অনলাইন ডেস্ক
জলদস্যুরা শত শত বছর ধরে আমাদের কল্পনায় বিশেষ এক জায়গা করে নিয়েছে। এর কারণ জলদস্যুদের ভয়াবহতার নানা কাহিনি, ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ সাগরে রোমাঞ্চকর অভিযান ও তাঁদের গুপ্তধন। এদিকে এখন বাংলাদেশি একটি জাহাজের দখলে নিয়ে ২৩ নাবিককে জিম্মি করে আলোচনায় সোমালি জলদস্যুরা। অবশ্য এখনকার এই জলদস্যুদের সঙ্গে পুরোনো দিনের সেই জলদস্যুদের অনেকই তফাত।
আগের জমানার ওই জলদস্যুরা শাসন করত সাগর। ব্ল্যাকবিয়ার্ড থেকে শুরু করে অ্যানি বনি, এই সব জলদস্যুরা যে শুধু অপরাধী ছিল তা নয়, তারা প্রকৃতপক্ষে পরিণত হয়েছে কিংবদন্তিতে।
জলদস্যুতার সোনালি সময়
সতেরো ও আঠারো শতকে পৃথিবীর সাগর-মহাসাগরগুলোয় মহা দাপটের সঙ্গে রাজত্ব করেছে জলদস্যুরা। জলদস্যুতার স্বর্ণযুগ হিসেবে পরিচিত এই উত্তাল যুগে কুখ্যাত সব জলদস্যুর উত্থান ঘটেছিল। যারা বণিকদের জাহাজ লুণ্ঠন করত, উপকূলীয় শহরগুলিতে লুটতরাজ চালাত। চলুন তবে কয়েকটি শতাব্দী পিছিয়ে যাই, পরিচিত হই জলদস্যুতার সোনালি সময়ের সেই সব দুর্দমনীয়-ভয়ংকর জলদস্যুদের সঙ্গে।
ব্ল্যাকবিয়ার্ড
যার নাম শুনলেই জাহাজের ক্যাপ্টেন ও নাবিকদের গা কাটা দিয়ে উঠত তিনি ব্ল্যাকবিয়ার্ড। তার আসল নাম এডওয়ার্ড টিচ। অনেকের বিবেচনাতেই তিনি ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর জলদস্যু। কালো জট পাকানো চুল, দাঁড়ির কিনারা থেকে বের হওয়া ধোঁয়া, ভাটার মতো জ্বলন্ত দুই চোখ, শরীরের সঙ্গে আটকানো পিস্তল—সব মিলিয়ে ব্ল্যাকবিয়ার্ডকে দেখলেই আত্মরাম খাঁচাছাড়া হওয়ার জোগাড় হতো নাবিকদের।
ব্ল্যাকবিয়ার্ডের হাত থেকে বেঁচে ফেরা নাবিকেরা জানান, লুটতরাজের সময় টুপির নিচে জ্বলন্ত দড়ির টুকরো রেখে দিত ভয়ানক এই দস্যু। জাহাজের একটি বহরের নেতৃত্ব দেওয়া ব্ল্যাকবিয়ার্ড ক্যারিবিয়ান ও আটলান্টিক মহাসাগরে জাহাজ লুট করে বিশাল সম্পদের মালিক হন। বলা চলে অক্ষত অবস্থায় তার এলাকা অতিক্রমের সাধ্য ছিল না কোনো জাহাজের। পরে পাইরেট হান্টারদের হাতে নিহত হন এই ভয়ংকর দস্যু।
দিনটি ছিল ১৭১৮ সালের ২২ নভেম্বর। আমেরিকার উত্তর ক্যারোলাইনার ওকরাকক দ্বীপের কাছে ব্ল্যাকবিয়ার্ডকে কোণঠাসা করে ফেলে পাইরেট হান্টাররা। জলদস্যুদের জন্য ঘোষণা করা পুরস্কারের অর্থ পাওয়ার জন্য যারা তাদের ধরত বা মারত তাদেরই বলা হতো পাইরেট হান্টার। দারুণ যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত মারা পড়েন ব্ল্যাকবিয়ার্ড।
অ্যান বনি
পুরুষের আধিপত্যময় এক বিশ্বে, অ্যান বনি আবির্ভূত হন নিষ্ঠুর এবং নির্ভীক এক নারী জলদস্যু হিসেবে। আয়ারল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী বনি সামাজিক রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে বনে যান জলদস্যু। প্রেমিক কুখ্যাত ক্যালিকো জ্যাক র্যাকহেমের সঙ্গে মিলে ক্যারিবিয়ান সাগরে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতেন অ্যান বনি।
একজন দক্ষ যোদ্ধা হিসেবে তার খ্যাতি এবং নারীর প্রথাগত ভূমিকা মেনে চলতে অস্বীকৃতি বনিকে জলদস্যুদের মধ্যে একজন কিংবদন্তিতে পরিণত করে। তবে একপর্যায়ে বন্দী হন এবং মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন। তবে তিনি ফাঁসির মঞ্চ থেকে পালাতে সক্ষম হন। তারপর তার আর খোঁজ না মিললেও বনির সাহস এবং অনমনীয়তা রোমাঞ্চপ্রেমী মানুষের মনে চিরস্থায়ী জায়গা দিয়েছে তাকে।
ক্যালিকো জ্যাক র্যাকহেম
বনির কথা যেহেতু বলা হলোই তাহলে তার প্রেমিক ক্যালিকো জ্যাক রেকহ্যাম কেন বাদ থাকবেন! র্যাকহেম রঙিন সুতির বা ক্যালিকো পোশাক পরতেন। এ কারণে ক্যালিকো জ্যাক নামে পরিচিতি পান। তার জলদস্যু জীবন ছিল স্বল্পস্থায়ী। কারণ তাকে বন্দী করার পর ১৭২০ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তবে বন্দী হওয়ার আগেই অসংখ্য জাহাজ দখল ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে কুখ্যাতি অর্জন করেন।
ক্যাপ্টেন কিড
উইলিয়াম কিড পরিচিত ছিলেন ক্যাপ্টেন কিড নামে। তার শুরুটা প্রাইভেটিয়ার হিসেবে। ব্রিটিশ সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত এই প্রাইভেটিয়ারদের কাজ ছিল যুদ্ধের সময় শত্রু জাহাজ আক্রমণ করা। তবে দ্রুতই জলদস্যুতে পরিণত হন। শত্রু জাহাজের পাশাপাশি সাধারণ সদাগরি জাহাজগুলিও তার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। এটা তাকে একজন নির্মম এবং রক্তপিপাসু জলদস্যু হিসেবে কুখ্যাতি এনে দেয়। তবে একপর্যায়ে কিড বন্দী হন এবং বিচারে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাকে। যতদূর জানা যায় ১৭০১ সালে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় তার।
বার্থলোমিও রবার্টস
বার্থলোমিও রবার্টস পরিচিত ছিলেন ব্ল্যাক বার্ট নামে। অনেকেই তাকে বিবেচনা করেন সোনালি যুগের সবচেয়ে সফল জলদস্যু হিসেবে। ৪০০-র বেশি জাহাজ দখল করে নাবিকদের মধ্যে নিজেদের ভীতিকর এক ইমেজ তৈরি করেন তিনি। রবার্টস তার কঠোর আচরণবিধির জন্য পরিচিত ছিলেন। নিজের জাহাজে জুয়া, মদ্যপান এবং লড়াই নিষিদ্ধ করেছিলেন।
হেনরি মরগান
হেনরি মরগানের গল্পটা অন্য জলদস্যুদের চেয়ে একটু ভিন্ন। শুরুটা তার জলদস্যু হিসেবে। বিশেষ করে স্প্যানিশ উপনিবেশগুলিতে হামলা চালিয়ে বিপুল অর্থ উপার্জন করেন। তবে একপর্যায়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমা পান এবং ব্রিটিশ সরকার স্পেনীয় জাহাজে আক্রমণ চালানোর জন্য প্রাইভেটিয়ার হিসেবে দায়িত্ব দেয় তাকে। পানামা সিটি দখল করে বিপুল অর্থ-সম্পদ লুণ্ঠন করেন। পরবর্তীতে জ্যামাইকার লেফটেন্যান্ট গভর্নর হন। ১৬৮৮ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
মেরি রিড
অ্যান বনির মতো কুখ্যাতি কামানো আরেক নারী জলদস্যু মেরি রিড। তবে তিনি সবসময় থাকতেন পুরুষের ছদ্মবেশে। এমনকি দলের অন্য জলদস্যুদের থেকেও নিজের পরিচয় লুকিয়ে রেখেছিলেন। সেটা প্রকাশ পায় রিডসহ অন্য জলদস্যুরা ধরা পড়ার পর।
বন্দী হওয়ার পরে, তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার আগেই কারাগারে মারা যান তিনি। তার গল্প সেইসব নারীর গুপ্ত ইতিহাসের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে কাজ করে যারা চিরাচরিত রীতিকে অস্বীকার করেন এবং জলদস্যুতার মাধ্যমে স্বাধীনতা পেয়েছিলেন।
চিং শি
চীনা এই নারী জলদস্যু নেতৃত্ব দিতেন ইতিহাসের জলদস্যুদের সবচেয়ে বড় জাহাজ বহরগুলির একটির। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে দক্ষিণ চীন সাগরে ত্রাস সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। সদাগরি জাহাজের পাশাপাশি ও নৌবাহিনীর জাহাজও আতঙ্কে থাকত এই নারী জলদস্যু ও তার দলবলকে নিয়ে।
চিং শির অসাধারণ কৌশল এবং কঠোর আচরণবিধি তাকে প্রচুর সম্পদের মালিক করার পাশাপাশি বিপুল ক্ষমতাশালী করে। অবশ্য একপর্যায়ে জলদস্যুর জীবন ছেড়ে সাধারণ, বৈধ নাগরিকের মতো জীবন-যাপন করতে থাকেন।
এডওয়ার্ড লো
নাবিকদের মনে ভীতি সৃষ্টির জন্য এডওয়ার্ড লোর নামটিই ছিল যথেষ্ট। তিনি বন্দীদের সঙ্গে নৃশংস আচরণের জন্য কুখ্যাতি পান। নিষ্ঠুরতার জন্য তার খ্যাতি তাকে আঠারো শতকের সবচেয়ে কুখ্যাত জলদস্যুদের তালিকায় ওপরের দিকে রাখবে। অবশ্য একপর্যায়ে তাকে বন্দী করা হয় এবং ফাঁসি দেওয়া হয়।
জঁ লাফিত
উনিশ শতকের গোড়ার দিকে গালফ অব মেক্সিকো এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে অভিযান চালাতেন জঁ লাফিত। লাফিত ও তার ভাই পিয়ের চোরাচালানের জন্য কুখ্যাতি অর্জন করেন। ১৮১২ সালের যুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সাহায্য করার আগ্রহের জন্যও পরিচিতি পান। তার অপারেশনের মূল ঘাঁটি ছিল নিউ অরলিন্স। সেখানে কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন। বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কাজ করার জন্যও পরিচিত ছিলেন। পরবর্তীতে একজন প্রাইভেটিয়ার হিসেবে তার দক্ষতা তাকে আমেরিকানদের কাছে মূল্যবান এক সম্পদে পরিণত করে। নায়ক এবং খলনায়কের মধ্যে সীমারেখা অনেকটাই ঝাপসা করে দেন জঁ লাফিত।
সূত্র: ফ্যামিলি ওয়াইজ ডট কম ইউকে, উইকিপিডিয়া
জলদস্যুরা শত শত বছর ধরে আমাদের কল্পনায় বিশেষ এক জায়গা করে নিয়েছে। এর কারণ জলদস্যুদের ভয়াবহতার নানা কাহিনি, ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ সাগরে রোমাঞ্চকর অভিযান ও তাঁদের গুপ্তধন। এদিকে এখন বাংলাদেশি একটি জাহাজের দখলে নিয়ে ২৩ নাবিককে জিম্মি করে আলোচনায় সোমালি জলদস্যুরা। অবশ্য এখনকার এই জলদস্যুদের সঙ্গে পুরোনো দিনের সেই জলদস্যুদের অনেকই তফাত।
আগের জমানার ওই জলদস্যুরা শাসন করত সাগর। ব্ল্যাকবিয়ার্ড থেকে শুরু করে অ্যানি বনি, এই সব জলদস্যুরা যে শুধু অপরাধী ছিল তা নয়, তারা প্রকৃতপক্ষে পরিণত হয়েছে কিংবদন্তিতে।
জলদস্যুতার সোনালি সময়
সতেরো ও আঠারো শতকে পৃথিবীর সাগর-মহাসাগরগুলোয় মহা দাপটের সঙ্গে রাজত্ব করেছে জলদস্যুরা। জলদস্যুতার স্বর্ণযুগ হিসেবে পরিচিত এই উত্তাল যুগে কুখ্যাত সব জলদস্যুর উত্থান ঘটেছিল। যারা বণিকদের জাহাজ লুণ্ঠন করত, উপকূলীয় শহরগুলিতে লুটতরাজ চালাত। চলুন তবে কয়েকটি শতাব্দী পিছিয়ে যাই, পরিচিত হই জলদস্যুতার সোনালি সময়ের সেই সব দুর্দমনীয়-ভয়ংকর জলদস্যুদের সঙ্গে।
ব্ল্যাকবিয়ার্ড
যার নাম শুনলেই জাহাজের ক্যাপ্টেন ও নাবিকদের গা কাটা দিয়ে উঠত তিনি ব্ল্যাকবিয়ার্ড। তার আসল নাম এডওয়ার্ড টিচ। অনেকের বিবেচনাতেই তিনি ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর জলদস্যু। কালো জট পাকানো চুল, দাঁড়ির কিনারা থেকে বের হওয়া ধোঁয়া, ভাটার মতো জ্বলন্ত দুই চোখ, শরীরের সঙ্গে আটকানো পিস্তল—সব মিলিয়ে ব্ল্যাকবিয়ার্ডকে দেখলেই আত্মরাম খাঁচাছাড়া হওয়ার জোগাড় হতো নাবিকদের।
ব্ল্যাকবিয়ার্ডের হাত থেকে বেঁচে ফেরা নাবিকেরা জানান, লুটতরাজের সময় টুপির নিচে জ্বলন্ত দড়ির টুকরো রেখে দিত ভয়ানক এই দস্যু। জাহাজের একটি বহরের নেতৃত্ব দেওয়া ব্ল্যাকবিয়ার্ড ক্যারিবিয়ান ও আটলান্টিক মহাসাগরে জাহাজ লুট করে বিশাল সম্পদের মালিক হন। বলা চলে অক্ষত অবস্থায় তার এলাকা অতিক্রমের সাধ্য ছিল না কোনো জাহাজের। পরে পাইরেট হান্টারদের হাতে নিহত হন এই ভয়ংকর দস্যু।
দিনটি ছিল ১৭১৮ সালের ২২ নভেম্বর। আমেরিকার উত্তর ক্যারোলাইনার ওকরাকক দ্বীপের কাছে ব্ল্যাকবিয়ার্ডকে কোণঠাসা করে ফেলে পাইরেট হান্টাররা। জলদস্যুদের জন্য ঘোষণা করা পুরস্কারের অর্থ পাওয়ার জন্য যারা তাদের ধরত বা মারত তাদেরই বলা হতো পাইরেট হান্টার। দারুণ যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত মারা পড়েন ব্ল্যাকবিয়ার্ড।
অ্যান বনি
পুরুষের আধিপত্যময় এক বিশ্বে, অ্যান বনি আবির্ভূত হন নিষ্ঠুর এবং নির্ভীক এক নারী জলদস্যু হিসেবে। আয়ারল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী বনি সামাজিক রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে বনে যান জলদস্যু। প্রেমিক কুখ্যাত ক্যালিকো জ্যাক র্যাকহেমের সঙ্গে মিলে ক্যারিবিয়ান সাগরে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতেন অ্যান বনি।
একজন দক্ষ যোদ্ধা হিসেবে তার খ্যাতি এবং নারীর প্রথাগত ভূমিকা মেনে চলতে অস্বীকৃতি বনিকে জলদস্যুদের মধ্যে একজন কিংবদন্তিতে পরিণত করে। তবে একপর্যায়ে বন্দী হন এবং মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন। তবে তিনি ফাঁসির মঞ্চ থেকে পালাতে সক্ষম হন। তারপর তার আর খোঁজ না মিললেও বনির সাহস এবং অনমনীয়তা রোমাঞ্চপ্রেমী মানুষের মনে চিরস্থায়ী জায়গা দিয়েছে তাকে।
ক্যালিকো জ্যাক র্যাকহেম
বনির কথা যেহেতু বলা হলোই তাহলে তার প্রেমিক ক্যালিকো জ্যাক রেকহ্যাম কেন বাদ থাকবেন! র্যাকহেম রঙিন সুতির বা ক্যালিকো পোশাক পরতেন। এ কারণে ক্যালিকো জ্যাক নামে পরিচিতি পান। তার জলদস্যু জীবন ছিল স্বল্পস্থায়ী। কারণ তাকে বন্দী করার পর ১৭২০ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তবে বন্দী হওয়ার আগেই অসংখ্য জাহাজ দখল ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে কুখ্যাতি অর্জন করেন।
ক্যাপ্টেন কিড
উইলিয়াম কিড পরিচিত ছিলেন ক্যাপ্টেন কিড নামে। তার শুরুটা প্রাইভেটিয়ার হিসেবে। ব্রিটিশ সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত এই প্রাইভেটিয়ারদের কাজ ছিল যুদ্ধের সময় শত্রু জাহাজ আক্রমণ করা। তবে দ্রুতই জলদস্যুতে পরিণত হন। শত্রু জাহাজের পাশাপাশি সাধারণ সদাগরি জাহাজগুলিও তার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। এটা তাকে একজন নির্মম এবং রক্তপিপাসু জলদস্যু হিসেবে কুখ্যাতি এনে দেয়। তবে একপর্যায়ে কিড বন্দী হন এবং বিচারে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাকে। যতদূর জানা যায় ১৭০১ সালে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় তার।
বার্থলোমিও রবার্টস
বার্থলোমিও রবার্টস পরিচিত ছিলেন ব্ল্যাক বার্ট নামে। অনেকেই তাকে বিবেচনা করেন সোনালি যুগের সবচেয়ে সফল জলদস্যু হিসেবে। ৪০০-র বেশি জাহাজ দখল করে নাবিকদের মধ্যে নিজেদের ভীতিকর এক ইমেজ তৈরি করেন তিনি। রবার্টস তার কঠোর আচরণবিধির জন্য পরিচিত ছিলেন। নিজের জাহাজে জুয়া, মদ্যপান এবং লড়াই নিষিদ্ধ করেছিলেন।
হেনরি মরগান
হেনরি মরগানের গল্পটা অন্য জলদস্যুদের চেয়ে একটু ভিন্ন। শুরুটা তার জলদস্যু হিসেবে। বিশেষ করে স্প্যানিশ উপনিবেশগুলিতে হামলা চালিয়ে বিপুল অর্থ উপার্জন করেন। তবে একপর্যায়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমা পান এবং ব্রিটিশ সরকার স্পেনীয় জাহাজে আক্রমণ চালানোর জন্য প্রাইভেটিয়ার হিসেবে দায়িত্ব দেয় তাকে। পানামা সিটি দখল করে বিপুল অর্থ-সম্পদ লুণ্ঠন করেন। পরবর্তীতে জ্যামাইকার লেফটেন্যান্ট গভর্নর হন। ১৬৮৮ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
মেরি রিড
অ্যান বনির মতো কুখ্যাতি কামানো আরেক নারী জলদস্যু মেরি রিড। তবে তিনি সবসময় থাকতেন পুরুষের ছদ্মবেশে। এমনকি দলের অন্য জলদস্যুদের থেকেও নিজের পরিচয় লুকিয়ে রেখেছিলেন। সেটা প্রকাশ পায় রিডসহ অন্য জলদস্যুরা ধরা পড়ার পর।
বন্দী হওয়ার পরে, তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার আগেই কারাগারে মারা যান তিনি। তার গল্প সেইসব নারীর গুপ্ত ইতিহাসের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে কাজ করে যারা চিরাচরিত রীতিকে অস্বীকার করেন এবং জলদস্যুতার মাধ্যমে স্বাধীনতা পেয়েছিলেন।
চিং শি
চীনা এই নারী জলদস্যু নেতৃত্ব দিতেন ইতিহাসের জলদস্যুদের সবচেয়ে বড় জাহাজ বহরগুলির একটির। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে দক্ষিণ চীন সাগরে ত্রাস সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। সদাগরি জাহাজের পাশাপাশি ও নৌবাহিনীর জাহাজও আতঙ্কে থাকত এই নারী জলদস্যু ও তার দলবলকে নিয়ে।
চিং শির অসাধারণ কৌশল এবং কঠোর আচরণবিধি তাকে প্রচুর সম্পদের মালিক করার পাশাপাশি বিপুল ক্ষমতাশালী করে। অবশ্য একপর্যায়ে জলদস্যুর জীবন ছেড়ে সাধারণ, বৈধ নাগরিকের মতো জীবন-যাপন করতে থাকেন।
এডওয়ার্ড লো
নাবিকদের মনে ভীতি সৃষ্টির জন্য এডওয়ার্ড লোর নামটিই ছিল যথেষ্ট। তিনি বন্দীদের সঙ্গে নৃশংস আচরণের জন্য কুখ্যাতি পান। নিষ্ঠুরতার জন্য তার খ্যাতি তাকে আঠারো শতকের সবচেয়ে কুখ্যাত জলদস্যুদের তালিকায় ওপরের দিকে রাখবে। অবশ্য একপর্যায়ে তাকে বন্দী করা হয় এবং ফাঁসি দেওয়া হয়।
জঁ লাফিত
উনিশ শতকের গোড়ার দিকে গালফ অব মেক্সিকো এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে অভিযান চালাতেন জঁ লাফিত। লাফিত ও তার ভাই পিয়ের চোরাচালানের জন্য কুখ্যাতি অর্জন করেন। ১৮১২ সালের যুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সাহায্য করার আগ্রহের জন্যও পরিচিতি পান। তার অপারেশনের মূল ঘাঁটি ছিল নিউ অরলিন্স। সেখানে কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন। বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কাজ করার জন্যও পরিচিত ছিলেন। পরবর্তীতে একজন প্রাইভেটিয়ার হিসেবে তার দক্ষতা তাকে আমেরিকানদের কাছে মূল্যবান এক সম্পদে পরিণত করে। নায়ক এবং খলনায়কের মধ্যে সীমারেখা অনেকটাই ঝাপসা করে দেন জঁ লাফিত।
সূত্র: ফ্যামিলি ওয়াইজ ডট কম ইউকে, উইকিপিডিয়া
বিষধর মাকড়সা হিসেবে আলাদা পরিচিতি আছে ট্যারানটুলার। কাজেই একে এড়িয়ে চলাটাই স্বাভাবিক। ট্যারানটুলা একই সঙ্গে বেশ দুষ্প্রাপ্য এক প্রাণীও। তবে সম্প্রতি পেরুতে এক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে ৩২০টি ট্যারানটুলা মাকড়সাসহ আরও কিছু দুষ্প্রাপ্য প্রাণী শরীরের সঙ্গে বেঁধে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা...
২১ ঘণ্টা আগেপাঠকেরা পড়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইব্রেরিতে বই ফেরত দিয়ে দেবেন এটাই নিয়ম। কারও কারও সময়মতো বই ফেরত না দেওয়ার অভ্যাসও আছে। তবে তাই বলে আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না অর্ধ শতাব্দী পর কেউ বই ফেরত দেবেন। কিন্তু সত্যি মার্কিন মুলুকে এমন একটি কাণ্ড হয়েছে।
১ দিন আগেডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। শুধু আমেরিকায় নয়, বিশ্বজুড়েই আলোচনায় এখন ট্রাম্প। তবে তাঁর পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া ইতালির সার্দানিয়া দ্বীপের একটি গ্রামে একেবারেই ভিন্ন এক সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন হিসেবে।
২ দিন আগেটাইটানিকের ৭০০-র বেশি যাত্রী এবং ক্রুকে উদ্ধার করেছিল একটি জাহাজ। ওই জাহাজের ক্যাপ্টেনকে উপহার দেওয়া একটি সোনার ঘড়ি নিলামে বিক্রি হয়েছে ১৫ কোটি ৬০ লাখ পাউন্ড অর্থাৎ ১৯ কোটি ৭০ লাখ ডলারে।
৩ দিন আগে