নারী–শিশু পাচারের অন্যতম কারণ বাল্যবিবাহ: ফরিদা আখতার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, নারী–শিশু পাচারের অন্যতম কারণ বাল্যবিবাহ। যার যার অবস্থান থেকে এগুলো রুখে দাঁড়ানো আবশ্যক। 

আজ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘উইমেন’স এম্পাওয়ারমেন্ট: উইমেন’স ভয়েস অ্যান্ড লিডারশিপ বাংলাদেশ প্রকল্পের সাফল্যের গল্প’ শীর্ষক সম্মেলনে উপদেষ্টা এ কথা বলেন। 

গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার অর্থায়নে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন কর্তৃক বাস্তবায়িত প্রকল্পের ফলাফল তুলে ধরা হয় এই সম্মেলনে। এ সময় উপস্থিত তৃণমূল পর্যায়ের নারী, কিশোরী–তরুণী, হিজড়া ও ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিরা তাঁদের জীবনের অনুপ্রেরণামূলক গল্প তুলে ধরেন এবং জীবনের প্রতিকূলতা, আকাঙ্ক্ষা ও অর্জনের গল্প শোনান। 

ফরিদা আখতার বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা অংশগ্রহণকারীদের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পগুলো প্রেরণাদায়ক এবং শক্তিশালী। 

বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা-পরিচয়ের নারীদের সামনে আনার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদি মানুষের বিভিন্নতা অনুযায়ী সমস্যাগুলো সমাধান না করে শুধু একক উপায়ে নারীদের সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করা হয় তবে তা বৈষম্য দূর করতে যথেষ্ট নয়। নারী–শিশুদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য উন্নয়নে স্কুলগুলোতে সুষম টিফিন নিশ্চিত করা দরকার। এগুলো বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে কাজ করছি। 

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে পুরুষদের এগিয়ে আসাতে হবে। বাল্যবিবাহ উচ্চশিক্ষায় নারীদের সংখ্যা কমে যাওয়াই প্রধান কারণ। বাল্যবিয়ে রোধে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নারী এবং পুরুষ একে অপরকে সহযোগিতা করার মাধ্যমে লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। 

ক্যাম্পেইন ফর পপুলার এডুকেশনের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘অংশগ্রহণ আর অংশীদারত্ব এক নয়। বর্তমানে অনেক অংশগ্রহণকারী নারী আছেন। কিন্তু তাঁদের অংশীদারত্ব কতটুকু? আমাদের সমতা এবং ন্যায্যতা আলাদাভাবে বুঝতে হবে। যদি এটি স্পষ্ট না হয়, নারীর ক্ষমতায়ন সঠিকভাবে বোঝা এবং নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে যাবে।’ 

বাংলাদেশে অবস্থিত কানাডা দূতাবাসের শার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স ডেবরা বয়েস নারী নেত্রীদের ভূমিকা কেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তা উল্লেখ করে বলেন, ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়াজ তোলার মাধ্যমেই নারীর বিরুদ্ধে বৈষম্যের বিরোধিতা করতে হবে যা আমরা সাম্প্রতিক সময় থেকে শিক্ষা নিতে পারি। কারণ অন্যায়ের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়তে চাইলে একসঙ্গে আওয়াজ তোলার বিকল্প নেই। 

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম নারীবাদকে সংজ্ঞায়িত করে বলেন, ‘আমার কাছে মানুষের সমঅধিকারে প্রতি সকলের বিশ্বাসই হলো নারীবাদ। পুরুষকে আমাদের এই জেন্ডার সমতায়নের যাত্রায় সহযাত্রী হিসাবে গণ্য করতে হবে।’ 

সভায় জানানো হয়, ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া প্রকল্পটি চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশের ২০টি জেলায় বাংলাদেশে উইমেন্স ভয়েস অ্যান্ড লিডারশিপ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। যার মধ্যে স্থানীয় নারী অধিকার সংগঠনগুলোকে অনুদান প্রদান এবং কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির বিভিন্ন কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যাতে তারা তাদের এলাকার প্রান্তিক এবং ঝুঁকির সম্মুখীন নারী ও মেয়েদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারে। 

এ ছাড়া স্থানীয় নারী অধিকার সংগঠন সম্প্রদায় ভিত্তিক সংগঠনগুলোকে বিশেষত যারা প্রান্তিক ও দুর্বল-তাদের অধিকার প্রয়োগে সহায়তা করার ক্ষমতা জোরদার করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত