কামরুল হাসান

ভোর হয়ে আসছে। নীরব চারদিক। ময়মনসিংহ শহরের চোখে ভোররাতের আদুরে ঘুম। এ রকম নীরবতা ভেঙে ঝড়ের গতিতে ছুটে চলেছে আটটি গাড়ির বহর। আকুয়াপাড়ার আঁকাবাঁকা পথ ধরে গাড়িগুলো এসে থেমে গেল শেষ মাথায়। ধূসর রঙের চারতলা সিকান্দার ভিলার সামনে।
কালো উর্দি পরা একজন গাড়ি থেকে নেমে এদিক-ওদিক তাকালেন। এরপর ডান হাত তুলে সঙ্গীদের ইশারা দিলেন। খুলে গেল আট গাড়ির দরজা। নেমে পড়লেন আরও ৪০ জন। ভারী বুটের আওয়াজে মাটি কেঁপে উঠল। দলের নেতাও কালো উর্দি পরা। কাঁধে লে. কর্নেলের ব্যাজ। বুকে নামফলকের জায়গাটা খালি। এক মিনিটেরও কম সময়। ততক্ষণে চারতলা ভবনের চারদিক নজরবন্দী। আশপাশের বাড়ির ছাদে উঠে পড়লেন কেউ কেউ। কয়েকজন দরজার সামনে।
নিচতলায় কলাপসিবল গেটে বড় তালা ঝুলছে। পাশে চারতলার চারটি কলবেল। কোনো কিছু না ভেবে একটি বেলে চাপ দিতেই পাখির কিচিরমিচির শব্দ। তৃতীয় তলা থেকে বারান্দায় এসে উঁকি দিল এক কিশোর, ঘুম জড়ানো চোখে জিজ্ঞেস করল, কে?
সকালের ঘুম ভাঙার বিরক্তি নিয়ে বারান্দায় আসা কিশোর উঁকি দিয়েই থমকে গেল। নিচের মানুষগুলোর দিকে তাকিয়ে উত্তরের অপেক্ষা করে না, নিচে নেমে এল।
একজন মেজর জানতে চাইলেন–এ বাড়িতে একটি শিশুর জন্ম হয়েছে?
কিশোরের ভয়ার্ত চোখ, মাথা নাড়িয়ে বলল, হ্যাঁ।
সে কোথায়? জানতে চাইলেন মেজর।
নিচতলার ভাড়াটের ঘর দেখিয়ে দিল কিশোর। মেজর সামনে দাঁড়ানো লে. কর্নেলের দিকে তাকালেন, মনে হলো শিকার মিলেছে। আর দেরি করার সময় নেই। একজন নিচের তলার দরজায় ঘা দিলেন। দুবার ঘা দিতেই ক্যাচক্যাচ শব্দে কে যেন দরজা খুলে দিলেন।
ঘরে মশারির ভেতরে বোরকা পরা দুই নারী। একজন বসে, আরেকজন শুয়ে। মনে হলো বসে থাকা নারী দরজা খুলে দিয়ে আবার বিছানায় উঠে বসেছেন। নিজের ঘরের বিছানায় বোরকা পরে শুয়ে থাকা দেখে কর্মকর্তারা হতবাক।
এক নারীকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি কি বাংলা ভাইয়ের স্ত্রী?’
নারী চমকে উঠে বললেন, ‘এ নামে তো কাউকে চিনি না।’
আপনার স্বামী কোথায়? প্রশ্ন করতেই ত্বরিত জবাব, ‘বিদেশে।’
পাশে আরেকটি ঘর, শুয়ে আছেন এক যুবক। তাকে টেনে তুলে আচমকা জিজ্ঞেস করা হলো, ‘এই, এখানে তোর বউ কোনটি?’
যুবক থতমত খেয়ে এক নারীকে দেখিয়ে বলল, ‘এইটা আমার বউ।’
কর্মকর্তার প্রশ্ন, ‘তাহলে ওই নারী কে?’
যুবক জড়ানো কণ্ঠে বলল, ‘উনি বাংলা ভাইয়ের স্ত্রী।’
এবার বল, বাংলা ভাই কোথায়? জানতে চান কর্মকর্তা। নারী বলেন, আমি জানি না। কর্মকর্তারা চাপ সৃষ্টি করতেই বলেন, মুক্তাগাছায় আছেন। মুক্তাগাছার কোথায় জানতে চাইলে জবাব আসে, ‘সেটা জানি না, কোনো দিন যাইনি।’
কর্মকর্তারা এবার সরাসরি যুবককে বলে বসেন, ‘এই, তুই জানিস। চল আমাদের সঙ্গে।’ যুবক উপায়ান্তর না দেখে হ্যাঁ–সূচক মাথা নেড়ে নিচে নেমে আসে।
যে দলটি এই অভিযান চালাচ্ছে, তাদের নেতা লে. কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদ। দলের বাকি সদস্যরা র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের সদস্য। এঁদের হাতে আছে ভারী অস্ত্র আর বুলেটরোধী পোশাক। কারও মুখে কোনো রা নেই। সবাই শুধু দলনেতার আদেশ ফলো করছেন।
গাড়িগুলো আবার ছুটতে শুরু করল। ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল হাইওয়ে ধরে পশ্চিমে, মুক্তাগাছার দিকে।
২০০৬ সালের ৬ মার্চের সকাল। জেএমবি নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাইয়ের স্ত্রী ফাহিমা এবং তাঁকে শনাক্তকারী সেই যুবককে নিয়ে সকাল সোয়া ৬টায় শুরু হয় র্যাবের ‘অপারেশন মুক্তাগাছা’। মুক্তাগাছা থানা থেকে আট কিলোমিটার পশ্চিমে যাওয়ার পর শেষ হয়ে গেল পাকা রাস্তা। গাড়ি আর চলে না। এবার শুধু পায়ে হাঁটা।
সারা দেশে তখন জেএমবির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ব্র্যাক ও গ্রামীণ ব্যাংকে ডাকাতি করছে জেএমবি। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৬টি হামলায় ৭৩ জন নিহত আর প্রায় ৮০০ লোক আহত হয়েছে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। দেশ-বিদেশের চাপের মুখে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার জেএমবিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। জঙ্গি নির্মূলের দায়িত্ব নিয়ে মাঠে নেমেছেন লে. কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদ। এর চার দিন আগে ২০০৬ সালের ২ মার্চ সিলেট থেকে আবদুর রহমানকে ধরতে ৩৩ ঘণ্টার এক শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান হয়েছে।
সব জিজ্ঞাসাবাদেই আবদুর রহমানের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে বাংলাভাই কোথায়? কিন্তু শায়খ রহমান মুখ খুলতে নারাজ। ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ভেঙে পড়েন শায়খ রহমান। রাত পৌনে ১টার দিকে তিনি জানান, বাংলা ভাই ময়মনসিংহে অবস্থান করলেও তিনি তাঁর ঠিকানা জানেন না। ঠিকানা জানে রিমন। রিমন তাঁকে ময়মনসিংহে বাংলা ভাইয়ের আস্তানায় নিয়ে যেত। আমানুল্লাহ রিমন হলো কলেজছাত্র।
‘রিমন কোথায়?’
শায়খ বললেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য সিলেটে গেছে। দক্ষিণ সুরমার একটি বাড়িতে আছে। রাতেই সে খবর সিলেটে র্যাব-৯কে জানানো হয়। অধিনায়ক তখন সিলেটে নেই। মেজর শিব্বির রাত সোয়া ২টায় রিমনকে আটক করেন।
সিলেটে রিমনকে জেরা চলছে আর ঢাকা থেকে ময়মনসিংহে রওনা হয়ে গেছেন র্যাবের কর্মকর্তারা। গুলজার উদ্দিন ছাড়াও দলে আছেন কমান্ডার মাসুক হাসান আহমেদ, মেজর জাভেদ, মেজর কোরবান, মেজর আতিক, মেজর ওয়াছি, ক্যাপ্টেন তানভিরসহ ১৫-২০ জন কর্মকর্তা। সঙ্গে নেওয়া হয়েছে সিলেটে শায়খ রহমানের সঙ্গে গ্রেপ্তার করা জঙ্গি হানিফকে।
সিলেটে রিমনকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে আকুয়াপাড়ার উজ্জ্বল ভিলায় বাংলা ভাই আছেন বলে জানায়। আরও নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের পর সিকান্দার ভিলার নাম বলে। রিমন জানায়, ওই বাসায় কিছুদিন আগে একটি শিশুর জন্ম হয়েছে। সেই সূত্রই ছিল ‘অপারেশন মুক্তাগাছা’র সবচেয়ে বড় ক্লু।
জঙ্গিবিরোধী প্রতিটি অভিযানেই র্যাবের কর্মকর্তাদের অনুসরণ করেছি ছায়ার মতো। চাঞ্চল্যকর গোয়েন্দাকাহিনির মতোই সেই সব অভিযানের পরতে পরতে ছিল উত্তেজনায় ঠাসা। এসব অভিযানে কর্মকর্তারা যে সাহস দেখাতেন, তা ছিল শিউরে ওঠার মতো। এখনো মনে পড়লে গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে।
মুক্তাগাছার রামপুর গ্রামে পৌঁছানোর আগে র্যাব সদস্যরা ৯টি দলে ভাগ হয়ে যান। একটি দল বাংলা ভাইয়ের স্ত্রী–পুত্র ও সেই লোকটির পাহারার দায়িত্ব নেয়। এরপর তাঁরা সবাই প্রায় পাঁচ কিলোমিটার মেঠো পথে হেঁটে চলে আসেন সেই বাড়ির সামনে, যেখানে বাংলা ভাই আছেন বলে জানিয়েছিল সেই যুবক।
বাংলা ভাইয়ের বউ–ছেলেকে পাশের বাড়িতে বসিয়ে রাখা হয়। র্যাব কর্মকর্তারা তখন চারদিক থেকে বাড়িটি ঘেরাও করে ফেলেন। লে. কর্নেল গুলজার হুংকার দিয়ে বলেন, ‘বাংলা, তোর দিন শেষ। তুই বেরিয়ে আয়।’ হঠাৎ বাড়ির ভেতর থেকে দাড়িওয়ালা এক লোক বেরিয়ে দৌড়াতে থাকে। তাকে বাংলা ভাই ভেবে ধাওয়া করেন কয়েকজন। বাড়ির সামনে র্যাব কর্মকর্তারা ভেতরে ঢুকবেন কি না, ইতস্তত করছেন। আশপাশে কেউ নেই। সব ঘরের দরজা বন্ধ।
এগিয়ে এলেন সার্জেন্ট রফিক। সজোরে দরজায় লাথি মারলেন। দরজা খুলে গেল। সার্জেন্ট রফিক ভেতরে মুখ বাড়াতেই লাঠির বাড়ি এসে পড়ল তাঁর মাথায়। হাতের পিস্তলটি পড়ে গেল। ভেতরে একটি গুলির শব্দ। সবার সন্দেহ, বাংলা ভাই ভেতরেই আছেন। গুলজার আবার চিৎকার দিলেন, ‘বাংলা, তুই আমার ফোর্সের গায়ে হাত তুলেছিস। তোকে আমি খুন করে ফেলব।’
হঠাৎ ঘরের ভেতরে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ। পুরো বাড়ি আগুনে জ্বলে উঠল। ঘরের ভেতর থেকে এক লোক বের হয়ে আসতেই কনস্টেবল সাত্তার চিৎকার করে উঠলেন—স্যার, বাংলা ভাই।
ঘরের এক দিকে কর্নেল গুলজার, আরেক দিকে কমান্ডার মাশুক। মাঝখানে মেজর কোরবান আর ক্যাপ্টেন তানভির। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে ঘরের ভেতর থেকে একটি ক্ষতবিক্ষত দেহ ছিটকে বাইরে এল। সে মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে। বাংলা ভাই তখনো ঘরের ভেতরে। তাঁর সাড়া নেই। হঠাৎ গায়ে কম্বল জড়িয়ে দরজার সামনে এলেন বিশালদেহী দাড়িওয়ালা লোক। তাঁকে দেখে কারও চিনতে বাকি থাকে না—বাংলা ভাই।
এতক্ষণে কেউ খেয়াল করেনি, সার্জেন্ট রফিক যে পিস্তলটি ফেলে এসেছেন, সেটা পড়ে আছে বাংলা ভাইয়ের পায়ের কাছে। গুলিভর্তি নাইন এমএম পিস্তল। বাংলা ভাইয়ের হাত খালি। তাঁর নিজের অস্ত্রটিও হাতে নেই।
র্যাবের হুংকারে কাজ হলো। বাংলা ভাই বলেন, ‘আল্লার দোহাই, আমাকে কিছু করবেন না।’
আবার হুংকার—`কথা কম, বেরিয়ে আয়।’
সারা মুখে ছাই মাখা অবস্থায় গায়ে কম্বল জড়িয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন বাংলা ভাই, দুই হাত মাথার ওপরে তুলে। র্যাব কর্মকর্তারা কম্বল খুলে হাঁটু গেড়ে বসতে বলেন, কিন্তু বাংলা ভাই অনড়, এভাবে বসবেনই না। এমন সময় র্যাব কর্মকর্তার মুখে `ফায়ার’ শুনে সুবোধ বালকের মতো হাঁটু গেড়ে মাটিতে বসেন সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই। সঙ্গে সঙ্গে পাঁচজন র্যাব সদস্য তাঁকে কবজা করে ফেলেন।
এ সময় ঘটে এক মজার ঘটনা। বাংলা ভাইকে হ্যান্ডকাফ পরানো দরকার। কিন্তু হ্যান্ডকাফ পাওয়া যাচ্ছে না। যাঁর কাছে হ্যান্ডকাফ ছিল, তিনি গেছেন দৌড়ে পালানো লোকটার পিছে। পরে পাশের ঘর থেকে একটা ছেঁড়া শাড়ি জোগাড় করে এনে বাংলা ভাইয়ের হাত বাঁধা হয়। ঠিক তখনই পুরো ঘরটা দপ করে জ্বলে ওঠে।
বিস্ফোরণে আহত বাংলা ভাই কাতরাচ্ছেন আর শায়খ রহমানের নাম ধরে গালিগালাজ করছেন। র্যাবের একজন তাঁর কাছে যেতেই বাংলা ভাই বলেন, ‘ভাই, আমার স্ত্রীর পর্দা যেন ঠিক থাকে।’
র্যাবের দুজন সদস্য বাংলা ভাইকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন রিকশাভ্যানের ওপরে, কিন্তু এত ওজনের বাংলা ভাইকে দুজনে মিলে টেনে তোলা যায়? তাঁকে টেনে তুলতে ছয়-ছয়জন র্যাব সদস্যও হিমশিম খাচ্ছিলেন।
২০০৭ সালের ২৯ মার্চ দিবাগত রাতে অন্য পাঁচ জঙ্গির সঙ্গে বাংলা ভাইয়ের ফাঁসি কার্যকর হয়; ময়মনসিংহের কারাগারেই।
আরও পড়ুন

ভোর হয়ে আসছে। নীরব চারদিক। ময়মনসিংহ শহরের চোখে ভোররাতের আদুরে ঘুম। এ রকম নীরবতা ভেঙে ঝড়ের গতিতে ছুটে চলেছে আটটি গাড়ির বহর। আকুয়াপাড়ার আঁকাবাঁকা পথ ধরে গাড়িগুলো এসে থেমে গেল শেষ মাথায়। ধূসর রঙের চারতলা সিকান্দার ভিলার সামনে।
কালো উর্দি পরা একজন গাড়ি থেকে নেমে এদিক-ওদিক তাকালেন। এরপর ডান হাত তুলে সঙ্গীদের ইশারা দিলেন। খুলে গেল আট গাড়ির দরজা। নেমে পড়লেন আরও ৪০ জন। ভারী বুটের আওয়াজে মাটি কেঁপে উঠল। দলের নেতাও কালো উর্দি পরা। কাঁধে লে. কর্নেলের ব্যাজ। বুকে নামফলকের জায়গাটা খালি। এক মিনিটেরও কম সময়। ততক্ষণে চারতলা ভবনের চারদিক নজরবন্দী। আশপাশের বাড়ির ছাদে উঠে পড়লেন কেউ কেউ। কয়েকজন দরজার সামনে।
নিচতলায় কলাপসিবল গেটে বড় তালা ঝুলছে। পাশে চারতলার চারটি কলবেল। কোনো কিছু না ভেবে একটি বেলে চাপ দিতেই পাখির কিচিরমিচির শব্দ। তৃতীয় তলা থেকে বারান্দায় এসে উঁকি দিল এক কিশোর, ঘুম জড়ানো চোখে জিজ্ঞেস করল, কে?
সকালের ঘুম ভাঙার বিরক্তি নিয়ে বারান্দায় আসা কিশোর উঁকি দিয়েই থমকে গেল। নিচের মানুষগুলোর দিকে তাকিয়ে উত্তরের অপেক্ষা করে না, নিচে নেমে এল।
একজন মেজর জানতে চাইলেন–এ বাড়িতে একটি শিশুর জন্ম হয়েছে?
কিশোরের ভয়ার্ত চোখ, মাথা নাড়িয়ে বলল, হ্যাঁ।
সে কোথায়? জানতে চাইলেন মেজর।
নিচতলার ভাড়াটের ঘর দেখিয়ে দিল কিশোর। মেজর সামনে দাঁড়ানো লে. কর্নেলের দিকে তাকালেন, মনে হলো শিকার মিলেছে। আর দেরি করার সময় নেই। একজন নিচের তলার দরজায় ঘা দিলেন। দুবার ঘা দিতেই ক্যাচক্যাচ শব্দে কে যেন দরজা খুলে দিলেন।
ঘরে মশারির ভেতরে বোরকা পরা দুই নারী। একজন বসে, আরেকজন শুয়ে। মনে হলো বসে থাকা নারী দরজা খুলে দিয়ে আবার বিছানায় উঠে বসেছেন। নিজের ঘরের বিছানায় বোরকা পরে শুয়ে থাকা দেখে কর্মকর্তারা হতবাক।
এক নারীকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি কি বাংলা ভাইয়ের স্ত্রী?’
নারী চমকে উঠে বললেন, ‘এ নামে তো কাউকে চিনি না।’
আপনার স্বামী কোথায়? প্রশ্ন করতেই ত্বরিত জবাব, ‘বিদেশে।’
পাশে আরেকটি ঘর, শুয়ে আছেন এক যুবক। তাকে টেনে তুলে আচমকা জিজ্ঞেস করা হলো, ‘এই, এখানে তোর বউ কোনটি?’
যুবক থতমত খেয়ে এক নারীকে দেখিয়ে বলল, ‘এইটা আমার বউ।’
কর্মকর্তার প্রশ্ন, ‘তাহলে ওই নারী কে?’
যুবক জড়ানো কণ্ঠে বলল, ‘উনি বাংলা ভাইয়ের স্ত্রী।’
এবার বল, বাংলা ভাই কোথায়? জানতে চান কর্মকর্তা। নারী বলেন, আমি জানি না। কর্মকর্তারা চাপ সৃষ্টি করতেই বলেন, মুক্তাগাছায় আছেন। মুক্তাগাছার কোথায় জানতে চাইলে জবাব আসে, ‘সেটা জানি না, কোনো দিন যাইনি।’
কর্মকর্তারা এবার সরাসরি যুবককে বলে বসেন, ‘এই, তুই জানিস। চল আমাদের সঙ্গে।’ যুবক উপায়ান্তর না দেখে হ্যাঁ–সূচক মাথা নেড়ে নিচে নেমে আসে।
যে দলটি এই অভিযান চালাচ্ছে, তাদের নেতা লে. কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদ। দলের বাকি সদস্যরা র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের সদস্য। এঁদের হাতে আছে ভারী অস্ত্র আর বুলেটরোধী পোশাক। কারও মুখে কোনো রা নেই। সবাই শুধু দলনেতার আদেশ ফলো করছেন।
গাড়িগুলো আবার ছুটতে শুরু করল। ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল হাইওয়ে ধরে পশ্চিমে, মুক্তাগাছার দিকে।
২০০৬ সালের ৬ মার্চের সকাল। জেএমবি নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাইয়ের স্ত্রী ফাহিমা এবং তাঁকে শনাক্তকারী সেই যুবককে নিয়ে সকাল সোয়া ৬টায় শুরু হয় র্যাবের ‘অপারেশন মুক্তাগাছা’। মুক্তাগাছা থানা থেকে আট কিলোমিটার পশ্চিমে যাওয়ার পর শেষ হয়ে গেল পাকা রাস্তা। গাড়ি আর চলে না। এবার শুধু পায়ে হাঁটা।
সারা দেশে তখন জেএমবির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ব্র্যাক ও গ্রামীণ ব্যাংকে ডাকাতি করছে জেএমবি। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৬টি হামলায় ৭৩ জন নিহত আর প্রায় ৮০০ লোক আহত হয়েছে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। দেশ-বিদেশের চাপের মুখে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার জেএমবিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। জঙ্গি নির্মূলের দায়িত্ব নিয়ে মাঠে নেমেছেন লে. কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদ। এর চার দিন আগে ২০০৬ সালের ২ মার্চ সিলেট থেকে আবদুর রহমানকে ধরতে ৩৩ ঘণ্টার এক শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান হয়েছে।
সব জিজ্ঞাসাবাদেই আবদুর রহমানের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে বাংলাভাই কোথায়? কিন্তু শায়খ রহমান মুখ খুলতে নারাজ। ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ভেঙে পড়েন শায়খ রহমান। রাত পৌনে ১টার দিকে তিনি জানান, বাংলা ভাই ময়মনসিংহে অবস্থান করলেও তিনি তাঁর ঠিকানা জানেন না। ঠিকানা জানে রিমন। রিমন তাঁকে ময়মনসিংহে বাংলা ভাইয়ের আস্তানায় নিয়ে যেত। আমানুল্লাহ রিমন হলো কলেজছাত্র।
‘রিমন কোথায়?’
শায়খ বললেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য সিলেটে গেছে। দক্ষিণ সুরমার একটি বাড়িতে আছে। রাতেই সে খবর সিলেটে র্যাব-৯কে জানানো হয়। অধিনায়ক তখন সিলেটে নেই। মেজর শিব্বির রাত সোয়া ২টায় রিমনকে আটক করেন।
সিলেটে রিমনকে জেরা চলছে আর ঢাকা থেকে ময়মনসিংহে রওনা হয়ে গেছেন র্যাবের কর্মকর্তারা। গুলজার উদ্দিন ছাড়াও দলে আছেন কমান্ডার মাসুক হাসান আহমেদ, মেজর জাভেদ, মেজর কোরবান, মেজর আতিক, মেজর ওয়াছি, ক্যাপ্টেন তানভিরসহ ১৫-২০ জন কর্মকর্তা। সঙ্গে নেওয়া হয়েছে সিলেটে শায়খ রহমানের সঙ্গে গ্রেপ্তার করা জঙ্গি হানিফকে।
সিলেটে রিমনকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে আকুয়াপাড়ার উজ্জ্বল ভিলায় বাংলা ভাই আছেন বলে জানায়। আরও নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের পর সিকান্দার ভিলার নাম বলে। রিমন জানায়, ওই বাসায় কিছুদিন আগে একটি শিশুর জন্ম হয়েছে। সেই সূত্রই ছিল ‘অপারেশন মুক্তাগাছা’র সবচেয়ে বড় ক্লু।
জঙ্গিবিরোধী প্রতিটি অভিযানেই র্যাবের কর্মকর্তাদের অনুসরণ করেছি ছায়ার মতো। চাঞ্চল্যকর গোয়েন্দাকাহিনির মতোই সেই সব অভিযানের পরতে পরতে ছিল উত্তেজনায় ঠাসা। এসব অভিযানে কর্মকর্তারা যে সাহস দেখাতেন, তা ছিল শিউরে ওঠার মতো। এখনো মনে পড়লে গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে।
মুক্তাগাছার রামপুর গ্রামে পৌঁছানোর আগে র্যাব সদস্যরা ৯টি দলে ভাগ হয়ে যান। একটি দল বাংলা ভাইয়ের স্ত্রী–পুত্র ও সেই লোকটির পাহারার দায়িত্ব নেয়। এরপর তাঁরা সবাই প্রায় পাঁচ কিলোমিটার মেঠো পথে হেঁটে চলে আসেন সেই বাড়ির সামনে, যেখানে বাংলা ভাই আছেন বলে জানিয়েছিল সেই যুবক।
বাংলা ভাইয়ের বউ–ছেলেকে পাশের বাড়িতে বসিয়ে রাখা হয়। র্যাব কর্মকর্তারা তখন চারদিক থেকে বাড়িটি ঘেরাও করে ফেলেন। লে. কর্নেল গুলজার হুংকার দিয়ে বলেন, ‘বাংলা, তোর দিন শেষ। তুই বেরিয়ে আয়।’ হঠাৎ বাড়ির ভেতর থেকে দাড়িওয়ালা এক লোক বেরিয়ে দৌড়াতে থাকে। তাকে বাংলা ভাই ভেবে ধাওয়া করেন কয়েকজন। বাড়ির সামনে র্যাব কর্মকর্তারা ভেতরে ঢুকবেন কি না, ইতস্তত করছেন। আশপাশে কেউ নেই। সব ঘরের দরজা বন্ধ।
এগিয়ে এলেন সার্জেন্ট রফিক। সজোরে দরজায় লাথি মারলেন। দরজা খুলে গেল। সার্জেন্ট রফিক ভেতরে মুখ বাড়াতেই লাঠির বাড়ি এসে পড়ল তাঁর মাথায়। হাতের পিস্তলটি পড়ে গেল। ভেতরে একটি গুলির শব্দ। সবার সন্দেহ, বাংলা ভাই ভেতরেই আছেন। গুলজার আবার চিৎকার দিলেন, ‘বাংলা, তুই আমার ফোর্সের গায়ে হাত তুলেছিস। তোকে আমি খুন করে ফেলব।’
হঠাৎ ঘরের ভেতরে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ। পুরো বাড়ি আগুনে জ্বলে উঠল। ঘরের ভেতর থেকে এক লোক বের হয়ে আসতেই কনস্টেবল সাত্তার চিৎকার করে উঠলেন—স্যার, বাংলা ভাই।
ঘরের এক দিকে কর্নেল গুলজার, আরেক দিকে কমান্ডার মাশুক। মাঝখানে মেজর কোরবান আর ক্যাপ্টেন তানভির। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে ঘরের ভেতর থেকে একটি ক্ষতবিক্ষত দেহ ছিটকে বাইরে এল। সে মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে। বাংলা ভাই তখনো ঘরের ভেতরে। তাঁর সাড়া নেই। হঠাৎ গায়ে কম্বল জড়িয়ে দরজার সামনে এলেন বিশালদেহী দাড়িওয়ালা লোক। তাঁকে দেখে কারও চিনতে বাকি থাকে না—বাংলা ভাই।
এতক্ষণে কেউ খেয়াল করেনি, সার্জেন্ট রফিক যে পিস্তলটি ফেলে এসেছেন, সেটা পড়ে আছে বাংলা ভাইয়ের পায়ের কাছে। গুলিভর্তি নাইন এমএম পিস্তল। বাংলা ভাইয়ের হাত খালি। তাঁর নিজের অস্ত্রটিও হাতে নেই।
র্যাবের হুংকারে কাজ হলো। বাংলা ভাই বলেন, ‘আল্লার দোহাই, আমাকে কিছু করবেন না।’
আবার হুংকার—`কথা কম, বেরিয়ে আয়।’
সারা মুখে ছাই মাখা অবস্থায় গায়ে কম্বল জড়িয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন বাংলা ভাই, দুই হাত মাথার ওপরে তুলে। র্যাব কর্মকর্তারা কম্বল খুলে হাঁটু গেড়ে বসতে বলেন, কিন্তু বাংলা ভাই অনড়, এভাবে বসবেনই না। এমন সময় র্যাব কর্মকর্তার মুখে `ফায়ার’ শুনে সুবোধ বালকের মতো হাঁটু গেড়ে মাটিতে বসেন সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই। সঙ্গে সঙ্গে পাঁচজন র্যাব সদস্য তাঁকে কবজা করে ফেলেন।
এ সময় ঘটে এক মজার ঘটনা। বাংলা ভাইকে হ্যান্ডকাফ পরানো দরকার। কিন্তু হ্যান্ডকাফ পাওয়া যাচ্ছে না। যাঁর কাছে হ্যান্ডকাফ ছিল, তিনি গেছেন দৌড়ে পালানো লোকটার পিছে। পরে পাশের ঘর থেকে একটা ছেঁড়া শাড়ি জোগাড় করে এনে বাংলা ভাইয়ের হাত বাঁধা হয়। ঠিক তখনই পুরো ঘরটা দপ করে জ্বলে ওঠে।
বিস্ফোরণে আহত বাংলা ভাই কাতরাচ্ছেন আর শায়খ রহমানের নাম ধরে গালিগালাজ করছেন। র্যাবের একজন তাঁর কাছে যেতেই বাংলা ভাই বলেন, ‘ভাই, আমার স্ত্রীর পর্দা যেন ঠিক থাকে।’
র্যাবের দুজন সদস্য বাংলা ভাইকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন রিকশাভ্যানের ওপরে, কিন্তু এত ওজনের বাংলা ভাইকে দুজনে মিলে টেনে তোলা যায়? তাঁকে টেনে তুলতে ছয়-ছয়জন র্যাব সদস্যও হিমশিম খাচ্ছিলেন।
২০০৭ সালের ২৯ মার্চ দিবাগত রাতে অন্য পাঁচ জঙ্গির সঙ্গে বাংলা ভাইয়ের ফাঁসি কার্যকর হয়; ময়মনসিংহের কারাগারেই।
আরও পড়ুন
কামরুল হাসান

ভোর হয়ে আসছে। নীরব চারদিক। ময়মনসিংহ শহরের চোখে ভোররাতের আদুরে ঘুম। এ রকম নীরবতা ভেঙে ঝড়ের গতিতে ছুটে চলেছে আটটি গাড়ির বহর। আকুয়াপাড়ার আঁকাবাঁকা পথ ধরে গাড়িগুলো এসে থেমে গেল শেষ মাথায়। ধূসর রঙের চারতলা সিকান্দার ভিলার সামনে।
কালো উর্দি পরা একজন গাড়ি থেকে নেমে এদিক-ওদিক তাকালেন। এরপর ডান হাত তুলে সঙ্গীদের ইশারা দিলেন। খুলে গেল আট গাড়ির দরজা। নেমে পড়লেন আরও ৪০ জন। ভারী বুটের আওয়াজে মাটি কেঁপে উঠল। দলের নেতাও কালো উর্দি পরা। কাঁধে লে. কর্নেলের ব্যাজ। বুকে নামফলকের জায়গাটা খালি। এক মিনিটেরও কম সময়। ততক্ষণে চারতলা ভবনের চারদিক নজরবন্দী। আশপাশের বাড়ির ছাদে উঠে পড়লেন কেউ কেউ। কয়েকজন দরজার সামনে।
নিচতলায় কলাপসিবল গেটে বড় তালা ঝুলছে। পাশে চারতলার চারটি কলবেল। কোনো কিছু না ভেবে একটি বেলে চাপ দিতেই পাখির কিচিরমিচির শব্দ। তৃতীয় তলা থেকে বারান্দায় এসে উঁকি দিল এক কিশোর, ঘুম জড়ানো চোখে জিজ্ঞেস করল, কে?
সকালের ঘুম ভাঙার বিরক্তি নিয়ে বারান্দায় আসা কিশোর উঁকি দিয়েই থমকে গেল। নিচের মানুষগুলোর দিকে তাকিয়ে উত্তরের অপেক্ষা করে না, নিচে নেমে এল।
একজন মেজর জানতে চাইলেন–এ বাড়িতে একটি শিশুর জন্ম হয়েছে?
কিশোরের ভয়ার্ত চোখ, মাথা নাড়িয়ে বলল, হ্যাঁ।
সে কোথায়? জানতে চাইলেন মেজর।
নিচতলার ভাড়াটের ঘর দেখিয়ে দিল কিশোর। মেজর সামনে দাঁড়ানো লে. কর্নেলের দিকে তাকালেন, মনে হলো শিকার মিলেছে। আর দেরি করার সময় নেই। একজন নিচের তলার দরজায় ঘা দিলেন। দুবার ঘা দিতেই ক্যাচক্যাচ শব্দে কে যেন দরজা খুলে দিলেন।
ঘরে মশারির ভেতরে বোরকা পরা দুই নারী। একজন বসে, আরেকজন শুয়ে। মনে হলো বসে থাকা নারী দরজা খুলে দিয়ে আবার বিছানায় উঠে বসেছেন। নিজের ঘরের বিছানায় বোরকা পরে শুয়ে থাকা দেখে কর্মকর্তারা হতবাক।
এক নারীকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি কি বাংলা ভাইয়ের স্ত্রী?’
নারী চমকে উঠে বললেন, ‘এ নামে তো কাউকে চিনি না।’
আপনার স্বামী কোথায়? প্রশ্ন করতেই ত্বরিত জবাব, ‘বিদেশে।’
পাশে আরেকটি ঘর, শুয়ে আছেন এক যুবক। তাকে টেনে তুলে আচমকা জিজ্ঞেস করা হলো, ‘এই, এখানে তোর বউ কোনটি?’
যুবক থতমত খেয়ে এক নারীকে দেখিয়ে বলল, ‘এইটা আমার বউ।’
কর্মকর্তার প্রশ্ন, ‘তাহলে ওই নারী কে?’
যুবক জড়ানো কণ্ঠে বলল, ‘উনি বাংলা ভাইয়ের স্ত্রী।’
এবার বল, বাংলা ভাই কোথায়? জানতে চান কর্মকর্তা। নারী বলেন, আমি জানি না। কর্মকর্তারা চাপ সৃষ্টি করতেই বলেন, মুক্তাগাছায় আছেন। মুক্তাগাছার কোথায় জানতে চাইলে জবাব আসে, ‘সেটা জানি না, কোনো দিন যাইনি।’
কর্মকর্তারা এবার সরাসরি যুবককে বলে বসেন, ‘এই, তুই জানিস। চল আমাদের সঙ্গে।’ যুবক উপায়ান্তর না দেখে হ্যাঁ–সূচক মাথা নেড়ে নিচে নেমে আসে।
যে দলটি এই অভিযান চালাচ্ছে, তাদের নেতা লে. কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদ। দলের বাকি সদস্যরা র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের সদস্য। এঁদের হাতে আছে ভারী অস্ত্র আর বুলেটরোধী পোশাক। কারও মুখে কোনো রা নেই। সবাই শুধু দলনেতার আদেশ ফলো করছেন।
গাড়িগুলো আবার ছুটতে শুরু করল। ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল হাইওয়ে ধরে পশ্চিমে, মুক্তাগাছার দিকে।
২০০৬ সালের ৬ মার্চের সকাল। জেএমবি নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাইয়ের স্ত্রী ফাহিমা এবং তাঁকে শনাক্তকারী সেই যুবককে নিয়ে সকাল সোয়া ৬টায় শুরু হয় র্যাবের ‘অপারেশন মুক্তাগাছা’। মুক্তাগাছা থানা থেকে আট কিলোমিটার পশ্চিমে যাওয়ার পর শেষ হয়ে গেল পাকা রাস্তা। গাড়ি আর চলে না। এবার শুধু পায়ে হাঁটা।
সারা দেশে তখন জেএমবির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ব্র্যাক ও গ্রামীণ ব্যাংকে ডাকাতি করছে জেএমবি। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৬টি হামলায় ৭৩ জন নিহত আর প্রায় ৮০০ লোক আহত হয়েছে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। দেশ-বিদেশের চাপের মুখে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার জেএমবিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। জঙ্গি নির্মূলের দায়িত্ব নিয়ে মাঠে নেমেছেন লে. কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদ। এর চার দিন আগে ২০০৬ সালের ২ মার্চ সিলেট থেকে আবদুর রহমানকে ধরতে ৩৩ ঘণ্টার এক শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান হয়েছে।
সব জিজ্ঞাসাবাদেই আবদুর রহমানের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে বাংলাভাই কোথায়? কিন্তু শায়খ রহমান মুখ খুলতে নারাজ। ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ভেঙে পড়েন শায়খ রহমান। রাত পৌনে ১টার দিকে তিনি জানান, বাংলা ভাই ময়মনসিংহে অবস্থান করলেও তিনি তাঁর ঠিকানা জানেন না। ঠিকানা জানে রিমন। রিমন তাঁকে ময়মনসিংহে বাংলা ভাইয়ের আস্তানায় নিয়ে যেত। আমানুল্লাহ রিমন হলো কলেজছাত্র।
‘রিমন কোথায়?’
শায়খ বললেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য সিলেটে গেছে। দক্ষিণ সুরমার একটি বাড়িতে আছে। রাতেই সে খবর সিলেটে র্যাব-৯কে জানানো হয়। অধিনায়ক তখন সিলেটে নেই। মেজর শিব্বির রাত সোয়া ২টায় রিমনকে আটক করেন।
সিলেটে রিমনকে জেরা চলছে আর ঢাকা থেকে ময়মনসিংহে রওনা হয়ে গেছেন র্যাবের কর্মকর্তারা। গুলজার উদ্দিন ছাড়াও দলে আছেন কমান্ডার মাসুক হাসান আহমেদ, মেজর জাভেদ, মেজর কোরবান, মেজর আতিক, মেজর ওয়াছি, ক্যাপ্টেন তানভিরসহ ১৫-২০ জন কর্মকর্তা। সঙ্গে নেওয়া হয়েছে সিলেটে শায়খ রহমানের সঙ্গে গ্রেপ্তার করা জঙ্গি হানিফকে।
সিলেটে রিমনকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে আকুয়াপাড়ার উজ্জ্বল ভিলায় বাংলা ভাই আছেন বলে জানায়। আরও নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের পর সিকান্দার ভিলার নাম বলে। রিমন জানায়, ওই বাসায় কিছুদিন আগে একটি শিশুর জন্ম হয়েছে। সেই সূত্রই ছিল ‘অপারেশন মুক্তাগাছা’র সবচেয়ে বড় ক্লু।
জঙ্গিবিরোধী প্রতিটি অভিযানেই র্যাবের কর্মকর্তাদের অনুসরণ করেছি ছায়ার মতো। চাঞ্চল্যকর গোয়েন্দাকাহিনির মতোই সেই সব অভিযানের পরতে পরতে ছিল উত্তেজনায় ঠাসা। এসব অভিযানে কর্মকর্তারা যে সাহস দেখাতেন, তা ছিল শিউরে ওঠার মতো। এখনো মনে পড়লে গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে।
মুক্তাগাছার রামপুর গ্রামে পৌঁছানোর আগে র্যাব সদস্যরা ৯টি দলে ভাগ হয়ে যান। একটি দল বাংলা ভাইয়ের স্ত্রী–পুত্র ও সেই লোকটির পাহারার দায়িত্ব নেয়। এরপর তাঁরা সবাই প্রায় পাঁচ কিলোমিটার মেঠো পথে হেঁটে চলে আসেন সেই বাড়ির সামনে, যেখানে বাংলা ভাই আছেন বলে জানিয়েছিল সেই যুবক।
বাংলা ভাইয়ের বউ–ছেলেকে পাশের বাড়িতে বসিয়ে রাখা হয়। র্যাব কর্মকর্তারা তখন চারদিক থেকে বাড়িটি ঘেরাও করে ফেলেন। লে. কর্নেল গুলজার হুংকার দিয়ে বলেন, ‘বাংলা, তোর দিন শেষ। তুই বেরিয়ে আয়।’ হঠাৎ বাড়ির ভেতর থেকে দাড়িওয়ালা এক লোক বেরিয়ে দৌড়াতে থাকে। তাকে বাংলা ভাই ভেবে ধাওয়া করেন কয়েকজন। বাড়ির সামনে র্যাব কর্মকর্তারা ভেতরে ঢুকবেন কি না, ইতস্তত করছেন। আশপাশে কেউ নেই। সব ঘরের দরজা বন্ধ।
এগিয়ে এলেন সার্জেন্ট রফিক। সজোরে দরজায় লাথি মারলেন। দরজা খুলে গেল। সার্জেন্ট রফিক ভেতরে মুখ বাড়াতেই লাঠির বাড়ি এসে পড়ল তাঁর মাথায়। হাতের পিস্তলটি পড়ে গেল। ভেতরে একটি গুলির শব্দ। সবার সন্দেহ, বাংলা ভাই ভেতরেই আছেন। গুলজার আবার চিৎকার দিলেন, ‘বাংলা, তুই আমার ফোর্সের গায়ে হাত তুলেছিস। তোকে আমি খুন করে ফেলব।’
হঠাৎ ঘরের ভেতরে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ। পুরো বাড়ি আগুনে জ্বলে উঠল। ঘরের ভেতর থেকে এক লোক বের হয়ে আসতেই কনস্টেবল সাত্তার চিৎকার করে উঠলেন—স্যার, বাংলা ভাই।
ঘরের এক দিকে কর্নেল গুলজার, আরেক দিকে কমান্ডার মাশুক। মাঝখানে মেজর কোরবান আর ক্যাপ্টেন তানভির। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে ঘরের ভেতর থেকে একটি ক্ষতবিক্ষত দেহ ছিটকে বাইরে এল। সে মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে। বাংলা ভাই তখনো ঘরের ভেতরে। তাঁর সাড়া নেই। হঠাৎ গায়ে কম্বল জড়িয়ে দরজার সামনে এলেন বিশালদেহী দাড়িওয়ালা লোক। তাঁকে দেখে কারও চিনতে বাকি থাকে না—বাংলা ভাই।
এতক্ষণে কেউ খেয়াল করেনি, সার্জেন্ট রফিক যে পিস্তলটি ফেলে এসেছেন, সেটা পড়ে আছে বাংলা ভাইয়ের পায়ের কাছে। গুলিভর্তি নাইন এমএম পিস্তল। বাংলা ভাইয়ের হাত খালি। তাঁর নিজের অস্ত্রটিও হাতে নেই।
র্যাবের হুংকারে কাজ হলো। বাংলা ভাই বলেন, ‘আল্লার দোহাই, আমাকে কিছু করবেন না।’
আবার হুংকার—`কথা কম, বেরিয়ে আয়।’
সারা মুখে ছাই মাখা অবস্থায় গায়ে কম্বল জড়িয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন বাংলা ভাই, দুই হাত মাথার ওপরে তুলে। র্যাব কর্মকর্তারা কম্বল খুলে হাঁটু গেড়ে বসতে বলেন, কিন্তু বাংলা ভাই অনড়, এভাবে বসবেনই না। এমন সময় র্যাব কর্মকর্তার মুখে `ফায়ার’ শুনে সুবোধ বালকের মতো হাঁটু গেড়ে মাটিতে বসেন সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই। সঙ্গে সঙ্গে পাঁচজন র্যাব সদস্য তাঁকে কবজা করে ফেলেন।
এ সময় ঘটে এক মজার ঘটনা। বাংলা ভাইকে হ্যান্ডকাফ পরানো দরকার। কিন্তু হ্যান্ডকাফ পাওয়া যাচ্ছে না। যাঁর কাছে হ্যান্ডকাফ ছিল, তিনি গেছেন দৌড়ে পালানো লোকটার পিছে। পরে পাশের ঘর থেকে একটা ছেঁড়া শাড়ি জোগাড় করে এনে বাংলা ভাইয়ের হাত বাঁধা হয়। ঠিক তখনই পুরো ঘরটা দপ করে জ্বলে ওঠে।
বিস্ফোরণে আহত বাংলা ভাই কাতরাচ্ছেন আর শায়খ রহমানের নাম ধরে গালিগালাজ করছেন। র্যাবের একজন তাঁর কাছে যেতেই বাংলা ভাই বলেন, ‘ভাই, আমার স্ত্রীর পর্দা যেন ঠিক থাকে।’
র্যাবের দুজন সদস্য বাংলা ভাইকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন রিকশাভ্যানের ওপরে, কিন্তু এত ওজনের বাংলা ভাইকে দুজনে মিলে টেনে তোলা যায়? তাঁকে টেনে তুলতে ছয়-ছয়জন র্যাব সদস্যও হিমশিম খাচ্ছিলেন।
২০০৭ সালের ২৯ মার্চ দিবাগত রাতে অন্য পাঁচ জঙ্গির সঙ্গে বাংলা ভাইয়ের ফাঁসি কার্যকর হয়; ময়মনসিংহের কারাগারেই।
আরও পড়ুন

ভোর হয়ে আসছে। নীরব চারদিক। ময়মনসিংহ শহরের চোখে ভোররাতের আদুরে ঘুম। এ রকম নীরবতা ভেঙে ঝড়ের গতিতে ছুটে চলেছে আটটি গাড়ির বহর। আকুয়াপাড়ার আঁকাবাঁকা পথ ধরে গাড়িগুলো এসে থেমে গেল শেষ মাথায়। ধূসর রঙের চারতলা সিকান্দার ভিলার সামনে।
কালো উর্দি পরা একজন গাড়ি থেকে নেমে এদিক-ওদিক তাকালেন। এরপর ডান হাত তুলে সঙ্গীদের ইশারা দিলেন। খুলে গেল আট গাড়ির দরজা। নেমে পড়লেন আরও ৪০ জন। ভারী বুটের আওয়াজে মাটি কেঁপে উঠল। দলের নেতাও কালো উর্দি পরা। কাঁধে লে. কর্নেলের ব্যাজ। বুকে নামফলকের জায়গাটা খালি। এক মিনিটেরও কম সময়। ততক্ষণে চারতলা ভবনের চারদিক নজরবন্দী। আশপাশের বাড়ির ছাদে উঠে পড়লেন কেউ কেউ। কয়েকজন দরজার সামনে।
নিচতলায় কলাপসিবল গেটে বড় তালা ঝুলছে। পাশে চারতলার চারটি কলবেল। কোনো কিছু না ভেবে একটি বেলে চাপ দিতেই পাখির কিচিরমিচির শব্দ। তৃতীয় তলা থেকে বারান্দায় এসে উঁকি দিল এক কিশোর, ঘুম জড়ানো চোখে জিজ্ঞেস করল, কে?
সকালের ঘুম ভাঙার বিরক্তি নিয়ে বারান্দায় আসা কিশোর উঁকি দিয়েই থমকে গেল। নিচের মানুষগুলোর দিকে তাকিয়ে উত্তরের অপেক্ষা করে না, নিচে নেমে এল।
একজন মেজর জানতে চাইলেন–এ বাড়িতে একটি শিশুর জন্ম হয়েছে?
কিশোরের ভয়ার্ত চোখ, মাথা নাড়িয়ে বলল, হ্যাঁ।
সে কোথায়? জানতে চাইলেন মেজর।
নিচতলার ভাড়াটের ঘর দেখিয়ে দিল কিশোর। মেজর সামনে দাঁড়ানো লে. কর্নেলের দিকে তাকালেন, মনে হলো শিকার মিলেছে। আর দেরি করার সময় নেই। একজন নিচের তলার দরজায় ঘা দিলেন। দুবার ঘা দিতেই ক্যাচক্যাচ শব্দে কে যেন দরজা খুলে দিলেন।
ঘরে মশারির ভেতরে বোরকা পরা দুই নারী। একজন বসে, আরেকজন শুয়ে। মনে হলো বসে থাকা নারী দরজা খুলে দিয়ে আবার বিছানায় উঠে বসেছেন। নিজের ঘরের বিছানায় বোরকা পরে শুয়ে থাকা দেখে কর্মকর্তারা হতবাক।
এক নারীকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি কি বাংলা ভাইয়ের স্ত্রী?’
নারী চমকে উঠে বললেন, ‘এ নামে তো কাউকে চিনি না।’
আপনার স্বামী কোথায়? প্রশ্ন করতেই ত্বরিত জবাব, ‘বিদেশে।’
পাশে আরেকটি ঘর, শুয়ে আছেন এক যুবক। তাকে টেনে তুলে আচমকা জিজ্ঞেস করা হলো, ‘এই, এখানে তোর বউ কোনটি?’
যুবক থতমত খেয়ে এক নারীকে দেখিয়ে বলল, ‘এইটা আমার বউ।’
কর্মকর্তার প্রশ্ন, ‘তাহলে ওই নারী কে?’
যুবক জড়ানো কণ্ঠে বলল, ‘উনি বাংলা ভাইয়ের স্ত্রী।’
এবার বল, বাংলা ভাই কোথায়? জানতে চান কর্মকর্তা। নারী বলেন, আমি জানি না। কর্মকর্তারা চাপ সৃষ্টি করতেই বলেন, মুক্তাগাছায় আছেন। মুক্তাগাছার কোথায় জানতে চাইলে জবাব আসে, ‘সেটা জানি না, কোনো দিন যাইনি।’
কর্মকর্তারা এবার সরাসরি যুবককে বলে বসেন, ‘এই, তুই জানিস। চল আমাদের সঙ্গে।’ যুবক উপায়ান্তর না দেখে হ্যাঁ–সূচক মাথা নেড়ে নিচে নেমে আসে।
যে দলটি এই অভিযান চালাচ্ছে, তাদের নেতা লে. কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদ। দলের বাকি সদস্যরা র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের সদস্য। এঁদের হাতে আছে ভারী অস্ত্র আর বুলেটরোধী পোশাক। কারও মুখে কোনো রা নেই। সবাই শুধু দলনেতার আদেশ ফলো করছেন।
গাড়িগুলো আবার ছুটতে শুরু করল। ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল হাইওয়ে ধরে পশ্চিমে, মুক্তাগাছার দিকে।
২০০৬ সালের ৬ মার্চের সকাল। জেএমবি নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাইয়ের স্ত্রী ফাহিমা এবং তাঁকে শনাক্তকারী সেই যুবককে নিয়ে সকাল সোয়া ৬টায় শুরু হয় র্যাবের ‘অপারেশন মুক্তাগাছা’। মুক্তাগাছা থানা থেকে আট কিলোমিটার পশ্চিমে যাওয়ার পর শেষ হয়ে গেল পাকা রাস্তা। গাড়ি আর চলে না। এবার শুধু পায়ে হাঁটা।
সারা দেশে তখন জেএমবির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ব্র্যাক ও গ্রামীণ ব্যাংকে ডাকাতি করছে জেএমবি। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৬টি হামলায় ৭৩ জন নিহত আর প্রায় ৮০০ লোক আহত হয়েছে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। দেশ-বিদেশের চাপের মুখে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার জেএমবিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। জঙ্গি নির্মূলের দায়িত্ব নিয়ে মাঠে নেমেছেন লে. কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদ। এর চার দিন আগে ২০০৬ সালের ২ মার্চ সিলেট থেকে আবদুর রহমানকে ধরতে ৩৩ ঘণ্টার এক শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান হয়েছে।
সব জিজ্ঞাসাবাদেই আবদুর রহমানের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে বাংলাভাই কোথায়? কিন্তু শায়খ রহমান মুখ খুলতে নারাজ। ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ভেঙে পড়েন শায়খ রহমান। রাত পৌনে ১টার দিকে তিনি জানান, বাংলা ভাই ময়মনসিংহে অবস্থান করলেও তিনি তাঁর ঠিকানা জানেন না। ঠিকানা জানে রিমন। রিমন তাঁকে ময়মনসিংহে বাংলা ভাইয়ের আস্তানায় নিয়ে যেত। আমানুল্লাহ রিমন হলো কলেজছাত্র।
‘রিমন কোথায়?’
শায়খ বললেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য সিলেটে গেছে। দক্ষিণ সুরমার একটি বাড়িতে আছে। রাতেই সে খবর সিলেটে র্যাব-৯কে জানানো হয়। অধিনায়ক তখন সিলেটে নেই। মেজর শিব্বির রাত সোয়া ২টায় রিমনকে আটক করেন।
সিলেটে রিমনকে জেরা চলছে আর ঢাকা থেকে ময়মনসিংহে রওনা হয়ে গেছেন র্যাবের কর্মকর্তারা। গুলজার উদ্দিন ছাড়াও দলে আছেন কমান্ডার মাসুক হাসান আহমেদ, মেজর জাভেদ, মেজর কোরবান, মেজর আতিক, মেজর ওয়াছি, ক্যাপ্টেন তানভিরসহ ১৫-২০ জন কর্মকর্তা। সঙ্গে নেওয়া হয়েছে সিলেটে শায়খ রহমানের সঙ্গে গ্রেপ্তার করা জঙ্গি হানিফকে।
সিলেটে রিমনকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে আকুয়াপাড়ার উজ্জ্বল ভিলায় বাংলা ভাই আছেন বলে জানায়। আরও নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের পর সিকান্দার ভিলার নাম বলে। রিমন জানায়, ওই বাসায় কিছুদিন আগে একটি শিশুর জন্ম হয়েছে। সেই সূত্রই ছিল ‘অপারেশন মুক্তাগাছা’র সবচেয়ে বড় ক্লু।
জঙ্গিবিরোধী প্রতিটি অভিযানেই র্যাবের কর্মকর্তাদের অনুসরণ করেছি ছায়ার মতো। চাঞ্চল্যকর গোয়েন্দাকাহিনির মতোই সেই সব অভিযানের পরতে পরতে ছিল উত্তেজনায় ঠাসা। এসব অভিযানে কর্মকর্তারা যে সাহস দেখাতেন, তা ছিল শিউরে ওঠার মতো। এখনো মনে পড়লে গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে।
মুক্তাগাছার রামপুর গ্রামে পৌঁছানোর আগে র্যাব সদস্যরা ৯টি দলে ভাগ হয়ে যান। একটি দল বাংলা ভাইয়ের স্ত্রী–পুত্র ও সেই লোকটির পাহারার দায়িত্ব নেয়। এরপর তাঁরা সবাই প্রায় পাঁচ কিলোমিটার মেঠো পথে হেঁটে চলে আসেন সেই বাড়ির সামনে, যেখানে বাংলা ভাই আছেন বলে জানিয়েছিল সেই যুবক।
বাংলা ভাইয়ের বউ–ছেলেকে পাশের বাড়িতে বসিয়ে রাখা হয়। র্যাব কর্মকর্তারা তখন চারদিক থেকে বাড়িটি ঘেরাও করে ফেলেন। লে. কর্নেল গুলজার হুংকার দিয়ে বলেন, ‘বাংলা, তোর দিন শেষ। তুই বেরিয়ে আয়।’ হঠাৎ বাড়ির ভেতর থেকে দাড়িওয়ালা এক লোক বেরিয়ে দৌড়াতে থাকে। তাকে বাংলা ভাই ভেবে ধাওয়া করেন কয়েকজন। বাড়ির সামনে র্যাব কর্মকর্তারা ভেতরে ঢুকবেন কি না, ইতস্তত করছেন। আশপাশে কেউ নেই। সব ঘরের দরজা বন্ধ।
এগিয়ে এলেন সার্জেন্ট রফিক। সজোরে দরজায় লাথি মারলেন। দরজা খুলে গেল। সার্জেন্ট রফিক ভেতরে মুখ বাড়াতেই লাঠির বাড়ি এসে পড়ল তাঁর মাথায়। হাতের পিস্তলটি পড়ে গেল। ভেতরে একটি গুলির শব্দ। সবার সন্দেহ, বাংলা ভাই ভেতরেই আছেন। গুলজার আবার চিৎকার দিলেন, ‘বাংলা, তুই আমার ফোর্সের গায়ে হাত তুলেছিস। তোকে আমি খুন করে ফেলব।’
হঠাৎ ঘরের ভেতরে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ। পুরো বাড়ি আগুনে জ্বলে উঠল। ঘরের ভেতর থেকে এক লোক বের হয়ে আসতেই কনস্টেবল সাত্তার চিৎকার করে উঠলেন—স্যার, বাংলা ভাই।
ঘরের এক দিকে কর্নেল গুলজার, আরেক দিকে কমান্ডার মাশুক। মাঝখানে মেজর কোরবান আর ক্যাপ্টেন তানভির। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে ঘরের ভেতর থেকে একটি ক্ষতবিক্ষত দেহ ছিটকে বাইরে এল। সে মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে। বাংলা ভাই তখনো ঘরের ভেতরে। তাঁর সাড়া নেই। হঠাৎ গায়ে কম্বল জড়িয়ে দরজার সামনে এলেন বিশালদেহী দাড়িওয়ালা লোক। তাঁকে দেখে কারও চিনতে বাকি থাকে না—বাংলা ভাই।
এতক্ষণে কেউ খেয়াল করেনি, সার্জেন্ট রফিক যে পিস্তলটি ফেলে এসেছেন, সেটা পড়ে আছে বাংলা ভাইয়ের পায়ের কাছে। গুলিভর্তি নাইন এমএম পিস্তল। বাংলা ভাইয়ের হাত খালি। তাঁর নিজের অস্ত্রটিও হাতে নেই।
র্যাবের হুংকারে কাজ হলো। বাংলা ভাই বলেন, ‘আল্লার দোহাই, আমাকে কিছু করবেন না।’
আবার হুংকার—`কথা কম, বেরিয়ে আয়।’
সারা মুখে ছাই মাখা অবস্থায় গায়ে কম্বল জড়িয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন বাংলা ভাই, দুই হাত মাথার ওপরে তুলে। র্যাব কর্মকর্তারা কম্বল খুলে হাঁটু গেড়ে বসতে বলেন, কিন্তু বাংলা ভাই অনড়, এভাবে বসবেনই না। এমন সময় র্যাব কর্মকর্তার মুখে `ফায়ার’ শুনে সুবোধ বালকের মতো হাঁটু গেড়ে মাটিতে বসেন সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই। সঙ্গে সঙ্গে পাঁচজন র্যাব সদস্য তাঁকে কবজা করে ফেলেন।
এ সময় ঘটে এক মজার ঘটনা। বাংলা ভাইকে হ্যান্ডকাফ পরানো দরকার। কিন্তু হ্যান্ডকাফ পাওয়া যাচ্ছে না। যাঁর কাছে হ্যান্ডকাফ ছিল, তিনি গেছেন দৌড়ে পালানো লোকটার পিছে। পরে পাশের ঘর থেকে একটা ছেঁড়া শাড়ি জোগাড় করে এনে বাংলা ভাইয়ের হাত বাঁধা হয়। ঠিক তখনই পুরো ঘরটা দপ করে জ্বলে ওঠে।
বিস্ফোরণে আহত বাংলা ভাই কাতরাচ্ছেন আর শায়খ রহমানের নাম ধরে গালিগালাজ করছেন। র্যাবের একজন তাঁর কাছে যেতেই বাংলা ভাই বলেন, ‘ভাই, আমার স্ত্রীর পর্দা যেন ঠিক থাকে।’
র্যাবের দুজন সদস্য বাংলা ভাইকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন রিকশাভ্যানের ওপরে, কিন্তু এত ওজনের বাংলা ভাইকে দুজনে মিলে টেনে তোলা যায়? তাঁকে টেনে তুলতে ছয়-ছয়জন র্যাব সদস্যও হিমশিম খাচ্ছিলেন।
২০০৭ সালের ২৯ মার্চ দিবাগত রাতে অন্য পাঁচ জঙ্গির সঙ্গে বাংলা ভাইয়ের ফাঁসি কার্যকর হয়; ময়মনসিংহের কারাগারেই।
আরও পড়ুন

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

ভোর হয়ে আসছে। নীরব চারদিক। ময়মনসিংহ শহরের চোখে ভোররাতের আদুরে ঘুম। এ রকম নীরবতা ভেঙে ঝড়ের গতিতে ছুটে চলেছে আটটি গাড়ির বহর। আকুয়াপাড়ার আঁকাবাঁকা পথ ধরে গাড়িগুলো এসে থেমে গেল শেষ মাথায়।
২৪ জুলাই ২০২১
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

ভোর হয়ে আসছে। নীরব চারদিক। ময়মনসিংহ শহরের চোখে ভোররাতের আদুরে ঘুম। এ রকম নীরবতা ভেঙে ঝড়ের গতিতে ছুটে চলেছে আটটি গাড়ির বহর। আকুয়াপাড়ার আঁকাবাঁকা পথ ধরে গাড়িগুলো এসে থেমে গেল শেষ মাথায়।
২৪ জুলাই ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

ভোর হয়ে আসছে। নীরব চারদিক। ময়মনসিংহ শহরের চোখে ভোররাতের আদুরে ঘুম। এ রকম নীরবতা ভেঙে ঝড়ের গতিতে ছুটে চলেছে আটটি গাড়ির বহর। আকুয়াপাড়ার আঁকাবাঁকা পথ ধরে গাড়িগুলো এসে থেমে গেল শেষ মাথায়।
২৪ জুলাই ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ভোর হয়ে আসছে। নীরব চারদিক। ময়মনসিংহ শহরের চোখে ভোররাতের আদুরে ঘুম। এ রকম নীরবতা ভেঙে ঝড়ের গতিতে ছুটে চলেছে আটটি গাড়ির বহর। আকুয়াপাড়ার আঁকাবাঁকা পথ ধরে গাড়িগুলো এসে থেমে গেল শেষ মাথায়।
২৪ জুলাই ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে