অনলাইন ডেস্ক
একটা দালান কতটুকু লম্বা হতে পারে? এখন কেউ যদি বলে এক কিলোমিটারের কাছাকাছি, তাহলে নিশ্চয় বিশ্বাস করতে মন চাইবে না আপনার। কিন্তু এ ধরনের দালান সত্যি আছে। তবে এর দেখা পেতে হলে আপনাকে যেতে হবে পোল্যান্ডের শহর গদানস্কে। আরও আশ্চর্য ব্যাপার, এই দালান ঢেউ খেলানো।
১৯৬০-এর দশকের শেষ এবং ১৯৭০-এর দশকের গোড়ার দিকে গদানস্ক শহরে রীতিমতো অদ্ভুত আকারের কিছু অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক বা দীর্ঘ দালান তৈরি করা হয়। এমন দালানের নাম দেওয়া হয় ফ্যালোওইক। পোলিশ শব্দ ফ্যালা থেকে আসে এই নাম। ফ্যালা অর্থ ঢেউ। আর এর বহুবচন হলো ফ্যালোওসে। এই দালানগুলো এমন নাম পেয়েছে সাগরের ঢেউয়ের মতো আকারের কারণে। এদের মূল কাঠামো তো বটেই, এমনকি বারান্দাও ওই ঢেউ আকৃতিরই। গদানস্কে এমন আটটি দালান আছে। এ ছাড়া ইতালিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে আরও কয়েকটি।
গদানস্কে অন্য যেকোনো শহরের চেয়ে বেশি ঢেউ খেলানো দালান থাকলেও একটি দালানের প্রতি সবার আগ্রহটা বেশি। গোটা ইউরোপের মধ্যে একে সবচেয়ে দীর্ঘ আবাসিক ভবন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৭০ থেকে ১৯৭৩ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া দালানটির অবস্থান অবরনসো জিবরেজা স্ট্রিটে।
এগারোতলা দালানটিতে সিঁড়ি আছে ১৬টি, আর বিশাল অট্টালিকাটিতে ১ হাজার ৭৯২টি অ্যাপার্টমেন্ট আছে। আপনার মনে হতেই পারে—একি দালান, নাকি ছোট্ট এক শহর। ৮৬০ মিটার (২ হাজার ৮০০ ফুট) দৈর্ঘ্যর অট্টালিকাটির উচ্চতা এখনকার আকাশচুম্বী দালানকোঠার বিবেচনায় খুব বেশি কিছু নয়, মোটে ৩২ মিটার। আর এটি চওড়ায় ১৩ মিটার। এতে বাস করা মানুষের সংখ্যাটা কত তা নিশ্চিত নয়। ধারণা করা হয়, সংখ্যাটি ৬ হাজারের আশপাশে।
ভবনটি অনেকটা একটি বিশাল ট্রেনের মতো, যার দৈর্ঘ্য বরাবর তিনটি বাসস্টপ আছে। বিল্ডিংটি এত বড় যে এটি বায়ু চলাচলকে প্রভাবিত করে। আর এর চারপাশে একটি খুদে জলবায়ু এলাকা তৈরি হয়েছে বলেও জানা যায়। উত্তর দিকটায় বাস করা মানুষেরা কিছুটা শীতল আবহাওয়া পায়। এদিকটায় বরফ ও তুষারপাত দীর্ঘস্থায়ী হয়। দক্ষিণে গড় তাপমাত্রা সামান্য বেশি। গরম আবহাওয়ায় ঘাস ও গাছ দ্রুত শুকিয়ে যায় এই অংশে।
ফ্যালোওইক এমন একটি সময় নির্মিত হয়েছিল, যখন তীব্র আবাসনসংকট ছিল। ভবনগুলোকে একটি অস্থায়ী সমাধান হিসেবে দেখা হয়। তবে তারপর থেকে বহু বছর ধরে সমুদ্রতীরবর্তী এলাকাটির একটি অতি পরিচিত কাঠামোয় পরিণত হয়েছে।
বিশাল দালানের প্রতিটি ব্লক একই নকশা অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে। খোলা গ্যালারি থেকে বেশির ভাগ অ্যাপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাটে প্রবেশ করা যায়। গোড়ার দিকে দালানটির এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে হেঁটে যাওয়া যেত। তবে পরে অ্যাপার্টমেন্টগুলোর বাসিন্দাদের অনেকেই মাঝখানে দেয়াল তুলে আলাদা করে দেন এগুলোকে। তাই এখন চাইলেই এক পাশের ফ্ল্যাট থেকে অপর পাশের ফ্ল্যাটে দালানের ভেতর দিয়ে হেঁটে যেতে পারবেন না।
গদানিস্কে এমন যে আটটি দালান আছে, সব কটি ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে তৈরি করা হয়। বাড়িগুলোর দক্ষিণ প্রান্তে ব্যালকনি বা বারান্দা আছে।
মজার ঘটনা, বিশালাকায় দালানটি তৈরি হওয়ার সময়ের ঘটনাপ্রবাহও দালানটির আকারের মতোই অদ্ভুত। কয়েক ধাপে তৈরি হয় এটি। দেখা যায় এক অংশে মানুষ ওঠে বসবাস শুরু করেছেন, অন্য অংশের তখনো নির্মাণ শেষ হয়নি। এর চারপাশটাকে দীর্ঘ সময় ধরে একটি নির্মাণ এলাকার মতো মনে হয়েছে। ছড়িয়ে ছিল বালুর স্তূপ, কংক্রিটের স্ল্যাব। তখন লন কিংবা সামনে হাঁটার জায়গার কথা ভাবাও ছিল মুশকিল।
কিন্তু অধিকাংশ লোকের জন্য তাদের নিজস্ব অ্যাপার্টমেন্ট ছিল বেশ একটি আভিজাত্যের প্রতীক। এখানকার ওপরের তলাগুলো থেকে সমুদ্র দেখ যায়। ভালো আবহাওয়ায় এমনকি হেল উপদ্বীপও নজরে পড়ে।
যা হোক, বিশাল দালানটি আগের মতো চকচকে না থাকলেও এখনো তার পুরো আভিজাত্য নিয়ে টিকে আছে। দীর্ঘ এই দালানের সামনেই আছে তিনটি বাসস্টপ। কাজেই পাঠক ইউরোপ সফরে এমন আশ্চর্য একটি দালান দেখার সৌভাগ্য থেকে নিজেকে বঞ্চিত করবেন না আশা করি। পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশ থেকে তিন ঘণ্টারও কম সময়ে পৌঁছে যাবেন সেখানে। চাইলে যেতে পারবেন বাস কিংবা উড়োজাহাজেও। শহরে পৌঁছে বাসে চেপে দালানের সামনের তিনটি বাসস্টপের একটিতে নেমে গেলেই হলো!
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, অ্যামিউজিং প্ল্যানেট, উইকিপিডিয়া
একটা দালান কতটুকু লম্বা হতে পারে? এখন কেউ যদি বলে এক কিলোমিটারের কাছাকাছি, তাহলে নিশ্চয় বিশ্বাস করতে মন চাইবে না আপনার। কিন্তু এ ধরনের দালান সত্যি আছে। তবে এর দেখা পেতে হলে আপনাকে যেতে হবে পোল্যান্ডের শহর গদানস্কে। আরও আশ্চর্য ব্যাপার, এই দালান ঢেউ খেলানো।
১৯৬০-এর দশকের শেষ এবং ১৯৭০-এর দশকের গোড়ার দিকে গদানস্ক শহরে রীতিমতো অদ্ভুত আকারের কিছু অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক বা দীর্ঘ দালান তৈরি করা হয়। এমন দালানের নাম দেওয়া হয় ফ্যালোওইক। পোলিশ শব্দ ফ্যালা থেকে আসে এই নাম। ফ্যালা অর্থ ঢেউ। আর এর বহুবচন হলো ফ্যালোওসে। এই দালানগুলো এমন নাম পেয়েছে সাগরের ঢেউয়ের মতো আকারের কারণে। এদের মূল কাঠামো তো বটেই, এমনকি বারান্দাও ওই ঢেউ আকৃতিরই। গদানস্কে এমন আটটি দালান আছে। এ ছাড়া ইতালিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে আরও কয়েকটি।
গদানস্কে অন্য যেকোনো শহরের চেয়ে বেশি ঢেউ খেলানো দালান থাকলেও একটি দালানের প্রতি সবার আগ্রহটা বেশি। গোটা ইউরোপের মধ্যে একে সবচেয়ে দীর্ঘ আবাসিক ভবন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৭০ থেকে ১৯৭৩ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া দালানটির অবস্থান অবরনসো জিবরেজা স্ট্রিটে।
এগারোতলা দালানটিতে সিঁড়ি আছে ১৬টি, আর বিশাল অট্টালিকাটিতে ১ হাজার ৭৯২টি অ্যাপার্টমেন্ট আছে। আপনার মনে হতেই পারে—একি দালান, নাকি ছোট্ট এক শহর। ৮৬০ মিটার (২ হাজার ৮০০ ফুট) দৈর্ঘ্যর অট্টালিকাটির উচ্চতা এখনকার আকাশচুম্বী দালানকোঠার বিবেচনায় খুব বেশি কিছু নয়, মোটে ৩২ মিটার। আর এটি চওড়ায় ১৩ মিটার। এতে বাস করা মানুষের সংখ্যাটা কত তা নিশ্চিত নয়। ধারণা করা হয়, সংখ্যাটি ৬ হাজারের আশপাশে।
ভবনটি অনেকটা একটি বিশাল ট্রেনের মতো, যার দৈর্ঘ্য বরাবর তিনটি বাসস্টপ আছে। বিল্ডিংটি এত বড় যে এটি বায়ু চলাচলকে প্রভাবিত করে। আর এর চারপাশে একটি খুদে জলবায়ু এলাকা তৈরি হয়েছে বলেও জানা যায়। উত্তর দিকটায় বাস করা মানুষেরা কিছুটা শীতল আবহাওয়া পায়। এদিকটায় বরফ ও তুষারপাত দীর্ঘস্থায়ী হয়। দক্ষিণে গড় তাপমাত্রা সামান্য বেশি। গরম আবহাওয়ায় ঘাস ও গাছ দ্রুত শুকিয়ে যায় এই অংশে।
ফ্যালোওইক এমন একটি সময় নির্মিত হয়েছিল, যখন তীব্র আবাসনসংকট ছিল। ভবনগুলোকে একটি অস্থায়ী সমাধান হিসেবে দেখা হয়। তবে তারপর থেকে বহু বছর ধরে সমুদ্রতীরবর্তী এলাকাটির একটি অতি পরিচিত কাঠামোয় পরিণত হয়েছে।
বিশাল দালানের প্রতিটি ব্লক একই নকশা অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে। খোলা গ্যালারি থেকে বেশির ভাগ অ্যাপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাটে প্রবেশ করা যায়। গোড়ার দিকে দালানটির এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে হেঁটে যাওয়া যেত। তবে পরে অ্যাপার্টমেন্টগুলোর বাসিন্দাদের অনেকেই মাঝখানে দেয়াল তুলে আলাদা করে দেন এগুলোকে। তাই এখন চাইলেই এক পাশের ফ্ল্যাট থেকে অপর পাশের ফ্ল্যাটে দালানের ভেতর দিয়ে হেঁটে যেতে পারবেন না।
গদানিস্কে এমন যে আটটি দালান আছে, সব কটি ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে তৈরি করা হয়। বাড়িগুলোর দক্ষিণ প্রান্তে ব্যালকনি বা বারান্দা আছে।
মজার ঘটনা, বিশালাকায় দালানটি তৈরি হওয়ার সময়ের ঘটনাপ্রবাহও দালানটির আকারের মতোই অদ্ভুত। কয়েক ধাপে তৈরি হয় এটি। দেখা যায় এক অংশে মানুষ ওঠে বসবাস শুরু করেছেন, অন্য অংশের তখনো নির্মাণ শেষ হয়নি। এর চারপাশটাকে দীর্ঘ সময় ধরে একটি নির্মাণ এলাকার মতো মনে হয়েছে। ছড়িয়ে ছিল বালুর স্তূপ, কংক্রিটের স্ল্যাব। তখন লন কিংবা সামনে হাঁটার জায়গার কথা ভাবাও ছিল মুশকিল।
কিন্তু অধিকাংশ লোকের জন্য তাদের নিজস্ব অ্যাপার্টমেন্ট ছিল বেশ একটি আভিজাত্যের প্রতীক। এখানকার ওপরের তলাগুলো থেকে সমুদ্র দেখ যায়। ভালো আবহাওয়ায় এমনকি হেল উপদ্বীপও নজরে পড়ে।
যা হোক, বিশাল দালানটি আগের মতো চকচকে না থাকলেও এখনো তার পুরো আভিজাত্য নিয়ে টিকে আছে। দীর্ঘ এই দালানের সামনেই আছে তিনটি বাসস্টপ। কাজেই পাঠক ইউরোপ সফরে এমন আশ্চর্য একটি দালান দেখার সৌভাগ্য থেকে নিজেকে বঞ্চিত করবেন না আশা করি। পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশ থেকে তিন ঘণ্টারও কম সময়ে পৌঁছে যাবেন সেখানে। চাইলে যেতে পারবেন বাস কিংবা উড়োজাহাজেও। শহরে পৌঁছে বাসে চেপে দালানের সামনের তিনটি বাসস্টপের একটিতে নেমে গেলেই হলো!
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, অ্যামিউজিং প্ল্যানেট, উইকিপিডিয়া
বিষধর মাকড়সা হিসেবে আলাদা পরিচিতি আছে ট্যারানটুলার। কাজেই একে এড়িয়ে চলাটাই স্বাভাবিক। ট্যারানটুলা একই সঙ্গে বেশ দুষ্প্রাপ্য এক প্রাণীও। তবে সম্প্রতি পেরুতে এক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে ৩২০টি ট্যারানটুলা মাকড়সাসহ আরও কিছু দুষ্প্রাপ্য প্রাণী শরীরের সঙ্গে বেঁধে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা...
২০ ঘণ্টা আগেপাঠকেরা পড়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইব্রেরিতে বই ফেরত দিয়ে দেবেন এটাই নিয়ম। কারও কারও সময়মতো বই ফেরত না দেওয়ার অভ্যাসও আছে। তবে তাই বলে আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না অর্ধ শতাব্দী পর কেউ বই ফেরত দেবেন। কিন্তু সত্যি মার্কিন মুলুকে এমন একটি কাণ্ড হয়েছে।
১ দিন আগেডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। শুধু আমেরিকায় নয়, বিশ্বজুড়েই আলোচনায় এখন ট্রাম্প। তবে তাঁর পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া ইতালির সার্দানিয়া দ্বীপের একটি গ্রামে একেবারেই ভিন্ন এক সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন হিসেবে।
২ দিন আগেটাইটানিকের ৭০০-র বেশি যাত্রী এবং ক্রুকে উদ্ধার করেছিল একটি জাহাজ। ওই জাহাজের ক্যাপ্টেনকে উপহার দেওয়া একটি সোনার ঘড়ি নিলামে বিক্রি হয়েছে ১৫ কোটি ৬০ লাখ পাউন্ড অর্থাৎ ১৯ কোটি ৭০ লাখ ডলারে।
৩ দিন আগে