৫০০০ ফুট উঁচুতে দুই পাহাড়ের মাঝে সাঁকো, রোমাঞ্চের নেশায় ছুটছে পর্যটক

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image
স্কাই ল্যাডার বা আকাশের এই মই বিশেষ করে তরুণদের আকৃষ্ট করছে। ছবি: কিসিং অ্যাডভেঞ্চার

রোমাঞ্চকর কোনো অভিযান বা কাজের প্রতি তরুণদের আগ্রহ নতুন কিছু নয়। আর সেই সঙ্গে যদি আকাশ থেকে বিস্তৃত এলাকা দেখার সুযোগ থাকে তাহলে তো কথাই নেই। চীনের ৩৭ লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ঘুরে বেড়ানোর মতো জায়গার অভাব নেই। তবে চীনা তরুণ পর্যটকদের এখন ঝোঁকটা আকাশ থেকে দেশ দেখায়।

আর ‘দুর্বলিচত্তদের যেতে মানা’ এমন এ ধরনের নতুন আকর্ষণটি পরিচিতি পেয়েছে তিয়ানতি নামে। চীনা শব্দ তিয়ানতির অর্থ স্কাই ল্যাডার বা আকাশের মই। ৫৫১ ফুট (১৬৮ মিটার) দৈর্ঘ্যের মইটি ঝুলছে ৫০০০ ফুট উঁচু দুটি পর্বতচূড়ার মাঝখানে। চীনা রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমের সূত্রে এ সব তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রদেশ হুনানের কাংচাচা নেচার পার্কের মাউন্ট কিসিংয়ে এই আশ্চর্য মইটির অবস্থান। জটিল ভূ-প্রকৃতি এবং বিচিত্র ভূমি রূপের জন্য আলাদা নাম আছে জায়গাটির।

এই পার্বত্য পথটি ভায়া ফেরাতা ঘরানার। এ ধরনের পথ নানান নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে সুরক্ষিত করা হয়। পর্বতের পাথরের দেয়ালের মাঝখানে ইস্পাতের রেলিং, বিশ্রামের জায়গা, দড়ি এবং ক্যাবল ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে মানুষের সুবিধার জন্য। আর এর একটি অংশ এই মইটি।

সম্প্রতি চীনের ‘টিকটক’ হিসেবে পরিচিত ডুয়িনে তিয়ানতিতে আরোহণের ভিডিও ভাইরাল হওয়া এক নারী বলেন, ‘ভিডিওর ওই পা আমার। আর এই বাচ্চাটি আমার ছেলে।’

৫৫১ ফুট দৈর্ঘ্যের মইটি ঝুলছে ৫০০০ ফুট উঁচু দুটি পর্বতচূড়ার মাঝখানে। ছবি: কিসিং অ্যাডভেঞ্চার
৫৫১ ফুট দৈর্ঘ্যের মইটি ঝুলছে ৫০০০ ফুট উঁচু দুটি পর্বতচূড়ার মাঝখানে। ছবি: কিসিং অ্যাডভেঞ্চার

ভিডিওটিতে সিঁড়িতে তার পা দেখানোর পর ধীরে ধীরে সিঁড়িতে বসে থাকা তার নয় বছর বয়সী ছেলের দিকে এগিয়ে যান।

‘আমি মোটেই অস্বস্তিতে ছিলাম না। তবে আমার ছেলের কিছুটা সমস্যা হচ্ছিল। তবে কিছুক্ষণ পরই সে স্বাভাবিক হয়ে যায়।’ সিএনএনকে বলেন তিনি।

কাছেই একটি বেড অ্যান্ড ব্রেকফাস্ট চালান হি চিয়ার নামের এই নারী। নতুন এই দ্রষ্টব্যের টিকিট কাটতেও পর্যটকদের সাহায্য করেন তিনি।

‘যারা নিজেদের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করেন তারা এটা করতে পারেন,’ বলেন তিনি, ‘আমি তাদের কয়েক ডজনকে টিকিট পেতে সাহায্য করেছি, সবাই শুরুতে ভয় পেয়েছিল।’

চীনের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম সিসিটিভি জানায়, আকাশ ছোঁয়ার চেষ্টা করা এই মইটি এবং পথটিতে রোমাঞ্চকর ভ্রমণের জন্য গড়ে প্রতিদিন এক হাজার ২০০ পর্যটক হাজির হন।

এটি এতটাই জনপ্রিয় যে কখনো কখনো মানুষের জট পর্যন্ত লেগে যায়।

মই পথে চলছে দুঃসাহসী তিন পর্যটক। ছবি: কিসিং অ্যাডভেঞ্চার
মই পথে চলছে দুঃসাহসী তিন পর্যটক। ছবি: কিসিং অ্যাডভেঞ্চার

ফেরেতা এবং মইটি চীনা সংবাদমাধ্যমেও খুব জনপ্রিয় এক বিষয়। হি সিয়ানের মতো আরও কারও কারও ভিডিও হাজারো বার শেয়ার হচ্ছে।

‘এটা দেখেই আমার হাত ঘামে ভিজে গেছে।’ অন্য একটি ভাইরাল পোস্টে মন্তব্য করেন একজন।

‘এক মিলিয়ন দিলেও এটা করার চেষ্টা করব না আমি।’ ডুয়িনে মন্তব্য করেন অপর একজন।

মাউন্ট কিসিংয়ের এই দ্রষ্টব্য স্থানটিতে ভ্রমণ পরিচালনা করা প্রতিষ্ঠান কিসিং অ্যাডভেঞ্চারের ব্যবস্থাপনা তত্ত্বাবধায়ক ইওয়ান শাওনি সিএনএনকে জানান, ফেরেতাতে তিন ঘণ্টার এ ভ্রমণে খরচ হয় ৫৮০ ইউয়ান বা ৮০ ডলার (সাড়ে নয় হাজার টাকা)

‘পুরো প্রক্রিয়াটিতে সঙ্গী হিসেবে থাকে প্রশিক্ষকেরা,’ বলেন ইওয়ান, ‘ভ্রমণকারীদের হেলমেট, নিরাপত্তা বেল্ট এবং হাইকিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়।’

তিনি জানান, পুরো এলাকা নিয়মিত পরিদর্শন করা হয় এবং যেকোনো সমস্যা পাওয়া গেলে তা সময়মতো দূর করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত