Ajker Patrika

অসম সম্পর্কের করুণ পরিণতি

কামরুল হাসান
আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২০: ০৬
অসম সম্পর্কের করুণ পরিণতি

এই, তুই খুনি! তুই আমার বোনকে খুন করেছিস। 
বয়স্ক লোকটি এভাবেই এক যুবককে বকাঝকা করছেন। যুবকটি সবার মুখের দিকে তাকাচ্ছেন। কিন্তু কিছু বলছেন না। একবার বললেন, ভাইয়া, আমি কেন খুন করতে যাব?
‘ভাইয়া’ ডাক শুনেই খেপে গেলেন লোকটি। আরও জোরে বললেন, তুই আমাকে ভাই ডাকিস ক্যান? আমি তোর কেমন ভাই? লোকটির বকাঝকা থামছে না।

একটু থেমে আবার বলতে শুরু করলেন–তুই আমার বোনের বাড়িতে কোন অধিকারে থাকিস? টাকার লোভে, সম্পদের লোভে? তোকে আমি পুলিশে দেব। বলেই লোকটি সেই যুবককে টানতে টানতে পাশে দাঁড়ানো পুলিশের কাছে নিয়ে গেলেন। এক পুলিশ সদস্য দুজনকে থামিয়ে দিয়ে যুবকটির দিকে তাকিয়ে বললেন, তুমি এখানে দাঁড়াও। যুবকটি কিছু না বলে পুলিশের পাশেই দাঁড়িয়ে রইলেন।

ঘটনা কী হচ্ছে, আমরা তার কিছুই বুঝতে পারছি না। শুধু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছি আর কথা শুনছি।

সে সময় জনকণ্ঠে রিপোর্টারদের প্রতিদিনের মিটিং হতো বেলা ১১টা থেকে। সেই মিটিংয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি, এমন সময় এক সহকর্মী খবর দিলেন, মোহাম্মদপুরে ষাটোর্ধ্ব এক বিদুষী নারী খুন হয়েছেন। আমাকে বলা হলো মিটিং বাদ দিয়ে সেখানে যেতে।

ঘটনাস্থল কোথায়, তা জানার জন্য ফোন দিলাম মোহাম্মদপুর থানার ওসি শহীদুল্লাহকে। তিনি আমার পরিচিত। ফোন পেয়ে বললেন, ‘ডেডবডি ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিকেলে আছে।’ বললেন, তিনি নিজেও সেখানে যাচ্ছেন। এ ঘটনার বছর দুয়েক আগে বাংলাদেশ মেডিকেলের যাত্রা শুরু হয়। হাসপাতালটি সবে নামডাক করেছে। সেই মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখি, সেখান থেকে মরদেহ লাশঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। লাশঘরের পাশে অনেক মানুষের ভিড়। কক্ষের ভেতরে এক নারীর লাশ রাখা। কক্ষের বাইরে এসে দেখা হলো বকাঝকা করা সেই বয়স্ক লোকের সঙ্গে। এটা ১৯৯৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি, সোমবার সকালের ঘটনা।

ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি, মোহাম্মদপুর থানার ওসি আগেই সেখানে পৌঁছে গেছেন। তিনি থাকায় তথ্য জোগাড় একটু  সহজ হলো। বকাঝকা করা লোকটির কাছে গিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিতেই তিনি একটু থামতে বললেন। এরপর ওসিকে দূরে ডেকে নিয়ে অনেকক্ষণ ধরে কথা বললেন। ফিরে নিজের পরিচয় দিয়ে বললেন, তাঁর নাম বজলুর রহমান, পেশায় ডেন্টাল সার্জন। আরেকজন নারীও তাঁর পাশে ছিলেন, তাঁকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বললেন, ও আমার ছোট বোন শামসুন্নাহার। যিনি মারা গেছেন তিনিও আমার বোন। ওর নাম তৌফিকা বেগম। এরপর তিনি তৌফিকা বেগম সম্পর্কে বলতে থাকলেন।

তাঁদের পিতা হাজি মো. ইউসুফ ছিলেন প্রকৌশলী। তাঁরা ধানমন্ডির বাসিন্দা। ৮ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে তৌফিকা বেগম ছিলেন তৃতীয়। তৌফিকা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্রী। দর্শনশাস্ত্রে এমএ করে বৈরুত বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল করতে যান। পরে অক্সফোর্ড থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট করেন। দেশে ফিরে এসে শান্ত নামের এক সেনা কর্মকর্তাকে বিয়ে করেন। বুশরা নামে তাঁদের একটি মেয়ে আছে। সে স্বামীর সঙ্গে ক্যালিফোর্নিয়ায় থাকে। তবে ১৯৬৪ সালে শান্তর সঙ্গে তৌফিকার ছাড়াছাড়ি হয়। এরপর থেকে তিনি একাই ছিলেন।

তৌফিকার পেশা শিক্ষকতা। তিনি কুড়িগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ, ময়মনসিংহ সরকারি মহিলা কলেজ, রংপুর মহিলা কলেজসহ বেশ কিছু কলেজে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি মোহাম্মদপুরের কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউয়ের ৮১ নম্বর বাসার চারতলার ফ্ল্যাটে ওঠেন। এটি তাঁর নিজের ফ্ল্যাট।

এ ঘটনা কী করে জানলেন? প্রশ্ন করতেই বজলুর রহমানের বোন শামসুন্নাহার ইসলাম বললেন, তৌফিকার প্রতিবেশীরা তাঁদের ফোন করেছিলেন। সেই ফোন পেয়ে তাঁরা বাংলাদেশ মেডিকেলে ছুটে আসেন। এসে দেখেন তাঁর বোন মারা গেছেন। তাঁদের সন্দেহ, বোন খুন হয়েছে। বোনের বাসায় ফারুক হোসেন নামে এক যুবক থাকত। সম্পত্তির লোভে সে-ই তাঁর বোনকে খুন করে। তাঁরা ফারুকের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলেও জানালেন।

এবার বোঝা গেল যে যুবককে বয়স্ক লোকটি বকাঝকা করছিলেন, তাঁরই নাম ফারুক হোসেন। আমরা ফারুকের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে শামসুন্নাহার বললেন, তার সব কথা বিশ্বাস করবেন না। সে একজন প্রতারক।

একটু দুরে ফারুক নামের সেই যুবককে দুজন পুলিশ আগলে রেখেছে, যাতে পালাতে না পারে। কিন্তু ফারুককে দেখে মনে হলো তাঁর পালানোর কোনো ইচ্ছেই নেই। ফারুক নির্বিকার, তার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। তিনি কোনো কথা বলছেন না, আবার প্রতিবাদও করছেন না। যুবকটি দেখতে খুবই স্মার্ট, কিন্তু পোশাক-আশাক সাদামাটা। আমি ফারুকের কাছে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে এক পুলিশ সদস্য আপত্তি করলেন। কিন্তু মোহাম্মদপুর থানার ওসির ইশারা পেয়ে তিনি আর কিছু বললেন না।

ফারুকের কাছে জানতে চাইলাম, আপনি কী করেন? বললেন, আগে মোজাইক মিস্ত্রি ছিলাম। এখন কিছুই করি না। তাহলে এই নারীর বাসায় কী কাজ করতেন? তিনি বললেন, বাসায় যা যা করার থাকে সবই করতাম। কীভাবে পরিচয়? জবাবে ফারুক বললেন, ৫ মাস আগে ফ্ল্যাটের মোজাইকের কাজ করতে এসে পরিচয়। যুবকটি খুব মেপে মেপে কথার উত্তর দেন। 
আমাদের এসব প্রশ্নোত্তর সেই পুলিশ সদস্যও শুনছিলেন। তিনি ফারুককে বললেন, ওই মিয়া আসল কথাটা কও না ক্যা? কও। জানতে চাইলাম আসল কথা কী? ফারুক কিছু বলেন না। পুলিশ সদস্যই বললেন, ‘ওই বুড়ি তো এই ছেলেটার বউ’। একটু অবাক হয়ে ফারুকের কাছে জানতে চাইলাম—আপনার বয়স কত? বললেন, ২৯-৩০। আর ওই নারীর? বললেন, ৬২-৬৩। বিয়ে হলো কীভাবে?

এবার মুখ খুললেন ফারুক। বললেন, বাড়িতে দুই মাস ধরে মোজাইকের কাজ করার সময় তৌফিকা বেগমের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। একদিন তৌফিকা বেগম নিজেই তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। ফারুক এই নারীর প্রস্তাব শুনে একটু ভয় পেয়ে যান। কয়েক দিন আসা-যাওয়া বন্ধ করে দেন। পরে তৌফিকা তাঁকে লোক দিয়ে খুঁজে আনেন। ফারুক বললেন, বিয়েতে তিনি রাজি হচ্ছিলেন না। কিন্তু একপর্যায়ে তাঁর মনে হলো এমন জীবন হয়তো তিনি কোনো দিন পাবেন না। একপর্যায়ে রাজি হয়ে যান। কবে বিয়ে হলো? ১৯৯৭ সালের ২৭ অক্টোবর, মোহাম্মদপুর কাজী অফিসে।

বিয়ের পর আপনার জীবন কেমন ছিল? জানতে চাইলে ফারুক বললেন, বিয়ের পর থেকে তৌফিকা বেগম বাইরে বের হতেন না। তিনি বেশির ভাগ সময় ঘরেই থাকতেন। আর বিয়ের পর মোজাইকের কাজ ছেড়ে ফারুকও বাসায় থাকতে শুরু করেন। ঢাকায় তাঁর পরিবারের কেউ থাকে না বলে জানালেন।

তৌফিকা বেগমের মৃত্যু হলো কীভাবে? ফারুক বললেন, রোববার বিকেল থেকে তৌফিকা বেগম বুকে ব্যথা অনুভব করছিলেন। রাতে ব্যথাটা আরও বেড়ে যায়। একপর্যায়ে তিনি বুকে ও পিঠে তেল গরম করে দেন। রাত ২টার সময় সে ব্যথা প্রচণ্ড আকার ধারণ করে। তিনি বাথরুমে গিয়ে গায়ে একটু পানি দিতেই তাঁর নিশ্বাস আটকে যায়। এরপর তিনি বাথরুমের মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন।

তখন আপনি কী করলেন? ফারুক বলেন, তিনি প্রতিবেশীদের খবর দেন। একজন অ্যাম্বুলেন্সের জন্য হাসপাতালে ফোন করেন। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স পাননি। এরপর তিনি রিকশায় করে রাত সাড়ে ৩টার দিকে তাঁকে বাংলাদেশ মেডিকেলে নিয়ে আসেন। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ফারুক বারবার বলছিলেন, ‘আপনারা বিশ্বাস করেন, আমি খুনি না। তাঁকে খুন করে আমার কী লাভ? তাঁর সম্পদের কোনো কিছুই তো আমার নামে নেই।’

বজলুর রহমান লিখিত অভিযোগ করলেন ফারুকের বিরুদ্ধে। পুলিশ একটি খুনের মামলা নিয়ে ফারুককে গ্রেপ্তার করল। তৌফিকা বেগমের লাশ আনা হলো বজলুর রহমানের ধানমন্ডি ১৯ নম্বর রোডের বাসায়। একজন সাব ইন্সপেক্টর সেই লাশের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়ে দিলেন।

হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে এক সাংবাদিক বন্ধুকে নিয়ে গেলাম মোহাম্মদপুরে তৌফিকা যে বাসায় থাকতেন, সেখানে। সেখানে প্রতিবেশীদের বক্তব্য ফারুকের সঙ্গে মিলে গেল। সেখান থেকে খুব অল্প দূরে মোহাম্মদপুরের কাজী অফিস। সেখানে গিয়ে কাজী এমএম আনসার আলীকে পেয়ে গেলাম। তিনি সব শুনে চিনতে পারলেন। বললেন, ৪ মাস আগে এই বিয়ে হয়েছিল। দুজনের বয়সের অসমতা দেখে তিনি প্রথমে রাজি হননি। পরে তৌফিকা বেগমের ইচ্ছায় তিনি রেজিস্ট্রি করান। কাবিননামায় ফারুকের ঠিকানা রয়েছে—গ্রাম দনিয়া, থানা ও জেলা ভোলা। সাক্ষী আছেন ফারুকের ভাই সাইফুল ও ভগ্নিপতি জয়নাল আবেদিন।

পরের দিন ফলোআপ করতে ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে শুনলাম পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড লাশের ময়নাতদন্ত করেছে। তারা মৃতের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন দেখেননি। চিকিৎসকেরা মনে করছেন, এটা স্বাভাবিক মৃত্যু।

দুদিন পরে গেলাম মোহাম্মদপুর থানায়। খুনের মামলায় ফারুককে দুদিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। হাজতের দরজায় উঁকি দিয়ে দেখি ফারুক মেঝেতে বসে আছেন। আমাকে দেখে বললেন, স্যার একটু বলেন, আমি খুন করিনি। পুলিশ আমার কথা শুনছে না। শুধু মারধর করছে। এরপর হাজতের গ্রিল ধরে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেন, পারলেন না। তাঁর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।

ফারুকের এই অবস্থা দেখে আমার খুব মন খারাপ হয়ে গেল। অফিসে আসব বলে থানা থেকে বের হয়ে এলাম। মোটরসাইকেলে স্টার্ট দিতেই আমার চিফ রিপোর্টারের কথা মনে পড়ে গেল–ক্রাইম রিপোর্টারের মন খারাপ করতে নেই।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খুনের পর মোবাইল, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট, ‘গৃহকর্মী আয়েশা’র পরিচয় মেলেনি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৭
ছবি: সিসিটিভির ফুটেজ থেকে নেওয়া
ছবি: সিসিটিভির ফুটেজ থেকে নেওয়া

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।

স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।

মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।

মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সৌদি আরবে অপহরণ, ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি দেশে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।

গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।

গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পুলিশের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২৫, ২০: ২৫
ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। ছবি: আজকের পত্রিকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।

ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’

কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।

পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’

যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’

গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’

ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।

নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।

সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অতি লোভে তাঁতি নষ্ট: ৬০০ কোটি টাকা হারালেন নওগাঁর ৮০০ জন!

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ৩৪
বুধবার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনু। ছবি: সিআইডি
বুধবার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনু। ছবি: সিআইডি

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।

বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।

মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।

প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।

কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।

তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

আজকের রাশিফল: চায়ের বিল না দেওয়া বন্ধুদের সাহায্য করুন, সন্ধ্যার দিকে ভালো খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত