Ajker Patrika

‘ড্রপআউট’ চাওয়ালা: মেলবোর্নে বছরেই কোটিপতি ভারতীয় তরুণ

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২২, ১০: ৪৪
‘ড্রপআউট’ চাওয়ালা: মেলবোর্নে বছরেই কোটিপতি ভারতীয় তরুণ

ভাগ্যান্বেষণে বিদেশে পাড়ি জমানো ভারতীয় তরুণদের কাছে নতুন কিছু নয়। সঞ্জিৎ কোন্ডাও সে উদ্দেশ্যেই অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন, প্রথমে গ্র্যাজুয়েশনটা শেষ করবেন। তারপর ভালো কোনো চাকরি বাকরি জুটিয়ে ভাগ্য বদলে ফেলবেন। সেই উদ্দেশ্যে ভর্তিও হয়েছিলেন মেলবোর্নের এক স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ কোর্সে। তারপর...। তারপরের গল্পটিই নেট দুনিয়ায় ঝড় তুলেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে সঞ্জিতের গল্পটি।

ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, সঞ্জিৎ বিবিএ পড়া ছেড়ে দিয়েছেন। তারপর মেলবোর্নের রাস্তারে পাশে একটি চায়ের দোকান দিয়েছেন। দোকানের নাম দিয়েছেন ‘ড্রপআউট চাওয়ালা’। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে সঞ্জিৎ এখন কোটিপতি। ভেবেছিলেন, পড়াশোনা শেষ করে চাকরি বাকরি করে ভাগ্য বদলাবেন, অথচ তাঁর ভাগ্য কি না বদলে গেল এক চায়ের দোকানের মাধ্যমে। 

ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের নেলর জেলায় জন্ম ও বেড়ে ওঠা সঞ্জিতের। বয়স মোটে কুড়ি পেরিয়েছে। বাইশ বছর বয়সী সঞ্জিৎ বলেন, ‘আমার বাইশ বছরের স্মৃতির মধ্যে একটি দৃশ্য খুব দৃঢ়ভাবে গেঁথে আছে। সেটি হচ্ছে প্রতিদিন সকালে মায়ের হাতের চা বানানোর দৃশ্য। আমার মা প্রতিদিন সকালে চা বানাতেন।’ 

স্মৃতিতে গেঁথে থাকা সেই দৃশ্যকেই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ব্যবসায়িক আইডিয়ায় রূপ দিয়েছেন সঞ্জিৎ। তিনি বলেছেন, ‘বিবিএ ডিগ্রির শেষ পর্যায়ে ছিলাম। একটি করপোরেট প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপও করছিলাম। কিন্তু কাজটা উপভোগ করতে পারছিলাম না। হঠাৎ একদিন মনে হলো, নিজেই কিছু করব। চাকরি বাকরি করব না, উদ্যোক্তা হব। তারপরই স্মৃতিতে গেঁথে থাকা দৃশ্যটি মনে পড়ল। ভাবলাম, চায়ের দোকান দিয়েই তবে শুরু করি।’ 

সঞ্জিৎ এখন মেলবোর্নের এলিজাবেথ সড়কে ড্রপআউট চাওয়ালা দোকানে চা ও কফির পাশাপাশি সমুসাও বিক্রি করেন। এই এলাকায় অনেক ভারতীয় অভিবাসী বাস করেন। তাঁরা তো বটেই, অনেক অস্ট্রেলীয় এখন প্রতিদিন সকালে সঞ্জিতের ‘মাসালা চা’ দিয়ে সকাল শুরু করেন। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে তাঁর আয় দাঁড়িয়েছে কয়েক কোটি ভারতীয় রুপি। 

সঞ্জিৎ কোন্ডা বলেছেন, ‘আগামী মাসে ট্যাক্স কেটে রাখার পরেও আমার আয় ৫ কোটি ২০ লাখ রুপিতে গিয়ে দাঁড়াবে বলে ধারণা করছি। অস্ট্রেলিয়ায় ব্যবসা করা তুলনামূলক সহজ, যদি আপনি সঠিকভাবে ব্যবসায়িক ধারণাটা কাজে লাগাতে পারেন।’ 

সঞ্জিৎ শুধু নিজে আয়ই করছেন না। অনেক ভারতীয় তরুণের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করেছেন। তাঁর ড্রপআউট চাওয়ালায় বেশ কয়েকজন ভারতীয় শিক্ষার্থীকে খণ্ডকালীন চাকরি দিয়েছেন। এই তরুণ শিক্ষার্থীরা ভারত থেকে অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করতে গেছেন। সঞ্জিৎ তাঁদের পড়াশোনার পথ সুগম করার চেষ্টা করছেন। 

সঞ্জিৎ কী তবে ড্রপআউটই থাকবেন? হেঁসে বলেন, ‘না, আমি আমার ডিগ্রিটা শেষ করতে চাই। ভাবছি, সমাজকর্ম বিষয়ে এবার স্নাতকটা সম্পন্ন করব। আর ছোট্ট একটা স্বপ্ন আছে আমার। মাকে অস্ট্রেলিয়ায় এনে নিজের হাতে চা বানিয়ে খাওয়াতে চাই। মায়ের মুখ থেকে শুনতে চাই, আমার বানানো চা কেমন হয়েছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত