ডা. ফারজানা রহমান
‘সহনশীলতা দিবস’ এই অস্থির বিশ্বে খুব প্রাসঙ্গিক একটি বিষয়। এটি মানবিক মূল্যবোধের বিষয়, যা ব্যক্তিগত, সামষ্টিক ও জাতিগত পর্যায়ে সূচক হয়ে দাঁড়ায়।
সহনশীলতার অভাব কখন হতে পারে? বিভিন্ন কারণে একটি সহনশীল মানুষ এমনকি জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাই অসহনশীল হয়ে উঠতে পারে। যেমন জঙ্গিবাদ, জাতিগত সাম্প্রদায়িক মতবাদ, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বৈষম্য, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অভাব মানুষকে অসহনশীল করে তুলতে পারে। আরও কিছু বৈষম্য, যেমন আইনের দুর্বল শাসন, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতাও মানুষকে অনেক ক্ষেত্রে অস্থির করে তোলে।
সহনশীলতার সূতিকাগৃহ
সহনশীলতা সৃষ্টির মূল জায়গা হলো মানুষের পারিবারিক মূল্যবোধের চর্চা। তবে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, মেধা ও মননশীলতার অনুশীলনেও সহনশীল হয়ে ওঠা যায়।
কোন ক্ষেত্রে আমাদের সহনশীলতার অভাব দেখি
লাইনে দাঁড়ানো, সুশৃঙ্খলভাবে অপেক্ষা করার ক্ষেত্রে আমরা অনেক সময়ই সহনশীল থাকি না। শুধু তা-ই নয়, অন্যের মতপ্রকাশের বা অন্য কোনো মতামতও অনেকেই সহজভাবে নিতে পারেন না। নারী-পুরুষের ক্ষেত্রেও আমরা নারীদের মতামতের গুরুত্ব দেওয়া বা লৈঙ্গিক বৈষম্যের বিষয়ে সহনশীলতা দেখাই না। তৃতীয় লিঙ্গ ও সমকামীদের ক্ষেত্রে তো আরও বেশি ঘটে বিষয়টি। একই কথা প্রযোজ্য মানসিকভাবে অসুস্থ মানুষের জন্যও।
তবে সহনশীলতা মানে কি মেনে নেওয়া বা সহ্য করে নেওয়া না। এখানে পার্থক্য রয়েছে। সহনশীলতা হলো অন্যের মতপ্রকাশের, অন্যের চলার স্বাধীনতার, অপরের চিন্তা, চেতনা, রুচিবোধকে সম্মান জানানো। যার অন্য নাম পরমতসহিষ্ণুতা। এটি একজন ব্যক্তির ভেতর থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসে।
অন্য দিকে মেনে নেওয়া হলো যেকোনো বিষয়ে অন্য কারও চাপিয়ে দেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত বা অবস্থানের সঙ্গে আপস করা, যা কখনো কখনো ক্ষোভের কারণ হয়। কখনো তা সহিংসতারও কারণ হয়ে ওঠে।
আমাদের সংস্কৃতির মধ্যেই আরেকটি জায়গা হলো নারীদের প্রতি আমাদের সহনশীলতার ও সহমর্মিতার অভাব। যার শুরু হয় পরিবার থেকে। বাসার কিশোরী মেয়েটি যখন ইভ টিজিংয়ের শিকার হয়, অভিভাবক আঙুল তোলে মেয়েটির দিকেই। এই মেয়েটি যখন উচ্চশিক্ষা বা চাকরির জন্য অন্য জায়গায় যেতে চায়, বড়রা বাধা হয়ে দাঁড়ান। আবার চাকরি অথবা বিবাহিত জীবনেও মেনে নেওয়া বা একটু ‘অ্যাডজাস্ট’ করে চলা নারীদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে যায়।
ক্রমাগত এই মেনে নেওয়া, সহ্য করে চলা সহনশীলতা নয়। নিজের ব্যক্তিত্ব, নিজের পছন্দ, নিজের রুচি, শিক্ষা, জীবন ও মূল্যবোধকে উপেক্ষা করে, নিজেকে অপমান করা ধৈর্যশীলতার পরিচয় বহন করে না।
অনেক সময় পুরুষ সহকর্মীরা তাঁদের নারী সহকর্মীদের ছাড় দিতে চান না। তাঁরা মনে করেন নারীদের দিয়ে দায়িত্বশীল কাজ করানোর অনেক ঝামেলা। সন্তান জন্মদান, সংসার এসব বিষয়ের কারণেই অনেকে তাঁদের নারী সহকর্মীদের আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেন না। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ এবং সহকর্মীদের সহনশীলতার চর্চার প্রয়োজন।
তবে একটি কথা, সহনশীলতা কিন্তু প্রতিবাদ বা প্রতিরোধের বিপক্ষে নয়। সহনশীলতা আমাদের ধৈর্যশীল হতে শেখায়। প্রযুক্তির সর্বোচ্চ উৎকর্ষের যুগে, এই অস্থির অশান্ত যুদ্ধকালে সহনশীলতা আবেগীয় দক্ষতার অন্যতম সূচক। সে জন্য সহনশীলতার চর্চা আমাদের আবেগ ও মননশীলতাকে ঋদ্ধ করবে।
ডা. ফারজানা রহমান,সহযোগী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
‘সহনশীলতা দিবস’ এই অস্থির বিশ্বে খুব প্রাসঙ্গিক একটি বিষয়। এটি মানবিক মূল্যবোধের বিষয়, যা ব্যক্তিগত, সামষ্টিক ও জাতিগত পর্যায়ে সূচক হয়ে দাঁড়ায়।
সহনশীলতার অভাব কখন হতে পারে? বিভিন্ন কারণে একটি সহনশীল মানুষ এমনকি জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাই অসহনশীল হয়ে উঠতে পারে। যেমন জঙ্গিবাদ, জাতিগত সাম্প্রদায়িক মতবাদ, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বৈষম্য, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অভাব মানুষকে অসহনশীল করে তুলতে পারে। আরও কিছু বৈষম্য, যেমন আইনের দুর্বল শাসন, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতাও মানুষকে অনেক ক্ষেত্রে অস্থির করে তোলে।
সহনশীলতার সূতিকাগৃহ
সহনশীলতা সৃষ্টির মূল জায়গা হলো মানুষের পারিবারিক মূল্যবোধের চর্চা। তবে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, মেধা ও মননশীলতার অনুশীলনেও সহনশীল হয়ে ওঠা যায়।
কোন ক্ষেত্রে আমাদের সহনশীলতার অভাব দেখি
লাইনে দাঁড়ানো, সুশৃঙ্খলভাবে অপেক্ষা করার ক্ষেত্রে আমরা অনেক সময়ই সহনশীল থাকি না। শুধু তা-ই নয়, অন্যের মতপ্রকাশের বা অন্য কোনো মতামতও অনেকেই সহজভাবে নিতে পারেন না। নারী-পুরুষের ক্ষেত্রেও আমরা নারীদের মতামতের গুরুত্ব দেওয়া বা লৈঙ্গিক বৈষম্যের বিষয়ে সহনশীলতা দেখাই না। তৃতীয় লিঙ্গ ও সমকামীদের ক্ষেত্রে তো আরও বেশি ঘটে বিষয়টি। একই কথা প্রযোজ্য মানসিকভাবে অসুস্থ মানুষের জন্যও।
তবে সহনশীলতা মানে কি মেনে নেওয়া বা সহ্য করে নেওয়া না। এখানে পার্থক্য রয়েছে। সহনশীলতা হলো অন্যের মতপ্রকাশের, অন্যের চলার স্বাধীনতার, অপরের চিন্তা, চেতনা, রুচিবোধকে সম্মান জানানো। যার অন্য নাম পরমতসহিষ্ণুতা। এটি একজন ব্যক্তির ভেতর থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসে।
অন্য দিকে মেনে নেওয়া হলো যেকোনো বিষয়ে অন্য কারও চাপিয়ে দেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত বা অবস্থানের সঙ্গে আপস করা, যা কখনো কখনো ক্ষোভের কারণ হয়। কখনো তা সহিংসতারও কারণ হয়ে ওঠে।
আমাদের সংস্কৃতির মধ্যেই আরেকটি জায়গা হলো নারীদের প্রতি আমাদের সহনশীলতার ও সহমর্মিতার অভাব। যার শুরু হয় পরিবার থেকে। বাসার কিশোরী মেয়েটি যখন ইভ টিজিংয়ের শিকার হয়, অভিভাবক আঙুল তোলে মেয়েটির দিকেই। এই মেয়েটি যখন উচ্চশিক্ষা বা চাকরির জন্য অন্য জায়গায় যেতে চায়, বড়রা বাধা হয়ে দাঁড়ান। আবার চাকরি অথবা বিবাহিত জীবনেও মেনে নেওয়া বা একটু ‘অ্যাডজাস্ট’ করে চলা নারীদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে যায়।
ক্রমাগত এই মেনে নেওয়া, সহ্য করে চলা সহনশীলতা নয়। নিজের ব্যক্তিত্ব, নিজের পছন্দ, নিজের রুচি, শিক্ষা, জীবন ও মূল্যবোধকে উপেক্ষা করে, নিজেকে অপমান করা ধৈর্যশীলতার পরিচয় বহন করে না।
অনেক সময় পুরুষ সহকর্মীরা তাঁদের নারী সহকর্মীদের ছাড় দিতে চান না। তাঁরা মনে করেন নারীদের দিয়ে দায়িত্বশীল কাজ করানোর অনেক ঝামেলা। সন্তান জন্মদান, সংসার এসব বিষয়ের কারণেই অনেকে তাঁদের নারী সহকর্মীদের আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেন না। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ এবং সহকর্মীদের সহনশীলতার চর্চার প্রয়োজন।
তবে একটি কথা, সহনশীলতা কিন্তু প্রতিবাদ বা প্রতিরোধের বিপক্ষে নয়। সহনশীলতা আমাদের ধৈর্যশীল হতে শেখায়। প্রযুক্তির সর্বোচ্চ উৎকর্ষের যুগে, এই অস্থির অশান্ত যুদ্ধকালে সহনশীলতা আবেগীয় দক্ষতার অন্যতম সূচক। সে জন্য সহনশীলতার চর্চা আমাদের আবেগ ও মননশীলতাকে ঋদ্ধ করবে।
ডা. ফারজানা রহমান,সহযোগী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
চীন, রাশিয়া কিংবা ইউরোপের গণপরিবহনে পাঠকদের প্রায়ই মগ্ন দেখা যায়। জার্মানিতে রাস্তাঘাট ও পার্কে আছে ছোট ছোট লাইব্রেরি। সেখান থেকে যে কেউ বই নিয়ে পড়তে পারেন। জার্মানির এমন দৃশ্যের মনোজ্ঞ বর্ণনা নিজের ফেসবুক পেজে লিখেছিলেন বাংলাদেশি যুবক মানো বিশ্বাস।
১ দিন আগেআমার এক কাজিনের মেয়ে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়েন। একদিন কলেজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় এক লোক তাঁকে ভয় দেখিয়ে বাসায় নিয়ে গিয়ে যৌন হেনস্তা করেন। তারপর তাঁর কাছে টাকা দাবি করেন। ওই মেয়ে টাকা দেওয়ার কথা বলে বাড়ি এসে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এখন কলেজে যেতে ভয় পাচ্ছেন...
১ দিন আগেগ্রামের পূর্ব-দক্ষিণ প্রান্তে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কের পাশে সাজেদার মৎস্য চাষ প্রকল্প। ২০২২ সালে ২০ শতাংশের পুকুর দিয়ে যাত্রা শুরু করেন তিনি। পরে বর্গা নিয়ে আরও ৮০ শতাংশ জমির প্রকল্পে যুক্ত করেছেন। সাজেদার সঙ্গে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি—সবার শ্রমে তৈরি হয় এক একর আয়তনের প্রকল্প পুকুর। সেই পুকুরে মাছ...
১ দিন আগেপৃথিবীতে নারীদের এখনো পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠী হিসেবে ধরা হয়। তবে নিজের দেশ ও জাতীয় সত্তা এগিয়ে নিয়ে যেতে যুগে যুগে নারীরা নিয়েছিল বিভিন্ন পদক্ষেপ। তাতে শুধু নারীরাই নয়, পুরো দেশ হয়েছে আলোকিত।
১ দিন আগে