কামরুল হাসান

নভেম্বরের ঠান্ডাটা তখনো জেঁকে বসেনি, কিছুটা তুলতুলে। গায়ে হালকা শীতের কাপড়। মোটরবাইক জোরে চালালেই ঠান্ডা লাগছে। বাইকের পেছনে সহকর্মী বন্ধু আহমেদ দীপু, পায়ের চিকিৎসা করিয়ে কিছুদিন আগে ভারত থেকে ফিরেছে। ইস্কাটনের জনকণ্ঠ ভবন থেকে বাসায় ফিরছি আমরা। দীপুর বাসা শাহজাহানপুরে, সেখানে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে আমি আসব লালমাই ভবন, সিদ্ধেশ্বরীতে। রাত ১১টা কি সাড়ে ১১টা হবে।
মালিবাগ মোড়ে এসে দেখি রাস্তায় পুলিশের বড় বড় গাড়ি। বেশির ভাগই ডিবি বা সিআইডির গাড়ির মতো। রোজই এ পথে যাই। এমনিতে রাতের বেলা মালিবাগ মোড়ের সিআইডি-এসবির অফিসের দিকটা খুব নিরিবিলি থাকে। রাতে এত গাড়ি দেখে একটু অবাক হলাম। বাইকের মুখ ঘুরিয়ে সিআইডির গেটের কাছে গিয়ে দেখি, ভেতরেও অনেক মানুষ। কী হচ্ছে? অচেনা একজনকে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি চোখ বড় করে তাকালেন। একটু পরে গেটের বাইরে পেয়ে গেলাম পরিচিত এক কর্মকর্তার গাড়িচালককে। এত কর্তাসমাগমের কারণ জানতে চাইলে তিনি বললেন, রাতে বড় অভিযান হবে। তবে অভিযানটা কিসের, তা তিনি জানেন না।
সংবাদকর্মীদের জন্য এতটুকু ক্লুই যথেষ্ট। হাতের মুঠোয় অফিসের দেওয়া মোবাইল ফোন। সেই ফোনে কল দিলাম অফিসে। সিনিয়র ফটোসাংবাদিক ইয়াসিন কবীর জয় অফিসেই আছেন। তাঁকে অভিযানের কথা বলতেই বললেন, ‘খাড়াও, আইতাছি।’ মিনিট দশেকের মধ্যে জয় এসে হাজির।
আমরা বসে আছি সিআইডি অফিসের সামনের রাস্তার পশ্চিম পাশের ফুটপাতে। পরিকল্পনা হলো, পুলিশের গাড়ি বের হলেই পিছু নেব, যা থাকে কপালে। কিন্তু গাড়ি আর সহজে বের হয় না। অবশেষে রাত দেড়টার দিকে মনে হলো, সবাই নড়াচড়া করছেন। আমরাও প্রস্তুত। গাড়িগুলো মৌচাক ছেড়ে মগবাজারের দিকে চলে যাচ্ছে। আমরাও গাড়ির পেছনে পেছনে। বহরে গোটা বিশেক গাড়ি। সেই বহর মহাখালী পেরিয়ে গুলশান ১ নম্বরের দিকে এগোতে থাকল। আমরা আর হাল ছাড়ছি না। বহর এসে থামল গুলশান ১০০ নম্বর সড়কের একটি বাড়ির সামনে। মুহূর্তের মধ্যে জনা পঞ্চাশেক পুলিশ সদস্য গাড়ি থেকে নেমে পুরো বাড়ি ঘিরে ফেললেন। এরপর শুরু হলো চিরুনি তল্লাশি। ঘণ্টাখানেক সবাই চুপচাপ। বেরিয়ে এলেন কর্মকর্তারা। মনে হলো তাঁরা বেশ হতাশ। আমরা তখনো বুঝতে পারছি না কিসের অভিযান। কিন্তু লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, বাড়িটি একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির। তিনি সমাজে খুবই পরিচিত।
আমি আর জয় যতটা সম্ভব নিজেদের আড়াল করেই অভিযান দেখছি। কিন্তু এত আড়ালের পরও এক পুলিশ সদস্য আমাদের চিনে ফেললেন। জয়ের হাতে ক্যামেরার ব্যাগ দেখে তিনি এগিয়ে এসে কিছুটা অবাক হয়ে হেসে ফেললেন। তাঁর কাছ থেকে প্রথম জানলাম, এই অভিযান হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি মেজর শরিফুল হক ডালিমকে ধরার জন্য। পুলিশের এক বড় কর্মকর্তার কাছে গোপন সূত্রে খবর এসেছিল, খুনি ডালিম ছদ্মবেশ নিয়ে দেশে এসে ঘোরাফেরা করছেন। তিনি গুলশান এলাকার কোনো এক বাসায় আস্তানা গেড়েছেন। তাঁকে ধরতেই এই বিশাল গাড়িবহর নামানো হয়েছে। অভিযানের দলটি প্রথমে যে বাড়িতে ঢুকেছিল, সেটা খুনি ডালিমের এক আত্মীয়ের বাড়ি।
কিন্তু সেই বাড়িতে তাঁকে পাওয়া গেল না। এরপর আর কোন কোন বাড়িতে অভিযান হবে, তা তিনি জানেন না। তবে বললেন, সারা রাত আরও অনেক বাড়িতেই অভিযান হবে।
পরিচিত সেই পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে এ খবর শুনে একটু আরাম পেলাম। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, সারা রাত এই অভিযানের পেছনে পেছনে থাকব। কিন্তু অভিযানের কারণ শুনে স্বস্তি পেলেও পুলিশ দলের অস্বস্তির কারণ হয়ে গেলাম একটু পরেই। সেই পুলিশ সদস্য আমাদের উপস্থিতির কথা কর্মকর্তাদের জানিয়ে দিলেন। আমাদের উপস্থিতিতে তাঁরা মহাবিরক্ত।
১০০ নম্বর সড়ক থেকে বেরিয়ে এবার পুলিশের বহর যাচ্ছে গুলশান থানার দিকে। গুলশান ১ ও ২ নম্বরের মাঝামাঝি একটি বাড়িতে ছিল গুলশান থানা। গাড়ির বহর গিয়ে সেখানে থামল। আমরাও গেলাম। গুলশান থানার ওসি আমার পরিচিত। তিনি বাইরে আমাদের দেখে একটু অবাক হলেন। তবে কিছু বললেন না। একটু পর এক কনস্টেবল আমাদের কাছে এসে বললেন, থানার ভেতরে বড় স্যার আপনাদের ডাকছেন।
থানা ভবনের নিচতলায় গুলশান থানার ওসির রুমে বসার আর কোনো জায়গা নেই। নানা পদের কর্মকর্তা। একটু ঢুঁ দিতেই মুখ দেখে ফেললেন সেই কর্মকর্তা। তিনি হলেন আবদুল হান্নান খান। সিআইডির বিশেষ সুপার। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদারককারী কর্মকর্তা। পরে তিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক হয়েছিলেন। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর এই ডাকসাইটে কর্মকর্তা মারা যান। হান্নান খান আমার সুপরিচিত, তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘ওই মিয়া, কী শুরু করছ? একটা কাজও আরামে করতে দিবা না?’ আমি বললাম, কিছুই তো করিনি। কথা শুনে হেসে ফেললেন। বললেন, ‘দেখো মিয়া, একটা মামলার পেছনে কত মানুষের পরিশ্রম থাকে, কত কষ্ট থাকে। তোমরা তো দু লাইন লিখেই খালাস!’ হান্নান খানের পাশের লোকটির মুখ গম্ভীর। তিনি আবদুল কাহার আকন্দ। আমরা দলে থাকি, সেটা তিনি কোনোভাবেই চান না।
হান্নান খান আমাদের শর্ত দিলেন, দলের সঙ্গে থাকা যাবে, তবে অনুমতি ছাড়া ছবি তোলা যাবে না, নোটও করা যাবে না। আমরা তাঁর সব শর্ত মেনে নিলাম। সঙ্গে থাকার অনুমতি মিলল।
পরের অভিযান শুরু ৩০ মিনিট পরে। এবার গাড়িবহর চলল গুলশান ২ নম্বর ছাড়িয়ে উত্তর দিকে। একটি বাড়ির সামনে গিয়ে একদল পুলিশ চোখের পলকে বাড়িটি ঘিরে ফেলল। আরেক দল ভেতরে গিয়ে তল্লাশি শুরু করল। সেই বাড়ি এক গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর। তাঁর ভাই তখনকার বড় নেতা। একটু পরে সেখানে এলেন নামকরা এক টিভি উপস্থাপক। ঘণ্টাখানেক পরে শুরু হলো হইচই। কী হচ্ছে তা বোঝার জন্য আমরা ঢুকলাম বাড়ির ভেতরে। দেখি পুলিশের দলটিকে তাঁরা সমানে বকাঝকা করছেন। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও ফোন করা হয়েছে। আমাদের ভেতরে ঢুকতে দেখে একজনের ইশারা পেয়ে দারোয়ান ভেতর থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে দিলেন। আমরা চাইলেও আর বের হতে পারব না।
দেখি, গৃহকর্তা আর তাঁর বন্ধুরা সবাই মিলে পুলিশকে ভর্ৎসনা করছেন আর ভুল অভিযানের জন্য কৈফিয়ত চাইছেন। পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোলাটে হচ্ছে। আমরা যে বের হব, তারও উপায় নেই। পুলিশের সঙ্গে সাংবাদিক দেখে গৃহকর্তার রাগ আরও চড়ে গেছে। তিনি যা মুখে এল, তা-ই বলতে থাকলেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার তাঁকে অনুরোধ করে ঠান্ডা হতে বললেও তিনি শুনছেন না। একপর্যায়ে তাঁকে বলা হলো, একটি ভুল খবরে এই অভিযান হয়েছে। এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হচ্ছে।
তারপরও গৃহকর্তা নাছোড়। শর্ত জুড়ে দিলেন, মুচলেকা না দিলে তিনি কাউকে বের হতে দেবেন না। সবাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করছেন। অগত্যা মুচলেকা দিতেই হলো। গৃহকর্তা যখন গেটের তালা খুলে দিলেন, তখন ভোর হয়ে গেছে।
১৯৯৮ সালের ২৭ নভেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাতের ঘটনা। পরদিন শনিবার অফিসে এসে যা দেখেছি, লিখে ফেললাম। আর ২৯ নভেম্বর রোববার জনকণ্ঠে তা ছাপা হলো। সেই রিপোর্ট ছাপা হওয়ার পর অবশ্য তেমন কিছুই হয়নি, শুধু আবদুল কাহার আকন্দ ছয় মাস কথা বলেননি আমার সঙ্গে।
আরও পড়ুন:

নভেম্বরের ঠান্ডাটা তখনো জেঁকে বসেনি, কিছুটা তুলতুলে। গায়ে হালকা শীতের কাপড়। মোটরবাইক জোরে চালালেই ঠান্ডা লাগছে। বাইকের পেছনে সহকর্মী বন্ধু আহমেদ দীপু, পায়ের চিকিৎসা করিয়ে কিছুদিন আগে ভারত থেকে ফিরেছে। ইস্কাটনের জনকণ্ঠ ভবন থেকে বাসায় ফিরছি আমরা। দীপুর বাসা শাহজাহানপুরে, সেখানে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে আমি আসব লালমাই ভবন, সিদ্ধেশ্বরীতে। রাত ১১টা কি সাড়ে ১১টা হবে।
মালিবাগ মোড়ে এসে দেখি রাস্তায় পুলিশের বড় বড় গাড়ি। বেশির ভাগই ডিবি বা সিআইডির গাড়ির মতো। রোজই এ পথে যাই। এমনিতে রাতের বেলা মালিবাগ মোড়ের সিআইডি-এসবির অফিসের দিকটা খুব নিরিবিলি থাকে। রাতে এত গাড়ি দেখে একটু অবাক হলাম। বাইকের মুখ ঘুরিয়ে সিআইডির গেটের কাছে গিয়ে দেখি, ভেতরেও অনেক মানুষ। কী হচ্ছে? অচেনা একজনকে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি চোখ বড় করে তাকালেন। একটু পরে গেটের বাইরে পেয়ে গেলাম পরিচিত এক কর্মকর্তার গাড়িচালককে। এত কর্তাসমাগমের কারণ জানতে চাইলে তিনি বললেন, রাতে বড় অভিযান হবে। তবে অভিযানটা কিসের, তা তিনি জানেন না।
সংবাদকর্মীদের জন্য এতটুকু ক্লুই যথেষ্ট। হাতের মুঠোয় অফিসের দেওয়া মোবাইল ফোন। সেই ফোনে কল দিলাম অফিসে। সিনিয়র ফটোসাংবাদিক ইয়াসিন কবীর জয় অফিসেই আছেন। তাঁকে অভিযানের কথা বলতেই বললেন, ‘খাড়াও, আইতাছি।’ মিনিট দশেকের মধ্যে জয় এসে হাজির।
আমরা বসে আছি সিআইডি অফিসের সামনের রাস্তার পশ্চিম পাশের ফুটপাতে। পরিকল্পনা হলো, পুলিশের গাড়ি বের হলেই পিছু নেব, যা থাকে কপালে। কিন্তু গাড়ি আর সহজে বের হয় না। অবশেষে রাত দেড়টার দিকে মনে হলো, সবাই নড়াচড়া করছেন। আমরাও প্রস্তুত। গাড়িগুলো মৌচাক ছেড়ে মগবাজারের দিকে চলে যাচ্ছে। আমরাও গাড়ির পেছনে পেছনে। বহরে গোটা বিশেক গাড়ি। সেই বহর মহাখালী পেরিয়ে গুলশান ১ নম্বরের দিকে এগোতে থাকল। আমরা আর হাল ছাড়ছি না। বহর এসে থামল গুলশান ১০০ নম্বর সড়কের একটি বাড়ির সামনে। মুহূর্তের মধ্যে জনা পঞ্চাশেক পুলিশ সদস্য গাড়ি থেকে নেমে পুরো বাড়ি ঘিরে ফেললেন। এরপর শুরু হলো চিরুনি তল্লাশি। ঘণ্টাখানেক সবাই চুপচাপ। বেরিয়ে এলেন কর্মকর্তারা। মনে হলো তাঁরা বেশ হতাশ। আমরা তখনো বুঝতে পারছি না কিসের অভিযান। কিন্তু লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, বাড়িটি একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির। তিনি সমাজে খুবই পরিচিত।
আমি আর জয় যতটা সম্ভব নিজেদের আড়াল করেই অভিযান দেখছি। কিন্তু এত আড়ালের পরও এক পুলিশ সদস্য আমাদের চিনে ফেললেন। জয়ের হাতে ক্যামেরার ব্যাগ দেখে তিনি এগিয়ে এসে কিছুটা অবাক হয়ে হেসে ফেললেন। তাঁর কাছ থেকে প্রথম জানলাম, এই অভিযান হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি মেজর শরিফুল হক ডালিমকে ধরার জন্য। পুলিশের এক বড় কর্মকর্তার কাছে গোপন সূত্রে খবর এসেছিল, খুনি ডালিম ছদ্মবেশ নিয়ে দেশে এসে ঘোরাফেরা করছেন। তিনি গুলশান এলাকার কোনো এক বাসায় আস্তানা গেড়েছেন। তাঁকে ধরতেই এই বিশাল গাড়িবহর নামানো হয়েছে। অভিযানের দলটি প্রথমে যে বাড়িতে ঢুকেছিল, সেটা খুনি ডালিমের এক আত্মীয়ের বাড়ি।
কিন্তু সেই বাড়িতে তাঁকে পাওয়া গেল না। এরপর আর কোন কোন বাড়িতে অভিযান হবে, তা তিনি জানেন না। তবে বললেন, সারা রাত আরও অনেক বাড়িতেই অভিযান হবে।
পরিচিত সেই পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে এ খবর শুনে একটু আরাম পেলাম। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, সারা রাত এই অভিযানের পেছনে পেছনে থাকব। কিন্তু অভিযানের কারণ শুনে স্বস্তি পেলেও পুলিশ দলের অস্বস্তির কারণ হয়ে গেলাম একটু পরেই। সেই পুলিশ সদস্য আমাদের উপস্থিতির কথা কর্মকর্তাদের জানিয়ে দিলেন। আমাদের উপস্থিতিতে তাঁরা মহাবিরক্ত।
১০০ নম্বর সড়ক থেকে বেরিয়ে এবার পুলিশের বহর যাচ্ছে গুলশান থানার দিকে। গুলশান ১ ও ২ নম্বরের মাঝামাঝি একটি বাড়িতে ছিল গুলশান থানা। গাড়ির বহর গিয়ে সেখানে থামল। আমরাও গেলাম। গুলশান থানার ওসি আমার পরিচিত। তিনি বাইরে আমাদের দেখে একটু অবাক হলেন। তবে কিছু বললেন না। একটু পর এক কনস্টেবল আমাদের কাছে এসে বললেন, থানার ভেতরে বড় স্যার আপনাদের ডাকছেন।
থানা ভবনের নিচতলায় গুলশান থানার ওসির রুমে বসার আর কোনো জায়গা নেই। নানা পদের কর্মকর্তা। একটু ঢুঁ দিতেই মুখ দেখে ফেললেন সেই কর্মকর্তা। তিনি হলেন আবদুল হান্নান খান। সিআইডির বিশেষ সুপার। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদারককারী কর্মকর্তা। পরে তিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক হয়েছিলেন। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর এই ডাকসাইটে কর্মকর্তা মারা যান। হান্নান খান আমার সুপরিচিত, তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘ওই মিয়া, কী শুরু করছ? একটা কাজও আরামে করতে দিবা না?’ আমি বললাম, কিছুই তো করিনি। কথা শুনে হেসে ফেললেন। বললেন, ‘দেখো মিয়া, একটা মামলার পেছনে কত মানুষের পরিশ্রম থাকে, কত কষ্ট থাকে। তোমরা তো দু লাইন লিখেই খালাস!’ হান্নান খানের পাশের লোকটির মুখ গম্ভীর। তিনি আবদুল কাহার আকন্দ। আমরা দলে থাকি, সেটা তিনি কোনোভাবেই চান না।
হান্নান খান আমাদের শর্ত দিলেন, দলের সঙ্গে থাকা যাবে, তবে অনুমতি ছাড়া ছবি তোলা যাবে না, নোটও করা যাবে না। আমরা তাঁর সব শর্ত মেনে নিলাম। সঙ্গে থাকার অনুমতি মিলল।
পরের অভিযান শুরু ৩০ মিনিট পরে। এবার গাড়িবহর চলল গুলশান ২ নম্বর ছাড়িয়ে উত্তর দিকে। একটি বাড়ির সামনে গিয়ে একদল পুলিশ চোখের পলকে বাড়িটি ঘিরে ফেলল। আরেক দল ভেতরে গিয়ে তল্লাশি শুরু করল। সেই বাড়ি এক গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর। তাঁর ভাই তখনকার বড় নেতা। একটু পরে সেখানে এলেন নামকরা এক টিভি উপস্থাপক। ঘণ্টাখানেক পরে শুরু হলো হইচই। কী হচ্ছে তা বোঝার জন্য আমরা ঢুকলাম বাড়ির ভেতরে। দেখি পুলিশের দলটিকে তাঁরা সমানে বকাঝকা করছেন। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও ফোন করা হয়েছে। আমাদের ভেতরে ঢুকতে দেখে একজনের ইশারা পেয়ে দারোয়ান ভেতর থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে দিলেন। আমরা চাইলেও আর বের হতে পারব না।
দেখি, গৃহকর্তা আর তাঁর বন্ধুরা সবাই মিলে পুলিশকে ভর্ৎসনা করছেন আর ভুল অভিযানের জন্য কৈফিয়ত চাইছেন। পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোলাটে হচ্ছে। আমরা যে বের হব, তারও উপায় নেই। পুলিশের সঙ্গে সাংবাদিক দেখে গৃহকর্তার রাগ আরও চড়ে গেছে। তিনি যা মুখে এল, তা-ই বলতে থাকলেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার তাঁকে অনুরোধ করে ঠান্ডা হতে বললেও তিনি শুনছেন না। একপর্যায়ে তাঁকে বলা হলো, একটি ভুল খবরে এই অভিযান হয়েছে। এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হচ্ছে।
তারপরও গৃহকর্তা নাছোড়। শর্ত জুড়ে দিলেন, মুচলেকা না দিলে তিনি কাউকে বের হতে দেবেন না। সবাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করছেন। অগত্যা মুচলেকা দিতেই হলো। গৃহকর্তা যখন গেটের তালা খুলে দিলেন, তখন ভোর হয়ে গেছে।
১৯৯৮ সালের ২৭ নভেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাতের ঘটনা। পরদিন শনিবার অফিসে এসে যা দেখেছি, লিখে ফেললাম। আর ২৯ নভেম্বর রোববার জনকণ্ঠে তা ছাপা হলো। সেই রিপোর্ট ছাপা হওয়ার পর অবশ্য তেমন কিছুই হয়নি, শুধু আবদুল কাহার আকন্দ ছয় মাস কথা বলেননি আমার সঙ্গে।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

নভেম্বরের ঠান্ডাটা তখনো জেঁকে বসেনি, কিছুটা তুলতুলে। গায়ে হালকা শীতের কাপড়। মোটরবাইক জোরে চালালেই ঠান্ডা লাগছে। বাইকের পেছনে সহকর্মী বন্ধু আহমেদ দীপু, পায়ের চিকিৎসা করিয়ে কিছুদিন আগে ভারত থেকে ফিরেছে। ইস্কাটনের জনকণ্ঠ ভবন থেকে বাসায় ফিরছি আমরা। দীপুর বাসা শাহজাহানপুরে, সেখানে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে আমি আসব লালমাই ভবন, সিদ্ধেশ্বরীতে। রাত ১১টা কি সাড়ে ১১টা হবে।
মালিবাগ মোড়ে এসে দেখি রাস্তায় পুলিশের বড় বড় গাড়ি। বেশির ভাগই ডিবি বা সিআইডির গাড়ির মতো। রোজই এ পথে যাই। এমনিতে রাতের বেলা মালিবাগ মোড়ের সিআইডি-এসবির অফিসের দিকটা খুব নিরিবিলি থাকে। রাতে এত গাড়ি দেখে একটু অবাক হলাম। বাইকের মুখ ঘুরিয়ে সিআইডির গেটের কাছে গিয়ে দেখি, ভেতরেও অনেক মানুষ। কী হচ্ছে? অচেনা একজনকে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি চোখ বড় করে তাকালেন। একটু পরে গেটের বাইরে পেয়ে গেলাম পরিচিত এক কর্মকর্তার গাড়িচালককে। এত কর্তাসমাগমের কারণ জানতে চাইলে তিনি বললেন, রাতে বড় অভিযান হবে। তবে অভিযানটা কিসের, তা তিনি জানেন না।
সংবাদকর্মীদের জন্য এতটুকু ক্লুই যথেষ্ট। হাতের মুঠোয় অফিসের দেওয়া মোবাইল ফোন। সেই ফোনে কল দিলাম অফিসে। সিনিয়র ফটোসাংবাদিক ইয়াসিন কবীর জয় অফিসেই আছেন। তাঁকে অভিযানের কথা বলতেই বললেন, ‘খাড়াও, আইতাছি।’ মিনিট দশেকের মধ্যে জয় এসে হাজির।
আমরা বসে আছি সিআইডি অফিসের সামনের রাস্তার পশ্চিম পাশের ফুটপাতে। পরিকল্পনা হলো, পুলিশের গাড়ি বের হলেই পিছু নেব, যা থাকে কপালে। কিন্তু গাড়ি আর সহজে বের হয় না। অবশেষে রাত দেড়টার দিকে মনে হলো, সবাই নড়াচড়া করছেন। আমরাও প্রস্তুত। গাড়িগুলো মৌচাক ছেড়ে মগবাজারের দিকে চলে যাচ্ছে। আমরাও গাড়ির পেছনে পেছনে। বহরে গোটা বিশেক গাড়ি। সেই বহর মহাখালী পেরিয়ে গুলশান ১ নম্বরের দিকে এগোতে থাকল। আমরা আর হাল ছাড়ছি না। বহর এসে থামল গুলশান ১০০ নম্বর সড়কের একটি বাড়ির সামনে। মুহূর্তের মধ্যে জনা পঞ্চাশেক পুলিশ সদস্য গাড়ি থেকে নেমে পুরো বাড়ি ঘিরে ফেললেন। এরপর শুরু হলো চিরুনি তল্লাশি। ঘণ্টাখানেক সবাই চুপচাপ। বেরিয়ে এলেন কর্মকর্তারা। মনে হলো তাঁরা বেশ হতাশ। আমরা তখনো বুঝতে পারছি না কিসের অভিযান। কিন্তু লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, বাড়িটি একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির। তিনি সমাজে খুবই পরিচিত।
আমি আর জয় যতটা সম্ভব নিজেদের আড়াল করেই অভিযান দেখছি। কিন্তু এত আড়ালের পরও এক পুলিশ সদস্য আমাদের চিনে ফেললেন। জয়ের হাতে ক্যামেরার ব্যাগ দেখে তিনি এগিয়ে এসে কিছুটা অবাক হয়ে হেসে ফেললেন। তাঁর কাছ থেকে প্রথম জানলাম, এই অভিযান হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি মেজর শরিফুল হক ডালিমকে ধরার জন্য। পুলিশের এক বড় কর্মকর্তার কাছে গোপন সূত্রে খবর এসেছিল, খুনি ডালিম ছদ্মবেশ নিয়ে দেশে এসে ঘোরাফেরা করছেন। তিনি গুলশান এলাকার কোনো এক বাসায় আস্তানা গেড়েছেন। তাঁকে ধরতেই এই বিশাল গাড়িবহর নামানো হয়েছে। অভিযানের দলটি প্রথমে যে বাড়িতে ঢুকেছিল, সেটা খুনি ডালিমের এক আত্মীয়ের বাড়ি।
কিন্তু সেই বাড়িতে তাঁকে পাওয়া গেল না। এরপর আর কোন কোন বাড়িতে অভিযান হবে, তা তিনি জানেন না। তবে বললেন, সারা রাত আরও অনেক বাড়িতেই অভিযান হবে।
পরিচিত সেই পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে এ খবর শুনে একটু আরাম পেলাম। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, সারা রাত এই অভিযানের পেছনে পেছনে থাকব। কিন্তু অভিযানের কারণ শুনে স্বস্তি পেলেও পুলিশ দলের অস্বস্তির কারণ হয়ে গেলাম একটু পরেই। সেই পুলিশ সদস্য আমাদের উপস্থিতির কথা কর্মকর্তাদের জানিয়ে দিলেন। আমাদের উপস্থিতিতে তাঁরা মহাবিরক্ত।
১০০ নম্বর সড়ক থেকে বেরিয়ে এবার পুলিশের বহর যাচ্ছে গুলশান থানার দিকে। গুলশান ১ ও ২ নম্বরের মাঝামাঝি একটি বাড়িতে ছিল গুলশান থানা। গাড়ির বহর গিয়ে সেখানে থামল। আমরাও গেলাম। গুলশান থানার ওসি আমার পরিচিত। তিনি বাইরে আমাদের দেখে একটু অবাক হলেন। তবে কিছু বললেন না। একটু পর এক কনস্টেবল আমাদের কাছে এসে বললেন, থানার ভেতরে বড় স্যার আপনাদের ডাকছেন।
থানা ভবনের নিচতলায় গুলশান থানার ওসির রুমে বসার আর কোনো জায়গা নেই। নানা পদের কর্মকর্তা। একটু ঢুঁ দিতেই মুখ দেখে ফেললেন সেই কর্মকর্তা। তিনি হলেন আবদুল হান্নান খান। সিআইডির বিশেষ সুপার। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদারককারী কর্মকর্তা। পরে তিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক হয়েছিলেন। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর এই ডাকসাইটে কর্মকর্তা মারা যান। হান্নান খান আমার সুপরিচিত, তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘ওই মিয়া, কী শুরু করছ? একটা কাজও আরামে করতে দিবা না?’ আমি বললাম, কিছুই তো করিনি। কথা শুনে হেসে ফেললেন। বললেন, ‘দেখো মিয়া, একটা মামলার পেছনে কত মানুষের পরিশ্রম থাকে, কত কষ্ট থাকে। তোমরা তো দু লাইন লিখেই খালাস!’ হান্নান খানের পাশের লোকটির মুখ গম্ভীর। তিনি আবদুল কাহার আকন্দ। আমরা দলে থাকি, সেটা তিনি কোনোভাবেই চান না।
হান্নান খান আমাদের শর্ত দিলেন, দলের সঙ্গে থাকা যাবে, তবে অনুমতি ছাড়া ছবি তোলা যাবে না, নোটও করা যাবে না। আমরা তাঁর সব শর্ত মেনে নিলাম। সঙ্গে থাকার অনুমতি মিলল।
পরের অভিযান শুরু ৩০ মিনিট পরে। এবার গাড়িবহর চলল গুলশান ২ নম্বর ছাড়িয়ে উত্তর দিকে। একটি বাড়ির সামনে গিয়ে একদল পুলিশ চোখের পলকে বাড়িটি ঘিরে ফেলল। আরেক দল ভেতরে গিয়ে তল্লাশি শুরু করল। সেই বাড়ি এক গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর। তাঁর ভাই তখনকার বড় নেতা। একটু পরে সেখানে এলেন নামকরা এক টিভি উপস্থাপক। ঘণ্টাখানেক পরে শুরু হলো হইচই। কী হচ্ছে তা বোঝার জন্য আমরা ঢুকলাম বাড়ির ভেতরে। দেখি পুলিশের দলটিকে তাঁরা সমানে বকাঝকা করছেন। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও ফোন করা হয়েছে। আমাদের ভেতরে ঢুকতে দেখে একজনের ইশারা পেয়ে দারোয়ান ভেতর থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে দিলেন। আমরা চাইলেও আর বের হতে পারব না।
দেখি, গৃহকর্তা আর তাঁর বন্ধুরা সবাই মিলে পুলিশকে ভর্ৎসনা করছেন আর ভুল অভিযানের জন্য কৈফিয়ত চাইছেন। পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোলাটে হচ্ছে। আমরা যে বের হব, তারও উপায় নেই। পুলিশের সঙ্গে সাংবাদিক দেখে গৃহকর্তার রাগ আরও চড়ে গেছে। তিনি যা মুখে এল, তা-ই বলতে থাকলেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার তাঁকে অনুরোধ করে ঠান্ডা হতে বললেও তিনি শুনছেন না। একপর্যায়ে তাঁকে বলা হলো, একটি ভুল খবরে এই অভিযান হয়েছে। এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হচ্ছে।
তারপরও গৃহকর্তা নাছোড়। শর্ত জুড়ে দিলেন, মুচলেকা না দিলে তিনি কাউকে বের হতে দেবেন না। সবাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করছেন। অগত্যা মুচলেকা দিতেই হলো। গৃহকর্তা যখন গেটের তালা খুলে দিলেন, তখন ভোর হয়ে গেছে।
১৯৯৮ সালের ২৭ নভেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাতের ঘটনা। পরদিন শনিবার অফিসে এসে যা দেখেছি, লিখে ফেললাম। আর ২৯ নভেম্বর রোববার জনকণ্ঠে তা ছাপা হলো। সেই রিপোর্ট ছাপা হওয়ার পর অবশ্য তেমন কিছুই হয়নি, শুধু আবদুল কাহার আকন্দ ছয় মাস কথা বলেননি আমার সঙ্গে।
আরও পড়ুন:

নভেম্বরের ঠান্ডাটা তখনো জেঁকে বসেনি, কিছুটা তুলতুলে। গায়ে হালকা শীতের কাপড়। মোটরবাইক জোরে চালালেই ঠান্ডা লাগছে। বাইকের পেছনে সহকর্মী বন্ধু আহমেদ দীপু, পায়ের চিকিৎসা করিয়ে কিছুদিন আগে ভারত থেকে ফিরেছে। ইস্কাটনের জনকণ্ঠ ভবন থেকে বাসায় ফিরছি আমরা। দীপুর বাসা শাহজাহানপুরে, সেখানে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে আমি আসব লালমাই ভবন, সিদ্ধেশ্বরীতে। রাত ১১টা কি সাড়ে ১১টা হবে।
মালিবাগ মোড়ে এসে দেখি রাস্তায় পুলিশের বড় বড় গাড়ি। বেশির ভাগই ডিবি বা সিআইডির গাড়ির মতো। রোজই এ পথে যাই। এমনিতে রাতের বেলা মালিবাগ মোড়ের সিআইডি-এসবির অফিসের দিকটা খুব নিরিবিলি থাকে। রাতে এত গাড়ি দেখে একটু অবাক হলাম। বাইকের মুখ ঘুরিয়ে সিআইডির গেটের কাছে গিয়ে দেখি, ভেতরেও অনেক মানুষ। কী হচ্ছে? অচেনা একজনকে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি চোখ বড় করে তাকালেন। একটু পরে গেটের বাইরে পেয়ে গেলাম পরিচিত এক কর্মকর্তার গাড়িচালককে। এত কর্তাসমাগমের কারণ জানতে চাইলে তিনি বললেন, রাতে বড় অভিযান হবে। তবে অভিযানটা কিসের, তা তিনি জানেন না।
সংবাদকর্মীদের জন্য এতটুকু ক্লুই যথেষ্ট। হাতের মুঠোয় অফিসের দেওয়া মোবাইল ফোন। সেই ফোনে কল দিলাম অফিসে। সিনিয়র ফটোসাংবাদিক ইয়াসিন কবীর জয় অফিসেই আছেন। তাঁকে অভিযানের কথা বলতেই বললেন, ‘খাড়াও, আইতাছি।’ মিনিট দশেকের মধ্যে জয় এসে হাজির।
আমরা বসে আছি সিআইডি অফিসের সামনের রাস্তার পশ্চিম পাশের ফুটপাতে। পরিকল্পনা হলো, পুলিশের গাড়ি বের হলেই পিছু নেব, যা থাকে কপালে। কিন্তু গাড়ি আর সহজে বের হয় না। অবশেষে রাত দেড়টার দিকে মনে হলো, সবাই নড়াচড়া করছেন। আমরাও প্রস্তুত। গাড়িগুলো মৌচাক ছেড়ে মগবাজারের দিকে চলে যাচ্ছে। আমরাও গাড়ির পেছনে পেছনে। বহরে গোটা বিশেক গাড়ি। সেই বহর মহাখালী পেরিয়ে গুলশান ১ নম্বরের দিকে এগোতে থাকল। আমরা আর হাল ছাড়ছি না। বহর এসে থামল গুলশান ১০০ নম্বর সড়কের একটি বাড়ির সামনে। মুহূর্তের মধ্যে জনা পঞ্চাশেক পুলিশ সদস্য গাড়ি থেকে নেমে পুরো বাড়ি ঘিরে ফেললেন। এরপর শুরু হলো চিরুনি তল্লাশি। ঘণ্টাখানেক সবাই চুপচাপ। বেরিয়ে এলেন কর্মকর্তারা। মনে হলো তাঁরা বেশ হতাশ। আমরা তখনো বুঝতে পারছি না কিসের অভিযান। কিন্তু লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, বাড়িটি একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির। তিনি সমাজে খুবই পরিচিত।
আমি আর জয় যতটা সম্ভব নিজেদের আড়াল করেই অভিযান দেখছি। কিন্তু এত আড়ালের পরও এক পুলিশ সদস্য আমাদের চিনে ফেললেন। জয়ের হাতে ক্যামেরার ব্যাগ দেখে তিনি এগিয়ে এসে কিছুটা অবাক হয়ে হেসে ফেললেন। তাঁর কাছ থেকে প্রথম জানলাম, এই অভিযান হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি মেজর শরিফুল হক ডালিমকে ধরার জন্য। পুলিশের এক বড় কর্মকর্তার কাছে গোপন সূত্রে খবর এসেছিল, খুনি ডালিম ছদ্মবেশ নিয়ে দেশে এসে ঘোরাফেরা করছেন। তিনি গুলশান এলাকার কোনো এক বাসায় আস্তানা গেড়েছেন। তাঁকে ধরতেই এই বিশাল গাড়িবহর নামানো হয়েছে। অভিযানের দলটি প্রথমে যে বাড়িতে ঢুকেছিল, সেটা খুনি ডালিমের এক আত্মীয়ের বাড়ি।
কিন্তু সেই বাড়িতে তাঁকে পাওয়া গেল না। এরপর আর কোন কোন বাড়িতে অভিযান হবে, তা তিনি জানেন না। তবে বললেন, সারা রাত আরও অনেক বাড়িতেই অভিযান হবে।
পরিচিত সেই পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে এ খবর শুনে একটু আরাম পেলাম। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, সারা রাত এই অভিযানের পেছনে পেছনে থাকব। কিন্তু অভিযানের কারণ শুনে স্বস্তি পেলেও পুলিশ দলের অস্বস্তির কারণ হয়ে গেলাম একটু পরেই। সেই পুলিশ সদস্য আমাদের উপস্থিতির কথা কর্মকর্তাদের জানিয়ে দিলেন। আমাদের উপস্থিতিতে তাঁরা মহাবিরক্ত।
১০০ নম্বর সড়ক থেকে বেরিয়ে এবার পুলিশের বহর যাচ্ছে গুলশান থানার দিকে। গুলশান ১ ও ২ নম্বরের মাঝামাঝি একটি বাড়িতে ছিল গুলশান থানা। গাড়ির বহর গিয়ে সেখানে থামল। আমরাও গেলাম। গুলশান থানার ওসি আমার পরিচিত। তিনি বাইরে আমাদের দেখে একটু অবাক হলেন। তবে কিছু বললেন না। একটু পর এক কনস্টেবল আমাদের কাছে এসে বললেন, থানার ভেতরে বড় স্যার আপনাদের ডাকছেন।
থানা ভবনের নিচতলায় গুলশান থানার ওসির রুমে বসার আর কোনো জায়গা নেই। নানা পদের কর্মকর্তা। একটু ঢুঁ দিতেই মুখ দেখে ফেললেন সেই কর্মকর্তা। তিনি হলেন আবদুল হান্নান খান। সিআইডির বিশেষ সুপার। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদারককারী কর্মকর্তা। পরে তিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক হয়েছিলেন। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর এই ডাকসাইটে কর্মকর্তা মারা যান। হান্নান খান আমার সুপরিচিত, তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘ওই মিয়া, কী শুরু করছ? একটা কাজও আরামে করতে দিবা না?’ আমি বললাম, কিছুই তো করিনি। কথা শুনে হেসে ফেললেন। বললেন, ‘দেখো মিয়া, একটা মামলার পেছনে কত মানুষের পরিশ্রম থাকে, কত কষ্ট থাকে। তোমরা তো দু লাইন লিখেই খালাস!’ হান্নান খানের পাশের লোকটির মুখ গম্ভীর। তিনি আবদুল কাহার আকন্দ। আমরা দলে থাকি, সেটা তিনি কোনোভাবেই চান না।
হান্নান খান আমাদের শর্ত দিলেন, দলের সঙ্গে থাকা যাবে, তবে অনুমতি ছাড়া ছবি তোলা যাবে না, নোটও করা যাবে না। আমরা তাঁর সব শর্ত মেনে নিলাম। সঙ্গে থাকার অনুমতি মিলল।
পরের অভিযান শুরু ৩০ মিনিট পরে। এবার গাড়িবহর চলল গুলশান ২ নম্বর ছাড়িয়ে উত্তর দিকে। একটি বাড়ির সামনে গিয়ে একদল পুলিশ চোখের পলকে বাড়িটি ঘিরে ফেলল। আরেক দল ভেতরে গিয়ে তল্লাশি শুরু করল। সেই বাড়ি এক গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর। তাঁর ভাই তখনকার বড় নেতা। একটু পরে সেখানে এলেন নামকরা এক টিভি উপস্থাপক। ঘণ্টাখানেক পরে শুরু হলো হইচই। কী হচ্ছে তা বোঝার জন্য আমরা ঢুকলাম বাড়ির ভেতরে। দেখি পুলিশের দলটিকে তাঁরা সমানে বকাঝকা করছেন। এর মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও ফোন করা হয়েছে। আমাদের ভেতরে ঢুকতে দেখে একজনের ইশারা পেয়ে দারোয়ান ভেতর থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে দিলেন। আমরা চাইলেও আর বের হতে পারব না।
দেখি, গৃহকর্তা আর তাঁর বন্ধুরা সবাই মিলে পুলিশকে ভর্ৎসনা করছেন আর ভুল অভিযানের জন্য কৈফিয়ত চাইছেন। পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোলাটে হচ্ছে। আমরা যে বের হব, তারও উপায় নেই। পুলিশের সঙ্গে সাংবাদিক দেখে গৃহকর্তার রাগ আরও চড়ে গেছে। তিনি যা মুখে এল, তা-ই বলতে থাকলেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার তাঁকে অনুরোধ করে ঠান্ডা হতে বললেও তিনি শুনছেন না। একপর্যায়ে তাঁকে বলা হলো, একটি ভুল খবরে এই অভিযান হয়েছে। এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হচ্ছে।
তারপরও গৃহকর্তা নাছোড়। শর্ত জুড়ে দিলেন, মুচলেকা না দিলে তিনি কাউকে বের হতে দেবেন না। সবাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করছেন। অগত্যা মুচলেকা দিতেই হলো। গৃহকর্তা যখন গেটের তালা খুলে দিলেন, তখন ভোর হয়ে গেছে।
১৯৯৮ সালের ২৭ নভেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাতের ঘটনা। পরদিন শনিবার অফিসে এসে যা দেখেছি, লিখে ফেললাম। আর ২৯ নভেম্বর রোববার জনকণ্ঠে তা ছাপা হলো। সেই রিপোর্ট ছাপা হওয়ার পর অবশ্য তেমন কিছুই হয়নি, শুধু আবদুল কাহার আকন্দ ছয় মাস কথা বলেননি আমার সঙ্গে।
আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

নভেম্বরের ঠান্ডাটা তখনো জেঁকে বসেনি, কিছুটা তুলতুলে। গায়ে হালকা শীতের কাপড়। মোটরবাইক জোরে চালালেই ঠান্ডা লাগছে। বাইকের পেছনে সহকর্মী বন্ধু আহমেদ দীপু, পায়ের চিকিৎসা করে কিছুদিন আগে ভারত থেকে ফিরেছে। ইস্কাটনের জনকণ্ঠ ভবন থেকে বাসায় ফিরছি আমরা। দীপুর বাসা শাহজাহানপুরে, সেখানে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে আমি আসব
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

নভেম্বরের ঠান্ডাটা তখনো জেঁকে বসেনি, কিছুটা তুলতুলে। গায়ে হালকা শীতের কাপড়। মোটরবাইক জোরে চালালেই ঠান্ডা লাগছে। বাইকের পেছনে সহকর্মী বন্ধু আহমেদ দীপু, পায়ের চিকিৎসা করে কিছুদিন আগে ভারত থেকে ফিরেছে। ইস্কাটনের জনকণ্ঠ ভবন থেকে বাসায় ফিরছি আমরা। দীপুর বাসা শাহজাহানপুরে, সেখানে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে আমি আসব
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

নভেম্বরের ঠান্ডাটা তখনো জেঁকে বসেনি, কিছুটা তুলতুলে। গায়ে হালকা শীতের কাপড়। মোটরবাইক জোরে চালালেই ঠান্ডা লাগছে। বাইকের পেছনে সহকর্মী বন্ধু আহমেদ দীপু, পায়ের চিকিৎসা করে কিছুদিন আগে ভারত থেকে ফিরেছে। ইস্কাটনের জনকণ্ঠ ভবন থেকে বাসায় ফিরছি আমরা। দীপুর বাসা শাহজাহানপুরে, সেখানে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে আমি আসব
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নভেম্বরের ঠান্ডাটা তখনো জেঁকে বসেনি, কিছুটা তুলতুলে। গায়ে হালকা শীতের কাপড়। মোটরবাইক জোরে চালালেই ঠান্ডা লাগছে। বাইকের পেছনে সহকর্মী বন্ধু আহমেদ দীপু, পায়ের চিকিৎসা করে কিছুদিন আগে ভারত থেকে ফিরেছে। ইস্কাটনের জনকণ্ঠ ভবন থেকে বাসায় ফিরছি আমরা। দীপুর বাসা শাহজাহানপুরে, সেখানে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে আমি আসব
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে