কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা
২০১৬ সালে কয়েকজন বন্ধু মিলে শীতবস্ত্র বিতরণের কাজ করছিলেন। এমন সময় তাঁদের চোখ যায় কয়েকজন শিশুর দিকে। এই শিশুদের মধ্যে অনেকে তাঁদের বলছিল, ‘আমাদের শীতকাপড়ের দরকার নেই, আমরা পড়ালেখা করতে চাই।’
শিশুদের সেই কথা সেখানে উপস্থিত স্বেচ্ছাসেবকদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, এমন একটি প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানোর, যেখানে এই শিশুরা মানসম্পন্ন শিক্ষার পরিবেশ পাবে বিনা বেতনে। শুধু লেখাপড়াই নয়, মানসম্মত ভোকেশনাল ট্রেনিং, বিহেভিয়র ট্রেনিংসহ সবকিছু যেন তারা সেই প্রতিষ্ঠান থেকে পেতে পারে, সে ব্যবস্থাও থাকবে।
সেদিনের সেই স্বেচ্ছাসেবকেরা ধীরে ধীরে তাঁদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যান। তৈরি করেন বিদ্যাসভা নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ৩০ জন শিশু নিয়ে শুরু হওয়া এই প্রতিষ্ঠানের গল্প শুনছিলাম প্রতিষ্ঠাতা আনিকা তাবাসসুমের কাছে।
পার্কে শুরু পাঠদান
২০১৬ সালে উত্তরার একটি পার্কে শুরু হয়েছিল পাঠদান কর্মসূচি। তখন বিদ্যাসভার সবাই নিজেরাও ছিলেন শিক্ষার্থী। ওয়ার্ক ফর বেটার সোসাইটি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা শাখা হিসেবে এর প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০২০ সালে। উত্তরার বাউনিয়ায় খোলা হয় এর কেন্দ্রীয় কার্যালয়। সেখানে এখন ১২০ জন শিশু বিনা বেতনে লেখাপড়া করছে। এই শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার উপকরণ দিয়ে সাহায্য করে বিদ্যাসভা।
কার্যক্রম চলছে দুভাবে
বিদ্যাসভার উত্তরা কার্যালয়ে রয়েছে সুবিধাবঞ্চিত ও পথশিশুদের স্থায়ী বিদ্যালয়। আর ঢাকা শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে এর ভ্রাম্যমাণ স্কুল। মিরপুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, কমলাপুরে রয়েছে বিদ্যাসভার ভ্রাম্যমাণ পাঠদান কর্মসূচি। আনিকা জানান, একেবারে শূন্য থেকে শুরু করে বিদ্যাসভা এখন তার শিশুদের ইংরেজিতে প্রেজেন্টেশন দেওয়া শিখিয়েছে। তারা শুদ্ধভাবে কথা বলা শিখেছে। নিজেরাই মোটিভেশনাল স্পিচ দিতে পারছে। এই শিশুদের আন্তর্জাতিক মানে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছেন আনিকা ও বিদ্যাসভা।
পথ সহজ নয়
এ পর্যন্ত আসতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে আনিকা ও তাঁর সঙ্গীদের। বিদ্যাসভায় আসা শিশুদের প্রায় সবাই মূলত কর্মজীবী শিশু। তাদের লেখাপড়ামুখী করে তোলার মূল চ্যালেঞ্জ এটি বলে জানান আনিকা। অনেকের ইচ্ছা থাকলেও মা-বাবার কারণে কাজ বাদ দিয়ে স্কুলে আসতে পারে না। শিশুদের মা-বাবাকে বুঝিয়ে স্কুলে আনতে হয়। তাঁদের কাউন্সেলিংয়ের মধ্যে রাখতে হয়। এভাবে গত ৯ বছরে প্রায় ১ হাজার শিশু বিদ্যাসভা থেকে প্রাথমিক শিক্ষা পেয়েছে বলে জানিয়েছেন আনিকা।
একজন আনিকা
আনিকা নিজে শৈশব থেকে থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে তিনি কাজ করছেন অভিনয়শিল্পী হিসেবে। ভাবেন সিনেমা নিয়ে। কিন্তু বিদ্যাসভা তাঁর স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তিনি সফল মানুষ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেন। শিশুদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে দেখতে চান। ওয়ার্ক ফর বেটার সোসাইটির মাধ্যমে তিনি শিশুদের পাশাপাশি নারী, জলবায়ু, তরুণ প্রজন্ম এবং ট্রান্সজেন্ডারদের নিয়েও বিভিন্ন কাজ করে চলেছেন। ঢাকার উত্তরায় বড় হওয়া আনিকার স্বপ্ন একটি বৈষম্যহীন দেশ ও পৃথিবী। আর তা গড়ে তুলতে কাজ করে যাবেন আনিকা।
এবং ভবিষ্যৎ
কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, জামালপুর ও ঢাকার সাভারে স্থায়ী ক্যাম্পাস করার স্বপ্ন দেখেন বিদ্যাসভার আয়োজকেরা। তাঁদের স্বপ্ন, ২০২৫ সালের মধ্যে এই জায়গাগুলোতে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষাসেবা পৌঁছে যাবে সর্বোচ্চসংখ্যক শিশুর মাঝে। ভবিষ্যতে বিদ্যাসভার মাধ্যমে পুরো দেশের সব জেলায় সুবিধাবঞ্চিত ও পথশিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে চান আনিকা ও তাঁর দল। পাশাপাশি এই শিশুরা যেন ভালো মানুষ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে এবং পেশাগতভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে, তার ব্যবস্থা করতে চান আনিকা।
২০১৬ সালে কয়েকজন বন্ধু মিলে শীতবস্ত্র বিতরণের কাজ করছিলেন। এমন সময় তাঁদের চোখ যায় কয়েকজন শিশুর দিকে। এই শিশুদের মধ্যে অনেকে তাঁদের বলছিল, ‘আমাদের শীতকাপড়ের দরকার নেই, আমরা পড়ালেখা করতে চাই।’
শিশুদের সেই কথা সেখানে উপস্থিত স্বেচ্ছাসেবকদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, এমন একটি প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানোর, যেখানে এই শিশুরা মানসম্পন্ন শিক্ষার পরিবেশ পাবে বিনা বেতনে। শুধু লেখাপড়াই নয়, মানসম্মত ভোকেশনাল ট্রেনিং, বিহেভিয়র ট্রেনিংসহ সবকিছু যেন তারা সেই প্রতিষ্ঠান থেকে পেতে পারে, সে ব্যবস্থাও থাকবে।
সেদিনের সেই স্বেচ্ছাসেবকেরা ধীরে ধীরে তাঁদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যান। তৈরি করেন বিদ্যাসভা নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ৩০ জন শিশু নিয়ে শুরু হওয়া এই প্রতিষ্ঠানের গল্প শুনছিলাম প্রতিষ্ঠাতা আনিকা তাবাসসুমের কাছে।
পার্কে শুরু পাঠদান
২০১৬ সালে উত্তরার একটি পার্কে শুরু হয়েছিল পাঠদান কর্মসূচি। তখন বিদ্যাসভার সবাই নিজেরাও ছিলেন শিক্ষার্থী। ওয়ার্ক ফর বেটার সোসাইটি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা শাখা হিসেবে এর প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০২০ সালে। উত্তরার বাউনিয়ায় খোলা হয় এর কেন্দ্রীয় কার্যালয়। সেখানে এখন ১২০ জন শিশু বিনা বেতনে লেখাপড়া করছে। এই শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার উপকরণ দিয়ে সাহায্য করে বিদ্যাসভা।
কার্যক্রম চলছে দুভাবে
বিদ্যাসভার উত্তরা কার্যালয়ে রয়েছে সুবিধাবঞ্চিত ও পথশিশুদের স্থায়ী বিদ্যালয়। আর ঢাকা শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে এর ভ্রাম্যমাণ স্কুল। মিরপুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, কমলাপুরে রয়েছে বিদ্যাসভার ভ্রাম্যমাণ পাঠদান কর্মসূচি। আনিকা জানান, একেবারে শূন্য থেকে শুরু করে বিদ্যাসভা এখন তার শিশুদের ইংরেজিতে প্রেজেন্টেশন দেওয়া শিখিয়েছে। তারা শুদ্ধভাবে কথা বলা শিখেছে। নিজেরাই মোটিভেশনাল স্পিচ দিতে পারছে। এই শিশুদের আন্তর্জাতিক মানে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছেন আনিকা ও বিদ্যাসভা।
পথ সহজ নয়
এ পর্যন্ত আসতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে আনিকা ও তাঁর সঙ্গীদের। বিদ্যাসভায় আসা শিশুদের প্রায় সবাই মূলত কর্মজীবী শিশু। তাদের লেখাপড়ামুখী করে তোলার মূল চ্যালেঞ্জ এটি বলে জানান আনিকা। অনেকের ইচ্ছা থাকলেও মা-বাবার কারণে কাজ বাদ দিয়ে স্কুলে আসতে পারে না। শিশুদের মা-বাবাকে বুঝিয়ে স্কুলে আনতে হয়। তাঁদের কাউন্সেলিংয়ের মধ্যে রাখতে হয়। এভাবে গত ৯ বছরে প্রায় ১ হাজার শিশু বিদ্যাসভা থেকে প্রাথমিক শিক্ষা পেয়েছে বলে জানিয়েছেন আনিকা।
একজন আনিকা
আনিকা নিজে শৈশব থেকে থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে তিনি কাজ করছেন অভিনয়শিল্পী হিসেবে। ভাবেন সিনেমা নিয়ে। কিন্তু বিদ্যাসভা তাঁর স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তিনি সফল মানুষ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেন। শিশুদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে দেখতে চান। ওয়ার্ক ফর বেটার সোসাইটির মাধ্যমে তিনি শিশুদের পাশাপাশি নারী, জলবায়ু, তরুণ প্রজন্ম এবং ট্রান্সজেন্ডারদের নিয়েও বিভিন্ন কাজ করে চলেছেন। ঢাকার উত্তরায় বড় হওয়া আনিকার স্বপ্ন একটি বৈষম্যহীন দেশ ও পৃথিবী। আর তা গড়ে তুলতে কাজ করে যাবেন আনিকা।
এবং ভবিষ্যৎ
কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, জামালপুর ও ঢাকার সাভারে স্থায়ী ক্যাম্পাস করার স্বপ্ন দেখেন বিদ্যাসভার আয়োজকেরা। তাঁদের স্বপ্ন, ২০২৫ সালের মধ্যে এই জায়গাগুলোতে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষাসেবা পৌঁছে যাবে সর্বোচ্চসংখ্যক শিশুর মাঝে। ভবিষ্যতে বিদ্যাসভার মাধ্যমে পুরো দেশের সব জেলায় সুবিধাবঞ্চিত ও পথশিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে চান আনিকা ও তাঁর দল। পাশাপাশি এই শিশুরা যেন ভালো মানুষ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে এবং পেশাগতভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে, তার ব্যবস্থা করতে চান আনিকা।
ডেস্কে বসে কপের খবর নেওয়া আর আকাশের চাঁদ ছোঁয়ার মধ্যে যেন তেমন কোনো পার্থক্য নেই। কিন্তু হঠাৎ মনে পড়ল আনিকা তাবাসসুমের কথা। এই মুহূর্তে তিনি আছেন আজারবাইজানের বাকুতে। এত এত অ্যাপের দুনিয়ায় তাঁকে ধরা কি খুব কঠিন? চেষ্টা করতেই তাঁর কাছ থেকে পাওয়া গেল উত্তর। আমরাও চটপট কথা বলে ফেললাম আনিকার সঙ্গে।
৩ দিন আগেবাংলাদেশে তৈরি পোশাক খাতে ৩৩ লাখ ১৭ হাজার ৩৯৭ জন শ্রমিক কাজ করছেন এখন। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) বায়োমেট্রিক ডেটাবেইস থেকে পাওয়া গেছে এ তথ্য। এই বিশালসংখ্যক শ্রমিকের মধ্যে ১৭ লাখ ৩৪ হাজার ৪৫৯ জন বা ৫২ দশমিক ২৮ শতাংশ নারী...
৩ দিন আগেআরব অঞ্চলের দেশগুলোর ঐতিহ্যবাহী খেলা উটের দৌড়। একসময় আমাদের দেশে যেমন ঘোড়দৌড় হতো, বিষয়টি তেমনই। সেখানে শুধু ঘোড়ার বদলে থাকে উট। সে উট যাঁরা চালনা করেন, তাঁরা হলেন জকি। এত দিন জকি হিসেবে সৌদি আরবে ছিল পুরুষদের দাপট। দেশটিতে সেই প্রচলিত প্রথা অবশ্য ভেঙেছে ২০২২ সালে...
৩ দিন আগেঅ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে পেনিসিলিনের আবিষ্কার মানবজাতিকে স্বস্তি দিয়েছিল। তারপর আবিষ্কৃত হয় ছত্রাকজনিত রোগের বিরুদ্ধে কর্মক্ষম অ্যান্টিবায়োটিক নাইস্ট্যাটিন। এটির সঙ্গে যুক্ত আছে রাচেল ফুলার ব্রাউন এবং তাঁর সহযোগী এলিজাবেথ হ্যাজেনের নাম। এই দুজনের আবিষ্কারটি ছিল ছত্রাকজনিত রোগের বিরুদ্ধে প্রথম কার্যকর
৩ দিন আগে