ইশতিয়াক হাসান
স্কটল্যান্ডের ডাম্বারটনের মিল্টন গ্রামের ওভারটন সেতু উনিশ শতকের ভিক্টোরিয়ান স্থাপত্য রীতির আর দশটা সাধারণ সেতুর মতোই দেখতে। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও কুকুর মালিকদের কাছে আতঙ্কের এক প্রতিশব্দ এই সেতু। গত শতকের ষাটের দশক থেকে কুকুরদের লাফিয়ে পড়ার একের পর এক ঘটনা ঘটছে ওভারটন সেতু থেকে। সংখ্যাটি এতই বেশি যে ডগ সুইসাইড ব্রিজ নামেই এখন সেতুটিকে চেনে সবাই।
কুকুরেরা যে শুধু সেখান থেকে লাফিয়ে পড়ে তা নয়, লাফ দেওয়ার আগে এদের সেতুর পাশের প্রাচীর বেয়ে ওঠার চেষ্টাও করতে দেখেছেন কেউ কেউ। এমনকি লাফ দিয়ে পড়ে বেঁচে গিয়ে আবার লাফিয়ে পড়ার, অর্থাৎ দ্বিতীয়বার আত্মহত্যার চেষ্টা চালানোর কথাও শোনা যায়।
কুকুরদের লাফিয়ে পড়ার ঘটনা এতটাই সাড়া জাগায় যে স্কটিশ সোসাইটি ফর দ্য প্রিভেনশন অব ক্রুয়েল্টি টু অ্যানিমেল ঘটনা তদন্তে একটি প্রতিনিধিদলও পাঠায় ঘটনাস্থলে। তবে বুদ্ধিমান এই স্তন্যপায়ী প্রাণীর এমন অস্বাভাবিক আচরণের কারণ অনুসন্ধানে খুব একটা সফল হননি তাঁরা।
আশ্চর্য এই সেতু আর এর থেকে লাফিয়ে পড়া কুকুরে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মাণ করা হয়েছে আমেরিকার টিভি সিরিজ ‘দ্য আনএক্সপেক্টেড ফাইলস’-এর একটি পর্ব। এমনকি আস্ত একটি বইও লেখা হয়েছে এই সেতু নিয়ে। এই এলাকায় বেড়ে ওঠা স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোর শিক্ষক পল ওয়েনস এই সেতুর রহস্য নিয়ে ‘দ্য ব্যারন অব রেইনবো ব্রিজ: ওভারটনস ডেথ লিপিং ডগ মিস্ট্রি আনরিভিলড’ নামের বইটি লেখেন।
নিউইয়র্ক টাইমস স্থানীয় গবেষকদের তথ্যের ভিত্তিতে জানায়, এ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ কুকুর লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে ওভারটন সেতু থেকে। এতে মৃত্যু হয়েছে নিদেনপক্ষে ৫০টি কুকুরের। তবে স্থানীয় ট্যাবলয়েডগুলোর দাবি, কুকুর লাফিয়ে পড়ার সংখ্যাটা অনেক বেশি, অন্তত ৬০০।
এবার এক কুকুরের মালিকের একটি অভিজ্ঞতা তুলে ধরছি। ২০১৬ সালের কোনো এক সময়। লোটি ম্যাককিনন তাঁর বর্ডার কলি কুকুর বনিকে নিয়ে ওভারটন সেতুর দিকে হাঁটছিলেন। হঠাৎই কুকুরটার মধ্যে একটু অস্থিরতা আবিষ্কার করলেন। ‘সেতুর কাছাকাছি আসতেই কিছু একটা প্রভাব বিস্তার করা শুরু করে বনির ওপর। প্রথমে কেমন যেন জমে গেল, তার পরই অস্বাভাবিক একটি কাজ করল। হঠাৎ দৌড় দিয়ে দেয়ালের ওপর দিয়ে লাফ দিল।’ সৌভাগ্যক্রমে লাফিয়ে নিচের গিরিখাদে পড়ার পরও বেঁচে যায় কুকুরটি। তবে সব কুকুরের ভাগ্য অবশ্য অতটা ভালো হয় না!
সেতুটির কাছেই অবস্থিত ওভাটন হাউসে ১৭ বছর ধরে বাস করেন বব হিল ও তাঁর স্ত্রী। বব জানান, তাঁদের সামনেই বিভিন্ন সময়ে কুকুরেরা আচমকা লাফিয়ে পড়েছে সেতু থেকে। ঘটনা এতটাই দ্রুত ঘটে যায় যে করার কিছু থাকে না।
তবে বিষয়টি নিয়ে যারা গবেষণা করেছেন, তাঁদের কথা হলো, কুকুরা ওখানে মোটেই আত্মহত্যা করতে যায় না। মরার কোনো ইচ্ছাও তাদের জাগে না। বরং কিছু একটা তাদের উচ্চতা না বুঝেই ওখান থেকে লাফিয়ে পড়তে প্রলুব্ধ করে। কুকুরদের এমন অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে নানান তত্ত্বই ডালপালা মেলেছে।
স্কটল্যান্ডের অনেক গ্রামের মতো এখানকার লোকেরাও এখনো পুরোনো দিনের কুসংস্কার থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারেনি। যেমন শ্বেতবসনা এক নারীর প্রেতাত্মার গল্প প্রচলিত এই এলাকায়। অনেকের ধারণা, এই অশুভ আত্মাই কুকুরগুলোকে আত্মহত্যায় প্রলুব্ধ করে।
তবে প্রাণী গবেষকেরা এই তত্ত্ব মানবেন না এটাই স্বাভাবিক। সবচেয়ে যুক্তিসংগত ধারণাটি হলো, ওই সেতুর নিচের গভীর, গাছপালায় ভরা এলাকায় মিঙ্কের (বেজিজাতীয় প্রাণী) মতো ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণীর বাস। তাদের তীব্র গন্ধ, সেই সঙ্গে সেতুর পাশের নিরাপত্তা দেয়াল কুকুরদের উচ্চতা সম্পর্কে বিভ্রান্ত করে দুর্ঘটনাগুলো ঘটায়। অর্থাৎ মিঙ্কের কড়া গন্ধে প্রলুব্ধ কুকুর সেতুর উচ্চতা সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়েই লাফ দেয়। এই ধারণা আরও নিশ্চিত হয়, যখন গবেষণায় উঠে আসে যে উষ্ণ ও শুকনো দিনে যখন মিঙ্কের গন্ধ বেশি থাকে, তখন এই লাফিয়ে পড়ার ঘটনা বেশি ঘটে। যদিও এসব যুক্তিতর্ক বা তত্ত্বকথা কুকুরের মালিকদের দুশ্চিন্তা কমাতে ভূমিকা রেখেছে কমই। ওভারটন সেতু থেকে কুকুরের ঝাঁপ দেওয়া যে এখনো থেমে নেই।
লেখাটি পড়ার পর স্কটল্যান্ড গেলে ওভারটন সেতু এলাকায় একবার ঘুরে আসার অভিজ্ঞতা থেকে আশা করি নিজেকে বঞ্চিত করবেন না। তবে আপনার সঙ্গে কুকুর থাকলে সাবধান!
সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস, এটলাস অবসকিউরা
স্কটল্যান্ডের ডাম্বারটনের মিল্টন গ্রামের ওভারটন সেতু উনিশ শতকের ভিক্টোরিয়ান স্থাপত্য রীতির আর দশটা সাধারণ সেতুর মতোই দেখতে। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও কুকুর মালিকদের কাছে আতঙ্কের এক প্রতিশব্দ এই সেতু। গত শতকের ষাটের দশক থেকে কুকুরদের লাফিয়ে পড়ার একের পর এক ঘটনা ঘটছে ওভারটন সেতু থেকে। সংখ্যাটি এতই বেশি যে ডগ সুইসাইড ব্রিজ নামেই এখন সেতুটিকে চেনে সবাই।
কুকুরেরা যে শুধু সেখান থেকে লাফিয়ে পড়ে তা নয়, লাফ দেওয়ার আগে এদের সেতুর পাশের প্রাচীর বেয়ে ওঠার চেষ্টাও করতে দেখেছেন কেউ কেউ। এমনকি লাফ দিয়ে পড়ে বেঁচে গিয়ে আবার লাফিয়ে পড়ার, অর্থাৎ দ্বিতীয়বার আত্মহত্যার চেষ্টা চালানোর কথাও শোনা যায়।
কুকুরদের লাফিয়ে পড়ার ঘটনা এতটাই সাড়া জাগায় যে স্কটিশ সোসাইটি ফর দ্য প্রিভেনশন অব ক্রুয়েল্টি টু অ্যানিমেল ঘটনা তদন্তে একটি প্রতিনিধিদলও পাঠায় ঘটনাস্থলে। তবে বুদ্ধিমান এই স্তন্যপায়ী প্রাণীর এমন অস্বাভাবিক আচরণের কারণ অনুসন্ধানে খুব একটা সফল হননি তাঁরা।
আশ্চর্য এই সেতু আর এর থেকে লাফিয়ে পড়া কুকুরে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মাণ করা হয়েছে আমেরিকার টিভি সিরিজ ‘দ্য আনএক্সপেক্টেড ফাইলস’-এর একটি পর্ব। এমনকি আস্ত একটি বইও লেখা হয়েছে এই সেতু নিয়ে। এই এলাকায় বেড়ে ওঠা স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোর শিক্ষক পল ওয়েনস এই সেতুর রহস্য নিয়ে ‘দ্য ব্যারন অব রেইনবো ব্রিজ: ওভারটনস ডেথ লিপিং ডগ মিস্ট্রি আনরিভিলড’ নামের বইটি লেখেন।
নিউইয়র্ক টাইমস স্থানীয় গবেষকদের তথ্যের ভিত্তিতে জানায়, এ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ কুকুর লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে ওভারটন সেতু থেকে। এতে মৃত্যু হয়েছে নিদেনপক্ষে ৫০টি কুকুরের। তবে স্থানীয় ট্যাবলয়েডগুলোর দাবি, কুকুর লাফিয়ে পড়ার সংখ্যাটা অনেক বেশি, অন্তত ৬০০।
এবার এক কুকুরের মালিকের একটি অভিজ্ঞতা তুলে ধরছি। ২০১৬ সালের কোনো এক সময়। লোটি ম্যাককিনন তাঁর বর্ডার কলি কুকুর বনিকে নিয়ে ওভারটন সেতুর দিকে হাঁটছিলেন। হঠাৎই কুকুরটার মধ্যে একটু অস্থিরতা আবিষ্কার করলেন। ‘সেতুর কাছাকাছি আসতেই কিছু একটা প্রভাব বিস্তার করা শুরু করে বনির ওপর। প্রথমে কেমন যেন জমে গেল, তার পরই অস্বাভাবিক একটি কাজ করল। হঠাৎ দৌড় দিয়ে দেয়ালের ওপর দিয়ে লাফ দিল।’ সৌভাগ্যক্রমে লাফিয়ে নিচের গিরিখাদে পড়ার পরও বেঁচে যায় কুকুরটি। তবে সব কুকুরের ভাগ্য অবশ্য অতটা ভালো হয় না!
সেতুটির কাছেই অবস্থিত ওভাটন হাউসে ১৭ বছর ধরে বাস করেন বব হিল ও তাঁর স্ত্রী। বব জানান, তাঁদের সামনেই বিভিন্ন সময়ে কুকুরেরা আচমকা লাফিয়ে পড়েছে সেতু থেকে। ঘটনা এতটাই দ্রুত ঘটে যায় যে করার কিছু থাকে না।
তবে বিষয়টি নিয়ে যারা গবেষণা করেছেন, তাঁদের কথা হলো, কুকুরা ওখানে মোটেই আত্মহত্যা করতে যায় না। মরার কোনো ইচ্ছাও তাদের জাগে না। বরং কিছু একটা তাদের উচ্চতা না বুঝেই ওখান থেকে লাফিয়ে পড়তে প্রলুব্ধ করে। কুকুরদের এমন অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে নানান তত্ত্বই ডালপালা মেলেছে।
স্কটল্যান্ডের অনেক গ্রামের মতো এখানকার লোকেরাও এখনো পুরোনো দিনের কুসংস্কার থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারেনি। যেমন শ্বেতবসনা এক নারীর প্রেতাত্মার গল্প প্রচলিত এই এলাকায়। অনেকের ধারণা, এই অশুভ আত্মাই কুকুরগুলোকে আত্মহত্যায় প্রলুব্ধ করে।
তবে প্রাণী গবেষকেরা এই তত্ত্ব মানবেন না এটাই স্বাভাবিক। সবচেয়ে যুক্তিসংগত ধারণাটি হলো, ওই সেতুর নিচের গভীর, গাছপালায় ভরা এলাকায় মিঙ্কের (বেজিজাতীয় প্রাণী) মতো ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণীর বাস। তাদের তীব্র গন্ধ, সেই সঙ্গে সেতুর পাশের নিরাপত্তা দেয়াল কুকুরদের উচ্চতা সম্পর্কে বিভ্রান্ত করে দুর্ঘটনাগুলো ঘটায়। অর্থাৎ মিঙ্কের কড়া গন্ধে প্রলুব্ধ কুকুর সেতুর উচ্চতা সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়েই লাফ দেয়। এই ধারণা আরও নিশ্চিত হয়, যখন গবেষণায় উঠে আসে যে উষ্ণ ও শুকনো দিনে যখন মিঙ্কের গন্ধ বেশি থাকে, তখন এই লাফিয়ে পড়ার ঘটনা বেশি ঘটে। যদিও এসব যুক্তিতর্ক বা তত্ত্বকথা কুকুরের মালিকদের দুশ্চিন্তা কমাতে ভূমিকা রেখেছে কমই। ওভারটন সেতু থেকে কুকুরের ঝাঁপ দেওয়া যে এখনো থেমে নেই।
লেখাটি পড়ার পর স্কটল্যান্ড গেলে ওভারটন সেতু এলাকায় একবার ঘুরে আসার অভিজ্ঞতা থেকে আশা করি নিজেকে বঞ্চিত করবেন না। তবে আপনার সঙ্গে কুকুর থাকলে সাবধান!
সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস, এটলাস অবসকিউরা
বিষধর মাকড়সা হিসেবে আলাদা পরিচিতি আছে ট্যারানটুলার। কাজেই একে এড়িয়ে চলাটাই স্বাভাবিক। ট্যারানটুলা একই সঙ্গে বেশ দুষ্প্রাপ্য এক প্রাণীও। তবে সম্প্রতি পেরুতে এক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে ৩২০টি ট্যারানটুলা মাকড়সাসহ আরও কিছু দুষ্প্রাপ্য প্রাণী শরীরের সঙ্গে বেঁধে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা...
১ দিন আগেপাঠকেরা পড়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইব্রেরিতে বই ফেরত দিয়ে দেবেন এটাই নিয়ম। কারও কারও সময়মতো বই ফেরত না দেওয়ার অভ্যাসও আছে। তবে তাই বলে আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না অর্ধ শতাব্দী পর কেউ বই ফেরত দেবেন। কিন্তু সত্যি মার্কিন মুলুকে এমন একটি কাণ্ড হয়েছে।
১ দিন আগেডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। শুধু আমেরিকায় নয়, বিশ্বজুড়েই আলোচনায় এখন ট্রাম্প। তবে তাঁর পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া ইতালির সার্দানিয়া দ্বীপের একটি গ্রামে একেবারেই ভিন্ন এক সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন হিসেবে।
২ দিন আগেটাইটানিকের ৭০০-র বেশি যাত্রী এবং ক্রুকে উদ্ধার করেছিল একটি জাহাজ। ওই জাহাজের ক্যাপ্টেনকে উপহার দেওয়া একটি সোনার ঘড়ি নিলামে বিক্রি হয়েছে ১৫ কোটি ৬০ লাখ পাউন্ড অর্থাৎ ১৯ কোটি ৭০ লাখ ডলারে।
৩ দিন আগে