অনলাইন ডেস্ক
পানামা খাল বা পানামা ক্যানেলের নাম শুনেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে খালটি। মজার ঘটনা, এটি কিন্তু প্রাকৃতিক নয় বরং কৃত্রিম একটি খাল। আজকের এই দিনে অর্থাৎ ১৯১৪ সালের ১৫ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম খুলে দেওয়া হয় পানামা খাল। তখন এসএস আরকন নামের একটি জাহাজ খালটি অতিক্রম করে।
আটলান্টিক থেকে প্রশান্ত মহাসাগরে যাওয়ার একটি সংক্ষিপ্ত পথের প্রয়োজনীয়তা প্রথম মানুষের মাথায় আসতে শুরু করে ষোলো শতকের গোড়ার দিকে। ১৫২৩ সালে রোমান সম্রাট পঞ্চম চার্লস ইসথুমাস অব পানামা নামে পরিচিত সরু ভূখণ্ডটিতে একটি জরিপের উদ্যোগ নেন। পরবর্তীতে একটি ক্যানেল বা খাল তৈরির নানা ধরনের পরিকল্পনা হলেও আলোর মুখ দেখেনি বহু বছর।
পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে উনিশ শতকের মাঝামাঝিতে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার গোল্ড রাশসহ আরও কিছু কারণে এমন একটি যাতায়াত পথের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্র। পানামা খাল তৈরি হওয়ার ফলে দেশটির যে মস্ত সুবিধা হয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। বর্তমানে নিউইয়র্ক থেকে সান ফ্রান্সিসকোগামী কোনো জাহাজ দক্ষিণ আমেরিকা হয়ে ঘুরে যাওয়ার বদলে পানামা খাল দিয়ে যাওয়ার কারণে সাত হাজার ৮০০ মাইল কম দূরত্ব পেরোতে হয়।
১৮৮০ সালে একটি ফরাসি কোম্পানি ইসমাস অব পানামা (তখন এটি কলম্বিয়ার অংশ ছিল) দিয়ে একটি খাল খনন শুরু করে। কিন্তু কাজের শুরুতেই বড় বিপর্যয় ঘটে। ইয়েলো ফিভারসহ নানা রোগে মৃত্যু হয় ২২ হাজারের বেশি শ্রমিক। কোম্পানিটি শেষ পর্যন্ত দেউলিয়া হয়ে যায়। ১৯০২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রকল্পটির স্বত্ব ৪ কোটি ডলারে বিক্রি করে দেয় তারা।
প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট আমেরিকার অর্থনৈতিক ও সামরিক স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করে খালটি তৈরির উদ্যোগ নেন। ১৯০৩ সালে মার্কিন-সমর্থিত বিপ্লবে পানামা কলম্বিয়া থেকে স্বাধীনতা পায়। তারপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পানামা হে-বানাউ-ভ্যারিলা চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এর আওতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পানামাকে খালের জন্য জমির স্থায়ী ইজারা দেওয়ার জন্য এক কোটি ডলার দিতে সম্মত হয়। এ ছাড়া প্রতি বছর ভাড়া হিসেবে পানামা পাবে আড়াই লাখ ডলার।
১৯০৪ সাল থেকে ১৯১৩ সাল পর্যন্ত খালটি নির্মাণে কত লোক কাজ করেন শুনলে চমকাবেন, ৫৬ হাজার। এদের মধ্যে ৫ হাজার ৬০০ জন মারা যান। খালটির নির্মাণে খরচ হয় ৩৭ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। তৈরি শেষ হলে, একে বিবেচনা করা হয় অসাধারণ ও বিস্ময়কর প্রকৌশলবিদ্যার অনন্য এক উদাহরণ হিসেবে। বিশ্বশক্তি হিসেবে আমেরিকার উত্থানেও বড় ভূমিকা এই খালের।
পানামাবাসীর দুই দশকের আন্দোলনের কারণে ১৯৭৭ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার এবং পানামার জেনারেল ওমা তোরিজস দুটি নতুন চুক্তি সাক্ষর করেন। এটি ১৯০৩ সালের ওই চুক্তির স্থান নেয়। এতে খালের নিয়ন্ত্রণভার ১৯৯৯ সালে পানামাকে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত হয়। তবে ১৯৭৯ থেকে পানামার হাতে হস্তান্তরের আগে পর্যন্ত পানামা ক্যানেল কমিশন নামে যুক্তরাষ্ট্র ও পানামার একটি যৌথ কমিশন এটি নিয়ন্ত্রণ করে।
১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে পানামা খালের নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা তুলে দেয় পানামার হাতে। এর মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ এই জলপথ প্রথমবারের মতো পানামার নিয়ন্ত্রণে আসে।
পানামা খাল তৈরির ইতিহাস ও কীভাবে এটি পানামার নিয়ন্ত্রণে এলো তা নিয়ে তো অনেক কথাই হলো। কিন্তু খালটির দৈর্ঘ্য-প্রস্থ কত তাই তো জানা হলো না এখনো। খালটির দৈর্ঘ্য ৫০ মাইল, চওড়ায় জায়গাভেদে ১৫০ থেকে ৩০০ মিটার (৫০০ থেকে ১ হাজার ফুট)। প্রতি বছর বিপুলসংখ্যক জাহাজ পানামা খাল অতিক্রম করে। আর এগুলোর টোল থেকে বিপুল আয় হয় পানামার।
সূত্র: হিস্টরি চ্যানেল, ব্রিটানিকা, স্ট্যাটিস্টা ডট কম
পানামা খাল বা পানামা ক্যানেলের নাম শুনেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে খালটি। মজার ঘটনা, এটি কিন্তু প্রাকৃতিক নয় বরং কৃত্রিম একটি খাল। আজকের এই দিনে অর্থাৎ ১৯১৪ সালের ১৫ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম খুলে দেওয়া হয় পানামা খাল। তখন এসএস আরকন নামের একটি জাহাজ খালটি অতিক্রম করে।
আটলান্টিক থেকে প্রশান্ত মহাসাগরে যাওয়ার একটি সংক্ষিপ্ত পথের প্রয়োজনীয়তা প্রথম মানুষের মাথায় আসতে শুরু করে ষোলো শতকের গোড়ার দিকে। ১৫২৩ সালে রোমান সম্রাট পঞ্চম চার্লস ইসথুমাস অব পানামা নামে পরিচিত সরু ভূখণ্ডটিতে একটি জরিপের উদ্যোগ নেন। পরবর্তীতে একটি ক্যানেল বা খাল তৈরির নানা ধরনের পরিকল্পনা হলেও আলোর মুখ দেখেনি বহু বছর।
পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে উনিশ শতকের মাঝামাঝিতে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার গোল্ড রাশসহ আরও কিছু কারণে এমন একটি যাতায়াত পথের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্র। পানামা খাল তৈরি হওয়ার ফলে দেশটির যে মস্ত সুবিধা হয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। বর্তমানে নিউইয়র্ক থেকে সান ফ্রান্সিসকোগামী কোনো জাহাজ দক্ষিণ আমেরিকা হয়ে ঘুরে যাওয়ার বদলে পানামা খাল দিয়ে যাওয়ার কারণে সাত হাজার ৮০০ মাইল কম দূরত্ব পেরোতে হয়।
১৮৮০ সালে একটি ফরাসি কোম্পানি ইসমাস অব পানামা (তখন এটি কলম্বিয়ার অংশ ছিল) দিয়ে একটি খাল খনন শুরু করে। কিন্তু কাজের শুরুতেই বড় বিপর্যয় ঘটে। ইয়েলো ফিভারসহ নানা রোগে মৃত্যু হয় ২২ হাজারের বেশি শ্রমিক। কোম্পানিটি শেষ পর্যন্ত দেউলিয়া হয়ে যায়। ১৯০২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রকল্পটির স্বত্ব ৪ কোটি ডলারে বিক্রি করে দেয় তারা।
প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট আমেরিকার অর্থনৈতিক ও সামরিক স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করে খালটি তৈরির উদ্যোগ নেন। ১৯০৩ সালে মার্কিন-সমর্থিত বিপ্লবে পানামা কলম্বিয়া থেকে স্বাধীনতা পায়। তারপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পানামা হে-বানাউ-ভ্যারিলা চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এর আওতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পানামাকে খালের জন্য জমির স্থায়ী ইজারা দেওয়ার জন্য এক কোটি ডলার দিতে সম্মত হয়। এ ছাড়া প্রতি বছর ভাড়া হিসেবে পানামা পাবে আড়াই লাখ ডলার।
১৯০৪ সাল থেকে ১৯১৩ সাল পর্যন্ত খালটি নির্মাণে কত লোক কাজ করেন শুনলে চমকাবেন, ৫৬ হাজার। এদের মধ্যে ৫ হাজার ৬০০ জন মারা যান। খালটির নির্মাণে খরচ হয় ৩৭ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। তৈরি শেষ হলে, একে বিবেচনা করা হয় অসাধারণ ও বিস্ময়কর প্রকৌশলবিদ্যার অনন্য এক উদাহরণ হিসেবে। বিশ্বশক্তি হিসেবে আমেরিকার উত্থানেও বড় ভূমিকা এই খালের।
পানামাবাসীর দুই দশকের আন্দোলনের কারণে ১৯৭৭ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার এবং পানামার জেনারেল ওমা তোরিজস দুটি নতুন চুক্তি সাক্ষর করেন। এটি ১৯০৩ সালের ওই চুক্তির স্থান নেয়। এতে খালের নিয়ন্ত্রণভার ১৯৯৯ সালে পানামাকে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত হয়। তবে ১৯৭৯ থেকে পানামার হাতে হস্তান্তরের আগে পর্যন্ত পানামা ক্যানেল কমিশন নামে যুক্তরাষ্ট্র ও পানামার একটি যৌথ কমিশন এটি নিয়ন্ত্রণ করে।
১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে পানামা খালের নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা তুলে দেয় পানামার হাতে। এর মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ এই জলপথ প্রথমবারের মতো পানামার নিয়ন্ত্রণে আসে।
পানামা খাল তৈরির ইতিহাস ও কীভাবে এটি পানামার নিয়ন্ত্রণে এলো তা নিয়ে তো অনেক কথাই হলো। কিন্তু খালটির দৈর্ঘ্য-প্রস্থ কত তাই তো জানা হলো না এখনো। খালটির দৈর্ঘ্য ৫০ মাইল, চওড়ায় জায়গাভেদে ১৫০ থেকে ৩০০ মিটার (৫০০ থেকে ১ হাজার ফুট)। প্রতি বছর বিপুলসংখ্যক জাহাজ পানামা খাল অতিক্রম করে। আর এগুলোর টোল থেকে বিপুল আয় হয় পানামার।
সূত্র: হিস্টরি চ্যানেল, ব্রিটানিকা, স্ট্যাটিস্টা ডট কম
৯১১-তে ফোন দিয়ে কত জরুরি প্রয়োজনেই তো সাহায্য চায় মানুষ। তাই বলে নিশ্চয় আশা করবেন না কেউ অঙ্ক মিলিয়ে দিতে বলবে। কিন্তু ৯১১-তে ফোন দিয়ে এ আবদারই করে যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনের ১০ বছরের এক বালক।
১৮ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ এক ফ্লাইটের যাত্রীরা অপর এক যাত্রীকে মাঝপথে চেপে ধরে হাত-পা টেপ দিয়ে আটকে দেন। অবশ্য ওই যাত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর। তিনি উড়োজাহাজটি ৩০ হাজার ফুট উচ্চতায় থাকা অবস্থায় দরজা খুলে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
২০ ঘণ্টা আগেবিষধর মাকড়সা হিসেবে আলাদা পরিচিতি আছে ট্যারানটুলার। কাজেই একে এড়িয়ে চলাটাই স্বাভাবিক। ট্যারানটুলা একই সঙ্গে বেশ দুষ্প্রাপ্য এক প্রাণীও। তবে সম্প্রতি পেরুতে এক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে ৩২০টি ট্যারানটুলা মাকড়সাসহ আরও কিছু দুষ্প্রাপ্য প্রাণী শরীরের সঙ্গে বেঁধে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা...
৩ দিন আগেপাঠকেরা পড়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইব্রেরিতে বই ফেরত দিয়ে দেবেন এটাই নিয়ম। কারও কারও সময়মতো বই ফেরত না দেওয়ার অভ্যাসও আছে। তবে তাই বলে আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না অর্ধ শতাব্দী পর কেউ বই ফেরত দেবেন। কিন্তু সত্যি মার্কিন মুলুকে এমন একটি কাণ্ড হয়েছে।
৩ দিন আগে