্যভেদ করেন আলভারেজ। ১-০ গোলে যাওয়ার পর আর্জেন্টিনা আরও বেশি মরিয়া হয়ে ওঠে। তবু লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি আলবিসেলেস্তেরা। প্রথমার্ধের শেষভাগে এসে মেসি অনেক সুযোগ হাতছাড়া করেছেন।

একের পর এক সুযোগ নষ্ট করা মেসি দ্বিতীয়ার্ধে দ্রুতই এগিয়ে নেন আর্জেন্টিনাকে। ৫১ মিনিটে কানাডার জটলার মধ্যে সজোরে শট নেন এনজো ফার্নান্দেজ। রক্ষণ দেওয়ালে প্রতিহত হওয়ার পর মেসি বাঁ পায়ের আলতো ছোঁয়ায় লক্ষ্যভেদ করেন।  অফসাইডের আবেদনের পর ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) যাচাই করে গোলের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে। এরপর দুই পক্ষই একে অপরের রক্ষণদুর্গে হানা দিলেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি। ৮৯ মিনিটে কানাডার ফরোয়ার্ড তানু ওলুয়েসি প্রায় গোল করেই ফেলেছিলেন। তবে এমি মার্তিনেজ আর্জেন্টিনাকে রক্ষা করেছেন। ১ মিনিট পরই ওলুয়েসি হেড দিয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। ওলুয়েসি কোনো একবার সফল হলে হয়তো ম্যাচের চিত্র ভিন্ন কিছু হতে পারত। কারণ অতিরিক্ত সময়ের পর ৪ মিনিট খেলা হয়েছিল। ৬৪ মিনিটে জোনাথন ডেভিডের বদলি হিসেবে নামেন ওলুয়েসি।

আর্জেন্টিনার চেয়ে অবশ্য কানাডা শরীরনির্ভর ফুটবল তুলনামূলক বেশি খেলেছে। কানাডা ফাউল করেছে ১৫টি ও আর্জেন্টিনা ৫টি। আলবিসেলেস্তেদের একমাত্র হলুদ কার্ড দেখেন নাহুয়েল মলিনা। কানাডা দেখেছে চারটি হলুদ কার্ড। যার মধ্যে ৬৩ মিনিটে কানাডার মিডফিল্ডার স্টিফেন ইউস্তাকিও দেখেন হলুদ কার্ড। ডি পলকে ফাউল করে রেফারির সঙ্গে তর্কেও জড়ান ইউস্তাকিও।

 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত