সিরিয়ার নারী
কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা
বছর চারের মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অন্তত দেশটির ডি-ফ্যাক্টো নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি ওরফে আহমেদ আল-শারা সে রকমই জানিয়েছেন গণমাধ্যমকে। তার আগে, সিরিয়ার জন্য নতুন একটি সংবিধান রচনা করা হবে।
যুদ্ধে ধ্বংস হয়ে যাওয়া সিরিয়া নির্বাচনের পরে শৃঙ্খলা ফিরে পেলেও যুদ্ধের ক্ষত কি পূরণ হবে কোনো দিন? জাতিসংঘ জানিয়েছে, ২০১১ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সিরিয়ায় যত বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, তাদের বেশির ভাগই পুরুষ। ফলে হাজার হাজার নারী এবং পরিবারের সামনে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ এখন। কিন্তু বিশ্ব এটাও দেখেছে, সিরিয়ায় এমন অনেক নারীর জন্ম, যাঁরা নিজের জন্য তো বটেই, দেশের উন্নয়নেও অবদান রেখেছেন এবং রাখছেন। এমন নারীদের নাম অহরহই সামনে আসছে, যাঁরা ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেও নিজেদের পরিবার ও সমাজের জন্য কাজ করেছেন বা করছেন। সমাজের বিভিন্ন স্তর ও বয়সের নারীরা রয়েছেন তাঁদের মধ্যে।
আলেপ্পোর বুস্তান আল জাহরা এলাকার খুব সাধারণ এক নারী নাজওয়া বিকদাশ। তিনি তাঁর ২০ বছরের বিবাহিত জীবনের ইতি টেনে সন্তানদের নিয়ে বাঁচার লড়াই শুরু করেছিলেন। সেই লড়াইয়ে নাজওয়া ছিলেন একা, উপরন্তু বেকার। একপর্যায়ে ইউএনএফপিএর সহযোগিতায় তিনি নিজেই নিজের কর্মসংস্থান করে নেন। সিরিয়ার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট এবং মুহুর্মুহু ভূমিকম্প নাজওয়াদের জীবনকে কঠিন করে তুলেছিল। বিধ্বংসী ভূমিকম্পের কারণে তাঁর বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেলে তিনি নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েন। এরই মধ্যে ইউএনএফপিএর সাহায্যে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে যান নাজওয়া। সেখান থেকে তিনি অন্য নারীদের পাশাপাশি মনস্তাত্ত্বিক সহায়তা ও প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজের কাপড় সেলাইয়ের দোকান খুলে ব্যবসা শুরু করেন।
নাজওয়ার মতো উম ফেরাস নামের আরেক নারী সিরিয়ায় যুদ্ধ শুরু হলে ২০১২ সালে নিজ শহর ছেড়ে অন্য শহরে পালিয়ে যান। তাঁর পরের বছরেই জানতে পারেন, তাঁর নিখোঁজ স্বামী মারা গেছেন। ভিটেমাটি ও স্বামী হারিয়ে সন্তানদের নিয়ে জীবনযুদ্ধে একা লড়াই করতে থাকেন উম। সিরিয়ার ঐতিহ্যবাহী সেলাইয়ের বিভিন্ন শৈলী শিখে নেন তিনি। এরপর কাজ করতে করতে একপর্যায়ে ‘সামা হ্যান্ডমেইড’ প্রকল্পের দলনেতা হয়ে ওঠেন উম ফেরাস।
দামেস্কের পূর্বাঞ্চলীয় ছোট শহর জারামানার নাগরিক ও সমাজকর্মী ৫৫ বছর বয়সী সালমা সেয়্যাদ। কাজ করতে গিয়ে তিনি খেয়াল করেন, যুদ্ধের পর সিরিয়ান নারীরা বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন। পরিবার চালনার ভার এসে পড়ছিল নারীদের ওপর। সালমা মনে করেন, অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা সিরিয়ান নারীদের মূল বাধা। সেই থেকে তিনি নারীদের স্বাবলম্বী করে তোলার লড়াই শুরু করেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পুরুষতান্ত্রিক আচরণের শিকার হতেন সালমা। এরপরেও হাল ছেড়ে দেননি তিনি।
নারীরা দমনমূলক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যত সাধারণ পদক্ষেপই নিক না কেন, তা রাজনৈতিক। আমাল নাএম
সিরিয়ার আস-সুয়েইদা শহরে ছিল আমাল নাএমের একটি সুন্দর পরিবার। প্রথম সন্তান জন্মের সময় গ্রেপ্তার হন তাঁর স্বামী। তিন বছর পর তিনি মুক্ত হলেও একসময় তাঁকে হত্যা করা হয়। স্বামী হারিয়েও জীবন ও পরিবার পুনর্গঠনের কাজ চালিয়ে গেছেন আমাল। বর্তমানে তিনি একজন আইনজীবী এবং নারী অধিকারকর্মী। তিনি সিরিয়ান উইমেনস পলিটিক্যাল মুভমেন্ট এবং সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের সঙ্গে যুক্ত থেকে রাজনৈতিক কমিটির সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছেন।
২৩ বছর বয়সী বিসান সালহাব দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন আর্টস ফ্যাকাল্টি থেকে স্নাতক হয়েছেন। সিরিয়ান শিল্প নিয়ে বিদেশে পড়াশোনা করতে যেতে চাইলেও অর্থনৈতিক কারণে তাঁকে পিছিয়ে পড়তে হয়। বসে না থেকে বিসান সেখানেই স্নাতকোত্তর পর্বে লেখাপড়া করছেন এখন। আর চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিদেশি একটি বৃত্তির জন্য।
নতুন বছরে সিরিয়ার নারীদের জন্য সম্ভাবনার দরজা খুলে যাক।
বছর চারের মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অন্তত দেশটির ডি-ফ্যাক্টো নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি ওরফে আহমেদ আল-শারা সে রকমই জানিয়েছেন গণমাধ্যমকে। তার আগে, সিরিয়ার জন্য নতুন একটি সংবিধান রচনা করা হবে।
যুদ্ধে ধ্বংস হয়ে যাওয়া সিরিয়া নির্বাচনের পরে শৃঙ্খলা ফিরে পেলেও যুদ্ধের ক্ষত কি পূরণ হবে কোনো দিন? জাতিসংঘ জানিয়েছে, ২০১১ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সিরিয়ায় যত বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, তাদের বেশির ভাগই পুরুষ। ফলে হাজার হাজার নারী এবং পরিবারের সামনে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ এখন। কিন্তু বিশ্ব এটাও দেখেছে, সিরিয়ায় এমন অনেক নারীর জন্ম, যাঁরা নিজের জন্য তো বটেই, দেশের উন্নয়নেও অবদান রেখেছেন এবং রাখছেন। এমন নারীদের নাম অহরহই সামনে আসছে, যাঁরা ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেও নিজেদের পরিবার ও সমাজের জন্য কাজ করেছেন বা করছেন। সমাজের বিভিন্ন স্তর ও বয়সের নারীরা রয়েছেন তাঁদের মধ্যে।
আলেপ্পোর বুস্তান আল জাহরা এলাকার খুব সাধারণ এক নারী নাজওয়া বিকদাশ। তিনি তাঁর ২০ বছরের বিবাহিত জীবনের ইতি টেনে সন্তানদের নিয়ে বাঁচার লড়াই শুরু করেছিলেন। সেই লড়াইয়ে নাজওয়া ছিলেন একা, উপরন্তু বেকার। একপর্যায়ে ইউএনএফপিএর সহযোগিতায় তিনি নিজেই নিজের কর্মসংস্থান করে নেন। সিরিয়ার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট এবং মুহুর্মুহু ভূমিকম্প নাজওয়াদের জীবনকে কঠিন করে তুলেছিল। বিধ্বংসী ভূমিকম্পের কারণে তাঁর বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেলে তিনি নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েন। এরই মধ্যে ইউএনএফপিএর সাহায্যে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে যান নাজওয়া। সেখান থেকে তিনি অন্য নারীদের পাশাপাশি মনস্তাত্ত্বিক সহায়তা ও প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজের কাপড় সেলাইয়ের দোকান খুলে ব্যবসা শুরু করেন।
নাজওয়ার মতো উম ফেরাস নামের আরেক নারী সিরিয়ায় যুদ্ধ শুরু হলে ২০১২ সালে নিজ শহর ছেড়ে অন্য শহরে পালিয়ে যান। তাঁর পরের বছরেই জানতে পারেন, তাঁর নিখোঁজ স্বামী মারা গেছেন। ভিটেমাটি ও স্বামী হারিয়ে সন্তানদের নিয়ে জীবনযুদ্ধে একা লড়াই করতে থাকেন উম। সিরিয়ার ঐতিহ্যবাহী সেলাইয়ের বিভিন্ন শৈলী শিখে নেন তিনি। এরপর কাজ করতে করতে একপর্যায়ে ‘সামা হ্যান্ডমেইড’ প্রকল্পের দলনেতা হয়ে ওঠেন উম ফেরাস।
দামেস্কের পূর্বাঞ্চলীয় ছোট শহর জারামানার নাগরিক ও সমাজকর্মী ৫৫ বছর বয়সী সালমা সেয়্যাদ। কাজ করতে গিয়ে তিনি খেয়াল করেন, যুদ্ধের পর সিরিয়ান নারীরা বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন। পরিবার চালনার ভার এসে পড়ছিল নারীদের ওপর। সালমা মনে করেন, অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা সিরিয়ান নারীদের মূল বাধা। সেই থেকে তিনি নারীদের স্বাবলম্বী করে তোলার লড়াই শুরু করেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পুরুষতান্ত্রিক আচরণের শিকার হতেন সালমা। এরপরেও হাল ছেড়ে দেননি তিনি।
নারীরা দমনমূলক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যত সাধারণ পদক্ষেপই নিক না কেন, তা রাজনৈতিক। আমাল নাএম
সিরিয়ার আস-সুয়েইদা শহরে ছিল আমাল নাএমের একটি সুন্দর পরিবার। প্রথম সন্তান জন্মের সময় গ্রেপ্তার হন তাঁর স্বামী। তিন বছর পর তিনি মুক্ত হলেও একসময় তাঁকে হত্যা করা হয়। স্বামী হারিয়েও জীবন ও পরিবার পুনর্গঠনের কাজ চালিয়ে গেছেন আমাল। বর্তমানে তিনি একজন আইনজীবী এবং নারী অধিকারকর্মী। তিনি সিরিয়ান উইমেনস পলিটিক্যাল মুভমেন্ট এবং সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের সঙ্গে যুক্ত থেকে রাজনৈতিক কমিটির সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছেন।
২৩ বছর বয়সী বিসান সালহাব দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন আর্টস ফ্যাকাল্টি থেকে স্নাতক হয়েছেন। সিরিয়ান শিল্প নিয়ে বিদেশে পড়াশোনা করতে যেতে চাইলেও অর্থনৈতিক কারণে তাঁকে পিছিয়ে পড়তে হয়। বসে না থেকে বিসান সেখানেই স্নাতকোত্তর পর্বে লেখাপড়া করছেন এখন। আর চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিদেশি একটি বৃত্তির জন্য।
নতুন বছরে সিরিয়ার নারীদের জন্য সম্ভাবনার দরজা খুলে যাক।
বাংলাদেশে নারী অধিকার আন্দোলনের প্রথম সারির নেত্রী এবং বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রয়াত সভাপতি আয়শা খানম আমৃত্যু নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছেন। সংগঠনকে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা গ্রহণ করেছেন। উত্তরসূরিদের মধ্যে যৌথ নেতৃত্বদানের সক্ষমতা গড়ে তুলেছিলেন তিনি।
২ দিন আগেপ্রয়োজন পথ দেখায়। উম্মে কুলসুম পপিও প্রয়োজনের তাগিদে বেছে নিয়েছিলেন নিজের পথ। সে পথে সাফল্য ছিল, ব্যর্থতা ছিল, ছিল করোনার স্মৃতি। কিন্তু পপি পথ হারাননি। এখন ফেসবুকে তাঁর নামে যে পেজ রয়েছে, তাতে অনুসারীর সংখ্যা প্রায় ২২ লাখ। পড়াশোনা শেষ করেই তিনি পরিচিতি পেয়েছেন অনলাইন উদ্যোক্তা হিসেবে।
৪ দিন আগেষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় বাবা মারা গেলে কষ্টের জীবন শুরু হয় খাদিজা খানমের। তিন বোন, এক ভাইয়ের মধ্যে খাদিজা বড়। অনেক কষ্টে ১৯৯৫ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেন তিনি। ২০০০ সালে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি নেন তিনি। এরপর ২০১৫ সালে উচ্চমাধ্যমিক এবং ২০২০ সালে ডিগ্রি পাস করেন।
৪ দিন আগেএকটি প্রসিদ্ধ রিডিং মেথড স্টেজেস অব রিডিং ডেভেলপমেন্ট। এটি ব্যাখ্যা করে কীভাবে শিক্ষার্থীরা পাঠক হিসেবে এগিয়ে যায়। ১৯৮৩ সালে এই মেথডের গবেষক ছিলেন জিন স্টার্নলিখট চ্যাল। তিনি ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে সাক্ষরতা গবেষক হিসেবে কাজ করেছেন।
৪ দিন আগে