অনলাইন ডেস্ক
প্রসেসরের পারফরম্যান্স বৃদ্ধি এবং শক্তি খরচ কমানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে চীনের তৈরি সিলিকন-মুক্ত ট্রানজিস্টর। নতুন এই ট্রানজিস্টর তৈরি করতে সিলিকনের বদলে বিসমাথ ব্যবহার করেছেন চীনের বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা জানান, নতুন ট্রানজিস্টরটি এমন চিপ তৈরি করতে সাহায্য করবে, যা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ইনটেলসহ অন্যদের তৈরি সিলিকন প্রসেসরগুলোর তুলনায় ৪০ শতাংশ দ্রুত কাজ করতে পারবে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।
গবেষকেরা জানান, এ ধরনের চিপগুলো ১০ শতাংশ কম শক্তি খরচ করবে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি নেচার জার্নালে এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়।
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের (পিকিইউ) রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষণার প্রধান লেখক হাইলিন পেং বলেন, যদি বিদ্যমান উপকরণের ভিত্তিতে চিপ উদ্ভাবনকে ‘সোজা পথ’ বলা হয়, তবে ২ডি উপাদানভিত্তিক ট্রানজিস্টরের উন্নয়নটি ‘রাস্তা বদল’ করার মতো।
নতুন ধরনের সিলিকন-মুক্ত ট্রানজিস্টর
গবেষকেরা যেটি তৈরি করেছেন, তা হলো গেট-অল-অ্যারাউন্ড ফিল্ড-এফেক্ট ট্রানজিস্টর (জিএএএফইটি)। পূর্ববর্তী ট্রানজিস্টর ডিজাইন যেমন: ফিন ফিল্ড-এফেক্ট ট্রানজিস্টরের (ফিনএফইটি) তুলনায় জিএএএফইটি ট্রানজিস্টর তিনটির বদলে চারদিকের গেট দিয়ে সোর্সগুলোকে মোড়ানো হয়।
ট্রানজিস্টর একটি সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস, যা প্রতিটি কম্পিউটার চিপে থাকে। প্রতিটি ট্রানজিস্টরের সোর্স, গেট ও ড্রেন থাকে, যা ট্রানজিস্টরটিকে সুইচ হিসেবে কাজ করতে সাহায্য করে।
গেট হলো সেই উপাদান, যা সোর্স ও ড্রেনের মধ্যে বৈদ্যুতিক প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে এবং সুইচ ও অ্যামপ্লিফায়ারের ভূমিকা পালন করতে পারে। সোর্সের চারপাশে গেটটি পুরোপুরি মোড়ানো থাকলে পারফরম্যান্স ও কার্যক্ষমতা উন্নত হয়।
যদিও জিএএএফইটি আর্কিটেকচার নতুন নয়। তবে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের দলের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন ছিল। কারণ তারা নতুন ধরনের সেমিকন্ডাক্টর হিসেবে বিসমাথ অক্সিসেলেনাইড ব্যবহার করেছেন। তারা এটিকে ‘আণবিকভাবে পাতলা’ ২ডি ট্রানজিস্টর তৈরি করতে ব্যবহার করেছেন।
বিসমাথ ট্রানজিস্টরের সুবিধা
২ডি বিসমাথ ট্রানজিস্টরটি সিলিকনের তুলনায় কম ভঙ্গুর এবং আরও নমনীয়। গবেষকেরা জানান, বিসমাথ উপাদানটি উচ্চ গতির বিদ্যুৎ চলাচলের জন্য উপযুক্ত এবং এর উচ্চ ডাইইলেকট্রিক কনস্ট্যান্ট (বৈদ্যুতিক শক্তি সঞ্চয়ের ক্ষমতা) ট্রানজিস্টরের দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করে।
সিলিকনের তুলনায় বিসমাথে ইলেকট্রন খুব কম রেজিস্ট্যান্সের মুখোমুখি হয় এবং এটি তাদের চলাচলকে ত্বরান্বিত করে।
উন্নত ন্যানোফ্যাব্রিকেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে গবেষকেরা ২ডি ট্রানজিস্টরটি তৈরি করে, যার পুরু ছিল মাত্র কয়েকটি আণবিক স্তর। এই অতিক্ষুদ্র কাঠামোটি ট্রানজিস্টরের আকার হ্রাস করে এবং ইলেকট্রনের বিচ্ছুরণ কমিয়ে দেয়, যার ফলে দ্রুত সুইচিং স্পিড এবং কম শক্তি খরচ হয়।
যদি এই ট্রানজিস্টর এমন কোনো চিপে ব্যবহৃত হয়, যা ইনটেল এবং অন্যান্য মার্কিন প্রতিষ্ঠানের তৈরি সিলিকন চিপগুলোর তুলনায় দ্রুত কাজ করে, তাহলে এটি চীনকে বর্তমান চিপ প্রসেসিং সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞাগুলো এড়িয়ে গিয়ে একটি ভিন্ন উৎপাদন প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করার সুযোগ দিতে পারে।
চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
যদিও বিসমাথ ট্রানজিস্টর চিপ তৈরিতে বড় সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। তবে এটি তৈরিতে এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে। বর্তমানে ২ডি বিসমাথ ট্রানজিস্টর তৈরি করতে অত্যন্ত বিশেষায়িত যন্ত্রপাতি এবং কৌশল প্রয়োজন। এর ফলে প্রতিযোগিতামূলক খরচে এসব ডিভাইসের ব্যাপক উৎপাদন কঠিন হয়ে পড়ে। তাই উৎপাদন পদ্ধতি উন্নত করার জন্য কাজ করছেন গবেষকেরা। তবে এটি বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত হতে কয়েক বছর সময় নেবে।
আরেকটি চ্যালেঞ্জ হলো বিসমাথ ট্রানজিস্টরগুলোর বর্তমান সিলিকনভিত্তিক প্রযুক্তির সঙ্গে একীভূতকরণ। বর্তমান যুগের বেশির ভাগ বৈদ্যুতিক ডিভাইস সিলিকন উপাদানের ওপর নির্মিত এবং বিসমাথের মতো নতুন কোনো উপাদানে স্থানান্তর করতে গেলে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে। তবে সিলিকন উপাদানগুলোর সঙ্গে বিসমাথ ট্রানজিস্টর ব্যবহারের জন্য হাইব্রিড পন্থা অবলম্বন করা যেতে পারে।
এসব চ্যালেঞ্জের পরেও বিসমাথ ট্রানজিস্টরের সম্ভাবনা অগ্রাহ্য করার মতো নয়। বিসমাথ উপাদানটির বৈশিষ্ট্য আরও উন্নত করার এবং ট্রানজিস্টরের কার্যকারিতা বাড়ানোর উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন চীনের বিজ্ঞানীরা। তাঁরা অন্য ২ডি উপাদানগুলোও পরীক্ষা করছেন, যা বিসমাথের সঙ্গে মিশ্রিত হতে পারে এবং ভবিষ্যতে আরও উন্নত ডিভাইস তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে।
সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে প্রভাব
বিসমাথ ট্রানজিস্টরের উন্নয়ন সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের জন্য গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। যদি সফলভাবে বাণিজ্যিকীকরণ করা যায়, সিলিকনভিত্তিক বর্তমান বাজারকে বিপর্যস্ত করতে পারে এবং নতুন উদ্ভাবনের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। যেসব কোম্পানি বিসমাথ প্রযুক্তি দ্রুত গ্রহণ করবে, তারা একটি উল্লেখযোগ্য প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা অর্জন করবে।
চীনের জন্য বিসমাথ ট্রানজিস্টর একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। এটি সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তিতে চীনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, যা দেশটিকে বৈশ্বিক নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করবে।
বিদেশি প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে এবং প্রযুক্তিশিল্পে একটি শক্তিশালী অবস্থান প্রতিষ্ঠা করতে গবেষণা ও উন্নয়নে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে চীন। বিসমাথ ট্রানজিস্টর প্রকল্পের সাফল্য এই প্রচেষ্টার কার্যকারিতার একটি প্রমাণ এবং এটি আগামী বছরগুলোতে আরও বৈপ্লবিক আবিষ্কারগুলোর জন্য পথ প্রশস্ত করতে পারে।
চীন যদি এই নতুন প্রযুক্তিতে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়, তবে আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি বাজারে দেশটির একটি শক্তিশালী অবস্থান নিশ্চিত হবে। আর যুক্তরাষ্ট্রকে এই শিল্পে বড় টেক্কা দিতে পারবে চীন।
ইলেকট্রনিকসের বাইরে: কোয়ান্টাম কম্পিউটিংসহ আরও অনেক কিছু বিসমাথ ট্রানজিস্টরের প্রভাব শুধু ঐতিহ্যবাহী ইলেকট্রনিকসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এর সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ সম্ভাব্য অ্যাপ্লিকেশনগুলোর মধ্যে একটি হলো কোয়ান্টাম কম্পিউটিং। কোয়ান্টাম কম্পিউটারগুলো কোয়ান্টাম মেকানিকস নীতির ওপর ভিত্তি করে জটিল গণনা সম্পন্ন করে এবং এর জন্য অত্যন্ত দ্রুত ও সুনির্দিষ্ট উপাদানগুলোর প্রয়োজন হয়। বিসমাথের উচ্চ ইলেকট্রন গতিশীলতা এবং অনন্য বৈদ্যুতিক বৈশিষ্ট্য এটিকে কোয়ান্টাম ট্রানজিস্টরের জন্য একটি আদর্শ প্রার্থী করে তোলে, যা কোয়ান্টাম কম্পিউটারগুলোর বাস্তবায়নকে উল্লেখযোগ্যভাবে ত্বরান্বিত করতে পারে।
এ ছাড়া, বিসমাথ ট্রানজিস্টরগুলো পরবর্তী প্রজন্মের যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। যেহেতু বিশ্ব ৬জি নেটওয়ার্ক এবং তার পরবর্তী প্রযুক্তির দিকে এগোচ্ছে, উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সি এবং কম শক্তি খরচযুক্ত ট্রানজিস্টরের চাহিদা বাড়বে। বিসমাথের টেরা-হার্জ ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করার ক্ষমতা এই উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা আরও উন্নত করবে।
তথ্যসূত্র: মিডিয়াম ও লাইভ সায়েন্স
প্রসেসরের পারফরম্যান্স বৃদ্ধি এবং শক্তি খরচ কমানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে চীনের তৈরি সিলিকন-মুক্ত ট্রানজিস্টর। নতুন এই ট্রানজিস্টর তৈরি করতে সিলিকনের বদলে বিসমাথ ব্যবহার করেছেন চীনের বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা জানান, নতুন ট্রানজিস্টরটি এমন চিপ তৈরি করতে সাহায্য করবে, যা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ইনটেলসহ অন্যদের তৈরি সিলিকন প্রসেসরগুলোর তুলনায় ৪০ শতাংশ দ্রুত কাজ করতে পারবে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।
গবেষকেরা জানান, এ ধরনের চিপগুলো ১০ শতাংশ কম শক্তি খরচ করবে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি নেচার জার্নালে এই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়।
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের (পিকিইউ) রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষণার প্রধান লেখক হাইলিন পেং বলেন, যদি বিদ্যমান উপকরণের ভিত্তিতে চিপ উদ্ভাবনকে ‘সোজা পথ’ বলা হয়, তবে ২ডি উপাদানভিত্তিক ট্রানজিস্টরের উন্নয়নটি ‘রাস্তা বদল’ করার মতো।
নতুন ধরনের সিলিকন-মুক্ত ট্রানজিস্টর
গবেষকেরা যেটি তৈরি করেছেন, তা হলো গেট-অল-অ্যারাউন্ড ফিল্ড-এফেক্ট ট্রানজিস্টর (জিএএএফইটি)। পূর্ববর্তী ট্রানজিস্টর ডিজাইন যেমন: ফিন ফিল্ড-এফেক্ট ট্রানজিস্টরের (ফিনএফইটি) তুলনায় জিএএএফইটি ট্রানজিস্টর তিনটির বদলে চারদিকের গেট দিয়ে সোর্সগুলোকে মোড়ানো হয়।
ট্রানজিস্টর একটি সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস, যা প্রতিটি কম্পিউটার চিপে থাকে। প্রতিটি ট্রানজিস্টরের সোর্স, গেট ও ড্রেন থাকে, যা ট্রানজিস্টরটিকে সুইচ হিসেবে কাজ করতে সাহায্য করে।
গেট হলো সেই উপাদান, যা সোর্স ও ড্রেনের মধ্যে বৈদ্যুতিক প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে এবং সুইচ ও অ্যামপ্লিফায়ারের ভূমিকা পালন করতে পারে। সোর্সের চারপাশে গেটটি পুরোপুরি মোড়ানো থাকলে পারফরম্যান্স ও কার্যক্ষমতা উন্নত হয়।
যদিও জিএএএফইটি আর্কিটেকচার নতুন নয়। তবে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের দলের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন ছিল। কারণ তারা নতুন ধরনের সেমিকন্ডাক্টর হিসেবে বিসমাথ অক্সিসেলেনাইড ব্যবহার করেছেন। তারা এটিকে ‘আণবিকভাবে পাতলা’ ২ডি ট্রানজিস্টর তৈরি করতে ব্যবহার করেছেন।
বিসমাথ ট্রানজিস্টরের সুবিধা
২ডি বিসমাথ ট্রানজিস্টরটি সিলিকনের তুলনায় কম ভঙ্গুর এবং আরও নমনীয়। গবেষকেরা জানান, বিসমাথ উপাদানটি উচ্চ গতির বিদ্যুৎ চলাচলের জন্য উপযুক্ত এবং এর উচ্চ ডাইইলেকট্রিক কনস্ট্যান্ট (বৈদ্যুতিক শক্তি সঞ্চয়ের ক্ষমতা) ট্রানজিস্টরের দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করে।
সিলিকনের তুলনায় বিসমাথে ইলেকট্রন খুব কম রেজিস্ট্যান্সের মুখোমুখি হয় এবং এটি তাদের চলাচলকে ত্বরান্বিত করে।
উন্নত ন্যানোফ্যাব্রিকেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে গবেষকেরা ২ডি ট্রানজিস্টরটি তৈরি করে, যার পুরু ছিল মাত্র কয়েকটি আণবিক স্তর। এই অতিক্ষুদ্র কাঠামোটি ট্রানজিস্টরের আকার হ্রাস করে এবং ইলেকট্রনের বিচ্ছুরণ কমিয়ে দেয়, যার ফলে দ্রুত সুইচিং স্পিড এবং কম শক্তি খরচ হয়।
যদি এই ট্রানজিস্টর এমন কোনো চিপে ব্যবহৃত হয়, যা ইনটেল এবং অন্যান্য মার্কিন প্রতিষ্ঠানের তৈরি সিলিকন চিপগুলোর তুলনায় দ্রুত কাজ করে, তাহলে এটি চীনকে বর্তমান চিপ প্রসেসিং সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞাগুলো এড়িয়ে গিয়ে একটি ভিন্ন উৎপাদন প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করার সুযোগ দিতে পারে।
চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
যদিও বিসমাথ ট্রানজিস্টর চিপ তৈরিতে বড় সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। তবে এটি তৈরিতে এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে। বর্তমানে ২ডি বিসমাথ ট্রানজিস্টর তৈরি করতে অত্যন্ত বিশেষায়িত যন্ত্রপাতি এবং কৌশল প্রয়োজন। এর ফলে প্রতিযোগিতামূলক খরচে এসব ডিভাইসের ব্যাপক উৎপাদন কঠিন হয়ে পড়ে। তাই উৎপাদন পদ্ধতি উন্নত করার জন্য কাজ করছেন গবেষকেরা। তবে এটি বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত হতে কয়েক বছর সময় নেবে।
আরেকটি চ্যালেঞ্জ হলো বিসমাথ ট্রানজিস্টরগুলোর বর্তমান সিলিকনভিত্তিক প্রযুক্তির সঙ্গে একীভূতকরণ। বর্তমান যুগের বেশির ভাগ বৈদ্যুতিক ডিভাইস সিলিকন উপাদানের ওপর নির্মিত এবং বিসমাথের মতো নতুন কোনো উপাদানে স্থানান্তর করতে গেলে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে। তবে সিলিকন উপাদানগুলোর সঙ্গে বিসমাথ ট্রানজিস্টর ব্যবহারের জন্য হাইব্রিড পন্থা অবলম্বন করা যেতে পারে।
এসব চ্যালেঞ্জের পরেও বিসমাথ ট্রানজিস্টরের সম্ভাবনা অগ্রাহ্য করার মতো নয়। বিসমাথ উপাদানটির বৈশিষ্ট্য আরও উন্নত করার এবং ট্রানজিস্টরের কার্যকারিতা বাড়ানোর উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন চীনের বিজ্ঞানীরা। তাঁরা অন্য ২ডি উপাদানগুলোও পরীক্ষা করছেন, যা বিসমাথের সঙ্গে মিশ্রিত হতে পারে এবং ভবিষ্যতে আরও উন্নত ডিভাইস তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে।
সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে প্রভাব
বিসমাথ ট্রানজিস্টরের উন্নয়ন সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের জন্য গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। যদি সফলভাবে বাণিজ্যিকীকরণ করা যায়, সিলিকনভিত্তিক বর্তমান বাজারকে বিপর্যস্ত করতে পারে এবং নতুন উদ্ভাবনের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। যেসব কোম্পানি বিসমাথ প্রযুক্তি দ্রুত গ্রহণ করবে, তারা একটি উল্লেখযোগ্য প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা অর্জন করবে।
চীনের জন্য বিসমাথ ট্রানজিস্টর একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। এটি সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তিতে চীনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, যা দেশটিকে বৈশ্বিক নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করবে।
বিদেশি প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে এবং প্রযুক্তিশিল্পে একটি শক্তিশালী অবস্থান প্রতিষ্ঠা করতে গবেষণা ও উন্নয়নে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে চীন। বিসমাথ ট্রানজিস্টর প্রকল্পের সাফল্য এই প্রচেষ্টার কার্যকারিতার একটি প্রমাণ এবং এটি আগামী বছরগুলোতে আরও বৈপ্লবিক আবিষ্কারগুলোর জন্য পথ প্রশস্ত করতে পারে।
চীন যদি এই নতুন প্রযুক্তিতে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়, তবে আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি বাজারে দেশটির একটি শক্তিশালী অবস্থান নিশ্চিত হবে। আর যুক্তরাষ্ট্রকে এই শিল্পে বড় টেক্কা দিতে পারবে চীন।
ইলেকট্রনিকসের বাইরে: কোয়ান্টাম কম্পিউটিংসহ আরও অনেক কিছু বিসমাথ ট্রানজিস্টরের প্রভাব শুধু ঐতিহ্যবাহী ইলেকট্রনিকসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এর সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ সম্ভাব্য অ্যাপ্লিকেশনগুলোর মধ্যে একটি হলো কোয়ান্টাম কম্পিউটিং। কোয়ান্টাম কম্পিউটারগুলো কোয়ান্টাম মেকানিকস নীতির ওপর ভিত্তি করে জটিল গণনা সম্পন্ন করে এবং এর জন্য অত্যন্ত দ্রুত ও সুনির্দিষ্ট উপাদানগুলোর প্রয়োজন হয়। বিসমাথের উচ্চ ইলেকট্রন গতিশীলতা এবং অনন্য বৈদ্যুতিক বৈশিষ্ট্য এটিকে কোয়ান্টাম ট্রানজিস্টরের জন্য একটি আদর্শ প্রার্থী করে তোলে, যা কোয়ান্টাম কম্পিউটারগুলোর বাস্তবায়নকে উল্লেখযোগ্যভাবে ত্বরান্বিত করতে পারে।
এ ছাড়া, বিসমাথ ট্রানজিস্টরগুলো পরবর্তী প্রজন্মের যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। যেহেতু বিশ্ব ৬জি নেটওয়ার্ক এবং তার পরবর্তী প্রযুক্তির দিকে এগোচ্ছে, উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সি এবং কম শক্তি খরচযুক্ত ট্রানজিস্টরের চাহিদা বাড়বে। বিসমাথের টেরা-হার্জ ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করার ক্ষমতা এই উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা আরও উন্নত করবে।
তথ্যসূত্র: মিডিয়াম ও লাইভ সায়েন্স
এক্সএআই এবং এক্স ব্যক্তিগত মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চুক্তির কিছু নির্দিষ্ট তথ্য এখনো স্পষ্ট নয়, যেমন: বিনিয়োগকারীরা এই শেয়ার স্থানান্তর অনুমোদন করেছে কিনা বা বিনিয়োগকারীদের কীভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে ইত্যাদি বিষয় অস্পষ্ট।
৯ ঘণ্টা আগেফেসবুক স্টোরি একধরনের সাময়িক পোস্ট। এই ধরনের পোস্ট ২৪ ঘণ্টা ধরে দেখা যায় এবং পরে অদৃশ্য হয়ে যায়। তবে এগুলো একেবারেই ফেসবুক থেকে হারিয়ে যায় না। এগুলো আর্কাইভ নামের এক ফোল্ডারে থাকে। এই ফোল্ডারে সব স্টোরি একই সঙ্গে পাওয়া যায়।
১৮ ঘণ্টা আগেগুগল তাদের সার্চ, ম্যাপস এবং জেমিনিতে বেশ কিছু নতুন ফিচার চালু করছে। ব্যবহারকারীর ছুটির পরিকল্পনা করতে এগুলো সাহায্য করবে। এসব নতুন ফিচার অনেকটাই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্যে তৈরি। ব্যবহারকারীরা আগে যেমন ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি থেকে ছুটির পরিকল্পনা তৈরি করতে অভ্যস্ত ছিলেন, তেমনি গুগলের টুলগুলো
১ দিন আগেওপেনএআইয়ের এর চ্যাটজিপিটি-এর নতুন ইমেজ জেনারেটর চালু হওয়ার পর স্টুডিও জিবলি স্টাইলে তৈরি হওয়া ছবি তুমুল ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এই জাপানি অ্যানিমেশন স্টুডিওটি স্পিরিটেড অ্যাওয়ে, মাইনেইবোর টোটোরো, প্রিন্সেস মনোনোকে, হাওলস মুভিং কাসল মতো ক্লাসিক কিছু মুভির জন্য জনপ্রিয়। চ্যাটজিপিটির
১ দিন আগে