ইশতিয়াক হাসান
নরওয়ের লংইয়ারবিয়েন হলো পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তরের শহর। শীতল এই শহরটিতে অনেক কিছুই আমাদের পরিচিত আর পাঁচ-দশটা সাধারণ শহরের চেয়ে আলাদা। তবে তাই বলে নিশ্চয় আপনি আশা করবেন না এখানে কবর দেওয়া বা কাউকে সমাধিস্থ করা মানা? কিন্তু লংইয়ারবিয়েনের বেলায় এটিই সত্য।
উত্তর নরওয়ের সভালবারদ দ্বীপপুঞ্জের লংইয়ারবিয়েন শহরের অবস্থান। একে বিবেচনা করা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তরের শহর হিসেবে। আরও উত্তরে কিছু গবেষণা ক্যাম্প আছে, তবে সেগুলোকে শহর বলা যাবে না মোটেই। এক সময়ের কয়লা খনি শহরটি এখন সভালবারদ দ্বীপের প্রধান সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যকেন্দ্র। পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তরের এটিএম বুথ, গির্জা, জাদুঘর, রেডিও স্টেশন, বিমানবন্দর, বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানা শহরটি।
শহরটির অবস্থানগত কারণে আবহাওয়া অত্যন্ত শীতল। তাই এখানে বসতি গাড়া মানুষদের বিশেষ কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে অদ্ভুত যে বিষয়টি তা হলো, শহরে কাউকে সমাধিস্থ করা নিষিদ্ধ। এখানকার অত্যধিক নিম্ন তাপমাত্রার কারণে সমাধিস্থ করা মৃতদেহও চমৎকারভাবে সংরক্ষিত থাকে। এতে বিভিন্ন রোগ জীবাণু মৃতদেহের সঙ্গে রয়ে গিয়ে বিপদ সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে কেউ শহরটিতে মারা গেলে উড়োজাহাজে করে নতুবা জলপথে নরওয়ের মূল ভূমিতে নিয়ে যেতে হয়। ১৯৫০ সাল থেকেই এ আইন মানা হচ্ছে। এ কারণে এখানে বাস করা প্রত্যেক মানুষের নরওয়ের মূলভূমিতে আর একটি ঠিকানা থাকা নিয়ম।
লংইয়ারবিয়েনের আরেকটি আশ্চর্য বিষয় হলো, শীতল আবহাওয়ার কারণে এখানকার সব বাড়ি-ঘর মাচা বা খুঁটির ওপর বানাতে হয়। যেন গ্রীষ্মে দ্বীপের ওপরের স্তরের বরফ গলে গেলে পানির তোড়ে বাড়ি-ঘর ডুবে বা ভেসে না যায়।
লংইয়ারবিয়েন শহরে বিড়াল পোষা মানা। এর কারণ অবশ্য বিভিন্ন ধরনের বিপন্ন প্রজাতির পাখিদের নিরাপদ রাখা। তা ছাড়া এখানকার বাসিন্দাদের বাইরে কোথাও ভ্রমণের সময় সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র রাখতে উৎসাহ দেওয়া হয়। তাই বলে ভাববেন না, আশপাশের এলাকা ছিনতাইকারী বা অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য! যেখানে মানুষের বসতিই চোখে পড়ে না তেমন সেখানে অপরাধী পাবেন কোথা থেকে?
এই সতর্কতার কারণ প্রকৃতপক্ষে মেরু ভালুকের থেকে আত্মরক্ষা। অবশ্য শহরের ভেতরে গুলিভরা অস্ত্র বহন নিষিদ্ধ। তবে সৌভাগ্যক্রমে মেরু ভালুকের খুব নিয়মিত শহরে পা রাখে না। সে তুলনায় মেরু শিয়ালদের আনাগোনা বেশি। তার চেয়ে বেশি দেখবেন বল্গা হরিণদের। খাবারের খোঁজে শহরে আসে তারা।
প্রতি বছর মার্চের ৮ তারিখ দুপুর সোয়া বারোটার দিকে শহরের সলফেসতাকা নামে এক উৎসব ও ছুটির দিন হিসেবে পালন করে চার মাসের বেশি সময় পরে দেখা সর্যরশ্মিকে স্বাগত জানিয়ে। অর্থাৎ বছরের তিন ভাগের এক ভাগ সময় আগাগোড়া অন্ধকারে ঢেকে থাকে শহরটি।
এদিকে লংইয়ারবিয়েনের হাসপাতাল খুব আধুনিক না হওয়ায় কেউ বেশি অসুস্থ হয়ে গেলে তাঁকে মূলভূমিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তেমনি কেউ যদি আর নিজের দেখাশোনা করার অবস্থায় না থাকতে পারেন তবে তাঁকেও শহর ছাড়তে হয়। কোনো নারী সন্তানসম্ভবা হলে সন্তান জন্মদানের প্রত্যাশিত দিনের ২১ দিন আগেই তাকে শহর ত্যাগ করতে হয়। অবশ্য তারপরও এখানে শিশুর জন্ম হওয়া এড়ানো যায় না। কারণ অনেকেরই তো সময়ের আগে সন্তান হয়।
লংইয়ারবিয়েনসহ সভালবারদে আরেকটি মজার বিষয় আছে। রেস্তোরাঁ, হোটেল, জাদুঘরসহ বিভিন্ন ভবনে প্রবেশের সময় এখানকার লোকেরা জুতা খেলে প্রবেশ করেন। কেন? আসলে এ প্রথা চলে আসছে বহু বছর আগ থেকে, যখন এখানে কয়লার খনির রমরমা ছিল। তখন চারপাশে ছড়িয়ে থাকা কয়লার ধুলো ভবনের ভেতরে ছড়িয়ে পড়া এড়াতে এর চল শুরু হয়। এখনো এটা বজায় রেখেছেন শহরের বাসিন্দারা।
অতএব পাঠক, পৃথিবীর সর্ব উত্তরের এই শহরে বেড়াতে যাওয়ার আগে এখানকার নিয়ম কানুনগুলো মাথায় রাখবেন আশা করি।
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, ভিজিট সভালবারদ.কম, দ্য নরওয়ে গাইড.কম
নরওয়ের লংইয়ারবিয়েন হলো পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তরের শহর। শীতল এই শহরটিতে অনেক কিছুই আমাদের পরিচিত আর পাঁচ-দশটা সাধারণ শহরের চেয়ে আলাদা। তবে তাই বলে নিশ্চয় আপনি আশা করবেন না এখানে কবর দেওয়া বা কাউকে সমাধিস্থ করা মানা? কিন্তু লংইয়ারবিয়েনের বেলায় এটিই সত্য।
উত্তর নরওয়ের সভালবারদ দ্বীপপুঞ্জের লংইয়ারবিয়েন শহরের অবস্থান। একে বিবেচনা করা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তরের শহর হিসেবে। আরও উত্তরে কিছু গবেষণা ক্যাম্প আছে, তবে সেগুলোকে শহর বলা যাবে না মোটেই। এক সময়ের কয়লা খনি শহরটি এখন সভালবারদ দ্বীপের প্রধান সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যকেন্দ্র। পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তরের এটিএম বুথ, গির্জা, জাদুঘর, রেডিও স্টেশন, বিমানবন্দর, বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানা শহরটি।
শহরটির অবস্থানগত কারণে আবহাওয়া অত্যন্ত শীতল। তাই এখানে বসতি গাড়া মানুষদের বিশেষ কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে অদ্ভুত যে বিষয়টি তা হলো, শহরে কাউকে সমাধিস্থ করা নিষিদ্ধ। এখানকার অত্যধিক নিম্ন তাপমাত্রার কারণে সমাধিস্থ করা মৃতদেহও চমৎকারভাবে সংরক্ষিত থাকে। এতে বিভিন্ন রোগ জীবাণু মৃতদেহের সঙ্গে রয়ে গিয়ে বিপদ সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে কেউ শহরটিতে মারা গেলে উড়োজাহাজে করে নতুবা জলপথে নরওয়ের মূল ভূমিতে নিয়ে যেতে হয়। ১৯৫০ সাল থেকেই এ আইন মানা হচ্ছে। এ কারণে এখানে বাস করা প্রত্যেক মানুষের নরওয়ের মূলভূমিতে আর একটি ঠিকানা থাকা নিয়ম।
লংইয়ারবিয়েনের আরেকটি আশ্চর্য বিষয় হলো, শীতল আবহাওয়ার কারণে এখানকার সব বাড়ি-ঘর মাচা বা খুঁটির ওপর বানাতে হয়। যেন গ্রীষ্মে দ্বীপের ওপরের স্তরের বরফ গলে গেলে পানির তোড়ে বাড়ি-ঘর ডুবে বা ভেসে না যায়।
লংইয়ারবিয়েন শহরে বিড়াল পোষা মানা। এর কারণ অবশ্য বিভিন্ন ধরনের বিপন্ন প্রজাতির পাখিদের নিরাপদ রাখা। তা ছাড়া এখানকার বাসিন্দাদের বাইরে কোথাও ভ্রমণের সময় সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র রাখতে উৎসাহ দেওয়া হয়। তাই বলে ভাববেন না, আশপাশের এলাকা ছিনতাইকারী বা অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য! যেখানে মানুষের বসতিই চোখে পড়ে না তেমন সেখানে অপরাধী পাবেন কোথা থেকে?
এই সতর্কতার কারণ প্রকৃতপক্ষে মেরু ভালুকের থেকে আত্মরক্ষা। অবশ্য শহরের ভেতরে গুলিভরা অস্ত্র বহন নিষিদ্ধ। তবে সৌভাগ্যক্রমে মেরু ভালুকের খুব নিয়মিত শহরে পা রাখে না। সে তুলনায় মেরু শিয়ালদের আনাগোনা বেশি। তার চেয়ে বেশি দেখবেন বল্গা হরিণদের। খাবারের খোঁজে শহরে আসে তারা।
প্রতি বছর মার্চের ৮ তারিখ দুপুর সোয়া বারোটার দিকে শহরের সলফেসতাকা নামে এক উৎসব ও ছুটির দিন হিসেবে পালন করে চার মাসের বেশি সময় পরে দেখা সর্যরশ্মিকে স্বাগত জানিয়ে। অর্থাৎ বছরের তিন ভাগের এক ভাগ সময় আগাগোড়া অন্ধকারে ঢেকে থাকে শহরটি।
এদিকে লংইয়ারবিয়েনের হাসপাতাল খুব আধুনিক না হওয়ায় কেউ বেশি অসুস্থ হয়ে গেলে তাঁকে মূলভূমিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তেমনি কেউ যদি আর নিজের দেখাশোনা করার অবস্থায় না থাকতে পারেন তবে তাঁকেও শহর ছাড়তে হয়। কোনো নারী সন্তানসম্ভবা হলে সন্তান জন্মদানের প্রত্যাশিত দিনের ২১ দিন আগেই তাকে শহর ত্যাগ করতে হয়। অবশ্য তারপরও এখানে শিশুর জন্ম হওয়া এড়ানো যায় না। কারণ অনেকেরই তো সময়ের আগে সন্তান হয়।
লংইয়ারবিয়েনসহ সভালবারদে আরেকটি মজার বিষয় আছে। রেস্তোরাঁ, হোটেল, জাদুঘরসহ বিভিন্ন ভবনে প্রবেশের সময় এখানকার লোকেরা জুতা খেলে প্রবেশ করেন। কেন? আসলে এ প্রথা চলে আসছে বহু বছর আগ থেকে, যখন এখানে কয়লার খনির রমরমা ছিল। তখন চারপাশে ছড়িয়ে থাকা কয়লার ধুলো ভবনের ভেতরে ছড়িয়ে পড়া এড়াতে এর চল শুরু হয়। এখনো এটা বজায় রেখেছেন শহরের বাসিন্দারা।
অতএব পাঠক, পৃথিবীর সর্ব উত্তরের এই শহরে বেড়াতে যাওয়ার আগে এখানকার নিয়ম কানুনগুলো মাথায় রাখবেন আশা করি।
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, ভিজিট সভালবারদ.কম, দ্য নরওয়ে গাইড.কম
বিষধর মাকড়সা হিসেবে আলাদা পরিচিতি আছে ট্যারানটুলার। কাজেই একে এড়িয়ে চলাটাই স্বাভাবিক। ট্যারানটুলা একই সঙ্গে বেশ দুষ্প্রাপ্য এক প্রাণীও। তবে সম্প্রতি পেরুতে এক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে ৩২০টি ট্যারানটুলা মাকড়সাসহ আরও কিছু দুষ্প্রাপ্য প্রাণী শরীরের সঙ্গে বেঁধে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা...
১ দিন আগেপাঠকেরা পড়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইব্রেরিতে বই ফেরত দিয়ে দেবেন এটাই নিয়ম। কারও কারও সময়মতো বই ফেরত না দেওয়ার অভ্যাসও আছে। তবে তাই বলে আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না অর্ধ শতাব্দী পর কেউ বই ফেরত দেবেন। কিন্তু সত্যি মার্কিন মুলুকে এমন একটি কাণ্ড হয়েছে।
১ দিন আগেডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। শুধু আমেরিকায় নয়, বিশ্বজুড়েই আলোচনায় এখন ট্রাম্প। তবে তাঁর পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া ইতালির সার্দানিয়া দ্বীপের একটি গ্রামে একেবারেই ভিন্ন এক সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন হিসেবে।
২ দিন আগেটাইটানিকের ৭০০-র বেশি যাত্রী এবং ক্রুকে উদ্ধার করেছিল একটি জাহাজ। ওই জাহাজের ক্যাপ্টেনকে উপহার দেওয়া একটি সোনার ঘড়ি নিলামে বিক্রি হয়েছে ১৫ কোটি ৬০ লাখ পাউন্ড অর্থাৎ ১৯ কোটি ৭০ লাখ ডলারে।
৩ দিন আগে