নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

‘পেগাসাস’ শব্দটি বললে এখন আর গ্রিক পুরাণের ডানাওয়ালা সেই ঘোড়ার ছবি মাথায় আসে না। আসে এক গোপন চোখ ও কানের ছবি। আজকাল বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ওপর রাষ্ট্রীয় নজরদারিতে ব্যবহার করা হচ্ছে পেগাসাস নামের এই স্পাইওয়্যার। ইসরায়েলের এনএসও গ্রুপের তৈরি এই গুপ্তচর সফটওয়্যার শুধু আড়ি পাতাতেই নয়, নির্দিষ্ট নম্বরের আওতাধীন স্মার্ট ডিভাইসের যাবতীয় তথ্য চলে যাচ্ছে রাষ্ট্রের উচ্চ মহলের হাতে। অনেকটা ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক জর্জ অরওয়েলের ‘নাইন্টিন এইটটি ফোরের’ মতো। গোপন বলে আপনার আর কিছুই নেই। নিমেষে সবই জেনে যাচ্ছেন ‘বিগব্রাদার’।
এখন প্রশ্ন আসতেই পারে, কোন কোন রাষ্ট্র এই স্পাইওয়্যার ব্যবহার করেছে? এই চেয়ে বরং বেশি প্রাসঙ্গিক, কে কে করছে না–সে প্রশ্নটি। আজকাল রাষ্ট্র, নিরাপত্তা আর নজরদারি যেন একসূত্রে গাঁথা। সেই নজরদারিকেই নতুন করে আলোচনায় এনেছে ‘পেগাসাস’।
পেগাসাসের এই গোপন কর্মটি এত দিন গোপনেই চলছিল। হঠাৎ করে সেটি সামনে এনে দিল প্যারিসভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা ফরবিডেন স্টোরিজ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তাদের যৌথ অনুসন্ধান চালিয়ে পেগাসাস প্রকল্পের আওতায় থাকা ৫০ হাজারের বেশি ফোন নম্বরে আড়ি পাতার খবর ফাঁস করেছিল। একযোগে সেই খবর প্রকাশ করে দিল ১৭টি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। এই অনুসন্ধানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘পেগাসাস প্রজেক্ট’।
অনুসন্ধানে বের হয়ে আসা ফোন নম্বরগুলোর মালিকের পরিচয় রীতিমতো গোটা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। এ তালিকায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ যেমন রয়েছেন, তেমনি আছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ভারতের বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে নির্বাচন কৌশুলী প্রশান্ত কিশোরসহ বহু সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী আছেন তালিকায়।
তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে তথ্যের নিরাপত্তা এখন এক বিরাট বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। হবে নাই-বা কেন? স্মার্ট ডিভাইস তো এখন হাতে হাতে। স্মার্টফোন না হলেও যোগাযোগের প্রয়োজনে মানুষ কোনো না কোনো ডিভাইস সঙ্গে রাখছেন। সেখানে থাকছে তার পরিচিতদের নম্বর, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর থেকে শুরু করে নানা তথ্য। ব্যক্তিগত মেসেজ বা অডিও-ভিডিও বা ছবির কথা না হয় বাদই গেল। মানুষের জীবনের এখন দুটি দিক—একটি চিরচেনা বাস্তব, অন্যটি ভার্চুয়াল। ফলে ভার্চুয়াল এই জগতের তথ্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পরাশক্তিগুলো একটি আরেকটির এই ভার্চুয়াল তথ্য হাতিয়ে নিতে কী না করছে? এ নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কিংবা চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টাপাল্টি দোষারোপ তো এখন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিটি ডিভাইস, সফটওয়্যার, ই–মেইল বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মের রয়েছে সুনির্দিষ্টভাবে ঘোষিত ব্যক্তিগত গোপনীয়তার নীতি। যেকোনো সচেতন গ্রাহক এই নীতিটি খুব সতর্কতার সঙ্গে পাঠ করেন। কিন্তু পেগাসাস-কাণ্ডের মধ্য দিয়ে দেখা যাচ্ছে, এই সতর্কতা কেবল নামেই, কোনো কাজে আসছে না।
কী এই পেগাসাস?
আগেই বলা হয়েছে, এটি একটি স্পাইওয়্যার। সোজা বাংলায় ভার্চুয়াল গুপ্তচর। বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ফোন, কম্পিউটার বা ট্যাবে ঢুকে তথ্য হাতিয়ে নেওয়াই এর কাজ। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, নিভ কারমি, শালেভ হুলিও ও ওমরি লাভিয়ে নামের তিন ইসরায়েলি ২০১০ সালে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন, যাদের অন্তত দুজন ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক সদস্য। তিনজনই নিজেদের নামের আদ্যক্ষর দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করেন এনএসও। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট অনুযায়ী, লাভিয়ে এবং হুলিও এখনো এনএসওর পরিচালনা পরিষদে আছেন। এই এনএসওই তৈরি করেছে স্পাইওয়্যার পেগাসাস।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের তথ্যমতে, ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান এনএসও গ্রুপ থেকে এই স্পাইওয়্যার কিনে নিজের দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ওপর নজরদারি চালিয়ে আসছে ‘কর্তৃত্ববাদী’ সরকারগুলো। এনএসও অন্তত ৫০টি দেশের সামরিক বাহিনী কিংবা গোয়েন্দা সংস্থার কাছে ‘পেগাসাস’ বিক্রি করেছে। এই তালিকায় এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো টেলিফোন নম্বর আছে কি না, তা স্পষ্ট করে জানা যায়নি। তবে আড়ি পাতার অভিযোগ উঠেছে ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে। দেশটিতে এটি এতটাই আলোড়ন তুলেছে যে, করোনা মোকাবিলার কর্মকৌশল নিয়ে অনুষ্ঠেয় বৈঠকও বর্জন করেছে বিরোধী দলগুলো।
২০১৬ সালের ২৫ আগস্ট ফোর্বসে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, লাভিয়ে ও হুলিও দুজনই ইসরায়েলের ‘ইউনিট ৮২০০ সিগনালস ইন্টেলিজেন্স আর্ম’-এর সাবেক সদস্য। ইউনিট ৮২০০ হচ্ছে ইসরায়েলের ‘ইন্টেলিজেন্স কোর’-এর একটি অংশ। সরাসরি ইসরায়েলি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ‘আইডিএফ ডাইরেক্টরেট অব মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সে’র অধীনে বিভাগটি কাজ করে।
নিভ কারমি, শালেভ হুলিও ও ওমরি লাভিয়ে বেশ ভালো প্রকল্পই হাতে নিয়েছেন বলা যায়। গোটা বিশ্বে এর বাজার যে বেশ ভালো—তা তো এখন আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, বাহরাইন, ভারত, মেক্সিকোসহ বহু দেশ এর ক্রেতা। দেশগুলোর সরকার তার নাগরিকদের দেওয়া করের অর্থ বিপুল পরিমাণে ঢালছে ওপর নজরদারির জন্য। ২০১৬ সালে দ্য গার্ডিয়ানে এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল। সে সময় এনএসও গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, যেকোনো দেশের বৈধ সরকারের কাছে সন্ত্রাস ও অপরাধ দমনে সহযোগিতার অংশ হিসেবে তারা এই প্রযুক্তি বিক্রি করে আসছে। কিন্তু ২০২১ সালে যে তালিকা সামনে এল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও ফরবিডেন স্টোরিজের মাধ্যমে, সেখানে মাদক ব্যবসায়ী, বৈধ সরকারের কর্তাব্যক্তি, মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক, বিরোধীপক্ষের নেতা, গণতান্ত্রিক পথে আন্দোলন করা নেতা, আইনজীবী—সবাইকে এক কাতারে দেখা গেল। ভারতে সেই সাংবাদিকদের নামই পাওয়া গেল তালিকায়, যারা নরেন্দ্র মোদি সরকারের কোনো প্রভাবশালী নেতার বা তাঁর আত্মীয় বা পরিবারের সদস্যদের করা দুর্নীতি নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করেছেন। এখনো ফাঁস হওয়া নম্বরগুলোর সব মালিকের খোঁজ জানা যায়নি। পুরোটা প্রকাশ হলে আর কার কার দিকে আঙুল উঠবে বলা কঠিন।
পেগাসাস সফটওয়্যারের দাম কত?
পেগাসাস সফটওয়্যারের দাম এই সময়ে কত, তা সুনির্দিষ্টভাবে বলা না গেলেও ২০১৬ সালে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে ধারণা পাওয়া যায়। এনএসও গ্রুপকে উদ্ধৃত করে নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, এই নজরদারি সফটওয়্যার অন্য যেকোনো সফটওয়্যারের চেয়ে ব্যয়বহুল। সফটওয়্যারটি ইনস্টল করতে প্রথমে ৫ লাখ ডলার প্রয়োজন পড়ে। তবে মোবাইল ডিভাইসভেদে খরচের তারতম্য রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, একবার এই পেগাসাস সফটওয়্যার ইনস্টল করতেই খরচ হবে ৫ লাখ মার্কিন ডলার। আইফোন ও অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য এ খরচ ৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার, ব্ল্যাকবেরি ব্যবহারকারীর জন্য ৫ লাখ ডলার, আর সিমবিয়ান মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর জন্য এই খরচ দাঁড়ায় ৩ লাখ ডলার।
এই খরচের বাইরেও প্রতি ১০০ জন অতিরিক্ত ব্যবহারকারীর ফোনে আড়ি পাতার জন্য খরচ পড়ে ৮ লাখ ডলার, ৫০ ব্যক্তির ক্ষেত্রে ৫ লাখ আর ২০ জন ব্যক্তির ক্ষেত্রে দেড় লাখ ডলার। এ ছাড়া এই সফটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা বাবদ প্রতিবছর মোট ব্যয়ের ১৭ শতাংশ দিতে হয়। সফটওয়্যার ইনস্টল হওয়ার আগেই এক বছরের এই খরচ অগ্রিম নিয়ে নেয় প্রতিষ্ঠানটি।
পেগাসাসই একমাত্র নয়
পেগাসাসই একমাত্র আড়ি পাতার সফটওয়্যার নয়। বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পেগাসাসের বাইরেও ব্যক্তির ফোনে আড়ি পাতার জন্য বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকে। এর একটি হলো ‘ক্যানডিরু’।
ইসরায়েলের তেল আবিবভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ক্যানডিরু তৈরি করেছে সবচেয়ে ব্যয়বহুল আড়ি পাতার সফটওয়্যার। এর নামও দেওয়া হয়েছে কোম্পানির নামে। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, এই সফটওয়্যার পেগাসাসের চেয়েও দামি, যার ইনস্টলেশন ব্যয় ২৮ মিলিয়ন (২ কোটি ৮০ লাখ) ডলার।
পেগাসাস ৬০ বার ইনস্টল করলে যে খরচ পড়ে, ক্যানডিরু একবার ইনস্টল করলে সেই খরচ পড়ে। পেগাসাসের মতোই টার্গেট বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ব্যয়ও বেড়ে যায়। এই একটি সফটওয়্যার দিয়ে আইফোন, অ্যান্ড্রয়েড, ম্যাক, ব্যক্তিগত কম্পিউটার ও ক্লাউড অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করা যায়।
ড্রপআউট জিপ
যুক্তরাষ্ট্রের এনএসএর তৈরি এই সফটওয়্যার দিয়ে ব্যক্তি পর্যায়ে নজরদারি করে বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থা। ড্রপআউট জিপ ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, বিশেষ করে আইফোনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইনস্টল হয়ে যায়। যার মাধ্যমে সহজেই ব্যবহারকারীদের ফোনের সব মেসেজ, ছবি, ই-মেইল, জিপিও লোকেশন, কল রেকর্ড বের করা সম্ভব।
আরসিএসএ অ্যান্ড্রয়েড
পেগাসাস, ড্রপআউট জিপ, ক্যানডিরুর মতো এটিও একটি আড়ি পাতার সফটওয়্যার। ইতালিভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘হ্যাকিং টিম’ সফটওয়্যারটি তৈরি করেছে। তবে এটি দিয়ে শুধু অ্যান্ড্রয়েড ফোনে আড়ি পাতা যায়। গুগল প্লে স্টোরের অ্যাপসের মাধ্যমে এই সফটওয়্যার ছাড়া হয়। এটা ফোনে ইনস্টল হওয়ার পর ব্যবহারকারীর পুরো ফোনের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যায়।
এক্সোডাস
এই সফটওয়্যার তৈরি করেছে ইতালিভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইসুরভ। এই ম্যালওয়্যারটি টার্গেট ডিভাইসে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহারকারীর কাছ থেকে ওই ডিভাইসের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় এবং এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে ফোনের সব তথ্য পাচার হতে থাকে।
পি–৬–জিইও
এটি জিএসএম মোবাইলে ফোন ব্যবহারকারীদের ওপর নজরদারির জন্য ব্যবহার করা হয়। ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান পিকসিক্সের বানানো এই স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে গোয়েন্দা সংস্থা জিএসএম, ইউএমটিএ ও এলটিই ব্যবহারকারীদের অবস্থান, ইনকামিং ও আউটগোয়িং কলের সবকিছু শনাক্ত করা যায়।
এবার বলুন, গোপন বলে আপনার আর কিছু থাকল?
আরও পড়ুন

‘পেগাসাস’ শব্দটি বললে এখন আর গ্রিক পুরাণের ডানাওয়ালা সেই ঘোড়ার ছবি মাথায় আসে না। আসে এক গোপন চোখ ও কানের ছবি। আজকাল বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ওপর রাষ্ট্রীয় নজরদারিতে ব্যবহার করা হচ্ছে পেগাসাস নামের এই স্পাইওয়্যার। ইসরায়েলের এনএসও গ্রুপের তৈরি এই গুপ্তচর সফটওয়্যার শুধু আড়ি পাতাতেই নয়, নির্দিষ্ট নম্বরের আওতাধীন স্মার্ট ডিভাইসের যাবতীয় তথ্য চলে যাচ্ছে রাষ্ট্রের উচ্চ মহলের হাতে। অনেকটা ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক জর্জ অরওয়েলের ‘নাইন্টিন এইটটি ফোরের’ মতো। গোপন বলে আপনার আর কিছুই নেই। নিমেষে সবই জেনে যাচ্ছেন ‘বিগব্রাদার’।
এখন প্রশ্ন আসতেই পারে, কোন কোন রাষ্ট্র এই স্পাইওয়্যার ব্যবহার করেছে? এই চেয়ে বরং বেশি প্রাসঙ্গিক, কে কে করছে না–সে প্রশ্নটি। আজকাল রাষ্ট্র, নিরাপত্তা আর নজরদারি যেন একসূত্রে গাঁথা। সেই নজরদারিকেই নতুন করে আলোচনায় এনেছে ‘পেগাসাস’।
পেগাসাসের এই গোপন কর্মটি এত দিন গোপনেই চলছিল। হঠাৎ করে সেটি সামনে এনে দিল প্যারিসভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা ফরবিডেন স্টোরিজ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তাদের যৌথ অনুসন্ধান চালিয়ে পেগাসাস প্রকল্পের আওতায় থাকা ৫০ হাজারের বেশি ফোন নম্বরে আড়ি পাতার খবর ফাঁস করেছিল। একযোগে সেই খবর প্রকাশ করে দিল ১৭টি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। এই অনুসন্ধানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘পেগাসাস প্রজেক্ট’।
অনুসন্ধানে বের হয়ে আসা ফোন নম্বরগুলোর মালিকের পরিচয় রীতিমতো গোটা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। এ তালিকায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ যেমন রয়েছেন, তেমনি আছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ভারতের বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে নির্বাচন কৌশুলী প্রশান্ত কিশোরসহ বহু সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী আছেন তালিকায়।
তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে তথ্যের নিরাপত্তা এখন এক বিরাট বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। হবে নাই-বা কেন? স্মার্ট ডিভাইস তো এখন হাতে হাতে। স্মার্টফোন না হলেও যোগাযোগের প্রয়োজনে মানুষ কোনো না কোনো ডিভাইস সঙ্গে রাখছেন। সেখানে থাকছে তার পরিচিতদের নম্বর, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর থেকে শুরু করে নানা তথ্য। ব্যক্তিগত মেসেজ বা অডিও-ভিডিও বা ছবির কথা না হয় বাদই গেল। মানুষের জীবনের এখন দুটি দিক—একটি চিরচেনা বাস্তব, অন্যটি ভার্চুয়াল। ফলে ভার্চুয়াল এই জগতের তথ্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পরাশক্তিগুলো একটি আরেকটির এই ভার্চুয়াল তথ্য হাতিয়ে নিতে কী না করছে? এ নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কিংবা চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টাপাল্টি দোষারোপ তো এখন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিটি ডিভাইস, সফটওয়্যার, ই–মেইল বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মের রয়েছে সুনির্দিষ্টভাবে ঘোষিত ব্যক্তিগত গোপনীয়তার নীতি। যেকোনো সচেতন গ্রাহক এই নীতিটি খুব সতর্কতার সঙ্গে পাঠ করেন। কিন্তু পেগাসাস-কাণ্ডের মধ্য দিয়ে দেখা যাচ্ছে, এই সতর্কতা কেবল নামেই, কোনো কাজে আসছে না।
কী এই পেগাসাস?
আগেই বলা হয়েছে, এটি একটি স্পাইওয়্যার। সোজা বাংলায় ভার্চুয়াল গুপ্তচর। বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ফোন, কম্পিউটার বা ট্যাবে ঢুকে তথ্য হাতিয়ে নেওয়াই এর কাজ। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, নিভ কারমি, শালেভ হুলিও ও ওমরি লাভিয়ে নামের তিন ইসরায়েলি ২০১০ সালে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন, যাদের অন্তত দুজন ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক সদস্য। তিনজনই নিজেদের নামের আদ্যক্ষর দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করেন এনএসও। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট অনুযায়ী, লাভিয়ে এবং হুলিও এখনো এনএসওর পরিচালনা পরিষদে আছেন। এই এনএসওই তৈরি করেছে স্পাইওয়্যার পেগাসাস।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের তথ্যমতে, ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান এনএসও গ্রুপ থেকে এই স্পাইওয়্যার কিনে নিজের দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ওপর নজরদারি চালিয়ে আসছে ‘কর্তৃত্ববাদী’ সরকারগুলো। এনএসও অন্তত ৫০টি দেশের সামরিক বাহিনী কিংবা গোয়েন্দা সংস্থার কাছে ‘পেগাসাস’ বিক্রি করেছে। এই তালিকায় এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো টেলিফোন নম্বর আছে কি না, তা স্পষ্ট করে জানা যায়নি। তবে আড়ি পাতার অভিযোগ উঠেছে ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে। দেশটিতে এটি এতটাই আলোড়ন তুলেছে যে, করোনা মোকাবিলার কর্মকৌশল নিয়ে অনুষ্ঠেয় বৈঠকও বর্জন করেছে বিরোধী দলগুলো।
২০১৬ সালের ২৫ আগস্ট ফোর্বসে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, লাভিয়ে ও হুলিও দুজনই ইসরায়েলের ‘ইউনিট ৮২০০ সিগনালস ইন্টেলিজেন্স আর্ম’-এর সাবেক সদস্য। ইউনিট ৮২০০ হচ্ছে ইসরায়েলের ‘ইন্টেলিজেন্স কোর’-এর একটি অংশ। সরাসরি ইসরায়েলি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ‘আইডিএফ ডাইরেক্টরেট অব মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সে’র অধীনে বিভাগটি কাজ করে।
নিভ কারমি, শালেভ হুলিও ও ওমরি লাভিয়ে বেশ ভালো প্রকল্পই হাতে নিয়েছেন বলা যায়। গোটা বিশ্বে এর বাজার যে বেশ ভালো—তা তো এখন আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, বাহরাইন, ভারত, মেক্সিকোসহ বহু দেশ এর ক্রেতা। দেশগুলোর সরকার তার নাগরিকদের দেওয়া করের অর্থ বিপুল পরিমাণে ঢালছে ওপর নজরদারির জন্য। ২০১৬ সালে দ্য গার্ডিয়ানে এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল। সে সময় এনএসও গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, যেকোনো দেশের বৈধ সরকারের কাছে সন্ত্রাস ও অপরাধ দমনে সহযোগিতার অংশ হিসেবে তারা এই প্রযুক্তি বিক্রি করে আসছে। কিন্তু ২০২১ সালে যে তালিকা সামনে এল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও ফরবিডেন স্টোরিজের মাধ্যমে, সেখানে মাদক ব্যবসায়ী, বৈধ সরকারের কর্তাব্যক্তি, মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক, বিরোধীপক্ষের নেতা, গণতান্ত্রিক পথে আন্দোলন করা নেতা, আইনজীবী—সবাইকে এক কাতারে দেখা গেল। ভারতে সেই সাংবাদিকদের নামই পাওয়া গেল তালিকায়, যারা নরেন্দ্র মোদি সরকারের কোনো প্রভাবশালী নেতার বা তাঁর আত্মীয় বা পরিবারের সদস্যদের করা দুর্নীতি নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করেছেন। এখনো ফাঁস হওয়া নম্বরগুলোর সব মালিকের খোঁজ জানা যায়নি। পুরোটা প্রকাশ হলে আর কার কার দিকে আঙুল উঠবে বলা কঠিন।
পেগাসাস সফটওয়্যারের দাম কত?
পেগাসাস সফটওয়্যারের দাম এই সময়ে কত, তা সুনির্দিষ্টভাবে বলা না গেলেও ২০১৬ সালে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে ধারণা পাওয়া যায়। এনএসও গ্রুপকে উদ্ধৃত করে নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, এই নজরদারি সফটওয়্যার অন্য যেকোনো সফটওয়্যারের চেয়ে ব্যয়বহুল। সফটওয়্যারটি ইনস্টল করতে প্রথমে ৫ লাখ ডলার প্রয়োজন পড়ে। তবে মোবাইল ডিভাইসভেদে খরচের তারতম্য রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, একবার এই পেগাসাস সফটওয়্যার ইনস্টল করতেই খরচ হবে ৫ লাখ মার্কিন ডলার। আইফোন ও অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য এ খরচ ৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার, ব্ল্যাকবেরি ব্যবহারকারীর জন্য ৫ লাখ ডলার, আর সিমবিয়ান মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর জন্য এই খরচ দাঁড়ায় ৩ লাখ ডলার।
এই খরচের বাইরেও প্রতি ১০০ জন অতিরিক্ত ব্যবহারকারীর ফোনে আড়ি পাতার জন্য খরচ পড়ে ৮ লাখ ডলার, ৫০ ব্যক্তির ক্ষেত্রে ৫ লাখ আর ২০ জন ব্যক্তির ক্ষেত্রে দেড় লাখ ডলার। এ ছাড়া এই সফটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা বাবদ প্রতিবছর মোট ব্যয়ের ১৭ শতাংশ দিতে হয়। সফটওয়্যার ইনস্টল হওয়ার আগেই এক বছরের এই খরচ অগ্রিম নিয়ে নেয় প্রতিষ্ঠানটি।
পেগাসাসই একমাত্র নয়
পেগাসাসই একমাত্র আড়ি পাতার সফটওয়্যার নয়। বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পেগাসাসের বাইরেও ব্যক্তির ফোনে আড়ি পাতার জন্য বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকে। এর একটি হলো ‘ক্যানডিরু’।
ইসরায়েলের তেল আবিবভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ক্যানডিরু তৈরি করেছে সবচেয়ে ব্যয়বহুল আড়ি পাতার সফটওয়্যার। এর নামও দেওয়া হয়েছে কোম্পানির নামে। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, এই সফটওয়্যার পেগাসাসের চেয়েও দামি, যার ইনস্টলেশন ব্যয় ২৮ মিলিয়ন (২ কোটি ৮০ লাখ) ডলার।
পেগাসাস ৬০ বার ইনস্টল করলে যে খরচ পড়ে, ক্যানডিরু একবার ইনস্টল করলে সেই খরচ পড়ে। পেগাসাসের মতোই টার্গেট বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ব্যয়ও বেড়ে যায়। এই একটি সফটওয়্যার দিয়ে আইফোন, অ্যান্ড্রয়েড, ম্যাক, ব্যক্তিগত কম্পিউটার ও ক্লাউড অ্যাকাউন্ট পর্যবেক্ষণ করা যায়।
ড্রপআউট জিপ
যুক্তরাষ্ট্রের এনএসএর তৈরি এই সফটওয়্যার দিয়ে ব্যক্তি পর্যায়ে নজরদারি করে বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থা। ড্রপআউট জিপ ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, বিশেষ করে আইফোনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইনস্টল হয়ে যায়। যার মাধ্যমে সহজেই ব্যবহারকারীদের ফোনের সব মেসেজ, ছবি, ই-মেইল, জিপিও লোকেশন, কল রেকর্ড বের করা সম্ভব।
আরসিএসএ অ্যান্ড্রয়েড
পেগাসাস, ড্রপআউট জিপ, ক্যানডিরুর মতো এটিও একটি আড়ি পাতার সফটওয়্যার। ইতালিভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘হ্যাকিং টিম’ সফটওয়্যারটি তৈরি করেছে। তবে এটি দিয়ে শুধু অ্যান্ড্রয়েড ফোনে আড়ি পাতা যায়। গুগল প্লে স্টোরের অ্যাপসের মাধ্যমে এই সফটওয়্যার ছাড়া হয়। এটা ফোনে ইনস্টল হওয়ার পর ব্যবহারকারীর পুরো ফোনের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যায়।
এক্সোডাস
এই সফটওয়্যার তৈরি করেছে ইতালিভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইসুরভ। এই ম্যালওয়্যারটি টার্গেট ডিভাইসে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহারকারীর কাছ থেকে ওই ডিভাইসের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় এবং এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে ফোনের সব তথ্য পাচার হতে থাকে।
পি–৬–জিইও
এটি জিএসএম মোবাইলে ফোন ব্যবহারকারীদের ওপর নজরদারির জন্য ব্যবহার করা হয়। ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান পিকসিক্সের বানানো এই স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে গোয়েন্দা সংস্থা জিএসএম, ইউএমটিএ ও এলটিই ব্যবহারকারীদের অবস্থান, ইনকামিং ও আউটগোয়িং কলের সবকিছু শনাক্ত করা যায়।
এবার বলুন, গোপন বলে আপনার আর কিছু থাকল?
আরও পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। অভিযোগে নিহত ৮৩ বছর বয়সী সুজান অ্যাডামসের পরিবার বলছে, ওপেনএআইর এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তাঁর ছেলের ‘প্যারানয়েড ডিলুশনস’ বা বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসগুলোকে উসকে দিয়েছে এবং এ কাজ
১ দিন আগে
বেশকিছু নতুন ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে মিসড কল মেসেজেস এবং ছবি অ্যানিমেশন ও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন। মেটা মালিকানাধীন এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মতে, তাদের নতুন ফিচার ‘মিসড কল মেসেজেস’ (Missed Call Messages) ফিচারটি প্রচলিত...
১ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়া শুরু হয়েছে। আজ বুধবার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পরপরই দেশজুড়ে ডিজিটাল জগতে এক নতুন লুকোচুরি খেলা শুরু হয়েছে। এই আইন প্রয়োগের প্রথম দিনেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে; একদিকে
৩ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ার লাখ লাখ শিশু বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ঘুম থেকে উঠে দেখবে—তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট আর চালু নেই। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে সম্প্রতি দেশটি ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা চালু করেছে দেশটি।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। অভিযোগে নিহত ৮৩ বছর বয়সী সুজান অ্যাডামসের পরিবার বলছে, ওপেনএআইর এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তাঁর ছেলের ‘প্যারানয়েড ডিলুশনস’ বা বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসগুলোকে উসকে দিয়েছে এবং এ কাজে প্ররোচিত করেছে।
সান ফ্রান্সিসকোতে ক্যালিফোর্নিয়া সুপিরিয়র কোর্টে ‘বেআইনি মৃত্যু’র অভিযোগে বলা হয়, গত ৩ আগস্ট ওল্ড গ্রিনউইচের নিজ বাড়িতে খুন হন সুজান অ্যাডামস। তাঁকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তাঁর ৫৬ বছর বয়সী ছেলে স্টেইন-এরিক সোলবার্গ। এরপর সোলবার্গ নিজেও ছুরিকাঘাতে আত্মহত্যা করেন।
গত কয়েক মাসে ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলা বেড়েছে। বেশ কয়েকটি মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ব্যবহারকারীদের আত্মহত্যায় প্ররোচিত করছে চ্যাটজিপিটি।
গত আগস্টে ছেলেকে চ্যাটজিপিটি আত্মহত্যার কৌশল সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছিল অভিযোগ এনে ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার ১৬ বছর বয়সী অ্যাডাম রেইনের মা-বাবা।
নভেম্বরে হওয়া কয়েকটি মার্কিন মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারীদের ওপর নির্ভরশীলতা তৈরি করেছে এবং নিজের ক্ষতি করতে প্ররোচিত করেছে। এসবের মধ্যে চারটি মামলায়ই আত্মহত্যার ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এর মধ্যে ২৬ বছর বয়সী জোশুয়া এন্নেকিংয়ের পরিবার অভিযোগ করেন, তাঁদের সন্তান চ্যাটজিপিটির কাছে আত্মহত্যার চিন্তা প্রকাশের পর এআই চ্যাটবটটি তাঁকে অস্ত্র পাওয়ার তথ্য সরবরাহ করেছে।
অন্যদিকে ১৭ বছর বয়সী অ্যামরি লেসির পরিবারের অভিযোগ, চ্যাটজিপিটি অ্যামরিকে ‘কীভাবে ফাঁস বাঁধতে হয় এবং শ্বাস না নিয়ে সে কতক্ষণ বাঁচবে’ এ-সংক্রান্ত তথ্য দিয়েছে।
সর্বশেষ মামলায় বলা হয়েছে, মাসখানেক ধরে চ্যাটজিপিটির সঙ্গে কথোপকথনে সোলবার্গের বিভ্রান্তিমূলক চিন্তাভাবনাকে সত্য ও জোরালো হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত তিনি নিজের মাকে ‘হুমকি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, সোলবার্গকে চ্যাটজিপিটি উত্তর দিয়েছিল যে তিনি এআই চ্যাটবটকে আরও সচেতন করেছেন, ‘জাগিয়ে তুলেছেন’। সোলবার্গের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিও থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, কথোপকথনে দেখা গেছে স্টেইন-এরিকের বিভ্রান্তিমূলক বিশ্বাসের প্রতিটির পক্ষে কথা বলে এমন একটা জগৎ তৈরি করেছিল চ্যাটজিপিটি, যাকে ঘিরেই ছিল স্টেইন-এরিকের সব চিন্তাভাবনা।
মামলায় আরও দাবি করা হয়েছে, চ্যাটজিপিটি সোলবার্গের প্যারানয়েড বিশ্বাসকে আরও জোরদার করেছিল। তাঁকে ধারণা দিয়েছিল যে কেউ তাঁর ওপর নজর রাখছে। এমনকি তিনি তাঁর মায়ের প্রিন্টার ডিভাইসটিকে নজরদারি যন্ত্র ভাবতে শুরু করেছিলেন।
যখন সোলবার্গ চ্যাটজিপিটিকে বলেন যে তাঁর মনে হচ্ছে তাঁর মা তাঁকে বিষ খাওয়াতে চেয়েছিলেন, চ্যাটজিপিটি তাঁর এই ভাবনাকে চ্যালেঞ্জ করার বদলে তার পক্ষে সায় দিয়ে উত্তর দিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার এ মামলার প্রতিক্রিয়ায় ওপেনএআইয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘এটি বেশ হৃদয়বিদারক অবস্থা। আমরা মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখছি, বিস্তারিত বোঝার চেষ্টা করছি।’
মামলায় ওপেনএআইযের প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যানকে অভিযুক্ত করে বলা হয়েছে, তিনি নিরাপত্তা বিভাগের সদস্যদের আপত্তি উপেক্ষা করে গত বছরের মে মাসে জিপিটি-৪ও বাজারে আনতে তাড়া দিয়েছিলেন। কয়েক মাস ধরে যে নিরাপত্তা পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল সেটি তিনি এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ করে দেন।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এটি আগের মডেলগুলোর তুলনায় শক্তিশালী এবং এর প্রতিক্রিয়া অনেক বেশি মানুষের মতো। তবে জিপিটি-৪ও মডেল ব্যবহারকারীদের সঙ্গে ‘অতিরিক্ত তোষামোদ করার’ কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।
ওপেনএআইয়ের সবচেয়ে বড় শেয়ারহোল্ডার মাইক্রোসফটকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা প্রটোকল সংক্ষেপিত হওয়ার পরও তারা এই পণ্যের অনুমোদন দিয়েছেন।
এ ছাড়া ওপেনএআইযের ২০ কর্মকর্তা এবং বিনিয়োগকারীকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় অনির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ এবং ওপেনএআইকে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।
মন্তব্যের অনুরোধে যোগাযোগ করা হলে মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া মেলেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। অভিযোগে নিহত ৮৩ বছর বয়সী সুজান অ্যাডামসের পরিবার বলছে, ওপেনএআইর এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তাঁর ছেলের ‘প্যারানয়েড ডিলুশনস’ বা বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসগুলোকে উসকে দিয়েছে এবং এ কাজে প্ররোচিত করেছে।
সান ফ্রান্সিসকোতে ক্যালিফোর্নিয়া সুপিরিয়র কোর্টে ‘বেআইনি মৃত্যু’র অভিযোগে বলা হয়, গত ৩ আগস্ট ওল্ড গ্রিনউইচের নিজ বাড়িতে খুন হন সুজান অ্যাডামস। তাঁকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তাঁর ৫৬ বছর বয়সী ছেলে স্টেইন-এরিক সোলবার্গ। এরপর সোলবার্গ নিজেও ছুরিকাঘাতে আত্মহত্যা করেন।
গত কয়েক মাসে ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলা বেড়েছে। বেশ কয়েকটি মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ব্যবহারকারীদের আত্মহত্যায় প্ররোচিত করছে চ্যাটজিপিটি।
গত আগস্টে ছেলেকে চ্যাটজিপিটি আত্মহত্যার কৌশল সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছিল অভিযোগ এনে ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার ১৬ বছর বয়সী অ্যাডাম রেইনের মা-বাবা।
নভেম্বরে হওয়া কয়েকটি মার্কিন মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারীদের ওপর নির্ভরশীলতা তৈরি করেছে এবং নিজের ক্ষতি করতে প্ররোচিত করেছে। এসবের মধ্যে চারটি মামলায়ই আত্মহত্যার ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এর মধ্যে ২৬ বছর বয়সী জোশুয়া এন্নেকিংয়ের পরিবার অভিযোগ করেন, তাঁদের সন্তান চ্যাটজিপিটির কাছে আত্মহত্যার চিন্তা প্রকাশের পর এআই চ্যাটবটটি তাঁকে অস্ত্র পাওয়ার তথ্য সরবরাহ করেছে।
অন্যদিকে ১৭ বছর বয়সী অ্যামরি লেসির পরিবারের অভিযোগ, চ্যাটজিপিটি অ্যামরিকে ‘কীভাবে ফাঁস বাঁধতে হয় এবং শ্বাস না নিয়ে সে কতক্ষণ বাঁচবে’ এ-সংক্রান্ত তথ্য দিয়েছে।
সর্বশেষ মামলায় বলা হয়েছে, মাসখানেক ধরে চ্যাটজিপিটির সঙ্গে কথোপকথনে সোলবার্গের বিভ্রান্তিমূলক চিন্তাভাবনাকে সত্য ও জোরালো হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত তিনি নিজের মাকে ‘হুমকি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, সোলবার্গকে চ্যাটজিপিটি উত্তর দিয়েছিল যে তিনি এআই চ্যাটবটকে আরও সচেতন করেছেন, ‘জাগিয়ে তুলেছেন’। সোলবার্গের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিও থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, কথোপকথনে দেখা গেছে স্টেইন-এরিকের বিভ্রান্তিমূলক বিশ্বাসের প্রতিটির পক্ষে কথা বলে এমন একটা জগৎ তৈরি করেছিল চ্যাটজিপিটি, যাকে ঘিরেই ছিল স্টেইন-এরিকের সব চিন্তাভাবনা।
মামলায় আরও দাবি করা হয়েছে, চ্যাটজিপিটি সোলবার্গের প্যারানয়েড বিশ্বাসকে আরও জোরদার করেছিল। তাঁকে ধারণা দিয়েছিল যে কেউ তাঁর ওপর নজর রাখছে। এমনকি তিনি তাঁর মায়ের প্রিন্টার ডিভাইসটিকে নজরদারি যন্ত্র ভাবতে শুরু করেছিলেন।
যখন সোলবার্গ চ্যাটজিপিটিকে বলেন যে তাঁর মনে হচ্ছে তাঁর মা তাঁকে বিষ খাওয়াতে চেয়েছিলেন, চ্যাটজিপিটি তাঁর এই ভাবনাকে চ্যালেঞ্জ করার বদলে তার পক্ষে সায় দিয়ে উত্তর দিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার এ মামলার প্রতিক্রিয়ায় ওপেনএআইয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘এটি বেশ হৃদয়বিদারক অবস্থা। আমরা মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখছি, বিস্তারিত বোঝার চেষ্টা করছি।’
মামলায় ওপেনএআইযের প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যানকে অভিযুক্ত করে বলা হয়েছে, তিনি নিরাপত্তা বিভাগের সদস্যদের আপত্তি উপেক্ষা করে গত বছরের মে মাসে জিপিটি-৪ও বাজারে আনতে তাড়া দিয়েছিলেন। কয়েক মাস ধরে যে নিরাপত্তা পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল সেটি তিনি এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ করে দেন।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এটি আগের মডেলগুলোর তুলনায় শক্তিশালী এবং এর প্রতিক্রিয়া অনেক বেশি মানুষের মতো। তবে জিপিটি-৪ও মডেল ব্যবহারকারীদের সঙ্গে ‘অতিরিক্ত তোষামোদ করার’ কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।
ওপেনএআইয়ের সবচেয়ে বড় শেয়ারহোল্ডার মাইক্রোসফটকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা প্রটোকল সংক্ষেপিত হওয়ার পরও তারা এই পণ্যের অনুমোদন দিয়েছেন।
এ ছাড়া ওপেনএআইযের ২০ কর্মকর্তা এবং বিনিয়োগকারীকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় অনির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ এবং ওপেনএআইকে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।
মন্তব্যের অনুরোধে যোগাযোগ করা হলে মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া মেলেনি।

‘পেগাসাস’ শব্দটি বললে এখন আর গ্রিক পুরাণের ডানাওয়ালা সেই ঘোড়ার ছবি মাথায় আসে না। আসে এক গোপন চোখ ও কানের ছবি। আজকাল বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ওপর রাষ্ট্রীয় নজরদারিতে ব্যবহার করা হচ্ছে পেগাসাস নামের এই স্পাইওয়্যার। ইসরায়েলের এনএসও গ্রুপের তৈরি এই গুপ্তচর সফটওয়্যার শুধু আড়ি পাতাতেই নয়, নির্দিষ্ট নম
২৪ জুলাই ২০২১
বেশকিছু নতুন ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে মিসড কল মেসেজেস এবং ছবি অ্যানিমেশন ও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন। মেটা মালিকানাধীন এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মতে, তাদের নতুন ফিচার ‘মিসড কল মেসেজেস’ (Missed Call Messages) ফিচারটি প্রচলিত...
১ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়া শুরু হয়েছে। আজ বুধবার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পরপরই দেশজুড়ে ডিজিটাল জগতে এক নতুন লুকোচুরি খেলা শুরু হয়েছে। এই আইন প্রয়োগের প্রথম দিনেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে; একদিকে
৩ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ার লাখ লাখ শিশু বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ঘুম থেকে উঠে দেখবে—তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট আর চালু নেই। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে সম্প্রতি দেশটি ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা চালু করেছে দেশটি।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বেশকিছু নতুন ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে মিসড কল মেসেজেস এবং ছবি অ্যানিমেশন ও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন।
মেটা মালিকানাধীন এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মতে, তাদের নতুন ফিচার ‘মিসড কল মেসেজেস’ (Missed Call Messages) ফিচারটি প্রচলিত ভয়েসমেইলের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে এবং প্রিয়জনদের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ পুনরায় শুরু করতে সহায়তা করবে।
যাকে কল করা হয়েছে, সেই ব্যক্তি কল রিসিভ না করলে, ওই কলের মিসড কল নোটিফিকেশনের সঙ্গে একটি ভয়েস বা ভিডিও রেকর্ড করে দেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে এই নতুন ফিচার। কলের ধরন অনুযায়ী কলদাতা ভয়েস বা ভিডিও এ দু ধরনের নোটই এক ট্যাপেই রেকর্ড করে পাঠাতে পারবেন। হোয়াটসঅ্যাপ তাঁদের ব্লগপোস্টে বলেছে, ‘এই নতুন ব্যবস্থা প্রচলিত ভয়েসমেইল ব্যবস্থাকে অতীত করে দেবে।’
ব্যবহারকারীরা এখন ভয়েস চ্যাটেও ‘cheers!’ -এর মতো নতুন রিঅ্যাকশন ব্যবহার করতে পারবেন, যা বাকিদের আলাপ থামাবে না। পাশাপাশি, ভিডিও কলে এখন বক্তাই স্বয়ংক্রিয়ভাবে অগ্রাধিকার পাবে।
এদিকে মেটা-এআই দিয়ে ছবি তৈরির সুবিধাতেও আরও নতুনত্ব এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে স্থির ছবিকে ছোট ভিডিওতে রূপান্তর করার মতো অ্যানিমেশন সুবিধা এবং আরও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন।
এখন এতে ফ্লাক্স (Flux) এবং মিডজার্নি (Midjourney)–এর নতুন ইমেজ জেনারেশন মডেলের সক্ষমতা যুক্ত হয়েছে। বছর শেষে বা ছুটির সময়ের শুভেচ্ছাবার্তার মতো ছবি তৈরি করার ক্ষেত্রে এই আপগ্রেডেশন বেশ সাহায্য করবে বলে দাবি হোয়াটসঅ্যাপের।
মেটা এআই–এর নতুন সক্ষমতার মধ্যে ছবি অ্যানিমেশনও যুক্ত হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ বলছে, ব্যবহারকারীরা যেকোনো ছবি প্রম্পট এবং বার্তার ভিত্তিতে ছোট ভিডিওতে রূপান্তর করতে পারবেন। ডেস্কটপে, ডকুমেন্ট, লিঙ্ক ও মিডিয়া সহজে আলাদা করার জন্য নতুন মিডিয়া ট্যাবও যুক্ত হয়েছে। এছাড়া লিঙ্ক প্রিভিউ অপশনেও আপগ্রেডেশন এসেছে।
স্ট্যাটাসের জন্যও নতুন স্টিকার যুক্ত করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। ব্যবহারকারীরা এতে গান, ইন্টারেক্টিভ স্টিকার এবং প্রশ্ন যোগ করতে পারবেন। সেখানে অন্যরা উত্তর দিতে পারবেন।
হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে প্রশ্ন করার সুবিধাও যুক্ত হয়েছে। এই ফিচার চ্যানেলের অডিয়েন্সদের সঙ্গে চ্যানেলের পরিচালনাকারীদের সঙ্গে আরও উচ্চমাত্রার সংযোগ স্থাপন এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া গ্রহণের সুযোগ দেবে বলে জানিয়েছে মেটা–মালিকানাধীন এই প্ল্যাটফর্ম।

বেশকিছু নতুন ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে মিসড কল মেসেজেস এবং ছবি অ্যানিমেশন ও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন।
মেটা মালিকানাধীন এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মতে, তাদের নতুন ফিচার ‘মিসড কল মেসেজেস’ (Missed Call Messages) ফিচারটি প্রচলিত ভয়েসমেইলের বিকল্প হিসেবে কাজ করবে এবং প্রিয়জনদের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ পুনরায় শুরু করতে সহায়তা করবে।
যাকে কল করা হয়েছে, সেই ব্যক্তি কল রিসিভ না করলে, ওই কলের মিসড কল নোটিফিকেশনের সঙ্গে একটি ভয়েস বা ভিডিও রেকর্ড করে দেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে এই নতুন ফিচার। কলের ধরন অনুযায়ী কলদাতা ভয়েস বা ভিডিও এ দু ধরনের নোটই এক ট্যাপেই রেকর্ড করে পাঠাতে পারবেন। হোয়াটসঅ্যাপ তাঁদের ব্লগপোস্টে বলেছে, ‘এই নতুন ব্যবস্থা প্রচলিত ভয়েসমেইল ব্যবস্থাকে অতীত করে দেবে।’
ব্যবহারকারীরা এখন ভয়েস চ্যাটেও ‘cheers!’ -এর মতো নতুন রিঅ্যাকশন ব্যবহার করতে পারবেন, যা বাকিদের আলাপ থামাবে না। পাশাপাশি, ভিডিও কলে এখন বক্তাই স্বয়ংক্রিয়ভাবে অগ্রাধিকার পাবে।
এদিকে মেটা-এআই দিয়ে ছবি তৈরির সুবিধাতেও আরও নতুনত্ব এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে স্থির ছবিকে ছোট ভিডিওতে রূপান্তর করার মতো অ্যানিমেশন সুবিধা এবং আরও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন।
এখন এতে ফ্লাক্স (Flux) এবং মিডজার্নি (Midjourney)–এর নতুন ইমেজ জেনারেশন মডেলের সক্ষমতা যুক্ত হয়েছে। বছর শেষে বা ছুটির সময়ের শুভেচ্ছাবার্তার মতো ছবি তৈরি করার ক্ষেত্রে এই আপগ্রেডেশন বেশ সাহায্য করবে বলে দাবি হোয়াটসঅ্যাপের।
মেটা এআই–এর নতুন সক্ষমতার মধ্যে ছবি অ্যানিমেশনও যুক্ত হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ বলছে, ব্যবহারকারীরা যেকোনো ছবি প্রম্পট এবং বার্তার ভিত্তিতে ছোট ভিডিওতে রূপান্তর করতে পারবেন। ডেস্কটপে, ডকুমেন্ট, লিঙ্ক ও মিডিয়া সহজে আলাদা করার জন্য নতুন মিডিয়া ট্যাবও যুক্ত হয়েছে। এছাড়া লিঙ্ক প্রিভিউ অপশনেও আপগ্রেডেশন এসেছে।
স্ট্যাটাসের জন্যও নতুন স্টিকার যুক্ত করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। ব্যবহারকারীরা এতে গান, ইন্টারেক্টিভ স্টিকার এবং প্রশ্ন যোগ করতে পারবেন। সেখানে অন্যরা উত্তর দিতে পারবেন।
হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে প্রশ্ন করার সুবিধাও যুক্ত হয়েছে। এই ফিচার চ্যানেলের অডিয়েন্সদের সঙ্গে চ্যানেলের পরিচালনাকারীদের সঙ্গে আরও উচ্চমাত্রার সংযোগ স্থাপন এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া গ্রহণের সুযোগ দেবে বলে জানিয়েছে মেটা–মালিকানাধীন এই প্ল্যাটফর্ম।

‘পেগাসাস’ শব্দটি বললে এখন আর গ্রিক পুরাণের ডানাওয়ালা সেই ঘোড়ার ছবি মাথায় আসে না। আসে এক গোপন চোখ ও কানের ছবি। আজকাল বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ওপর রাষ্ট্রীয় নজরদারিতে ব্যবহার করা হচ্ছে পেগাসাস নামের এই স্পাইওয়্যার। ইসরায়েলের এনএসও গ্রুপের তৈরি এই গুপ্তচর সফটওয়্যার শুধু আড়ি পাতাতেই নয়, নির্দিষ্ট নম
২৪ জুলাই ২০২১
যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। অভিযোগে নিহত ৮৩ বছর বয়সী সুজান অ্যাডামসের পরিবার বলছে, ওপেনএআইর এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তাঁর ছেলের ‘প্যারানয়েড ডিলুশনস’ বা বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসগুলোকে উসকে দিয়েছে এবং এ কাজ
১ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়া শুরু হয়েছে। আজ বুধবার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পরপরই দেশজুড়ে ডিজিটাল জগতে এক নতুন লুকোচুরি খেলা শুরু হয়েছে। এই আইন প্রয়োগের প্রথম দিনেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে; একদিকে
৩ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ার লাখ লাখ শিশু বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ঘুম থেকে উঠে দেখবে—তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট আর চালু নেই। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে সম্প্রতি দেশটি ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা চালু করেছে দেশটি।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়া শুরু হয়েছে। আজ বুধবার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পরপরই দেশজুড়ে ডিজিটাল জগতে এক নতুন লুকোচুরি খেলা শুরু হয়েছে। এই আইন প্রয়োগের প্রথম দিনেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে; একদিকে যেমন হাজার হাজার অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। অন্যদিকে কিশোর ব্যবহারকারীদের একটি অংশ এই নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজেদের প্ল্যাটফর্মে টিকে থাকার ‘বিজয়’ উদ্যাপন করছে।
অস্ট্রেলিয়ার যোগাযোগ মন্ত্রী আনিকা ওয়েলস নিশ্চিত করেছেন, নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ১৬ বছরের কম বয়সী হিসেবে চিহ্নিত দুই লক্ষাধিক টিকটক অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় (ডিঅ্যাক্টিভেট) করা হয়েছে।
এই পরিসংখ্যান নিঃসন্দেহে আইনটির তাৎক্ষণিক কার্যকারিতা প্রমাণ করে। তবে মজার বিষয় হলো, অনেক ব্যবহারকারী যারা নিজেদের ১৬-এর নিচে বলে দাবি করছে, তারা এখনো প্ল্যাটফর্মে রয়ে গেছে এবং নিজেদের টিকে থাকার ঘটনাটি ব্যাপকভাবে প্রচার করছে।
নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় কিশোরদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বার্তাগুলো নজর কাড়ছে। এক টিকটক ব্যবহারকারী একটি ভিডিওতে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে সরাসরি লিখেছে, ‘প্রিয় অ্যান্থনি আলবানিজ, আমি আপনার নিষেধাজ্ঞাকে পাশ কাটিয়ে গেছি।’ এই ভিডিওর কমেন্ট সেকশন ভরে গেছে অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য ব্যবহারকারীদের মন্তব্যে, যারা দাবি করছে যে তারা ১৬ বছরের কম হওয়া সত্ত্বেও প্ল্যাটফর্মে এখনো সক্রিয় রয়েছে।
কেউ কেউ তো সময় উল্লেখ করে তাদের ‘বিজয়’ উদ্যাপন করছে। সাধারণ মন্তব্যগুলোর মধ্যে রয়েছে: ‘আমরা এখনো বহাল তবিয়তে আছি, এখন ১০ ডিসেম্বর সকাল ৮: ০৫।’ এমনকি কেউ কেউ এলটন জনের জনপ্রিয় গান ‘আই অ্যাম স্টিল স্ট্যান্ডিং’-এর একটি লাইন উদ্ধৃত করে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ঘোষণা করেছে।
অনেকে জানিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো তাদের মূল অ্যাকাউন্ট থেকে বের করে দিলেও, তারা গোপন ব্যাক-আপ অ্যাকাউন্ট তৈরি করে অ্যাপ ব্যবহার করতে পারছে। প্রযুক্তিগত এই ফাঁক গলে কেউ কেউ স্ন্যাপচ্যাট বা ইনস্টাগ্রামের মতো একটি প্ল্যাটফর্মে নিষিদ্ধ হলেও টিকটকের মতো অন্য প্ল্যাটফর্মে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের টিকটক অ্যাকাউন্টও এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার মাত্র ১০ ঘণ্টা পর তিনি এবিসি রেডিও মেলবোর্নকে বলেন, এটি ‘ইতিমধ্যেই সফল’। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর অ্যাকাউন্টেই ব্যবহারকারীরা নিষেধাজ্ঞাটির ব্যর্থতা নিয়ে বার্তাবর্ষণ করেছে।
আলবানিজের একটি টিকটক ভিডিওর নিচে সরাসরি এক ব্যবহারকারী লিখেছে, ‘আরে বন্ধু, এখনো এখানে আছি।’ অন্য একজন কটাক্ষ করে লিখেছে, ‘এটা কাজ করেনি ব্রো, আমি এখনো এখানে।’
এই ধরনের প্রতিক্রিয়াই স্পষ্ট করে যে, সরকারের প্রাথমিক সফলতা সত্ত্বেও ব্যবহারকারীদের মধ্যে আইনকে পাশ কাটানোর প্রবণতা জোরদার।
খোদ বয়স যাচাইকরণের পদ্ধতি নিয়েই বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। ই-সেফটি কমিশনার জুলি ইনম্যান গ্রান্ট কোনো নির্দিষ্ট বয়স যাচাইকরণ প্রযুক্তির সুপারিশ করেননি। তিনি বরং একটি ‘ওয়াটারফল পদ্ধতি’ ব্যবহারের কথা বলেছেন, যেখানে সরকারি আইডি আপলোড করা ছাড়াও আরও একাধিক বিকল্প থাকবে। যদিও বয়স অনুমানকারী ফেশিয়াল স্ক্যান প্রযুক্তিগুলোর মধ্যে পক্ষপাতিত্ব এবং শিশুদের মুখ চেনার ক্ষেত্রে নির্ভুলতার অভাব দেখা যায়।
কমিশনার ইনম্যান গ্রান্ট অবশ্য বাস্তববাদী। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এই ধরনের বৃহৎ সিস্টেমে রাতারাতি শতভাগ সাফল্য আশা করা যায় না। তিনি বলেন, এখানে প্রযুক্তির কিছু দুর্বলতা থাকবে, এই বৃহৎ সিস্টেমগুলোতে পরিবর্তন আনতে সময় লাগে। আমরা কিছু অনিয়ম দেখতে পারি, কিন্তু তার জন্য আমাদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা আছে। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।
আইনের বর্তমান কাঠামো অনুযায়ী, যদি কোনো অপ্রাপ্তবয়স্ক সফলভাবে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে যেতে থাকে, তাহলে তাদের বা তাদের অভিভাবকদের কোনো শাস্তি হবে না। আইন মেনে চলার পুরো দায়িত্বটি প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর বর্তায়। তাদেরই ব্যবহারকারীর বয়স নিশ্চিত করতে হবে এবং ১৬ বছরের কম বয়সীদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে হবে। আইন লঙ্ঘনের জন্য সংশ্লিষ্ট টেক জায়ান্টকে সর্বোচ্চ ৪৯ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৯০ কোটি টাকা) পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হতে পারে।
ই-সেফটি কমিশনার আরও আশা করেন, প্ল্যাটফর্মগুলো ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন)-এর মতো কৌশলও শনাক্ত করবে। ব্যবহারকারীর আইপি ঠিকানা লুকিয়ে তাদের অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান গোপন করতে সাহায্য করে ভিপিএন।
এদিকে যেসব অপ্রাপ্তবয়স্ক তাদের প্রিয় অ্যাপ থেকে বিতাড়িত হয়েছে, তারা এখন অন্য প্ল্যাটফর্মে আশ্রয় খুঁজছে। আজ সকালে অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে শীর্ষ তিনটি জনপ্রিয় অ্যাপ ছিল Lemon 8, Yope, এবং Coverstar। এই প্ল্যাটফর্মগুলো টিকটক, ইনস্টাগ্রাম এবং স্ন্যাপচ্যাটের বিকল্প হিসেবে নিজেদের তুলে ধরছে এবং এগুলো আপাতত ই-সেফটি কমিশনারের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নেই।
মন্ত্রী ওয়েলস এই প্রবণতা নিয়েও সতর্ক। তিনি জানিয়েছেন, যদি দেখা যায় নিষিদ্ধ হওয়া ব্যবহারকারীরা Lemon8-এর মতো প্ল্যাটফর্মে ভিড় করছে এবং সেখানে ক্ষতিকর পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, তবে সেগুলোকেও তালিকায় যোগ করতে তিনি এক মুহূর্তও দেরি করবেন না।

অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়া শুরু হয়েছে। আজ বুধবার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পরপরই দেশজুড়ে ডিজিটাল জগতে এক নতুন লুকোচুরি খেলা শুরু হয়েছে। এই আইন প্রয়োগের প্রথম দিনেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে; একদিকে যেমন হাজার হাজার অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। অন্যদিকে কিশোর ব্যবহারকারীদের একটি অংশ এই নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজেদের প্ল্যাটফর্মে টিকে থাকার ‘বিজয়’ উদ্যাপন করছে।
অস্ট্রেলিয়ার যোগাযোগ মন্ত্রী আনিকা ওয়েলস নিশ্চিত করেছেন, নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ১৬ বছরের কম বয়সী হিসেবে চিহ্নিত দুই লক্ষাধিক টিকটক অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় (ডিঅ্যাক্টিভেট) করা হয়েছে।
এই পরিসংখ্যান নিঃসন্দেহে আইনটির তাৎক্ষণিক কার্যকারিতা প্রমাণ করে। তবে মজার বিষয় হলো, অনেক ব্যবহারকারী যারা নিজেদের ১৬-এর নিচে বলে দাবি করছে, তারা এখনো প্ল্যাটফর্মে রয়ে গেছে এবং নিজেদের টিকে থাকার ঘটনাটি ব্যাপকভাবে প্রচার করছে।
নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় কিশোরদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বার্তাগুলো নজর কাড়ছে। এক টিকটক ব্যবহারকারী একটি ভিডিওতে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে সরাসরি লিখেছে, ‘প্রিয় অ্যান্থনি আলবানিজ, আমি আপনার নিষেধাজ্ঞাকে পাশ কাটিয়ে গেছি।’ এই ভিডিওর কমেন্ট সেকশন ভরে গেছে অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য ব্যবহারকারীদের মন্তব্যে, যারা দাবি করছে যে তারা ১৬ বছরের কম হওয়া সত্ত্বেও প্ল্যাটফর্মে এখনো সক্রিয় রয়েছে।
কেউ কেউ তো সময় উল্লেখ করে তাদের ‘বিজয়’ উদ্যাপন করছে। সাধারণ মন্তব্যগুলোর মধ্যে রয়েছে: ‘আমরা এখনো বহাল তবিয়তে আছি, এখন ১০ ডিসেম্বর সকাল ৮: ০৫।’ এমনকি কেউ কেউ এলটন জনের জনপ্রিয় গান ‘আই অ্যাম স্টিল স্ট্যান্ডিং’-এর একটি লাইন উদ্ধৃত করে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ঘোষণা করেছে।
অনেকে জানিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো তাদের মূল অ্যাকাউন্ট থেকে বের করে দিলেও, তারা গোপন ব্যাক-আপ অ্যাকাউন্ট তৈরি করে অ্যাপ ব্যবহার করতে পারছে। প্রযুক্তিগত এই ফাঁক গলে কেউ কেউ স্ন্যাপচ্যাট বা ইনস্টাগ্রামের মতো একটি প্ল্যাটফর্মে নিষিদ্ধ হলেও টিকটকের মতো অন্য প্ল্যাটফর্মে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের টিকটক অ্যাকাউন্টও এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার মাত্র ১০ ঘণ্টা পর তিনি এবিসি রেডিও মেলবোর্নকে বলেন, এটি ‘ইতিমধ্যেই সফল’। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর অ্যাকাউন্টেই ব্যবহারকারীরা নিষেধাজ্ঞাটির ব্যর্থতা নিয়ে বার্তাবর্ষণ করেছে।
আলবানিজের একটি টিকটক ভিডিওর নিচে সরাসরি এক ব্যবহারকারী লিখেছে, ‘আরে বন্ধু, এখনো এখানে আছি।’ অন্য একজন কটাক্ষ করে লিখেছে, ‘এটা কাজ করেনি ব্রো, আমি এখনো এখানে।’
এই ধরনের প্রতিক্রিয়াই স্পষ্ট করে যে, সরকারের প্রাথমিক সফলতা সত্ত্বেও ব্যবহারকারীদের মধ্যে আইনকে পাশ কাটানোর প্রবণতা জোরদার।
খোদ বয়স যাচাইকরণের পদ্ধতি নিয়েই বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। ই-সেফটি কমিশনার জুলি ইনম্যান গ্রান্ট কোনো নির্দিষ্ট বয়স যাচাইকরণ প্রযুক্তির সুপারিশ করেননি। তিনি বরং একটি ‘ওয়াটারফল পদ্ধতি’ ব্যবহারের কথা বলেছেন, যেখানে সরকারি আইডি আপলোড করা ছাড়াও আরও একাধিক বিকল্প থাকবে। যদিও বয়স অনুমানকারী ফেশিয়াল স্ক্যান প্রযুক্তিগুলোর মধ্যে পক্ষপাতিত্ব এবং শিশুদের মুখ চেনার ক্ষেত্রে নির্ভুলতার অভাব দেখা যায়।
কমিশনার ইনম্যান গ্রান্ট অবশ্য বাস্তববাদী। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এই ধরনের বৃহৎ সিস্টেমে রাতারাতি শতভাগ সাফল্য আশা করা যায় না। তিনি বলেন, এখানে প্রযুক্তির কিছু দুর্বলতা থাকবে, এই বৃহৎ সিস্টেমগুলোতে পরিবর্তন আনতে সময় লাগে। আমরা কিছু অনিয়ম দেখতে পারি, কিন্তু তার জন্য আমাদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা আছে। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।
আইনের বর্তমান কাঠামো অনুযায়ী, যদি কোনো অপ্রাপ্তবয়স্ক সফলভাবে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে যেতে থাকে, তাহলে তাদের বা তাদের অভিভাবকদের কোনো শাস্তি হবে না। আইন মেনে চলার পুরো দায়িত্বটি প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর বর্তায়। তাদেরই ব্যবহারকারীর বয়স নিশ্চিত করতে হবে এবং ১৬ বছরের কম বয়সীদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে হবে। আইন লঙ্ঘনের জন্য সংশ্লিষ্ট টেক জায়ান্টকে সর্বোচ্চ ৪৯ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৯০ কোটি টাকা) পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হতে পারে।
ই-সেফটি কমিশনার আরও আশা করেন, প্ল্যাটফর্মগুলো ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন)-এর মতো কৌশলও শনাক্ত করবে। ব্যবহারকারীর আইপি ঠিকানা লুকিয়ে তাদের অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান গোপন করতে সাহায্য করে ভিপিএন।
এদিকে যেসব অপ্রাপ্তবয়স্ক তাদের প্রিয় অ্যাপ থেকে বিতাড়িত হয়েছে, তারা এখন অন্য প্ল্যাটফর্মে আশ্রয় খুঁজছে। আজ সকালে অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে শীর্ষ তিনটি জনপ্রিয় অ্যাপ ছিল Lemon 8, Yope, এবং Coverstar। এই প্ল্যাটফর্মগুলো টিকটক, ইনস্টাগ্রাম এবং স্ন্যাপচ্যাটের বিকল্প হিসেবে নিজেদের তুলে ধরছে এবং এগুলো আপাতত ই-সেফটি কমিশনারের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নেই।
মন্ত্রী ওয়েলস এই প্রবণতা নিয়েও সতর্ক। তিনি জানিয়েছেন, যদি দেখা যায় নিষিদ্ধ হওয়া ব্যবহারকারীরা Lemon8-এর মতো প্ল্যাটফর্মে ভিড় করছে এবং সেখানে ক্ষতিকর পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, তবে সেগুলোকেও তালিকায় যোগ করতে তিনি এক মুহূর্তও দেরি করবেন না।

‘পেগাসাস’ শব্দটি বললে এখন আর গ্রিক পুরাণের ডানাওয়ালা সেই ঘোড়ার ছবি মাথায় আসে না। আসে এক গোপন চোখ ও কানের ছবি। আজকাল বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ওপর রাষ্ট্রীয় নজরদারিতে ব্যবহার করা হচ্ছে পেগাসাস নামের এই স্পাইওয়্যার। ইসরায়েলের এনএসও গ্রুপের তৈরি এই গুপ্তচর সফটওয়্যার শুধু আড়ি পাতাতেই নয়, নির্দিষ্ট নম
২৪ জুলাই ২০২১
যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। অভিযোগে নিহত ৮৩ বছর বয়সী সুজান অ্যাডামসের পরিবার বলছে, ওপেনএআইর এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তাঁর ছেলের ‘প্যারানয়েড ডিলুশনস’ বা বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসগুলোকে উসকে দিয়েছে এবং এ কাজ
১ দিন আগে
বেশকিছু নতুন ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে মিসড কল মেসেজেস এবং ছবি অ্যানিমেশন ও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন। মেটা মালিকানাধীন এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মতে, তাদের নতুন ফিচার ‘মিসড কল মেসেজেস’ (Missed Call Messages) ফিচারটি প্রচলিত...
১ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ার লাখ লাখ শিশু বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ঘুম থেকে উঠে দেখবে—তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট আর চালু নেই। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে সম্প্রতি দেশটি ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা চালু করেছে দেশটি।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ার লাখ লাখ শিশু বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ঘুম থেকে উঠে দেখবে—তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট আর চালু নেই। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে মঙ্গলবার থেকে দেশটিতে ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার আইন কার্যকর হয়েছে। সরকার দাবি করেছে, এই পদক্ষেপ শিশুদের আসক্তিমূলক অ্যালগরিদম, অনলাইন বুলিং ও শিকারিদের হাত থেকে রক্ষা করবে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, সদ্য কার্যকর হওয়া ওই আইনটি ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে নজর কেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ নানা দেশের নীতিনির্ধারকেরা অস্ট্রেলিয়ার এই উদ্যোগকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে ১০টি বড় সামাজিক মাধ্যম—ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, থ্রেডস, স্ন্যাপচ্যাট, ইউটিউব, টিকটক, রেডিট, কিক, টুইচ ও এক্স। এসব প্ল্যাটফর্ম জানিয়েছে, তারা নতুন বয়স যাচাইকরণ প্রযুক্তি ব্যবহার করবে। তবে তাদের কেউ কেউ মনে করে—এত বড় পদক্ষেপ বাস্তবে শিশুদের নিরাপদ করবে কি না, তা এখনো প্রশ্ন।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ জানিয়েছেন, কিছু শিশু ও তাদের বাবা-মা হয়তো এই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করবে। তবে এর জন্য কোনো শাস্তি নির্ধারণ করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘এটি নিখুঁত নাও হতে পারে, কিন্তু সমাজকে জানাতে হবে—কোন আচরণটি গ্রহণযোগ্য।’
অস্ট্রেলিয়ার আইন অনুযায়ী—প্ল্যাটফর্মগুলোকে দেখাতে হবে তারা ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে এবং নতুন অ্যাকাউন্ট খোলায় বাধা দিতে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা নিয়েছে। তা না হলে প্রায় ৫ কোটি অস্ট্রেলিয়ান ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
সিএনএন জানিয়েছে, পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ‘স্ন্যাপচ্যাট’ তিন বছরের জন্য অ্যাকাউন্ট স্থগিত রাখবে। ইউটিউব ব্যবহারকারীদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে লগ আউট করবে, তবে লগ ইন না করেও ভিডিও দেখার সুযোগ থেকে যাবে এই মাধ্যমটিতে। টিকটক জানিয়েছে, বয়স যাচাইকরণের মধ্য দিয়েই অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে বন্ধ হবে এবং শিশুদের পোস্ট করা কনটেন্টও আর দেখা যাবে না।
এদিকে নিরাপদ বিবেচনায় ডিসকর্ড, রোবলক্স, গুগল ক্লাসরুম, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব কিডস-সহ আরও কয়েকটি প্ল্যাটফর্ম এখনো অস্ট্রেলিয়ার শিশুদের জন্য উন্মুক্তই রাখা হচ্ছে। তবে ‘রোবলক্স’ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে, কারণ প্ল্যাটফর্মটিতে শিশুদের টার্গেট করা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে।
বয়স যাচাই করার জন্য প্ল্যাটফর্মগুলো লাইভ ভিডিও সেলফি, নথিপত্র বা ইমেইল যাচাইয়ের পদ্ধতি অনুসরণ করবে।
এদিকে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার কিশোরেরা বিকল্প অ্যাপ খুঁজতে শুরু করেছে। এর ফলে ইয়োপে ও লেমন৮–এই দুটি অ্যাপ অল্প সময়েই হাজার হাজার নতুন ব্যবহারকারী পেয়েছে।
সরকার জানিয়েছে, নতুন আইন কার্যকর করার পর শিশুরা বাইরে পর্যাপ্ত সময় কাটাচ্ছে কি না, বই পড়ছে কি না কিংবা মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে কি না—পর্যবেক্ষণ করা হবে। একই সঙ্গে তারা দেখতে চায়—শিশুরা নিষিদ্ধ প্ল্যাটফর্ম ছাড়িয়ে আরও ঝুঁকিপূর্ণ অনলাইন জগতে চলে যাচ্ছে কি না।
এই পুরো প্রক্রিয়াটি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সহযোগিতায় মূল্যায়ন করা হবে এবং বৈশ্বিক নীতিনির্ধারণে সহায়তার জন্য এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

অস্ট্রেলিয়ার লাখ লাখ শিশু বুধবার (১০ ডিসেম্বর) ঘুম থেকে উঠে দেখবে—তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট আর চালু নেই। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে মঙ্গলবার থেকে দেশটিতে ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার আইন কার্যকর হয়েছে। সরকার দাবি করেছে, এই পদক্ষেপ শিশুদের আসক্তিমূলক অ্যালগরিদম, অনলাইন বুলিং ও শিকারিদের হাত থেকে রক্ষা করবে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, সদ্য কার্যকর হওয়া ওই আইনটি ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে নজর কেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ নানা দেশের নীতিনির্ধারকেরা অস্ট্রেলিয়ার এই উদ্যোগকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে ১০টি বড় সামাজিক মাধ্যম—ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, থ্রেডস, স্ন্যাপচ্যাট, ইউটিউব, টিকটক, রেডিট, কিক, টুইচ ও এক্স। এসব প্ল্যাটফর্ম জানিয়েছে, তারা নতুন বয়স যাচাইকরণ প্রযুক্তি ব্যবহার করবে। তবে তাদের কেউ কেউ মনে করে—এত বড় পদক্ষেপ বাস্তবে শিশুদের নিরাপদ করবে কি না, তা এখনো প্রশ্ন।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ জানিয়েছেন, কিছু শিশু ও তাদের বাবা-মা হয়তো এই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করবে। তবে এর জন্য কোনো শাস্তি নির্ধারণ করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘এটি নিখুঁত নাও হতে পারে, কিন্তু সমাজকে জানাতে হবে—কোন আচরণটি গ্রহণযোগ্য।’
অস্ট্রেলিয়ার আইন অনুযায়ী—প্ল্যাটফর্মগুলোকে দেখাতে হবে তারা ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে এবং নতুন অ্যাকাউন্ট খোলায় বাধা দিতে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা নিয়েছে। তা না হলে প্রায় ৫ কোটি অস্ট্রেলিয়ান ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
সিএনএন জানিয়েছে, পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ‘স্ন্যাপচ্যাট’ তিন বছরের জন্য অ্যাকাউন্ট স্থগিত রাখবে। ইউটিউব ব্যবহারকারীদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে লগ আউট করবে, তবে লগ ইন না করেও ভিডিও দেখার সুযোগ থেকে যাবে এই মাধ্যমটিতে। টিকটক জানিয়েছে, বয়স যাচাইকরণের মধ্য দিয়েই অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে বন্ধ হবে এবং শিশুদের পোস্ট করা কনটেন্টও আর দেখা যাবে না।
এদিকে নিরাপদ বিবেচনায় ডিসকর্ড, রোবলক্স, গুগল ক্লাসরুম, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব কিডস-সহ আরও কয়েকটি প্ল্যাটফর্ম এখনো অস্ট্রেলিয়ার শিশুদের জন্য উন্মুক্তই রাখা হচ্ছে। তবে ‘রোবলক্স’ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে, কারণ প্ল্যাটফর্মটিতে শিশুদের টার্গেট করা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে।
বয়স যাচাই করার জন্য প্ল্যাটফর্মগুলো লাইভ ভিডিও সেলফি, নথিপত্র বা ইমেইল যাচাইয়ের পদ্ধতি অনুসরণ করবে।
এদিকে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার কিশোরেরা বিকল্প অ্যাপ খুঁজতে শুরু করেছে। এর ফলে ইয়োপে ও লেমন৮–এই দুটি অ্যাপ অল্প সময়েই হাজার হাজার নতুন ব্যবহারকারী পেয়েছে।
সরকার জানিয়েছে, নতুন আইন কার্যকর করার পর শিশুরা বাইরে পর্যাপ্ত সময় কাটাচ্ছে কি না, বই পড়ছে কি না কিংবা মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে কি না—পর্যবেক্ষণ করা হবে। একই সঙ্গে তারা দেখতে চায়—শিশুরা নিষিদ্ধ প্ল্যাটফর্ম ছাড়িয়ে আরও ঝুঁকিপূর্ণ অনলাইন জগতে চলে যাচ্ছে কি না।
এই পুরো প্রক্রিয়াটি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সহযোগিতায় মূল্যায়ন করা হবে এবং বৈশ্বিক নীতিনির্ধারণে সহায়তার জন্য এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

‘পেগাসাস’ শব্দটি বললে এখন আর গ্রিক পুরাণের ডানাওয়ালা সেই ঘোড়ার ছবি মাথায় আসে না। আসে এক গোপন চোখ ও কানের ছবি। আজকাল বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ওপর রাষ্ট্রীয় নজরদারিতে ব্যবহার করা হচ্ছে পেগাসাস নামের এই স্পাইওয়্যার। ইসরায়েলের এনএসও গ্রুপের তৈরি এই গুপ্তচর সফটওয়্যার শুধু আড়ি পাতাতেই নয়, নির্দিষ্ট নম
২৪ জুলাই ২০২১
যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে মাকে হত্যার পর ছেলের আত্মহত্যার ঘটনায় ওপেনএআই এবং মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবার। অভিযোগে নিহত ৮৩ বছর বয়সী সুজান অ্যাডামসের পরিবার বলছে, ওপেনএআইর এআই চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তাঁর ছেলের ‘প্যারানয়েড ডিলুশনস’ বা বিভ্রান্তিকর বিশ্বাসগুলোকে উসকে দিয়েছে এবং এ কাজ
১ দিন আগে
বেশকিছু নতুন ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। এর মধ্যে রয়েছে মিসড কল মেসেজেস এবং ছবি অ্যানিমেশন ও উন্নত মানের ইমেজ জেনারেশন। মেটা মালিকানাধীন এই ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্মের মতে, তাদের নতুন ফিচার ‘মিসড কল মেসেজেস’ (Missed Call Messages) ফিচারটি প্রচলিত...
১ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হওয়া শুরু হয়েছে। আজ বুধবার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পরপরই দেশজুড়ে ডিজিটাল জগতে এক নতুন লুকোচুরি খেলা শুরু হয়েছে। এই আইন প্রয়োগের প্রথম দিনেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে; একদিকে
৩ দিন আগে