Ajker Patrika

‘ওরে বাপরে ভূমি অফিস! ওহানে তো ঘুষ ছাড়া কোনো কামই অয়না’

রুদ্র রুহান, বরগুনা
‘ওরে বাপরে ভূমি অফিস! ওহানে তো ঘুষ ছাড়া কোনো কামই অয়না’

ভূমি অফিসের কথা শুনতেই বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের আজাদুল ইসলাম বলে ওঠেন, ‘ওরে বাপরে ভূমি অফিস! ওহানে তো ঘুষ ছাড়া কোনো কামই অয়না।’ গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়েছিলেন জমির দাখিলার জন্য। কিন্তু সেখানের এক কর্মচারীর ঘুষের শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। 

আজাদুল ইসলাম বলেন, ‘মুই একটা দাহিলা (দাখিলা) আনতে ভূমি অফিসে গেছালাম। তহশিলদারের সহকারী পঙ্কজ চন্দ্র মোরে কয় জমি নদী সিকস্তিতে গ্যাছে। জরিপ কইরা হেইয়ার পর দাহিলা দেওন যাইবে। হেরপর মোরো আড়ালে ডাইক্কা কয় ৫ হাজার টাহা দেলে দাহিলা দেতে পারমু। পরে টাহা গুছাইয়া লইয়া গেছি পর মোরে দাহিলা কাইট্টা দেছে। দাহিলায় ল্যাকছে ৫০০ টাহা।’ 

জেলা রাজস্ব বিভাগের তথ্য মতে, বরগুনা জেলায় মোট ২৪টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস, পাঁচটি উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার অফিস, ও জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয় রয়েছে। 

সরেজমিন অনুসন্ধান ও ভুক্তভোগীদের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে শুরু করে উপজেলা ও জেলা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয় পর্যন্ত কোনো কাজে গেলে ঘুষ ছাড়া সে কাজ হয় না। বরং পর্যায়ক্রমে টাকার অঙ্ক বাড়তে থাকে। তৃণমূল পর্যায়ে ভূমি সংক্রান্ত সেবা পেতে প্রথমেই ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন তহশিলদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের বাসিন্দাদের বেশির ভাগই সাধারণত জমির খাজনা দিয়ে দাখিলা নিতে আসেন। এ ছাড়া জমি জমা সংক্রান্ত সাধারণ তথ্য খোঁজ করতে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগাযোগ করেন। আর এখানে এসেই প্রথম বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়, ঘুষ না দিয়ে কেউই কোনো সেবা পান না এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। 

বরগুনা সদর ইউনিয়নে হেউলীবুনিয়া এলাকার আবদুস সত্তার গত সোমবার সকালে দাখিলার জন্য গিয়েছিলেন। নিয়মানুযায়ী জমির খাজনা দিতে চাইলেও তার কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। অগত্যা বাধ্য হয়ে আট হাজার টাকায় তিনি দাখিলা কাটেন আর দাখিলায় খাজনা জমা দেখানো হয় মাত্র ২২০ টাকা। এ বিষয়ে সাত্তার বলেন, ‘এখানে অতিরিক্ত টাকা বা ঘুষ না দিয়ে কাজ আদায় করতে পেরেছে এমন ভাগ্যবান ব্যক্তির কথা আমার জানা নেই। প্রত্যেক এলাকায় ভূমি অফিসের নির্দিষ্ট দালাল আছে। এই দালালদের মাধ্যমে সব কাজ করতে হয়। নয়তো আপনাকে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হবে।’ 

একই অবস্থার কথা জানিয়েছেন বরগুনার ২৪টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভুক্তভোগী সেবা গ্রহীতারা। ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দাখিলা, দাগ-খতিয়ান ও মিউটেশনের তথ্য সরবরাহে ঘুষ না দিলে ঘুরতে হয় দিনের পর দিন। অবশেষে ধার্যকৃত টাকা দিয়ে কাজ সম্পন্ন করতে হয়। রোববার সরেজমিনে বরগুনা সদরের ফুলঝুড়ি ভূমি অফিসে গেলে দেখা যায়, ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ রশিদে শাহজাহান বিশ্বাসের দাখিলায় ৮৮ টাকা লেখা। কিন্তু রাখা হয়েছে ১০০ টাকা। এর আগে সোমবার তারাবানু, রুনু, মাজেদা ও ফারুক প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে মোট ৮০০ টাকা রাখা হয়েছে। অথচ, দাখিলা রশিদে ২০ টাকা। 

দাখিলা কাটতে আসা ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. রফিক হাওলাদার বলেন, অনেক আগে থেকেই এখানে ঘুষ বাণিজ্য চলে। আমরা যদি প্রতিবাদ করি তাহলে কোনো কাজ হয় না। তাই ঘুষ দিয়েই কাজ করি। 

এ তো গেল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের গল্প। উপজেলা থেকে জেলা যেখানে যাবেন ঘুষ দিতেই হবে। আর ধাপে ধাপে বাড়বে ঘুষের টাকার পরিমাণ। গত রোববার দুপুরে বরগুনা সদর উপজেলার ভূমি অফিসের সামনে অপেক্ষমাণ কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে কোনো কাজের জন্য আসলে অগ্রিম ঘুষ দিতে হয়। আর ঘুষ দিলেই কেবল বালামে হাত দেন সংশ্লিষ্টরা। আর না দিলে নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। 

এমন বিড়ম্বনার শিকার হওয়া কয়েকজনের সঙ্গে রোববার দুপুরে সদর উপজেলা সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের সামনে কথা হয়। সদরের এম বালিয়াতলীর তালতলী এলাকার কৃষক সেন্টু মিয়া বরগুনা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ে এসেছেন নষ্ট হয়ে যাওয়া জমির দলিল ওঠানোর জন্য। তার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন অফিসের একজন সহকারী রেকর্ড কিপার। সদর উপজেলার রায়ভোগ এলাকার ইউনুস মিয়াও এসেছেন দলিল খুঁজতে। তাঁর কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন এই অফিসের একজন কর্মচারী। ইউনুস বলেন, ‘এখানে পিয়ন–ঝাড়ুদার থেকে শুরু করে সবাই সুযোগ পেলে ঘুষ নেন। আমরা এখানে এসে টাকা ছাড়া কোনো কাজই করতে পারি না। টাকা দিলেই কেবল বালামে হাত দেয়, না দিলে কোনো কাজ হয় না।’ 

পাথরঘাটা উপজেলা সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের সামনে কথা হয় রেজাউল কবির নামের কালমেঘা ইউনিয়নের এক বাসিন্দার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এখানে কিছু দলিল লেখকদের সঙ্গে যোগসাজশে অফিসের কর্মকর্তারা ঘুষ নিয়ে থাকেন। দলিলের সরকারি সব খরচার বাইরেও অফিস খরচার নামে ৫ থেকে ২০ হাজার পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয়। জেলার ছয়টি উপজেলার মধ্যে আমতলীতে কৃষিজমির পরিমাণ বেশি।’ 

ভূমিখাতে সবচেয়ে বেশি ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ বরগুনার আমতলী উপজেলায়। আমতলীর আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আফজাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে ঘুষ দিয়ে জাল দলিল থেকে শুরু করে সব কাজ করানো সম্ভব। আর ঘুষ না দিয়ে কেউ কোনো কাজ করতেই পারবে না। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, এখানে এসে কেউ ঘুষ না দিয়ে কাজ করাতে পেরেছে বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে এমন কেউ নেই। একইরকম চিত্র জেলার বাকি তিনটি সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়েরও।’ 

এ ছাড়া জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের চিত্র ঠিক এমনই। শুধুমাত্র পার্থক্য ঘুষের অঙ্কের। সরকারি ফির ধার ধারার সময় নেই কারওই। দলিল রেকর্ড করতে আসলে মোক্তাররা আগেই চুক্তি করে অফিস খরচা বাবদ টাকা রেখে দেয়। দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা সংক্রান্ত সিভিল মামলা পরিচালনা করে আসছেন এমন কয়েকজন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দলিল করার ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে সরকারি খরচার বাইরে মোক্তারদের মাধ্যমে অফিস খরচা বাবদ দুই থেকে ২৫ হাজার পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয়। সম্প্রতি দলিল করেছেন এমন কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে আইনজীবীর দাবির মিল রয়েছে। 

জাকির হোসেন নামের বেতাগী উপজেলার একজন বাসিন্দা বলেন, ‘আমি একজন মোক্তারের মাধ্যমে দলিলের কাজ করিয়েছি। আমার তিনটি দলিলে অতিরিক্ত ১৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।’ 

বরগুনার জেলা প্রশাসক (ভূমি) পীযূষ কান্তির সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘আমরা তৃণমূল থেকে শুরু করে উপজেলা ও জেলায় সেবা নিতে আসা নাগরিকেরা যাতে ভোগান্তি ও বিড়ম্বনার শিকার না হয় সে জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। ভূমি অফিসের কোনো কর্মকর্তা কর্মচারী বিরুদ্ধে ঘুষ বাবদ অর্থ নেওয়ার কোনো অভিযোগ থাকলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উত্তরায় জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর উত্তরায় জুলাই রেভেলস নামক একটি সংগঠনের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখমের ঘটনা ঘটেছে। তাঁরা হলেন ইউসুফ আলী রেদওয়ান ও মো. ইয়াসিন।

উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরের পাবলিক কলেজ-সংলগ্ন জুলাই রেভেলস অফিসের ভেতরে শনিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর এ ঘটনা ঘটে। পরে তাঁদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এর আগে শনিবার বিকেলে উত্তরার বিএনএস সেন্টারের সামনে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধনে অংশ নিয়েছিলেন তাঁরা। সেখান থেকে তাঁরা জুলাই রেভেলসের অফিসে এসে বসেছিলেন।

এ বিষয়ে জুলাই রেভেলসের সহসংগঠক মো. পারভেজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ (শনিবার) বিকেলে উত্তরার বিএনএস সেন্টারে হাদি ভাইয়ের ওপর হামলার প্রতিবাদে আমরা মানববন্ধন করি। মানববন্ধন শেষ করে সন্ধ্যার সময় তারা চা খেয়ে অফিসে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য গিয়েছিল। অফিসটি এক রুমের। আশপাশে জনবসতি নেই।’

পারভেজ বলেন, ‘বিশ্রাম নেওয়ার সময় কিছু সন্ত্রাসী রেদওয়ান ও ইয়াসিনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। আহত রেদওয়ান সংগঠনের প্রস্তাবিত সহসংগঠক এবং ইয়াসিন সদস্য।’

তিনি বলেন, ‘রেদওয়ান ও ইয়াসিনের মাথায় কুপিয়ে জখম করা হয়। প্রথমে তাদেরকে উদ্ধার করে কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে এবং পরে নিকটবর্তী একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়।’

এদিকে জুলাই যোদ্ধাদের কুপিয়ে জখম করার খবর পেয়ে ওই বেসরকারি হাসপাতালে উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোর্শেদ আলমসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তা উপস্থিত হয়েছেন। সেখানে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাঁদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হতে পারে। এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

তবে উত্তরা পূর্ব থানার ওসি মোর্শেদ আলম ও বিমানবন্দর জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) পহন চাকমার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

অপরদিকে উত্তরা পূর্ব থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আশরাফুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কুপিয়ে আহতের ঘটনার কোনো তথ্য আমার জানা নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজধানীর তিন এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ, মিরপুরে দোকানি আহত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর শান্তিনগর, মৌচাক ও মিরপুরে পৃথক স্থানে চারটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে মিরপুরে ফুটপাতের এক দোকানি আহত হয়েছেন।

শনিবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন সময় দুর্বৃত্তরা এসব ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মিরপুর-১ এলাকার মুক্তিযোদ্ধা শপিং কমপ্লেক্সের ছাদ থেকে একটি ককটেল নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। বিস্ফোরণে মার্কেটের সামনের ফুটপাতে থাকা এক দোকানি সামান্য আহত হন।

এ ছাড়া রাত সাড়ে ৮টার দিকে মিরপুর-১০ এলাকার পুলিশ বক্সের কাছে আরেকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মিরপুরের মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের সামনে একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ফুটপাতের এক দোকানি সামান্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। মার্কেটের ওপর থেকে কেউ একজন ককটেল নিক্ষেপ করে পালিয়ে গেছে।

অন্যদিকে রাত ৮টা ১৫ মিনিটের দিকে শান্তিনগর এলাকার পশ্চিম সিগন্যালের কাছে একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। ককটেলটি সিগন্যালের পাশে থাকা একটি বটগাছে স্থাপিত বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ডে লেগে বিস্ফোরিত হয়। এতে কেউ হতাহত হয়নি।

এ ছাড়া রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে মৌচাক ক্রসিংয়েও আরেকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনাতেও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান: চার ঘণ্টা পর আগের বক্তব্য প্রত্যাহার করল পুলিশ

খুলনা প্রতিনিধি
খুলনা নগরীর জোড়া গেট এলাকায় অস্ত্র তৈরি কারখানায় আজ শনিবার সন্ধ্যায় অভিযান চালা ডিবি। ছবি: আজকের পত্রিকা
খুলনা নগরীর জোড়া গেট এলাকায় অস্ত্র তৈরি কারখানায় আজ শনিবার সন্ধ্যায় অভিযান চালা ডিবি। ছবি: আজকের পত্রিকা

খুলনা নগরীতে অস্ত্র তৈরির একটি কারখানার সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর জোড়া গেট এলাকায় অবস্থিত একটি লেদ মেশিনের কারখানায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) অভিযান চালিয়ে এর সন্ধান পায়। এ সময় তিনজনকে আটক করা হয়। এর চার ঘণ্টা পর উদ্ধার হওয়া সরঞ্জাম ডামি বলে ঘোষণা করে পুলিশ।

খুলনা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৈমুর ইসলাম চার ঘণ্টা পূর্বের বক্তব্য প্রত্যাহার করেন। তিনি বলেন, এগুলো ডামি অস্ত্র। এগুলো বিএনসিসির জন্য বানানো হচ্ছিল। আর যাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল রাতে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে।

এর আগে পুলিশ ঢাকঢোল পিটিয়ে বলেছিল নগরীর জোড়া গেট এলাকার একটি লেদ কারখানায় অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান এবং সেখান থেকে বিপুল অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়।

এ ছাড়া অস্ত্রগুলো সন্ত্রাসী ও বনদস্যুদের কাছে সরবরাহ করা হতো বলে জানানো হয়।

এদিকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি নৌ শাখার এস এম তাফসিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি চুক্তিপত্রে দেখা গেছে, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি প্লাটুনের সেনা, নৌ এবং বিমান শাখার ক্যাডেটদের যুগোপযোগী ট্রেনিংয়ের জন্য কিছুসংখ্যক অত্যাধুনিক কাঠের অস্ত্র (৫০ পিস) তৈরি করা প্রয়োজন। ওই অস্ত্রগুলো বিএনসিসির তত্ত্বাবধানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি প্লাটুন প্রাঙ্গণে তৈরি করা হবে। ওই অস্ত্রসমূহ তৈরিতে নিম্নের প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি মো. সালাউদ্দিন গাজী পিকুকে দায়িত্ব দেওয়া হলো।

এর সত্যতা পাওয়ার পর পুলিশ তাদের অস্ত্র উদ্ধারের তথ্য প্রত্যাহার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ককটেল বিস্ফোরণে শিশু আহত, রামেকে ভর্তি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় বাড়ির পাশে পড়ে থাকা ককটেল বিস্ফোরণে মিজানুর রহমান (৮) নামের এক শিশু আহত হয়েছে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। আহত শিশুটি চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের সুপার পাড়া এলাকার নয়ন আলীর ছেলে।  

আহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ এন এম ওয়াসিম ফিরোজ। তিনি বলেন, বাড়ির পাশে আমবাগানে পরিত্যক্ত অবস্থায় ককটেলটি পড়ে ছিল। ছোট বাচ্চা বুঝতে না পেরে ককটেলে হাত দিলে বিস্ফোরণ ঘটে। তার পরিবারকে থানায় এসে মামলা দিতে বলা হয়েছে। পরিবার মামলা দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, আহত শিশু মিজানুর রহমানকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।  

শিশুটির চাচা তায়েব আলী বলেন, ‘জেলা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আমার ভাতিজাকে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করিয়েছি। তার বাঁ হাতের আঙুলগুলো ঝুলে গেছে এবং ডান হাতের মাংসপেশির ভেতর কাচ ঢুকে আছে। মুখ পুড়ে গেছে এবং গলাও কেটে গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত