ফিরে দেখা ২০২৪
ক্রীড়া জগতে কখনো কখনো সাফল্যের ঝলকানি দেখেছি আমরা। দেখেছি ছাদ খোলা বাসে বিজয়ের আনন্দ উদ্যাপনের দৃশ্য। কিন্তু এই উদ্যাপন কি দেশের ৫৫ ফেডারেশনের ৫৪টিতে নারী খেলোয়াড়দের সাফল্যের কথা তুলে ধরে? অম্ল-মধুর এ গল্প নিয়ে বছর শেষের আয়োজনে লিখেছেন জহির উদ্দিন মিশু।
জহির উদ্দিন মিশু
হিমালয় থেকে ছড়ানো সৌরভ
বছরের প্রথম কয়েকটি মাসে ছিল না বড় কোনো ফুটবল টুর্নামেন্ট। জুলাই-আগস্ট কেটেছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে। সেপ্টেম্বর থেকে ক্রীড়াঙ্গনে নেমে আসে স্থবিরতা। সেই স্থবির দশা কেটে যায় দারুণ এক জয়ে। নেপালের কাঠমান্ডুতে সাফ উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপে স্বাগতিকদের হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জেতেন বাংলাদেশের মেয়েরা। সেই সৌরভ ছড়িয়ে পড়ে পুরো দেশে। আনন্দে উদ্বেলিত ফুটবলপ্রেমীরা দারুণভাবে বরণ করে নেয় সামিনাদের। আসে একের পর এক পুরস্কারের ঘোষণা। সাফ জয়ের সুবাস ছড়িয়ে পড়ে ক্রীড়াঙ্গনে।
তাঁদের এ কেমন চলে যাওয়া
একদিকে মেয়েদের সাফ জয়, অন্যদিকে দুই নারী ফুটবলার নুরজাহান আক্তার মিথিলা ও রাজিয়া সুলতানার অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু। এ দুই ঘটনা ক্রীড়াঙ্গনের প্রাপ্তির একাংশে মেখে দেয় মলিনতা। ‘দয়া করে আপনারা সহায়তার হাত বাড়ান, আমি বাঁচতে চাই’— গত ৬ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে করা মিথিলার আকুতিকে কজনই গুরুত্ব দিয়েছে। এরপর গত মার্চে প্রসবকালীন জটিলতায় অনন্তলোকের পথে হেঁটেছেন সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার ফুটবলার রাজিয়া সুলতানা। তবে মিথিলার সেদিনের আর্তনাদ আজও অনেকের চোখে জল এনে দেয়।
বাঁচার আকুতি জানিয়ে মিথিলা ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, ‘আমি অনেক অসুস্থ। শ্যামলী বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। আমার বাবা প্রায় লাখ টাকা খরচ করেছেন, এখন আর পারছেন না। টাকার অভাবে ওষুধও ঠিকমতো খেতে পারছি না। আমি বাঁচতে চাই। হার্টে পানি জমেছে। ফুসফুসে সমস্যা। শ্বাসনালিতে ইনফেকশন। অক্সিজেন লেভেলও কম। অক্সিজেন মেশিন কিনতে হবে, মূল্য ৩৫ হাজার টাকা। অত টাকা কোথায় পাব! প্লিজ, আপনারা আমাকে সাহায্য করুন।’
এরপর হুট করেই চলে যান এসএ গেমস স্বর্ণজয়ী শুটার সাদিয়া সুলতানা। জীবনের শেষ দিনগুলো নিজের পাওয়া মেডেলগুলো দেখেই কাটিয়েছেন। মানসিক অবসাদ আর তাঁকে প্রিয় শুটিং রেঞ্জে ফিরতে দেয়নি। তাঁর মৃত্যুতেও ক্রীড়াঙ্গনে নামে শোকের ছায়া।
তবু ছিল মাবিয়ার আলো
বছরের বেশির ভাগ সময় কেটেছে ক্রীড়া সংস্কারে। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ক্রীড়াঙ্গনকে নতুন করে গড়ার কাজটা মন দিয়ে শুরু করে। সে জন্য সব ফেডারেশনের সভাপতি ছেঁটে ফেলা হয়। এ কারণে দীর্ঘ সময় খেলাধুলায় ছিল না স্বাভাবিক অবস্থা। এর মাঝেও সুযোগ পেয়ে নিজেকে মেলে ধরেন মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। নভেম্বরে অনুষ্ঠিত সপ্তম আন্তসার্ভিস ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতায় ৭১ কেজি ওজন শ্রেণিতে প্রথম স্থান ধরে রাখার পাশাপাশি রেকর্ডও গড়েন। ভারোত্তোলনের দুটি অংশ—ক্লিন ও জার্ক। দুই বিভাগেই তিন কেজি করে বেশি তোলেন তিনি। ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১১১ কেজি উত্তোলন করেন। ২০১৪ সাল থেকে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হচ্ছেন সীমান্ত। গত এক দশকে অনেক চ্যাম্পিয়ন ও রেকর্ড গড়েছেন-ভেঙেছেন। তাই নিজের কীর্তি নিজেরই এখন মনে রাখা কষ্টকর। এ কথাটিই শোনা গেল তাঁর কণ্ঠে, ‘ঠিক মনে নেই, কতবার রেকর্ড হলো বা ভাঙলাম। যত দিন খেলব তত দিনই রেকর্ড করতে চাই।’
হকি-ব্যাডমিন্টনে ভরাডুবি
বছরের শেষ দিকে ঢাকায় আন্তর্জাতিক জুনিয়র ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ছিল ইন্দোনেশিয়ায় জয়জয়কার। দেশের মেয়েরা ফাইনালেও যেতে পারেননি। এরপর সিনিয়র পর্যায়েও ভালো করতে পারেননি মেয়েরা। প্রথম দিনেই বাংলাদেশের নারী জাতীয় চ্যাম্পিয়ন উর্মি আক্তার একক ইভেন্টে হেরে যান। যে হার নিয়ে তাঁর ব্যাখ্যা ছিল, ‘আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারিনি। এরপরও যতটুকু সম্ভব লড়াই করেছি।’
তার কদিন আগে ওমানের মাসকটে নারীদের জুনিয়র এশিয়া কাপ হকিতেও হতাশ করেন মেয়েরা। যেখানে ছেলেরা পঞ্চম হয়ে প্রথমবারের মতো জুনিয়র হকির বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছিলেন, সেখানে মেয়েরা সপ্তম হয়ে শূন্য হাতে দেশে ফেরেন। এ জন্য অবশ্য প্রস্তুতির ঘাটতিকেই দুষেছেন জুনিয়র হকির অধিনায়ক অর্পিতা পাল। বলেছেন, ‘আসলে আমরা শুরুর দিকে যাদের সঙ্গে খেলেছিলাম তাদের বিপক্ষে আগে কখনো খেলিনি। তাদের খেলাও দেখা হয়নি। এ জন্য মাঠে নেমে একটু ধরে খেলার চেষ্টা করি। কিন্তু তাদের কিছু কিছু টেকনিকের সঙ্গে আমরা কুলিয়ে উঠিনি। এরপর থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ম্যাচগুলোতে আগের তুলনায় ভালো খেলেছিলাম। যদিও জিততে পারিনি। শেষ ম্যাচটা সব দিক থেকে ভালো হয়। তবে প্রস্তুতিটা আমাদের পরিপূর্ণ হয়নি।’
হিমালয় থেকে ছড়ানো সৌরভ
বছরের প্রথম কয়েকটি মাসে ছিল না বড় কোনো ফুটবল টুর্নামেন্ট। জুলাই-আগস্ট কেটেছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে। সেপ্টেম্বর থেকে ক্রীড়াঙ্গনে নেমে আসে স্থবিরতা। সেই স্থবির দশা কেটে যায় দারুণ এক জয়ে। নেপালের কাঠমান্ডুতে সাফ উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপে স্বাগতিকদের হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জেতেন বাংলাদেশের মেয়েরা। সেই সৌরভ ছড়িয়ে পড়ে পুরো দেশে। আনন্দে উদ্বেলিত ফুটবলপ্রেমীরা দারুণভাবে বরণ করে নেয় সামিনাদের। আসে একের পর এক পুরস্কারের ঘোষণা। সাফ জয়ের সুবাস ছড়িয়ে পড়ে ক্রীড়াঙ্গনে।
তাঁদের এ কেমন চলে যাওয়া
একদিকে মেয়েদের সাফ জয়, অন্যদিকে দুই নারী ফুটবলার নুরজাহান আক্তার মিথিলা ও রাজিয়া সুলতানার অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু। এ দুই ঘটনা ক্রীড়াঙ্গনের প্রাপ্তির একাংশে মেখে দেয় মলিনতা। ‘দয়া করে আপনারা সহায়তার হাত বাড়ান, আমি বাঁচতে চাই’— গত ৬ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে করা মিথিলার আকুতিকে কজনই গুরুত্ব দিয়েছে। এরপর গত মার্চে প্রসবকালীন জটিলতায় অনন্তলোকের পথে হেঁটেছেন সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার ফুটবলার রাজিয়া সুলতানা। তবে মিথিলার সেদিনের আর্তনাদ আজও অনেকের চোখে জল এনে দেয়।
বাঁচার আকুতি জানিয়ে মিথিলা ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, ‘আমি অনেক অসুস্থ। শ্যামলী বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। আমার বাবা প্রায় লাখ টাকা খরচ করেছেন, এখন আর পারছেন না। টাকার অভাবে ওষুধও ঠিকমতো খেতে পারছি না। আমি বাঁচতে চাই। হার্টে পানি জমেছে। ফুসফুসে সমস্যা। শ্বাসনালিতে ইনফেকশন। অক্সিজেন লেভেলও কম। অক্সিজেন মেশিন কিনতে হবে, মূল্য ৩৫ হাজার টাকা। অত টাকা কোথায় পাব! প্লিজ, আপনারা আমাকে সাহায্য করুন।’
এরপর হুট করেই চলে যান এসএ গেমস স্বর্ণজয়ী শুটার সাদিয়া সুলতানা। জীবনের শেষ দিনগুলো নিজের পাওয়া মেডেলগুলো দেখেই কাটিয়েছেন। মানসিক অবসাদ আর তাঁকে প্রিয় শুটিং রেঞ্জে ফিরতে দেয়নি। তাঁর মৃত্যুতেও ক্রীড়াঙ্গনে নামে শোকের ছায়া।
তবু ছিল মাবিয়ার আলো
বছরের বেশির ভাগ সময় কেটেছে ক্রীড়া সংস্কারে। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ক্রীড়াঙ্গনকে নতুন করে গড়ার কাজটা মন দিয়ে শুরু করে। সে জন্য সব ফেডারেশনের সভাপতি ছেঁটে ফেলা হয়। এ কারণে দীর্ঘ সময় খেলাধুলায় ছিল না স্বাভাবিক অবস্থা। এর মাঝেও সুযোগ পেয়ে নিজেকে মেলে ধরেন মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। নভেম্বরে অনুষ্ঠিত সপ্তম আন্তসার্ভিস ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতায় ৭১ কেজি ওজন শ্রেণিতে প্রথম স্থান ধরে রাখার পাশাপাশি রেকর্ডও গড়েন। ভারোত্তোলনের দুটি অংশ—ক্লিন ও জার্ক। দুই বিভাগেই তিন কেজি করে বেশি তোলেন তিনি। ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১১১ কেজি উত্তোলন করেন। ২০১৪ সাল থেকে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হচ্ছেন সীমান্ত। গত এক দশকে অনেক চ্যাম্পিয়ন ও রেকর্ড গড়েছেন-ভেঙেছেন। তাই নিজের কীর্তি নিজেরই এখন মনে রাখা কষ্টকর। এ কথাটিই শোনা গেল তাঁর কণ্ঠে, ‘ঠিক মনে নেই, কতবার রেকর্ড হলো বা ভাঙলাম। যত দিন খেলব তত দিনই রেকর্ড করতে চাই।’
হকি-ব্যাডমিন্টনে ভরাডুবি
বছরের শেষ দিকে ঢাকায় আন্তর্জাতিক জুনিয়র ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ছিল ইন্দোনেশিয়ায় জয়জয়কার। দেশের মেয়েরা ফাইনালেও যেতে পারেননি। এরপর সিনিয়র পর্যায়েও ভালো করতে পারেননি মেয়েরা। প্রথম দিনেই বাংলাদেশের নারী জাতীয় চ্যাম্পিয়ন উর্মি আক্তার একক ইভেন্টে হেরে যান। যে হার নিয়ে তাঁর ব্যাখ্যা ছিল, ‘আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারিনি। এরপরও যতটুকু সম্ভব লড়াই করেছি।’
তার কদিন আগে ওমানের মাসকটে নারীদের জুনিয়র এশিয়া কাপ হকিতেও হতাশ করেন মেয়েরা। যেখানে ছেলেরা পঞ্চম হয়ে প্রথমবারের মতো জুনিয়র হকির বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছিলেন, সেখানে মেয়েরা সপ্তম হয়ে শূন্য হাতে দেশে ফেরেন। এ জন্য অবশ্য প্রস্তুতির ঘাটতিকেই দুষেছেন জুনিয়র হকির অধিনায়ক অর্পিতা পাল। বলেছেন, ‘আসলে আমরা শুরুর দিকে যাদের সঙ্গে খেলেছিলাম তাদের বিপক্ষে আগে কখনো খেলিনি। তাদের খেলাও দেখা হয়নি। এ জন্য মাঠে নেমে একটু ধরে খেলার চেষ্টা করি। কিন্তু তাদের কিছু কিছু টেকনিকের সঙ্গে আমরা কুলিয়ে উঠিনি। এরপর থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ম্যাচগুলোতে আগের তুলনায় ভালো খেলেছিলাম। যদিও জিততে পারিনি। শেষ ম্যাচটা সব দিক থেকে ভালো হয়। তবে প্রস্তুতিটা আমাদের পরিপূর্ণ হয়নি।’
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ফিলিস্তিন। কেউই জানে না সেখানকার মানুষের এই বিভীষিকাময় সময়ের শেষ কোথায়। সে দেশের শহর গাজা, যেখানে শিশুরা রাতের আকাশে নক্ষত্র নয়, রকেট গুনে ঘুমায়। জীবনের ভয়াবহ সময়েও শহরটির মানুষ বলে চলে দেশের মানুষের প্রতি হয়ে যাওয়া নির্মমতা ও জুলুমের কথা। ফিলিস্তিনের অসংখ্য মানুষ নিজেদের জায়গা থেক
২ দিন আগেদেখতে দেখতে বিদায়ের ঘণ্টা বাজছে ২০২৪ সালের। বরাবরের মতো এ বছরটাও শেষ হচ্ছে নানা প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, আশা-হতাশা আর অর্জনের মধ্য দিয়ে। দেশে এবং দেশের বাইরে আমাদের নারীরা সম্মানিত হয়েছেন মানবতা, জ্ঞান, দর্শন, বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের কাজ দিয়ে।
২ দিন আগেদেশে প্রচলিত আইনে উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে ছেলেরা যে সম্পত্তি পায়, মেয়েরা পায় তার অর্ধেক। কিন্তু বাস্তবে তাদের সেটুকুও দেওয়া হয় না। সম্পত্তিতে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের বৈষম্যের শিকার হতে হয়। রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘আন্তপ্রজন্মভিত্তিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নারী আন্দোল
২ দিন আগেগণ-অভ্যুত্থানের কাছে কোনো না কোনো দিন স্বৈরশাসককে মাথা নোয়াতে হয়। ৮ ডিসেম্বর পৃথিবীর ইতিহাসে আরও এক স্বৈরশাসক পরাজিত হয় জনতার কাছে। এ জন্য প্রাণ দিতে হয়েছে নাম না জানা হাজারো মানুষকে। আর নিখোঁজ মানুষেরা বেঁচে আছে, নাকি মারা গেছে, সে খবর জানে না কেউ। বাশার আল-আসাদের...
৯ দিন আগে