Ajker Patrika

ক্রিপ্টো রাজার জালিয়াতে নিমেষেই গায়েব ২১ লাখ ডলার

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২১: ০০
ক্রিপ্টো রাজার জালিয়াতে নিমেষেই গায়েব ২১ লাখ ডলার

ক্রিপ্টোর রাজার সাম্রাজ্যে যখন ধস নামে, তখনো সুনীল কাভুরি শান্ত ছিলেন। মনে মনে ভেবেছিলেন, সব ঠিক হয়ে যাবে। কারণ, ক্রিপ্টোর রাজাও সবাইকে আশ্বস্ত করেছিলেন, এই সমস্যার সমাধান খুব দ্রুতই হবে। কিন্তু কিছুদিন পরই স্যাম ব্যাংকম্যানকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর বছরের পর বছরের ধরে তৈরি সুনীলের সফল বাণিজ্য এক ধাক্কায় শেষ হয়ে যায়, নিমেষেই গায়েব হয়ে যায় তাঁর ২১ লাখ ডলার ।

কাভুরি যুক্তরাজ্যের পূর্ব মিডল্যান্ডে থাকেন। বাড়ি তৈরি ও ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর জন্য তিনি টাকা জমাচ্ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, ‘ক্রিপ্টোর রাজা’ খ্যাত স্যাম ব্যাংকম্যান-ফ্রাইডের জালিয়াত কোম্পানি এফটিএক্স পতনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন সুনীল।

এফটিএক্স ছিল ক্রিপ্টো কারেন্সির এক্সচেঞ্জ। বিটকয়েনের মত অর্থের বদলে এখানে ডিজিটাল বা ক্রিপ্টো কয়েন জমা হত। এফটিএক্সকে নিয়ে প্রচারণা চালানো হয়। সুনীল ২১ লাখ ডলারের ক্রিপ্টো কয়েন কেনেন। 

জালিয়াতির অভিযোগে স্যাম ব্যাংকম্যান-ফ্রাইড বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন। তাঁর কোম্পানির পতনে যুক্তরাজ্যের নাগরিক সুনীল কাভুরির ভাগ্য কীভাবে দুর্ভাগ্যে পরিণত হয় তা বিবিসির এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।

স্যাম ব্যাংকম্যান-ফ্রাইডের গ্রেপ্তারের সময়কার মুহূর্ত তুলে ধরে সুনীল বলেন, তিনি ২৪ ঘণ্টা ধরে এফটিএক্সের ওয়েবপেজ রিফ্রেশ করেন এবং টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য এফটিএক্স এক্সচেঞ্জের সাপোর্ট ডেস্কে ইমেইল করেন। তিনি অসুস্থবোধ করছিলেন।

এফটিএক্স ১০০টি যুক্তরাজ্যের ৯০ লাখ গ্রাহক টানে। যখন কোম্পানিটির পতন হয় তখন লাখ লাখ ব্যবহারকারী তাদের টাকা কম সময়ের মধ্যে বের করতে পারেনি। কোর্টের নথিপত্র বলছে, এই বিনিয়োগকারীর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ব্যবসায়ী এমনকি দাতব্য সংস্থাও। 

সামনের সপ্তাহে এই হাই প্রোফাইল বিচারকাজ শুরু হবে। স্যাম ব্যাংকম্যান-ফ্রাইডের বিরুদ্ধে সাতটি জালিয়াতি, ষড়যন্ত্র ও অর্থপাচারের অভিযোগ রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে নিউইয়র্কের কারাগার থেকে রওনা দেবেন।

তবে স্যাম ব্যাংকম্যান-ফ্রাইড দাবি করেন, তিনি টাকা চুরে করেননি বা কোটি কোটি টাকা লুকিয়েও রাখেননি। 

কোম্পানির অন্যান্য নির্বাহীরা আগেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছে এবং ৪ হাজার কোটি মূল্যের কোম্পানির কীভাবে পতন হয়েছে  তার প্রমাণ আদালত হাজির করতে বলে। 

এই ঘটনা নিয়ে আলোচনা করতে এফটিএক্স গ্রাহকদের জন্য কুভেরি টেলিগ্রামে গ্রুপ খোলেন। তিনি বলেন, এই ঘটনায় সব হারিয়ে তুরস্কের একজনের ব্যাংকে মাত্র ৬০০ ডলার রয়েছে এবং কোরিয়ার এক নাগরিক প্যানিক অ্যাটাকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। 

সুনীল ক্রিপ্টো ইনফুলেন্সার ও সেলিব্রেটিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল তারকা ল্যারি ডেভম্যান, ল্যারি ডেভিড ও সুপারমডেল জিসেল বুন্ডচেন। তারা এ বিষয়ে বিবিসির প্রতিবেদককে কোনো মন্তব্য দিতে রাজি হননি। 

ব্যাংকম্যান-ফ্রাইডের বাবা–মার ওপরেও গত সপ্তাহে মামলা দেওয়া হয়। কারণ ফ্রাইডে তার বাবা–মা অনেক টাকা দেয় ও বাহামাতে বিলাসবহুল সম্পত্তি কিনে দেয়।   

সুনীলের দ্বিতীয় সন্তান গত বৃহস্পতিবার জন্ম নেয়। তাই হারানো টাকা ফিরে পেতে সুনীল আরও জোরালোভাবে কাজ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত