বাংলাদেশ নারী ফুটবল লিগের দলবদল নিয়ে হেলদোলই নেই দলগুলোর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২: ১৬
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২: ৩২

বাংলাদেশ নারী ফুটবল লিগের ষষ্ঠ আসর শুরু হওয়ার কথা আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। টুর্নামেন্টের দলবদল শুরু হয়েছে ৮ ফেব্রুয়ারি। শেষ হবে আগামী ৪ মার্চ। 

দলবদল শুরু হলেও আড়মোড়া ভাঙেনি নারী লিগের নিবন্ধন করা দলগুলোর। এক সপ্তাহেও ক্লাবগুলো এখনো পর্যন্ত দলের কাঠামো আর ফুটবলার নেওয়ার পরিকল্পনা গুছিয়ে উঠতে পারেনি। এতে জাতীয় দলের ফুটবলাররা আছেন দুশ্চিন্তায়। কোন দলে খেলবেন, কেমন হবে পারিশ্রমিক, সেটাও এখনো পর্যন্ত অজানা তাঁদের। 

পারিবারিক কারণে ইন্ডিয়ান ওমেনস লিগের দল কিক স্টার্ট ছেড়ে দেশে ফিরে এসেছেন জাতীয় নারী দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। এখন পর্যন্ত কোনো দল থেকে খেলার প্রস্তাব পাননি বলে জানালেন সাবিনা। পারিবারিক কারণে কিক স্টার্টে আপাতত আর যাওয়া হবে না তাঁর। ইস্ট বেঙ্গলের হয়ে খেলা সানজিদা আক্তারও ভারত থেকে জানালেন, এখনো কোনো কল পাননি তিনি। জাতীয় দলের সহ-অধিনায়ক মারিয়া মান্দা বললেন, ‘শুনেছি দলবদল শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো ক্লাব যোগাযোগ করেনি। এখনো সময় আছে, হয়তো সামনে করবে। দেখা যাক কী হয়।’ 

অথচ আগের তিন মৌসুমের দৃশ্য ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। দলবদল শুরুর আগেই জাতীয় দলের অধিকাংশ ফুটবলারের নিজেদের করে রেখেছিল হ্যাটট্রিক লিগ শিরোপা জেতা বসুন্ধরা কিংস। তাঁদের পারিশ্রমিক আর ক্যাম্প, বোনাসসহ অন্য সুযোগ-সুবিধাও ছিল অন্য সব দলের চেয়ে ভালো। গতবারের লিগে বসুন্ধরা থেকে ৫ থেকে ৮ লাখ টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন সাবিনা-সানজিদারা। এবার নিজেদের পারিশ্রমিক বাড়ানো নিয়ে নারী ফুটবলাররা ‘সিন্ডিকেট’ করছেন, এমন অভিযোগ থেকে অভিমানে এবার আর দলই গড়েনি বসুন্ধরা। 

বসুন্ধরা না থাকায় বাকি দলগুলোর জন্য জাতীয় দলের ফুটবলাররা এখন উন্মুক্ত। এই ফুটবলাররা এখন আশায় থাকতে পারেন যে ক্লাবের দিকে, সেই আতাউর রহমান ভূঁইয়া কলেজ (এআরবিসি) স্পোর্টস ক্লাব খুব বেশি আগ্রহী নয় জাতীয় দলের ফুটবলারদের নিয়ে। বয়সভিত্তিক ফুটবলারদের নিয়ে সবশেষ দুই আসরে রানার্সআপ হয়েছে এআরবিসি। আগের বার দলের ২০ জনের সঙ্গে জাতীয় দল থেকে মাত্র পাঁচ ফুটবলারকে চান—এটাই জানালেন দলটির সহসভাপতি সোহেল খন্দকার। অনূর্ধ্ব-১৯ সাফজয়ী অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার, অনূর্ধ্ব-২০ সাফজয়ী আকলিমা, উন্নতি খাতুন, শাহেদা আক্তার রিপাদের মতো খেলোয়াড় থাকায় জাতীয় দলের ফুটবলার নিয়ে তেমন আগ্রহী নয় এআরবিসি। 

এআরবিসির সঙ্গে এবারের নারী লিগে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে জাতীয় দলের সাবেক কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নারী দলের। সেনাবাহিনীর নিজস্ব দল থাকায় সেই দলে জাতীয় দলের ফুটবলারদের সুযোগ নেই বললেই চলে। ঢাকার দলগুলোর মধ্যে ফরাশগঞ্জ ও উত্তরা ফুটবল ক্লাব ভালো দল গড়তে পারে, এমনটা শোনা গেলেও দুই দলকে নিয়ে ফুটবলারদের তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে। জাতীয় দলের সঙ্গে থাকা এক কোচ বললেন, ‘জাতীয় দলের বাইরে থাকা ফুটবলারদের কয়েকজন গত বছর উত্তরায় খেলেছিল। এদের খেতে দেওয়া হয়েছিল ভাত, ডাল আর আলুভর্তা! এটা কি ফুটবলারদের জন্য উপযুক্ত খাবার? ফরাশগঞ্জ খেলোয়াড় নেবে বলে আর শেষ পর্যন্ত নেয় না। পারিশ্রমিক খুবই কম। এসব ক্লাবে এক দিনও অনুশীলন হয় কি না আমার সন্দেহ। এসব ক্লাবে খেললে খেলোয়াড়েরা হতাশ হয়ে পড়ে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত