Ajker Patrika

সংবাদে এআই ব্যবহার নিয়ে আস্থার সংকটে বেশির ভাগ পাঠক-দর্শক

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৭ জুন ২০২৪, ২০: ০০
Thumbnail image

সংবাদ তৈরিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার নিয়ে বিশ্বব্যাপী পাঠক ও দর্শকদের মধ্যে সংশয় বাড়ছে। পাঠক ও দর্শক টানতে এমনিতেই বেকায়দায় আছে ডিজিটাল গণমাধ্যম। এর মধ্যে এআই নিয়ে আস্থার সংকট বার্তাকক্ষের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। রয়টার্স ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব জার্নালিজমের এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। 

জরিপের প্রতিবেদনটি গত সোমবার প্রকাশিত হয়। এ বছর ৪৭টি দেশের ১০ লাখ মানুষের তথ্য নিয়ে এই জরিপ করা হয়েছে। আয় বাড়ানো ও ব্যবসা টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমগুলো যেসব প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়, তার চিত্র তুলে ধরেছে এই জরিপ। 

জেনারেটিভ এআই নিয়ে বিশ্বজুড়ে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার চেষ্টায় আছে বার্তাকক্ষগুলো। কারণ, গুগল ও ওপেনএআইয়ের মতো এআই টুলগুলো তথ্যের সার সংক্ষেপ তুলে ধরতে পারে। আর তাই অনেকেই সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করছে না। 

তবে জরিপে বিপরীতে তথ্য পাওয়া যায়। অনেকে সংবাদ কনটেন্ট তৈরিতে এআই ব্যবহারের যথার্থতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে রাজনীতির মতো সংবেদনশীল বিষয়ের ক্ষেত্রে এই সংশয় তীব্র। 

জরিপের আওতায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য প্রতিটি দেশের ২ হাজার মানুষের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে যথাক্রমে ৫২ শতাংশ ও ৬৩ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, প্রধানত এআই দিয়ে তৈরি সংবাদ নিয়ে তাঁরা সন্দিহান। এসব খবরে তাঁরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। পক্ষান্তরে সাংবাদিকদের কাজকে উন্নত করতে ‘পর্দার অন্তরালে’ অর্থাৎ সহযোগী হিসেবে এআই ব্যবহার তাঁদের কাছে গ্রহণযোগ্য। 

রয়টার্স ইনস্টিটিউটের সিনিয়র গবেষণা সহযোগী ও ডিজিটাল নিউজ রিপোর্টের প্রধান লেখক নিক নিউম্যান বলেছেন, এআই দিয়ে তৈরি সংবাদ নিয়ে সংশয় প্রকাশের ব্যাপকতা দেখে তিনি অবাক হয়েছেন। কনটেন্টের নির্ভরযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে মানুষ ব্যাপকভাবে চিন্তিত। 

অনলাইনে ভুয়া খরব নিয়ে উদ্বেগ গত বছরের তুলনায় তিন শতাংশ বেড়েছে। জরিপের উত্তরদাতাদের ৫৯ শতাংশ বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা চিন্তিত। দক্ষিণ আফ্রিকা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে সংখ্যাটি যথাক্রমে ৮১ শতাংশ ও ৭২ শতাংশ ছিল। কারণ, উভয় দেশেই এই বছর নির্বাচন হয়েছে। 

সংবাদ সংস্থাগুলোর জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জ হলো—সাবস্ক্রিপশন প্ল্যান বা গ্রাহক ফি। বিশ্বজুড়েই অর্থ খরচ করে খবর পড়ায় মোটাদাগে অনীহা আছে। করোনা মহামারির সময়ে সাবস্ক্রিপশন কিছুটা বেড়েছিল। কিন্তু তারপর তিন বছর ধরে কোনো পরিবর্তন হয়নি। 

২০টি দেশের ১৭ শতাংশ উত্তরদাতা বলেন, তাঁরা অনলাইনে সংবাদ পাঠের জন্য অর্থ প্রদান করেন। তিন বছর আগেও এই সংখ্যাই ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে সংবাদমাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে গ্রাহক করতে বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়। এই কারণে দেখা যায়, ৪৬ শতাংশ গ্রাহক প্রকৃত মূল্যের চেয়ে কম ফি দিচ্ছেন। 

মূলধারার মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সাররা বা গণমাধ্যম সেলিব্রিটিরা টিকটকের মতো জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্মের ব্যবহারকারীদের কাছে খবর পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করছে। ৫ হাজার ৬০০ টিকটক ব্যবহারকারীকে নিয়ে করা এক জরিপে উঠেছে, তাঁরা সংবাদের জন্য টিকটক অ্যাপ ব্যবহার করেন। 

এর মধ্যে ৫৭ শতাংশ টিকটক ব্যবহারকারী খবরের উৎস হিসেবে ব্যক্তিগত টিকটক অ্যাকাউন্ট ফলো করার ক্ষেত্রে ব্যক্তিত্ব বিবেচনা করেন বেশি। অর্থাৎ তাঁরা সেলিব্রিটিদের ফলো করেন। বিপরীদের সাংবাদিক বা নিউজ ব্র্যান্ডগুলোর অ্যাকাউন্ট অনুসরণ করেন ৩৪ শতাংশ ব্যবহারকারী। 

টিকটকের ‘ভাইটাস ভি স্পেহা’ নামের ক্রিয়েটর সংবাদ কনটেন্ট প্রচার করেন। তাঁকে ৩১ লাখ অ্যাকাউন্ট থেকে ফলো করা হয়। সংবাদের জন্য তাঁকে ফলো করেন বলে জরিপের কিছু উত্তরদাতা জানিয়েছেন। অদ্ভুতভাবে সংবাদ পরিবেশনা করেন স্পেহা, যা প্রথাগত পরিবেশনার চেয়ে ভিন্ন। টেবিলের নিচে মেঝেতে শুয়ে দিনের প্রধান শিরোনামগুলো পাঠ করেন তিনি। 

জরিপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের উত্তরদাতাদের খবরের জন্য ফলো করা হয়, এমন তিনটি মূলধারা বা বিকল্প অ্যাকাউন্টের নাম উল্লেখ করতে বলা হয়। উত্তরদাতারা যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ যে ১০ ব্যক্তির নাম বলেছেন, তাঁরা সংবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তাঁরা মূলত রাজনৈতিক বিষয়ে মতামত ভাষ্য তুলে ধরেন। ফক্স নিউজের সাবেক উপস্থাপক টাকার কার্লসন, স্পটিফাইয়ের শীর্ষ পডকাস্ট উপস্থাপক জো রোগান ও রেডিও জকি ডেভিড পাকম্যান—এঁদের অন্যতম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী সহকর্মীর সঙ্গে রাতযাপন: হাইটেক পার্কের ডিডি আতিক বরখাস্ত

বাংলাদেশসহ ৩ দেশে উন্নয়ন সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত সুইজারল্যান্ডের

পদ্মা সেতু ও ড. ইউনূসকে নিয়ে ভারত থেকে শেখ হাসিনার ভাষণ! ভাইরাল ভিডিওর পেছনের ঘটনা জানুন

২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ফেসবুক প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন কর্মসূচি শুরু

আমরা বাংলাদেশকে আবার মহান করে তুলব: ট্রাম্পের বন্ধু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত