Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

বাংলাদেশ হকিতে জিমির বিকল্প অনেকেই আছে

বাংলাদেশ হকি দলের কোচ আ ন ম মামুন উর রশিদ। ছবি: সংগৃহীত

আগামী এপ্রিলে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় হবে এশিয়ান হকি ফেডারেশন (এএইচএফ) কাপ। তা সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচের পদে ফিরিয়ে আনা হয়েছে আ ন ম মামুন উর রশিদকে। আজকের পত্রিকার সঙ্গে নিজের লক্ষ্য ও হকির সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আনোয়ার সোহাগ

আনোয়ার সোহাগ, ঢাকা

প্রশ্ন: ৯ বছর পর কোচ হিসেবে জাতীয় দলে ফিরতে পেরে কেমন লাগছে?

আ ন ম মামুন উর রশিদ: জাতীয় দলে কাজ করাটা সম্মান ও গৌরবের বিষয়ে। ২০১৫ সালে জাতীয় দলে কাজ করার পর চার বছর বিভিন্ন পর্যায়ে কোচিং করিয়েছি। জাতীয় দলে এখন ফিরে এসে ভালোই লাগছে। শুধু এএইচএফ কাপের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

প্রশ্ন: এএইচএফ কাপে গত চার আসরের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। দুই মাস আপনার জন্য কম সময় হয়ে গেল না?

মামুন: আসলে ফেডারেশনও দেখতে চাচ্ছে, কোচ হিসেবে আমি কেমন পারফর্ম করি। পেশাদারত্বের দিক থেকে যদি দেখি, কোচের জবাবদিহি বা পারফরম্যান্সেরও একটা বিষয় থাকে। এটা চ্যালেঞ্জ আমার জন্য। আগে যারা কাজ করেছে, তারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমি যদি চ্যাম্পিয়ন হতে না পারি, তাহলে এটা আমার ব্যর্থতা। আশা করি, ভালো রেজাল্ট আনব। তখন হয়তো ওনারা ভবিষ্যতের জন্য চিন্তা করবে।

প্রশ্ন: সার্চ কমিটি আপনাকে ডাকার পর হকি অঙ্গনে অসন্তোষ দেখা গিয়েছিল। কারণ কী?

মামুন: আমার কোনো মন্তব্য নেই। এটা যারা করেছে, তারা বলতে পারবে। আমি দেখেছি, আমাকে কেন ডেকেছে, এ নিয়ে অনেকে মন্তব্য করেছে। কিন্তু আমি তো স্বপ্রণোদিত হয়ে যাইনি। সার্চ কমিটি ডাকায় গিয়েছি।

প্রশ্ন: ফেডারেশনের কাছে আপনার পরিকল্পনাগুলো কী ছিল?

মামুন: জাতীয় দলের ম্যাচগুলো আমি নিয়মিত দেখি, বিভিন্ন অ্যানালিসিস করি। খেলোয়াড়দের সম্পর্কে আমার ধারণা আছে। সেটা বিচার করেই আমি হকির ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরেছি। ফেডারেশনের কী চাওয়া থাকতে পারে, সেটাও জানতে চেয়েছি। খেলোয়াড়দের ইনডিভিজুয়াল প্রোফাইল করা উচিত, ফিডব্যাক দেওয়া উচিত, মোটিভেশনাল কাজ করা উচিত। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ আরও ভালো কী করতে পারে, এই জিনিসটা আমরা তাদের দেখিয়েছি।

প্রশ্ন: ইতিবাচক-নেতিবাচক দিকগুলো আসলে কোথায়?

মামুন: ইতিবাচক দিক হলো, আমাদের খেলোয়াড়েরা খুবই প্রতিভাবান। তাদের কোনো ঘাটতি দেখি না। তবে তাদের ম্যাচ এক্সপোজার কম। তারা খুব বেশি ম্যাচ খেলে না। একটা টুর্নামেন্ট যখন হয়, তখন একটি ক্যাম্প হয়। সেই ক্যাম্প থেকেই সরাসরি খেলতে যায়। এটা একটা নেতিবাচক দিক। ক্যাম্পভিত্তিক জাতীয় দল না করে, ক্যাম্পের পেছনে যে খরচ হয়, তা দিয়ে কিন্তু আমরা বাইরে কিছু ম্যাচ খেলতে পারি। এক মাস ক্যাম্প করার চেয়ে ম্যাচ খেলা ডাবল বেনিফিটের।

প্রশ্ন: জাতীয় দলে আপনার আসা-যাওয়ার মাঝে লম্বা সময় কেটে গেছে। এই সময়ে হকিতে ঠিক কতটা বদল এসেছে?

মামুন: এই ৯ বছরে আগের চেয়ে অনেক ভালো মানের খেলোয়াড় এসেছে। হকিতে খুব ভালো একটা সময় যাচ্ছে। জুনিয়ররা বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। এটা কিন্তু সিনিয়রদের কাছে অনুপ্রেরণা হতে পারে। সব খেলোয়াড়ই প্রতিভাবান। তারা মন থেকে চায় ভালো ফল করার জন্য। সে ক্ষেত্রে আমি বলব, খেলোয়াড়দের মানসিক ও শারীরিক প্রস্তুতি আগের চেয়ে বেশ ভালো। তবে হ্যাঁ, হকি নিয়মিত মাঠে ছিল না। এটা সাংগঠনিক সমস্যা।দুই বছর আগে কিন্তু ফ্র‍্যাঞ্চাইজি লিগ হয়েছিল, তারপর আর হয়নি। ওটা কিন্তু একটা বড় প্ল্যাটফর্ম। বছরে রেগুলার একটা লিগ ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফি মিলিয়ে যদি ৫-৬টা টুর্নামেন্ট করা যায়, তাহলে খেলোয়াড়েরা খুশি থাকে। কারণ, তাদের রুটি-রুজিরও একটা ব্যবস্থা হয় এবং খেলারও স্পৃহা আসে।

প্রশ্ন: দলের ভেতর সিন্ডিকেট নিয়ে আগেও কথা উঠেছে। তা আপনার চোখে পড়েছে?

মামুন: আমি দলে গ্রুপিংকে কখনোই প্রশ্রয় দিই না। আমি ডিসিপ্লিনে বিশ্বাসী। জুনিয়র হোক বা সিনিয়র খেলোয়াড়—তাকে নীতি অনুযায়ী চলতে হবে। ফেডারেশন থেকে খেলোয়াড়দের একটা গাইডলাইন দেওয়া হবে। সেটা আমার জন্য ভালো হবে। এতে করে খেলোয়াড়েরা টিমের প্রতি ফোকাস থাকবে।

প্রশ্ন: হকির অন্যতম বড় তারকা বলা হয় রাসেল মাহমুদ জিমিকে। এএইচএফ কাপের ফিটনেস ক্যাম্পে তাঁকে না ডাকার পেছনে কারণ কী?

মামুন: এটা ফেডারেশনের সিদ্ধান্ত। যেহেতু আমি ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। তাই এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না। ৬২ জনের তালিকাটা ফেডারেশন থেকে হয়েছে। আমার যে কোচিং দর্শন, সেখানে ইনডিভিজুয়াল খেলোয়াড়ের কোনো গুরুত্ব নেই। এখানে নির্দিষ্ট কোনো খেলোয়াড়কে গুরুত্ব দিলে বাকি খেলোয়াড়দের ওপর প্রভাব পড়ে, দলের ভেতর একটা বৈষম্য তৈরি হয়। টিম ইউনিটিকে আমি বেশি গুরুত্ব দিই।

প্রশ্ন: জিমি না থাকায় দলে শূন্যতা তৈরি হবে?

মামুন: আমি তা মনে করি না। জিমির বিকল্প এরই মধ্যে তৈরি হয়েছে। এক-দুজন নয়, অনেকে আছে তার জায়গা পূরণের জন্য। হকি দলীয় খেলা, যে কেউ যেকোনো পজিশনে খেলতে পারে। আমি একজন সাবেক মিডফিল্ডার বা ফরোয়ার্ড হিসেবে অনেক খেলোয়াড়কে দেখি, যারা ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে। কোনো নির্দিষ্ট খেলোয়াড় না থাকলে দলে ব্যাঘাত ঘটবে, তা আমি বিশ্বাস করি না।

প্রশ্ন: হকির সঙ্গে বিশৃঙ্খলা শব্দটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তা হকিকে কতটুকু পিছিয়ে দিয়েছে?

মামুন: অনেক। হকিতে যে নেতিবাচক জিনিসগুলো হয়, এটার বিভিন্ন কারণ আছে। যারা বিভিন্ন ক্লাবের সঙ্গে থাকে, তারাই কিন্তু ফেডারেশনের সঙ্গে জড়িত। দিনশেষে ক্লাবের লোকগুলো ফেডারেশনে গেলে ক্লাবের স্বার্থ দেখে। এখানে স্বার্থের সংঘাত ঘটে। এখানে পরিবর্তন আনা উচিত। ফেডারেশনে ক্লাবের লোকই থাকবে, কিন্তু কাজের ধারা এমনভাবে তৈরি করা উচিত, যেন স্বার্থের সংঘাত না ঘটে। ফেডারেশনের এদিকে নজর দেওয়া উচিত।

প্রশ্ন: হকিকে নিয়মিত মাঠে রাখতে কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত?

মামুন: অন্তর্বর্তী সরকার অ্যাডহক কমিটি দিয়েছে। তারা একটা গঠনতন্ত্র তৈরি করছে। ফেডারেশনকে সরকারের জবাবদিহির আওতায় আনতে হলে গঠনতন্ত্রের ভেতরে ফ্র‍্যাঞ্চাইজি লিগ, প্রিমিয়ার লিগ, ফার্স্ট ডিভিশনসহ আরও কিছু টুর্নামেন্ট রাখতে হবে। এগুলো করতেই হবে, না হলে অনুদান কেটে দেওয়া উচিত। তাহলে কিন্তু ফেডারেশন বাধ্য টুর্নামেন্টগুলো করতে।

প্রশ্ন: সম্প্রতি জুনিয়র হকি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ...

মামুন: বাংলাদেশের জন্য এটা একটা মাইলফলক। এদেরকে এখনই প্রিপারেশনে নেওয়া উচিত। তাদের ইউরোপে খেলানো উচিত। বিশ্বকাপে সব মহাদেশ থেকেই দল আসবে। গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গে কোন কোন দল পড়বে, আমরা জানি না। দলটার প্রতি এখনই ফোকাস দেওয়া উচিত। যেহেতু একটা সুযোগ এসেছে বিশ্বমঞ্চে পারফর্ম করার। এই ছেলেগুলো খুবই প্রতিভাবান। আমার ক্যাম্পে তারা প্রায় সবাই আছে। দলে জায়গা পেতে হলে তাদের সিনিয়র খেলোয়াড়দের চ্যালেঞ্জ জানাতে হবে। তাদের বলেছি, তোমরা পারফর্ম করো, তোমাদের ফ্রিডম আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকে মাথায় গুলি

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কিনেছিলেন গ্রেপ্তার নাইম

তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে: নূরুল কবীর

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শুরুটা দারুণ হলেও শেষটা বাজে তাসকিনের

ক্রীড়া ডেস্ক    
৪ ওভারে ৪১ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। ছবি: ফেসবুক
৪ ওভারে ৪১ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। ছবি: ফেসবুক

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইএল টি-টোয়েন্টিতে শারজা ওয়ারিয়র্সের একাদশে তাসকিন আহমেদ নিয়মিতই খেলছেন। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্রেকথ্রু এনে দিচ্ছেন। তবে নিয়মিত উইকেট পেলেও মুক্তহস্তে রান বিলিয়ে দিচ্ছেন বাংলাদেশের এই অভিজ্ঞ পেসার। আজ আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে ডেথ ওভারে বেধড়ক পিটুনি খেয়েছেন তাসকিন।

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পরশু ডেজার্ট ভাইপার্সের বিপক্ষে ৪ ওভারে ২০ রানে ২ উইকেট নিয়েছিলেন তাসকিন। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ২০০তম ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিংয়ের পরও ব্যাটারদের ব্যর্থতায় সেই ম্যাচটায় তিনি ছিলেন পরাজিত দলের সদস্য। এক দিন পর আজ আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে আবুধাবি নাইট রাইডার্সের মুখোমুখি হয়েছে তাসকিনের শারজা ওয়ারিয়র্স। বাংলাদেশের অভিজ্ঞ এই পেসার ৪ ওভারে ৪১ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। যার মধ্যে ১৯তম ওভারে তিনি দিয়েছেন ২৫ রান।

টস জিতে আগে ব্যাটিং নেওয়া আবুধাবি নাইট রাইডার্স ৩.৫ ওভারে ৪ উইকেটে ১০ রানে পরিণত হয়। এই চার উইকেটের দুটিই নিয়েছেন তাসকিন। প্রথম ওভারের শেষ বলে তাসকিনের শর্ট বলে পুল করতে যান আবুধাবি ওপেনার জেসন রয়। আকাশে ভেসে থাকা বল ধরতে আদিল রশিদ শর্ট কাভার এলাকায় দৌড়াতে থাকেন আদিল রশিদ। একই সময় তাঁরই আরেক সতীর্থ এক্সটা কাভার বরাবর আসতে থাকেন। তবে আদিল রশিদ বলের দিকে মনোযোগ রেখে ক্যাচটা ধরেন দারুণভাবে। ৬ বলে ১ চারে ৪ রান করেন সল্ট।

এক ওভার বিরতিতে ফের তাসকিনকে বোলিংয়ে আনেন শারজা ওয়ারিয়র্সের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। তৃতীয় ওভারের পঞ্চম বলে নাইট রাইডার্সের আরেক ওপেনার অ্যালেক্স হেলসকে (৫) ফেরান তাসকিন। পাওয়ার প্লের (প্রথম ৬ ওভার) মধ্যে তিন ওভারই করেন তাসকিন। এই সময়ে ১৬ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। তবে ১৯তম ওভারে বোলিংয়ে এসে গুবলেট পাকিয়ে ফেলেন বাংলাদেশের এই অভিজ্ঞ পেসার। আন্দ্রে রাসেল ও জেসন হোল্ডারের কাছে দুটি করে ছক্কা হজম করেছেন তাসকিন। ১০.২৫ ইকোনমিতে ৪ ওভারে ৪১ রানের বোলিংয়ে শেষ করেছেন তাসকিন।

শুরুর ধাক্কা সামলে আবুধাবি নাইট রাইডার্স নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৪ রানে শেষ করেছে। ইনিংস সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন শারফেন রাদারফোর্ড। শারজার আদিল রশিদ ৪ ওভারে ১৮ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন তাসকিন ও ওয়াসিম আকরাম। ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস, সিকান্দার রাজা পেয়েছেন একটি করে উইকেট। রাজা ৪ ওভারে খরচ করেন ১৭ রান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকে মাথায় গুলি

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কিনেছিলেন গ্রেপ্তার নাইম

তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে: নূরুল কবীর

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চুরির আগে চোর ধরার উপায় বের করেছে বিসিবি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফিক্সিং ঠেকাতে অভিনব কায়দা বের করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ছবি: বিসিবি
ফিক্সিং ঠেকাতে অভিনব কায়দা বের করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ছবি: বিসিবি

বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিক্সিংয়ের ঘটনা একেবারে নতুন নয়। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল), বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ফিক্সিংকাণ্ডে অনেকবার নেতিবাচক খবরের শিরোনাম হয়। পাশাপাশি পারিশ্রমিক ইস্যু সংক্রান্ত জটিলতা তো রয়েছেই। এবারের বিপিএলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঠেকাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) আঁটঘাঁট বেঁধে নেমেছে।

৩০ নভেম্বর ১২তম বিপিএল নিলামের আগেই উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। এনামুল হক বিজয়সহ পাঁচ ক্রিকেটারকে রেড ফ্ল্যাগের আওতাভুক্ত করা হয়। এর পরপরই সামাজিক মাধ্যমে একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করতে থাকেন তিনি। এবারের বিপিএলে ফিক্সিং ঠেকাতে আইসিসি, বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগের পাশাপাশি অপরাধ তদন্ত বিভাগও (সিআইডি) থাকছে। সিআইডি কী করবে, সেই ব্যাখ্যায় আজ সংবাদমাধ্যমকে বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, ‘সিআইডি পর্যবেক্ষণ করবে। মনে করুন চোর আসবে। তাকে তো চুরি করার আগে থামাতে হবে। গোটা বিশ্বে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়, আমরা সেটাই অনুসরণ করছি।’

বিপিএল ইতিহাসে ২০২৫ সালে আয়োজিত বিপিএল যেন ফিক্সিংয়ের কালো থাবায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। এবার দুর্নীতি দমনে বিসিবি অ্যালেক্স মার্শালকে যুক্ত করেছে, যিনি আইসিসিতে দীর্ঘ সময় কাজ করেছেন সফলভাবে। ১১ ডিসেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানিয়েছেন ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িতদের পাকড়াও করার প্রক্রিয়া। বিপিএলে ফিক্সিং ঠেকানোর ব্যাপারে আজ মিঠু উল্লেখ করেছেন মার্শালের কথা। বিসিবি আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, ‘অ্যালেক্স মার্শাল এই ব্যাপারে (ফিক্সিং ঠেকানো) আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করতে হবে। তাঁর দেখানো গাইডলাইন মেনে চলতে হবে। আমাদের যে পিএমও (প্লেয়ার্স অ্যান্ড ম্যাচ অফিশিয়ালস) অ্যাকসেস, এটা অনেক সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। ২৫টা যাচাই-বাচাইয়ের পর অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দেওয়া হচ্ছে ২৫টা।’

সিআইডির সঙ্গে আগামীকাল বিসিবি এক সভায় বসবে বলে জানিয়েছেন মিঠু। সাংবাদিকদের আজ বিসিবির এই পরিচালক বলেন,

‘দুর্নীতি দমন বলেন, ইন্টেগ্রিটি ইউনিট বলেন, তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আপনারা জানেন যে আমরা আইসিসি থেকেও দুর্নীতি দমন বিরোধী কর্মকর্তাদের নিয়ে আনছি। আমাদের ইউনিটের পাশাপাশি আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিটও থাকবে। এছাড়া কাল সিআইডির সঙ্গে একটা বড় মিটিং রয়েছে।’

বিসিবি ২৯ নভেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, বিসিবির দুর্নীতি দমন ইউনিটের পরামর্শক অ্যালেক্স মার্শালের পরামর্শ অনুযায়ী ফিক্সিংয়ের অভিযোগ ওঠা ক্রিকেটারদের নিলামে রাখা হবে না। মজার ব্যাপার, এ সিদ্ধান্ত ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্য ইভেন্টে প্রযোজ্য হবে না বলে জানিয়েছিল বিসিবি। এনামুল হক বিজয়, সাঞ্জামুল ইসলাম, শফিউল ইসলাম, আলাউদ্দিন বাবু, মিজানুর রহমান, নিহাদুজ্জামান-তাঁদের নাম উঠে গিয়েছিল রেড ফ্ল্যাগে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকে মাথায় গুলি

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কিনেছিলেন গ্রেপ্তার নাইম

তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে: নূরুল কবীর

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাংলাদেশে অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটার দেখেছি, রংপুর কোচ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এবারের বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের প্রধান কোচ মিকি আর্থার। ছবি: সংগৃহীত
এবারের বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের প্রধান কোচ মিকি আর্থার। ছবি: সংগৃহীত

গতির সঙ্গে বাউন্সারে ব্যাটারদের ভড়কে দিতে ওস্তাদ নাহিদ রানা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন ইয়ান বিশপ, ইরফান পাঠানের মতো ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের। ঘরোয়া ক্রিকেটেও তিনি দুর্দান্ত খেলছেন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) এবার এই তারকা পেসার খেলবেন রংপুর রাইডার্সের হয়ে।

এবারের বিপিএল নিলামে রানাকে ৫৬ লাখ টাকায় কিনেছে রংপুর রাইডার্স। একই ফ্র্যাঞ্চাইজি তাঁর (রানা) চেয়ে বেশি দামে লিটন দাস, তাওহীদ হৃদয়দের বেশি দামে নিয়েছে রংপুর। ৯২ লাখ টাকায় তাওহীদ হৃদয়কে নিয়েছে রংপুর। এবারের বিপিএল ইতিহাসে এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। একই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিটনকে কিনেছে ৭০ লাখ টাকায়। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক।

২০২৬ বিপিএল সামনে রেখে এরই মধ্যে দলগুলো অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে। আজ বসুন্ধরা ক্রিকেট মাঠে রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে রংপুর রাইডার্স ৫ উইকেটে হেরেছে। প্রস্তুতি ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের রংপুর রাইডার্সের প্রধান কোচ বলেন, ‘আমি অনেক প্রতিভাবান তরুণ ক্রিকেটার দেখেছি। প্রতি বছর এসে নতুন অনেক প্রতিভা দেখি। দারুণ একটা ব্যাপার। এখানে সত্যিই অনেক ভালো ক্রিকেটার আছে।’

ছয় দলের মধ্যে তুলনামূলক শক্তিশালী দল গড়েছে রংপুর রাইডার্স। রানা, লিটন, হৃদয়দের পাশাপাশি মোস্তাফিজুর রহমান, আলিস আল ইসলাম, রাকিবুল হাসানদের মতো তারকা স্থানীয় তারকা ক্রিকেটার রয়েছেন এই দলে। মোস্তাফিজ এই মুহূর্তে আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক লিগ টি-টোয়েন্টিতে দুর্দান্ত খেলছেন। খাজা নাফে, সুফিয়ান মুকিমের মতো বিদেশি তারকারাও খেলবেন রংপুরের হয়ে।

তারকায় ঠাসা রংপুরের একাদশ বেছে নেওয়া কঠিন বলে মানছেন আর্থার। তবে নামের চেয়ে পারফরম্যান্সকেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন রংপুর রাইডার্সের প্রধান কোচ, ‘আমরা খুব ভালো একটা দল বেছে নিয়েছি। আমাদের দলের যে গভীরতা, সেটা অসাধারণ। একাদশ বেছে নেওয়া কঠিন হবে। আমার কাছে নামের চেয়ে পারফরম্যান্সই আসল।’

প্রথমবারের মতো বিপিএলে অংশ নিতে যাওয়া নোয়াখালীতে আছেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, জাকের আলী অনিকের মতো ক্রিকেটাররা। আফগানিস্তানের বিস্ফোরক ওপেনার সেদিকউল্লাহ আতালকেও দলে নিয়েছে নোয়াখালী। গতকাল পূর্বাচল ক্রিকেট একাডেমিতে অনুশীলন করেছে নোয়াখালী। অনুশীলন শেষে সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রাণবন্ত হাসান মাহমুদকে দেখা গেছে। তাঁর মতে, নিজেকে প্রমাণ করতে স্থানীয় ক্রিকেটারদের জন্য বিপিএল উপযুক্ত মঞ্চ।

একাদশে ৬ বিদেশি নিয়ে একাদশ সাজালে কেমন হতো—বসুন্ধরা ক্রিকেট মাঠে আজ প্রস্তুতি ম্যাচ শেষে জিজ্ঞেস করা হয়েছে এমন প্রশ্ন। মজার ছলে করা এই প্রশ্নের উত্তরে আর্থার বলেন, ‘আমরা মাত্র চার বিদেশি খেলাতে পারি একাদশে। ছয় বিদেশি ক্রিকেটার খেলাতে গেলে অনেক বড় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিদেশিদের পাশাপাশি দেশিরাও পারফর্ম করবে বলে আশা করছি। দারুণ পারফরম্যান্সে ম্যাচ জেতাটাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকে মাথায় গুলি

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কিনেছিলেন গ্রেপ্তার নাইম

তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে: নূরুল কবীর

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘নোয়াখালী বিভাগ হলে খুব ভালো হবে’

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এবারের বিপিএলে নোয়াখালী এক্সপ্রেসের হয়ে খেলবেন হাসান মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত
এবারের বিপিএলে নোয়াখালী এক্সপ্রেসের হয়ে খেলবেন হাসান মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

২০২৬ বিপিএল দিয়েই প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করছে নোয়াখালী এক্সপ্রেস। আজ পূর্বাচল একাডেমিতে দলটি অনুশীলন করেছে। অনুশীলন পর্ব শেষে সংবাদমাধ্যমের সামনে দেখা গেছে প্রাণবন্ত এক হাসান মাহমুদকে। সাংবাদিকদের সঙ্গে জমে ওঠে তাঁর খুনসুটি।

পূর্বাচল ক্রিকেট একাডেমিতে অনুশীলন পর্ব শেষে হাসান মাহমুদের কাছে এসেছে সেই আলোচিত ‘নোয়াখালী বিভাগ চাই’ প্রসঙ্গ। সামাজিক মাধ্যমে গত কয়েক বছরে এটা একটা ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। এমন প্রসঙ্গ এলে হাসান উত্তরে বলেছেন, ‘এটা আসলে আমি জানি না।’ উত্তর দিতে গিয়ে তিনি যেমন হেসেছেন, উপস্থিত সাংবাদিকেরাও হেসে দিয়েছেন তাঁর উত্তর শুনে। পরক্ষণেই ২৬ বছর বয়সী বাংলাদেশের এই পেসার বলেন, ‘নোয়াখালী বিভাগ হলে খুব ভালো হবে।’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হাসান মাহমুদ খেলছেন পাঁচ বছর ধরে। বাংলাদেশের জার্সিতে ১৩ টেস্ট, ২৬ ওয়ানডে ও ২৬ টি-টোয়েন্টি খেলা হাসানের বেড়ে ওঠা লক্ষ্মীপুরে। তিনি এবার খেলবেন তাঁর প্রতিবেশী জেলা নোয়াখালী এক্সপ্রেসের হয়ে। বিপিএলে প্রথমবার অংশগ্রহণ করতে যাওয়ার উদ্যোগ দেখে নোয়াখালী ফ্র্যাঞ্চাইজিকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন হাসান। ২৬ বছর বয়সী এই পেসার আজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘লক্ষ্মীপুরবাসীদের মধ্যে যারা নোয়াখালীর সঙ্গে সম্পর্কিত, তারা খুবই আনন্দিত। এখন শক্তি আরও একটু বেড়েছে। আমার কাছে খুবই ভালো লাগছে। বিপিএলে দল করার এমন একটা উদ্যোগ নিয়েছে নোয়াখালী। সুযোগ পেয়ে খুবই খুশি আমি।’

প্রথমবারের মতো বিপিএলে অংশ নিতে যাওয়া নোয়াখালীতে আছেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, জাকের আলী অনিকের মতো ক্রিকেটাররা। হাসানের কাছে নিজেকে প্রমাণ করতে স্থানীয় ক্রিকেটারদের জন্য বিপিএল উপযুক্ত মঞ্চ। ২৬ বছর বয়সী এই পেসার আজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের স্থানীয় ক্রিকেটাররা খুবই অভিজ্ঞ। অঙ্কন, জাকের আছে। তারপর আমাদের সাব্বির ভাই, অপু ভাইয়ের পাশাপাশি আরও তরুণ ক্রিকেটার আছে। তারা বেশ অভিজ্ঞ। গত কয়েক বছর ধরে বিপিএল খেলছে। নিজেকে প্রমাণ করার জন্য এটা ভালো মঞ্চ। নিজেকে ভালো একটা জায়গায় নেওয়ার চেষ্টা করছি বিপিএলে। অবশ্যই আমার বিশ্বকাপে খেলার জন্য জায়গা হবে ইনশাআল্লাহ।’

২৬ ডিসেম্বর থেকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত হবে ১২তম বিপিএল। শুরুটা হবে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে। শেষটা হবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। বিপিএল শেষেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে লিটন দাস-তানজিদ হাসান তামিমদের। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত ভারত-শ্রীলঙ্কায় যৌথভাবে হবে দশম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আইসিসির এই ইভেন্ট শুরুর প্রথম দিনই ম্যাচ রয়েছে বাংলাদেশের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাকে মাথায় গুলি

বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: লুটের টাকায় টিভি-ফ্রিজ কিনেছিলেন গ্রেপ্তার নাইম

তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় পুড়িয়ে মারতে চেয়েছে: নূরুল কবীর

মনোনয়নপত্র কিনে ভুল করেছি, জমা দেব না: কুমিল্লার সাবেক মেয়র সাক্কু

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত