কামরুল হাসান

অভ্যর্থনাকক্ষ থেকে কে যেন ফোন করে বললেন, এক নারী দুই বাচ্চা নিয়ে দেখা করতে এসেছেন। সঙ্গে এক বন্ধু সাংবাদিক। একটু পর এলেন সেই নারী, সঙ্গে এক ছেলে ও এক মেয়ে। মার্জিত পোশাক, কথাবার্তায় ভীষণ বিনয়ী। পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘আমি মাহবুবা রসুল লিপি।’
এটুকু বলায় চেনা গেল না। স্বামীর নাম বললেন আমিন রসুল সাগর। চিনতে আর বাকি রইল না। বললাম, আপনি তাহলে টোকাই সাগরের স্ত্রী? তিনি মাথা নাড়লেন। সাগরের সঙ্গে এই নারীকে কোনোভাবেই মেলানো যায় না। বাচ্চারা একজন বিআইটিতে, অন্যজন আইআইটিতে পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই তাদের মুখে বাংলা আসে না।
জানতে চাইলাম, শীর্ষসন্ত্রাসীকে বিয়ে করলেন কেন? হেসে বললেন, পারিবারিক সম্মতিতেই বিয়ে হয়েছে। তাঁর বাবা আগারগাঁও কৃষি ইনস্টিটিউটে চাকরি করেন। আসার কারণ জানতে চাইলে বলেন, আগের দিন তাঁর স্বামীর ব্যবহারের কারণে তিনি ক্ষমা চাইতে এসেছেন।
এই নারীর স্বামী শীর্ষসন্ত্রাসী আমিন রসুল সাগর ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে ‘টোকাই সাগর’ নামে পরিচিত ছিলেন। গুলশানের ডিসিসি মার্কেটে আমিন রসুল ট্রেডার্সে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় আমার। সেই সাক্ষাতের সময় তিনি গুলিভর্তি অস্ত্রটি টেবিলের ওপর রেখে আমাকে বলেছিলেন: ‘বলেন, কী জানতে চান?’
এটা ২০০০ সালের প্রথম দিকের ঘটনা। পরদিন জনকণ্ঠে টোকাই সাগরকে নিয়ে যে রিপোর্ট করি, সেখানে অস্ত্র দেখানোর কথাটা এড়িয়ে যাই। সেই ঘটনার পর সাগর তাঁর স্ত্রীকে পাঠিয়েছেন দুঃখ প্রকাশের জন্য।
সাগর তখন আন্ডারওয়ার্ল্ড ও রাজনৈতিক অঙ্গন—দুই দিকেই প্রতাপশালী। তিনি ছিলেন ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
সেই কমিটির সভাপতি প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। কী কী অভিযোগ নিয়ে কথা হয়েছিল, তার সব মনে নেই। তবে এটা মনে আছে, তিনি বলেছিলেন, যুবলীগের নেতা আওরঙ্গ ও শীর্ষসন্ত্রাসী লিয়াকত তাঁর ক্যারিয়ার ধ্বংসের জন্য এসব করেছেন। পত্রিকায় তাঁর বিরুদ্ধে যেসব খবর লেখা হচ্ছে, সবই তাঁদের দেওয়া। এমনকি তাঁর নামের আগে ‘টোকাই’ উপাধিটাও লিয়াকতের দেওয়া বলে দাবি করেছিলেন।
সাগরের স্ত্রী চলে যাওয়ার পর আমি কিছুটা চিন্তামুক্ত হলেও ভয়ে ভয়ে ছিলেন আমার এক বন্ধু সাংবাদিক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতীয় চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটির সভার সূত্র ধরে তিনি টোকাই সাগরের বিরুদ্ধে একটি নিউজ করেন। সেই নিউজ ছাপার পর সাগর তাঁকে হুমকি দেন। সেই বন্ধুকে মারার ছকও কষেন।
টোকাই সাগরকে নিয়ে আমি প্রথম বড় একটি নিউজ করি ১৯৯৮ সালের প্রথম দিকে, জনকণ্ঠে। বিমানবন্দর থেকে পাচার করা একটি সোনার চালান টোকাই সাগরের লোকজন মেরে দিয়েছিলেন। চালানটি ছিল কলকাতার এক ব্যবসায়ীর। পুলিশের কাছে তথ্য ছিল, চালানটা বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে সোনার পাইকারি বাজারে যাবে। চালান ধরতে পুলিশ ওত পেতে ছিল বিমানবন্দর মোড়ে। ঠিক সময়ে চালানটি বিমানবন্দর থেকে বের হলেও ৮ নম্বর হ্যাঙ্গার গেটের মুখে টোকাই সাগরের লোকজন আটকে দেন। সোনার বাহকেরা তাঁদের পুলিশের লোক ভেবে গাড়ি ফেলে পালিয়ে যান। সোনা চলে যায় সাগরের লোকজনের হাতে।
এই সোনা ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে ওই সময় বেশ হইচই হয়। গোয়েন্দা পুলিশের এসি মিয়া আবদুস ছালাম (বর্তমানে অবসরে) আমাকে বলেছিলেন, ওই চালানে নাকি ২০ কেজির মতো সোনা ছিল। কিন্তু প্রমাণ না থাকায় অন্ধকার জগতের জিনিস অন্ধকারেই হারিয়ে যায়।
সোনা চোরাচালানের ক্ষেত্রে ঢাকা বরাবরই ছিল ট্রানজিট রুট। সৌদি আরব, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া থেকে টনে টনে সোনা নামে ঢাকায়। সেই সোনা চলে যায় ভারতের ব্যবসায়ীদের হাতে। এসব সোনা কেড়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে দুজন সন্ত্রাসীর নাম সবচেয়ে আলোচিত ছিল—একজন মুরগি মিলন, অন্যজন টোকাই সাগর। একসময় দুজন একসঙ্গে এই কাজ করতেন। আমার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় টোকাই সাগর বলেছিলেন, ‘মগবাজার মোড়ে বিএনপির মিছিলে হামলার আগপর্যন্ত আমি লিয়াকত-মিলনের বাসায় দাওয়াতও খেয়েছি।’
পুলিশের খাতা অনুযায়ী, টোকাই সাগরের জন্ম চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের বাউরিয়া গ্রামে। তাঁর বাবা সাগরে মাছ ধরতেন। সাগরের আসল নাম আমির হোসেন। টোকাই সাগর আমাকে বলেছিলেন, তিনি সন্দ্বীপের বাউরিয়া হাইস্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাড়ি ছাড়েন। সন্দ্বীপ থেকে আসেন চট্টগ্রামের কর্ণফুলী মার্কেটে। সেখানে এক মাস্তানের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। ১৯৮৬ সালে কর্ণফুলী মার্কেটে চাঁদাবাজি নিয়ে এক যুবক খুন হন। সেই মামলায় তাঁর নাম আসে। এরপর চলে আসেন ঢাকায়। আগারগাঁও বস্তিতে এসে নিজের নাম বদলে রাখেন আমিন রসুল সাগর। এখানে এসেও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৮৯ সালে ডাকাতির অভিযোগে ডিবি তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
শোনা যায়, জেলে যাওয়ার পর সাগরের সঙ্গে ছাত্রদলের ক্যাডার নীরু ও বি. সেলিমের পরিচয় হয়। বি. সেলিম পরে ‘বাস্টার্ড সেলিম’ নামে পরিচিতি পান। তাঁরা সাগরকে অস্ত্র সংগ্রহের কাজে লাগান।
এরশাদ সরকারের পতনের পর আগারগাঁও থেকে আস্তানা গুটিয়ে আশকোনায় চলে যান সাগর। সেখানে সিভিল অ্যাভিয়েশনের এক কর্মচারীর মাধ্যমে সোনা চোরাচালানকারী ‘গোল্ড মজিবরের’ সঙ্গে পরিচয়। বলা যায়, মজিবরের হাত ধরেই এই কারবারে নামেন সাগর।
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নেন বাস্টার্ড সেলিম। তখন বি. সেলিম, গোল্ড মজিবর ও সাগর মিলে সোনা চোরাচালানের কাজে নেমে পড়েন।
১৯৯৪ সালে সাগরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কিছুদিন পর ছাড়া পেয়ে যান। ১৯৯৫ সালে বিমানবন্দরে গোলাগুলির সময় অস্ত্রসহ ল্যাংড়া রফিক ধরা পড়েন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সাগরকে গ্রেপ্তার করে ডিটেনশনে দেওয়া হয়। জেল থেকে বেরিয়ে কাওলার কামালের সঙ্গে বিরোধে জড়ান। কামাল গুলিতে আহত হলে এলাকার লোকজন সাগরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। কিন্তু এরই মধ্যে বিমানবন্দর এলাকায় নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে ফেলেন সাগর। বিমানবন্দরের গাড়ি পার্কিং ও কনকর্স হল ইজারা নিয়ে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে নেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর যুবলীগের লিয়াকত ও মুরগি মিলনের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন সাগর। কিন্তু আওয়ামী লীগ আমলে সাগরের হাত থেকে বিমানবন্দরের ইজারা চলে যায় আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ছেলে দীপু চৌধুরীর হাতে। এতে মুরগি মিলনের লাভ হয়। বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ আসে মিলনের হাতে। এই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সাগর ও মিলনের মধ্যে বিরোধ। পরে কালা জাহাঙ্গীর ও সুব্রত বাইনের সঙ্গে মিলে মুরগি মিলনকে খুন করেন সাগর। মিলন খুন হওয়ার পর সাগর একটি পত্রিকাকে বলেছিলেন, মামলায় তাঁর নাম ঢুকিয়েছিলেন লিয়াকত ও আওরঙ্গ।
পুলিশের খাতায় সাগরের বিরুদ্ধে মামলা ছিল ১২টি। সব মামলায় তিনি জামিন পেয়েছিলেন। ওই সময় তিনি গুলশানে একটি ফ্ল্যাট ও নিকুঞ্জে একটি প্লট কেনেন। আশকোনায় তাঁর একটি চারতলা বাড়িও ছিল। ঢাকাই সন্ত্রাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বিত্তবান ছিলেন সাগর।
২০০১ সালের ৩ এপ্রিল দুবাই থেকে ঢাকায় ফেরার পথে সাগরকে গ্রেপ্তার করেন এসবির সাব ইন্সপেক্টর রেজা। তিনি ছিলেন এএসপি খলিলুর রহমানের টিমের সদস্য। সাগরকে নিয়ে যাওয়া হয় ১০/এ নিউ বেইলি রোডের সিটি এসবি অফিসে। এসবির বিশেষ সুপার (এসএস) ছিলেন ইমামুল হক ফিরোজ (হাইকোর্টের আইনজীবী)। এখনকার অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুব হোসেন ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। এসএসের রুমে কয়েকজন সাংবাদিক বসা। আমাদের সামনে টোকাই সাগরকে আনা হয়। ঠিক এ সময় সেই কক্ষে আসেন আমার সেই বন্ধু সাংবাদিক। তাঁকে দেখেই চরম ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সাগর। অশ্লীল ভাষায় বলেন: ‘...তোকে আমি দেখে নেব।’
দিন কয়েক আগে অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুব হোসেন বলেন, টোকাই সাগরের সেই চোখরাঙানির কথা তাঁর এখনো মনে আছে।
টোকাই সাগরকে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদের পর জেলে পাঠানো হয়। বেশ কয়েক মাস জেলে থাকেন। এরপর একদিন সবার অজান্তে জামিনে বেরিয়ে দেশ ছেড়ে চলে যান। এত অপরাধ করেও তাঁকে কোনো বিচারের মুখোমুখি হতে হলো না। আমরাও নানান ইস্যুর ভিড়ে তাঁকে ভুলে গেলাম।
একদিন সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ সাগরের স্ত্রীর ফোন। তিনি বললেন, তাঁর দেবরের পরিবার ডিভিওয়ানে আমেরিকায় গেছে। তাঁরাও সপরিবারে আমেরিকায় চলে যাচ্ছেন। আমার কাছে আবারও সেই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন, ক্ষমা চাইলেন।
এভাবেই সবার চোখের সামনে দিয়ে দেশ ছেড়ে চলে গেলেন শীর্ষ চোরাকারবারি ও সন্ত্রাসী টোকাই সাগর। শুনেছি, সাগর এখন নিউইয়র্কের ফ্ল্যাশিং এলাকায় বাড়ি কেনাবেচার ব্যবসায় বেশ নামডাক করেছেন।

অভ্যর্থনাকক্ষ থেকে কে যেন ফোন করে বললেন, এক নারী দুই বাচ্চা নিয়ে দেখা করতে এসেছেন। সঙ্গে এক বন্ধু সাংবাদিক। একটু পর এলেন সেই নারী, সঙ্গে এক ছেলে ও এক মেয়ে। মার্জিত পোশাক, কথাবার্তায় ভীষণ বিনয়ী। পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘আমি মাহবুবা রসুল লিপি।’
এটুকু বলায় চেনা গেল না। স্বামীর নাম বললেন আমিন রসুল সাগর। চিনতে আর বাকি রইল না। বললাম, আপনি তাহলে টোকাই সাগরের স্ত্রী? তিনি মাথা নাড়লেন। সাগরের সঙ্গে এই নারীকে কোনোভাবেই মেলানো যায় না। বাচ্চারা একজন বিআইটিতে, অন্যজন আইআইটিতে পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই তাদের মুখে বাংলা আসে না।
জানতে চাইলাম, শীর্ষসন্ত্রাসীকে বিয়ে করলেন কেন? হেসে বললেন, পারিবারিক সম্মতিতেই বিয়ে হয়েছে। তাঁর বাবা আগারগাঁও কৃষি ইনস্টিটিউটে চাকরি করেন। আসার কারণ জানতে চাইলে বলেন, আগের দিন তাঁর স্বামীর ব্যবহারের কারণে তিনি ক্ষমা চাইতে এসেছেন।
এই নারীর স্বামী শীর্ষসন্ত্রাসী আমিন রসুল সাগর ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে ‘টোকাই সাগর’ নামে পরিচিত ছিলেন। গুলশানের ডিসিসি মার্কেটে আমিন রসুল ট্রেডার্সে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় আমার। সেই সাক্ষাতের সময় তিনি গুলিভর্তি অস্ত্রটি টেবিলের ওপর রেখে আমাকে বলেছিলেন: ‘বলেন, কী জানতে চান?’
এটা ২০০০ সালের প্রথম দিকের ঘটনা। পরদিন জনকণ্ঠে টোকাই সাগরকে নিয়ে যে রিপোর্ট করি, সেখানে অস্ত্র দেখানোর কথাটা এড়িয়ে যাই। সেই ঘটনার পর সাগর তাঁর স্ত্রীকে পাঠিয়েছেন দুঃখ প্রকাশের জন্য।
সাগর তখন আন্ডারওয়ার্ল্ড ও রাজনৈতিক অঙ্গন—দুই দিকেই প্রতাপশালী। তিনি ছিলেন ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
সেই কমিটির সভাপতি প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। কী কী অভিযোগ নিয়ে কথা হয়েছিল, তার সব মনে নেই। তবে এটা মনে আছে, তিনি বলেছিলেন, যুবলীগের নেতা আওরঙ্গ ও শীর্ষসন্ত্রাসী লিয়াকত তাঁর ক্যারিয়ার ধ্বংসের জন্য এসব করেছেন। পত্রিকায় তাঁর বিরুদ্ধে যেসব খবর লেখা হচ্ছে, সবই তাঁদের দেওয়া। এমনকি তাঁর নামের আগে ‘টোকাই’ উপাধিটাও লিয়াকতের দেওয়া বলে দাবি করেছিলেন।
সাগরের স্ত্রী চলে যাওয়ার পর আমি কিছুটা চিন্তামুক্ত হলেও ভয়ে ভয়ে ছিলেন আমার এক বন্ধু সাংবাদিক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতীয় চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটির সভার সূত্র ধরে তিনি টোকাই সাগরের বিরুদ্ধে একটি নিউজ করেন। সেই নিউজ ছাপার পর সাগর তাঁকে হুমকি দেন। সেই বন্ধুকে মারার ছকও কষেন।
টোকাই সাগরকে নিয়ে আমি প্রথম বড় একটি নিউজ করি ১৯৯৮ সালের প্রথম দিকে, জনকণ্ঠে। বিমানবন্দর থেকে পাচার করা একটি সোনার চালান টোকাই সাগরের লোকজন মেরে দিয়েছিলেন। চালানটি ছিল কলকাতার এক ব্যবসায়ীর। পুলিশের কাছে তথ্য ছিল, চালানটা বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে সোনার পাইকারি বাজারে যাবে। চালান ধরতে পুলিশ ওত পেতে ছিল বিমানবন্দর মোড়ে। ঠিক সময়ে চালানটি বিমানবন্দর থেকে বের হলেও ৮ নম্বর হ্যাঙ্গার গেটের মুখে টোকাই সাগরের লোকজন আটকে দেন। সোনার বাহকেরা তাঁদের পুলিশের লোক ভেবে গাড়ি ফেলে পালিয়ে যান। সোনা চলে যায় সাগরের লোকজনের হাতে।
এই সোনা ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে ওই সময় বেশ হইচই হয়। গোয়েন্দা পুলিশের এসি মিয়া আবদুস ছালাম (বর্তমানে অবসরে) আমাকে বলেছিলেন, ওই চালানে নাকি ২০ কেজির মতো সোনা ছিল। কিন্তু প্রমাণ না থাকায় অন্ধকার জগতের জিনিস অন্ধকারেই হারিয়ে যায়।
সোনা চোরাচালানের ক্ষেত্রে ঢাকা বরাবরই ছিল ট্রানজিট রুট। সৌদি আরব, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া থেকে টনে টনে সোনা নামে ঢাকায়। সেই সোনা চলে যায় ভারতের ব্যবসায়ীদের হাতে। এসব সোনা কেড়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে দুজন সন্ত্রাসীর নাম সবচেয়ে আলোচিত ছিল—একজন মুরগি মিলন, অন্যজন টোকাই সাগর। একসময় দুজন একসঙ্গে এই কাজ করতেন। আমার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় টোকাই সাগর বলেছিলেন, ‘মগবাজার মোড়ে বিএনপির মিছিলে হামলার আগপর্যন্ত আমি লিয়াকত-মিলনের বাসায় দাওয়াতও খেয়েছি।’
পুলিশের খাতা অনুযায়ী, টোকাই সাগরের জন্ম চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের বাউরিয়া গ্রামে। তাঁর বাবা সাগরে মাছ ধরতেন। সাগরের আসল নাম আমির হোসেন। টোকাই সাগর আমাকে বলেছিলেন, তিনি সন্দ্বীপের বাউরিয়া হাইস্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাড়ি ছাড়েন। সন্দ্বীপ থেকে আসেন চট্টগ্রামের কর্ণফুলী মার্কেটে। সেখানে এক মাস্তানের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। ১৯৮৬ সালে কর্ণফুলী মার্কেটে চাঁদাবাজি নিয়ে এক যুবক খুন হন। সেই মামলায় তাঁর নাম আসে। এরপর চলে আসেন ঢাকায়। আগারগাঁও বস্তিতে এসে নিজের নাম বদলে রাখেন আমিন রসুল সাগর। এখানে এসেও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৮৯ সালে ডাকাতির অভিযোগে ডিবি তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
শোনা যায়, জেলে যাওয়ার পর সাগরের সঙ্গে ছাত্রদলের ক্যাডার নীরু ও বি. সেলিমের পরিচয় হয়। বি. সেলিম পরে ‘বাস্টার্ড সেলিম’ নামে পরিচিতি পান। তাঁরা সাগরকে অস্ত্র সংগ্রহের কাজে লাগান।
এরশাদ সরকারের পতনের পর আগারগাঁও থেকে আস্তানা গুটিয়ে আশকোনায় চলে যান সাগর। সেখানে সিভিল অ্যাভিয়েশনের এক কর্মচারীর মাধ্যমে সোনা চোরাচালানকারী ‘গোল্ড মজিবরের’ সঙ্গে পরিচয়। বলা যায়, মজিবরের হাত ধরেই এই কারবারে নামেন সাগর।
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নেন বাস্টার্ড সেলিম। তখন বি. সেলিম, গোল্ড মজিবর ও সাগর মিলে সোনা চোরাচালানের কাজে নেমে পড়েন।
১৯৯৪ সালে সাগরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কিছুদিন পর ছাড়া পেয়ে যান। ১৯৯৫ সালে বিমানবন্দরে গোলাগুলির সময় অস্ত্রসহ ল্যাংড়া রফিক ধরা পড়েন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সাগরকে গ্রেপ্তার করে ডিটেনশনে দেওয়া হয়। জেল থেকে বেরিয়ে কাওলার কামালের সঙ্গে বিরোধে জড়ান। কামাল গুলিতে আহত হলে এলাকার লোকজন সাগরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। কিন্তু এরই মধ্যে বিমানবন্দর এলাকায় নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে ফেলেন সাগর। বিমানবন্দরের গাড়ি পার্কিং ও কনকর্স হল ইজারা নিয়ে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে নেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর যুবলীগের লিয়াকত ও মুরগি মিলনের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন সাগর। কিন্তু আওয়ামী লীগ আমলে সাগরের হাত থেকে বিমানবন্দরের ইজারা চলে যায় আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ছেলে দীপু চৌধুরীর হাতে। এতে মুরগি মিলনের লাভ হয়। বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ আসে মিলনের হাতে। এই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সাগর ও মিলনের মধ্যে বিরোধ। পরে কালা জাহাঙ্গীর ও সুব্রত বাইনের সঙ্গে মিলে মুরগি মিলনকে খুন করেন সাগর। মিলন খুন হওয়ার পর সাগর একটি পত্রিকাকে বলেছিলেন, মামলায় তাঁর নাম ঢুকিয়েছিলেন লিয়াকত ও আওরঙ্গ।
পুলিশের খাতায় সাগরের বিরুদ্ধে মামলা ছিল ১২টি। সব মামলায় তিনি জামিন পেয়েছিলেন। ওই সময় তিনি গুলশানে একটি ফ্ল্যাট ও নিকুঞ্জে একটি প্লট কেনেন। আশকোনায় তাঁর একটি চারতলা বাড়িও ছিল। ঢাকাই সন্ত্রাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বিত্তবান ছিলেন সাগর।
২০০১ সালের ৩ এপ্রিল দুবাই থেকে ঢাকায় ফেরার পথে সাগরকে গ্রেপ্তার করেন এসবির সাব ইন্সপেক্টর রেজা। তিনি ছিলেন এএসপি খলিলুর রহমানের টিমের সদস্য। সাগরকে নিয়ে যাওয়া হয় ১০/এ নিউ বেইলি রোডের সিটি এসবি অফিসে। এসবির বিশেষ সুপার (এসএস) ছিলেন ইমামুল হক ফিরোজ (হাইকোর্টের আইনজীবী)। এখনকার অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুব হোসেন ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। এসএসের রুমে কয়েকজন সাংবাদিক বসা। আমাদের সামনে টোকাই সাগরকে আনা হয়। ঠিক এ সময় সেই কক্ষে আসেন আমার সেই বন্ধু সাংবাদিক। তাঁকে দেখেই চরম ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সাগর। অশ্লীল ভাষায় বলেন: ‘...তোকে আমি দেখে নেব।’
দিন কয়েক আগে অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুব হোসেন বলেন, টোকাই সাগরের সেই চোখরাঙানির কথা তাঁর এখনো মনে আছে।
টোকাই সাগরকে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদের পর জেলে পাঠানো হয়। বেশ কয়েক মাস জেলে থাকেন। এরপর একদিন সবার অজান্তে জামিনে বেরিয়ে দেশ ছেড়ে চলে যান। এত অপরাধ করেও তাঁকে কোনো বিচারের মুখোমুখি হতে হলো না। আমরাও নানান ইস্যুর ভিড়ে তাঁকে ভুলে গেলাম।
একদিন সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ সাগরের স্ত্রীর ফোন। তিনি বললেন, তাঁর দেবরের পরিবার ডিভিওয়ানে আমেরিকায় গেছে। তাঁরাও সপরিবারে আমেরিকায় চলে যাচ্ছেন। আমার কাছে আবারও সেই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন, ক্ষমা চাইলেন।
এভাবেই সবার চোখের সামনে দিয়ে দেশ ছেড়ে চলে গেলেন শীর্ষ চোরাকারবারি ও সন্ত্রাসী টোকাই সাগর। শুনেছি, সাগর এখন নিউইয়র্কের ফ্ল্যাশিং এলাকায় বাড়ি কেনাবেচার ব্যবসায় বেশ নামডাক করেছেন।
কামরুল হাসান

অভ্যর্থনাকক্ষ থেকে কে যেন ফোন করে বললেন, এক নারী দুই বাচ্চা নিয়ে দেখা করতে এসেছেন। সঙ্গে এক বন্ধু সাংবাদিক। একটু পর এলেন সেই নারী, সঙ্গে এক ছেলে ও এক মেয়ে। মার্জিত পোশাক, কথাবার্তায় ভীষণ বিনয়ী। পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘আমি মাহবুবা রসুল লিপি।’
এটুকু বলায় চেনা গেল না। স্বামীর নাম বললেন আমিন রসুল সাগর। চিনতে আর বাকি রইল না। বললাম, আপনি তাহলে টোকাই সাগরের স্ত্রী? তিনি মাথা নাড়লেন। সাগরের সঙ্গে এই নারীকে কোনোভাবেই মেলানো যায় না। বাচ্চারা একজন বিআইটিতে, অন্যজন আইআইটিতে পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই তাদের মুখে বাংলা আসে না।
জানতে চাইলাম, শীর্ষসন্ত্রাসীকে বিয়ে করলেন কেন? হেসে বললেন, পারিবারিক সম্মতিতেই বিয়ে হয়েছে। তাঁর বাবা আগারগাঁও কৃষি ইনস্টিটিউটে চাকরি করেন। আসার কারণ জানতে চাইলে বলেন, আগের দিন তাঁর স্বামীর ব্যবহারের কারণে তিনি ক্ষমা চাইতে এসেছেন।
এই নারীর স্বামী শীর্ষসন্ত্রাসী আমিন রসুল সাগর ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে ‘টোকাই সাগর’ নামে পরিচিত ছিলেন। গুলশানের ডিসিসি মার্কেটে আমিন রসুল ট্রেডার্সে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় আমার। সেই সাক্ষাতের সময় তিনি গুলিভর্তি অস্ত্রটি টেবিলের ওপর রেখে আমাকে বলেছিলেন: ‘বলেন, কী জানতে চান?’
এটা ২০০০ সালের প্রথম দিকের ঘটনা। পরদিন জনকণ্ঠে টোকাই সাগরকে নিয়ে যে রিপোর্ট করি, সেখানে অস্ত্র দেখানোর কথাটা এড়িয়ে যাই। সেই ঘটনার পর সাগর তাঁর স্ত্রীকে পাঠিয়েছেন দুঃখ প্রকাশের জন্য।
সাগর তখন আন্ডারওয়ার্ল্ড ও রাজনৈতিক অঙ্গন—দুই দিকেই প্রতাপশালী। তিনি ছিলেন ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
সেই কমিটির সভাপতি প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। কী কী অভিযোগ নিয়ে কথা হয়েছিল, তার সব মনে নেই। তবে এটা মনে আছে, তিনি বলেছিলেন, যুবলীগের নেতা আওরঙ্গ ও শীর্ষসন্ত্রাসী লিয়াকত তাঁর ক্যারিয়ার ধ্বংসের জন্য এসব করেছেন। পত্রিকায় তাঁর বিরুদ্ধে যেসব খবর লেখা হচ্ছে, সবই তাঁদের দেওয়া। এমনকি তাঁর নামের আগে ‘টোকাই’ উপাধিটাও লিয়াকতের দেওয়া বলে দাবি করেছিলেন।
সাগরের স্ত্রী চলে যাওয়ার পর আমি কিছুটা চিন্তামুক্ত হলেও ভয়ে ভয়ে ছিলেন আমার এক বন্ধু সাংবাদিক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতীয় চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটির সভার সূত্র ধরে তিনি টোকাই সাগরের বিরুদ্ধে একটি নিউজ করেন। সেই নিউজ ছাপার পর সাগর তাঁকে হুমকি দেন। সেই বন্ধুকে মারার ছকও কষেন।
টোকাই সাগরকে নিয়ে আমি প্রথম বড় একটি নিউজ করি ১৯৯৮ সালের প্রথম দিকে, জনকণ্ঠে। বিমানবন্দর থেকে পাচার করা একটি সোনার চালান টোকাই সাগরের লোকজন মেরে দিয়েছিলেন। চালানটি ছিল কলকাতার এক ব্যবসায়ীর। পুলিশের কাছে তথ্য ছিল, চালানটা বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে সোনার পাইকারি বাজারে যাবে। চালান ধরতে পুলিশ ওত পেতে ছিল বিমানবন্দর মোড়ে। ঠিক সময়ে চালানটি বিমানবন্দর থেকে বের হলেও ৮ নম্বর হ্যাঙ্গার গেটের মুখে টোকাই সাগরের লোকজন আটকে দেন। সোনার বাহকেরা তাঁদের পুলিশের লোক ভেবে গাড়ি ফেলে পালিয়ে যান। সোনা চলে যায় সাগরের লোকজনের হাতে।
এই সোনা ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে ওই সময় বেশ হইচই হয়। গোয়েন্দা পুলিশের এসি মিয়া আবদুস ছালাম (বর্তমানে অবসরে) আমাকে বলেছিলেন, ওই চালানে নাকি ২০ কেজির মতো সোনা ছিল। কিন্তু প্রমাণ না থাকায় অন্ধকার জগতের জিনিস অন্ধকারেই হারিয়ে যায়।
সোনা চোরাচালানের ক্ষেত্রে ঢাকা বরাবরই ছিল ট্রানজিট রুট। সৌদি আরব, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া থেকে টনে টনে সোনা নামে ঢাকায়। সেই সোনা চলে যায় ভারতের ব্যবসায়ীদের হাতে। এসব সোনা কেড়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে দুজন সন্ত্রাসীর নাম সবচেয়ে আলোচিত ছিল—একজন মুরগি মিলন, অন্যজন টোকাই সাগর। একসময় দুজন একসঙ্গে এই কাজ করতেন। আমার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় টোকাই সাগর বলেছিলেন, ‘মগবাজার মোড়ে বিএনপির মিছিলে হামলার আগপর্যন্ত আমি লিয়াকত-মিলনের বাসায় দাওয়াতও খেয়েছি।’
পুলিশের খাতা অনুযায়ী, টোকাই সাগরের জন্ম চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের বাউরিয়া গ্রামে। তাঁর বাবা সাগরে মাছ ধরতেন। সাগরের আসল নাম আমির হোসেন। টোকাই সাগর আমাকে বলেছিলেন, তিনি সন্দ্বীপের বাউরিয়া হাইস্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাড়ি ছাড়েন। সন্দ্বীপ থেকে আসেন চট্টগ্রামের কর্ণফুলী মার্কেটে। সেখানে এক মাস্তানের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। ১৯৮৬ সালে কর্ণফুলী মার্কেটে চাঁদাবাজি নিয়ে এক যুবক খুন হন। সেই মামলায় তাঁর নাম আসে। এরপর চলে আসেন ঢাকায়। আগারগাঁও বস্তিতে এসে নিজের নাম বদলে রাখেন আমিন রসুল সাগর। এখানে এসেও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৮৯ সালে ডাকাতির অভিযোগে ডিবি তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
শোনা যায়, জেলে যাওয়ার পর সাগরের সঙ্গে ছাত্রদলের ক্যাডার নীরু ও বি. সেলিমের পরিচয় হয়। বি. সেলিম পরে ‘বাস্টার্ড সেলিম’ নামে পরিচিতি পান। তাঁরা সাগরকে অস্ত্র সংগ্রহের কাজে লাগান।
এরশাদ সরকারের পতনের পর আগারগাঁও থেকে আস্তানা গুটিয়ে আশকোনায় চলে যান সাগর। সেখানে সিভিল অ্যাভিয়েশনের এক কর্মচারীর মাধ্যমে সোনা চোরাচালানকারী ‘গোল্ড মজিবরের’ সঙ্গে পরিচয়। বলা যায়, মজিবরের হাত ধরেই এই কারবারে নামেন সাগর।
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নেন বাস্টার্ড সেলিম। তখন বি. সেলিম, গোল্ড মজিবর ও সাগর মিলে সোনা চোরাচালানের কাজে নেমে পড়েন।
১৯৯৪ সালে সাগরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কিছুদিন পর ছাড়া পেয়ে যান। ১৯৯৫ সালে বিমানবন্দরে গোলাগুলির সময় অস্ত্রসহ ল্যাংড়া রফিক ধরা পড়েন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সাগরকে গ্রেপ্তার করে ডিটেনশনে দেওয়া হয়। জেল থেকে বেরিয়ে কাওলার কামালের সঙ্গে বিরোধে জড়ান। কামাল গুলিতে আহত হলে এলাকার লোকজন সাগরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। কিন্তু এরই মধ্যে বিমানবন্দর এলাকায় নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে ফেলেন সাগর। বিমানবন্দরের গাড়ি পার্কিং ও কনকর্স হল ইজারা নিয়ে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে নেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর যুবলীগের লিয়াকত ও মুরগি মিলনের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন সাগর। কিন্তু আওয়ামী লীগ আমলে সাগরের হাত থেকে বিমানবন্দরের ইজারা চলে যায় আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ছেলে দীপু চৌধুরীর হাতে। এতে মুরগি মিলনের লাভ হয়। বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ আসে মিলনের হাতে। এই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সাগর ও মিলনের মধ্যে বিরোধ। পরে কালা জাহাঙ্গীর ও সুব্রত বাইনের সঙ্গে মিলে মুরগি মিলনকে খুন করেন সাগর। মিলন খুন হওয়ার পর সাগর একটি পত্রিকাকে বলেছিলেন, মামলায় তাঁর নাম ঢুকিয়েছিলেন লিয়াকত ও আওরঙ্গ।
পুলিশের খাতায় সাগরের বিরুদ্ধে মামলা ছিল ১২টি। সব মামলায় তিনি জামিন পেয়েছিলেন। ওই সময় তিনি গুলশানে একটি ফ্ল্যাট ও নিকুঞ্জে একটি প্লট কেনেন। আশকোনায় তাঁর একটি চারতলা বাড়িও ছিল। ঢাকাই সন্ত্রাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বিত্তবান ছিলেন সাগর।
২০০১ সালের ৩ এপ্রিল দুবাই থেকে ঢাকায় ফেরার পথে সাগরকে গ্রেপ্তার করেন এসবির সাব ইন্সপেক্টর রেজা। তিনি ছিলেন এএসপি খলিলুর রহমানের টিমের সদস্য। সাগরকে নিয়ে যাওয়া হয় ১০/এ নিউ বেইলি রোডের সিটি এসবি অফিসে। এসবির বিশেষ সুপার (এসএস) ছিলেন ইমামুল হক ফিরোজ (হাইকোর্টের আইনজীবী)। এখনকার অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুব হোসেন ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। এসএসের রুমে কয়েকজন সাংবাদিক বসা। আমাদের সামনে টোকাই সাগরকে আনা হয়। ঠিক এ সময় সেই কক্ষে আসেন আমার সেই বন্ধু সাংবাদিক। তাঁকে দেখেই চরম ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সাগর। অশ্লীল ভাষায় বলেন: ‘...তোকে আমি দেখে নেব।’
দিন কয়েক আগে অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুব হোসেন বলেন, টোকাই সাগরের সেই চোখরাঙানির কথা তাঁর এখনো মনে আছে।
টোকাই সাগরকে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদের পর জেলে পাঠানো হয়। বেশ কয়েক মাস জেলে থাকেন। এরপর একদিন সবার অজান্তে জামিনে বেরিয়ে দেশ ছেড়ে চলে যান। এত অপরাধ করেও তাঁকে কোনো বিচারের মুখোমুখি হতে হলো না। আমরাও নানান ইস্যুর ভিড়ে তাঁকে ভুলে গেলাম।
একদিন সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ সাগরের স্ত্রীর ফোন। তিনি বললেন, তাঁর দেবরের পরিবার ডিভিওয়ানে আমেরিকায় গেছে। তাঁরাও সপরিবারে আমেরিকায় চলে যাচ্ছেন। আমার কাছে আবারও সেই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন, ক্ষমা চাইলেন।
এভাবেই সবার চোখের সামনে দিয়ে দেশ ছেড়ে চলে গেলেন শীর্ষ চোরাকারবারি ও সন্ত্রাসী টোকাই সাগর। শুনেছি, সাগর এখন নিউইয়র্কের ফ্ল্যাশিং এলাকায় বাড়ি কেনাবেচার ব্যবসায় বেশ নামডাক করেছেন।

অভ্যর্থনাকক্ষ থেকে কে যেন ফোন করে বললেন, এক নারী দুই বাচ্চা নিয়ে দেখা করতে এসেছেন। সঙ্গে এক বন্ধু সাংবাদিক। একটু পর এলেন সেই নারী, সঙ্গে এক ছেলে ও এক মেয়ে। মার্জিত পোশাক, কথাবার্তায় ভীষণ বিনয়ী। পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘আমি মাহবুবা রসুল লিপি।’
এটুকু বলায় চেনা গেল না। স্বামীর নাম বললেন আমিন রসুল সাগর। চিনতে আর বাকি রইল না। বললাম, আপনি তাহলে টোকাই সাগরের স্ত্রী? তিনি মাথা নাড়লেন। সাগরের সঙ্গে এই নারীকে কোনোভাবেই মেলানো যায় না। বাচ্চারা একজন বিআইটিতে, অন্যজন আইআইটিতে পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই তাদের মুখে বাংলা আসে না।
জানতে চাইলাম, শীর্ষসন্ত্রাসীকে বিয়ে করলেন কেন? হেসে বললেন, পারিবারিক সম্মতিতেই বিয়ে হয়েছে। তাঁর বাবা আগারগাঁও কৃষি ইনস্টিটিউটে চাকরি করেন। আসার কারণ জানতে চাইলে বলেন, আগের দিন তাঁর স্বামীর ব্যবহারের কারণে তিনি ক্ষমা চাইতে এসেছেন।
এই নারীর স্বামী শীর্ষসন্ত্রাসী আমিন রসুল সাগর ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে ‘টোকাই সাগর’ নামে পরিচিত ছিলেন। গুলশানের ডিসিসি মার্কেটে আমিন রসুল ট্রেডার্সে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় আমার। সেই সাক্ষাতের সময় তিনি গুলিভর্তি অস্ত্রটি টেবিলের ওপর রেখে আমাকে বলেছিলেন: ‘বলেন, কী জানতে চান?’
এটা ২০০০ সালের প্রথম দিকের ঘটনা। পরদিন জনকণ্ঠে টোকাই সাগরকে নিয়ে যে রিপোর্ট করি, সেখানে অস্ত্র দেখানোর কথাটা এড়িয়ে যাই। সেই ঘটনার পর সাগর তাঁর স্ত্রীকে পাঠিয়েছেন দুঃখ প্রকাশের জন্য।
সাগর তখন আন্ডারওয়ার্ল্ড ও রাজনৈতিক অঙ্গন—দুই দিকেই প্রতাপশালী। তিনি ছিলেন ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
সেই কমিটির সভাপতি প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। কী কী অভিযোগ নিয়ে কথা হয়েছিল, তার সব মনে নেই। তবে এটা মনে আছে, তিনি বলেছিলেন, যুবলীগের নেতা আওরঙ্গ ও শীর্ষসন্ত্রাসী লিয়াকত তাঁর ক্যারিয়ার ধ্বংসের জন্য এসব করেছেন। পত্রিকায় তাঁর বিরুদ্ধে যেসব খবর লেখা হচ্ছে, সবই তাঁদের দেওয়া। এমনকি তাঁর নামের আগে ‘টোকাই’ উপাধিটাও লিয়াকতের দেওয়া বলে দাবি করেছিলেন।
সাগরের স্ত্রী চলে যাওয়ার পর আমি কিছুটা চিন্তামুক্ত হলেও ভয়ে ভয়ে ছিলেন আমার এক বন্ধু সাংবাদিক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতীয় চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটির সভার সূত্র ধরে তিনি টোকাই সাগরের বিরুদ্ধে একটি নিউজ করেন। সেই নিউজ ছাপার পর সাগর তাঁকে হুমকি দেন। সেই বন্ধুকে মারার ছকও কষেন।
টোকাই সাগরকে নিয়ে আমি প্রথম বড় একটি নিউজ করি ১৯৯৮ সালের প্রথম দিকে, জনকণ্ঠে। বিমানবন্দর থেকে পাচার করা একটি সোনার চালান টোকাই সাগরের লোকজন মেরে দিয়েছিলেন। চালানটি ছিল কলকাতার এক ব্যবসায়ীর। পুলিশের কাছে তথ্য ছিল, চালানটা বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে সোনার পাইকারি বাজারে যাবে। চালান ধরতে পুলিশ ওত পেতে ছিল বিমানবন্দর মোড়ে। ঠিক সময়ে চালানটি বিমানবন্দর থেকে বের হলেও ৮ নম্বর হ্যাঙ্গার গেটের মুখে টোকাই সাগরের লোকজন আটকে দেন। সোনার বাহকেরা তাঁদের পুলিশের লোক ভেবে গাড়ি ফেলে পালিয়ে যান। সোনা চলে যায় সাগরের লোকজনের হাতে।
এই সোনা ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে ওই সময় বেশ হইচই হয়। গোয়েন্দা পুলিশের এসি মিয়া আবদুস ছালাম (বর্তমানে অবসরে) আমাকে বলেছিলেন, ওই চালানে নাকি ২০ কেজির মতো সোনা ছিল। কিন্তু প্রমাণ না থাকায় অন্ধকার জগতের জিনিস অন্ধকারেই হারিয়ে যায়।
সোনা চোরাচালানের ক্ষেত্রে ঢাকা বরাবরই ছিল ট্রানজিট রুট। সৌদি আরব, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া থেকে টনে টনে সোনা নামে ঢাকায়। সেই সোনা চলে যায় ভারতের ব্যবসায়ীদের হাতে। এসব সোনা কেড়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে দুজন সন্ত্রাসীর নাম সবচেয়ে আলোচিত ছিল—একজন মুরগি মিলন, অন্যজন টোকাই সাগর। একসময় দুজন একসঙ্গে এই কাজ করতেন। আমার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় টোকাই সাগর বলেছিলেন, ‘মগবাজার মোড়ে বিএনপির মিছিলে হামলার আগপর্যন্ত আমি লিয়াকত-মিলনের বাসায় দাওয়াতও খেয়েছি।’
পুলিশের খাতা অনুযায়ী, টোকাই সাগরের জন্ম চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের বাউরিয়া গ্রামে। তাঁর বাবা সাগরে মাছ ধরতেন। সাগরের আসল নাম আমির হোসেন। টোকাই সাগর আমাকে বলেছিলেন, তিনি সন্দ্বীপের বাউরিয়া হাইস্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাড়ি ছাড়েন। সন্দ্বীপ থেকে আসেন চট্টগ্রামের কর্ণফুলী মার্কেটে। সেখানে এক মাস্তানের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। ১৯৮৬ সালে কর্ণফুলী মার্কেটে চাঁদাবাজি নিয়ে এক যুবক খুন হন। সেই মামলায় তাঁর নাম আসে। এরপর চলে আসেন ঢাকায়। আগারগাঁও বস্তিতে এসে নিজের নাম বদলে রাখেন আমিন রসুল সাগর। এখানে এসেও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৮৯ সালে ডাকাতির অভিযোগে ডিবি তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
শোনা যায়, জেলে যাওয়ার পর সাগরের সঙ্গে ছাত্রদলের ক্যাডার নীরু ও বি. সেলিমের পরিচয় হয়। বি. সেলিম পরে ‘বাস্টার্ড সেলিম’ নামে পরিচিতি পান। তাঁরা সাগরকে অস্ত্র সংগ্রহের কাজে লাগান।
এরশাদ সরকারের পতনের পর আগারগাঁও থেকে আস্তানা গুটিয়ে আশকোনায় চলে যান সাগর। সেখানে সিভিল অ্যাভিয়েশনের এক কর্মচারীর মাধ্যমে সোনা চোরাচালানকারী ‘গোল্ড মজিবরের’ সঙ্গে পরিচয়। বলা যায়, মজিবরের হাত ধরেই এই কারবারে নামেন সাগর।
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নেন বাস্টার্ড সেলিম। তখন বি. সেলিম, গোল্ড মজিবর ও সাগর মিলে সোনা চোরাচালানের কাজে নেমে পড়েন।
১৯৯৪ সালে সাগরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কিছুদিন পর ছাড়া পেয়ে যান। ১৯৯৫ সালে বিমানবন্দরে গোলাগুলির সময় অস্ত্রসহ ল্যাংড়া রফিক ধরা পড়েন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সাগরকে গ্রেপ্তার করে ডিটেনশনে দেওয়া হয়। জেল থেকে বেরিয়ে কাওলার কামালের সঙ্গে বিরোধে জড়ান। কামাল গুলিতে আহত হলে এলাকার লোকজন সাগরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। কিন্তু এরই মধ্যে বিমানবন্দর এলাকায় নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে ফেলেন সাগর। বিমানবন্দরের গাড়ি পার্কিং ও কনকর্স হল ইজারা নিয়ে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে নেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর যুবলীগের লিয়াকত ও মুরগি মিলনের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন সাগর। কিন্তু আওয়ামী লীগ আমলে সাগরের হাত থেকে বিমানবন্দরের ইজারা চলে যায় আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ছেলে দীপু চৌধুরীর হাতে। এতে মুরগি মিলনের লাভ হয়। বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ আসে মিলনের হাতে। এই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সাগর ও মিলনের মধ্যে বিরোধ। পরে কালা জাহাঙ্গীর ও সুব্রত বাইনের সঙ্গে মিলে মুরগি মিলনকে খুন করেন সাগর। মিলন খুন হওয়ার পর সাগর একটি পত্রিকাকে বলেছিলেন, মামলায় তাঁর নাম ঢুকিয়েছিলেন লিয়াকত ও আওরঙ্গ।
পুলিশের খাতায় সাগরের বিরুদ্ধে মামলা ছিল ১২টি। সব মামলায় তিনি জামিন পেয়েছিলেন। ওই সময় তিনি গুলশানে একটি ফ্ল্যাট ও নিকুঞ্জে একটি প্লট কেনেন। আশকোনায় তাঁর একটি চারতলা বাড়িও ছিল। ঢাকাই সন্ত্রাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বিত্তবান ছিলেন সাগর।
২০০১ সালের ৩ এপ্রিল দুবাই থেকে ঢাকায় ফেরার পথে সাগরকে গ্রেপ্তার করেন এসবির সাব ইন্সপেক্টর রেজা। তিনি ছিলেন এএসপি খলিলুর রহমানের টিমের সদস্য। সাগরকে নিয়ে যাওয়া হয় ১০/এ নিউ বেইলি রোডের সিটি এসবি অফিসে। এসবির বিশেষ সুপার (এসএস) ছিলেন ইমামুল হক ফিরোজ (হাইকোর্টের আইনজীবী)। এখনকার অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুব হোসেন ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। এসএসের রুমে কয়েকজন সাংবাদিক বসা। আমাদের সামনে টোকাই সাগরকে আনা হয়। ঠিক এ সময় সেই কক্ষে আসেন আমার সেই বন্ধু সাংবাদিক। তাঁকে দেখেই চরম ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সাগর। অশ্লীল ভাষায় বলেন: ‘...তোকে আমি দেখে নেব।’
দিন কয়েক আগে অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুব হোসেন বলেন, টোকাই সাগরের সেই চোখরাঙানির কথা তাঁর এখনো মনে আছে।
টোকাই সাগরকে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদের পর জেলে পাঠানো হয়। বেশ কয়েক মাস জেলে থাকেন। এরপর একদিন সবার অজান্তে জামিনে বেরিয়ে দেশ ছেড়ে চলে যান। এত অপরাধ করেও তাঁকে কোনো বিচারের মুখোমুখি হতে হলো না। আমরাও নানান ইস্যুর ভিড়ে তাঁকে ভুলে গেলাম।
একদিন সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ সাগরের স্ত্রীর ফোন। তিনি বললেন, তাঁর দেবরের পরিবার ডিভিওয়ানে আমেরিকায় গেছে। তাঁরাও সপরিবারে আমেরিকায় চলে যাচ্ছেন। আমার কাছে আবারও সেই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন, ক্ষমা চাইলেন।
এভাবেই সবার চোখের সামনে দিয়ে দেশ ছেড়ে চলে গেলেন শীর্ষ চোরাকারবারি ও সন্ত্রাসী টোকাই সাগর। শুনেছি, সাগর এখন নিউইয়র্কের ফ্ল্যাশিং এলাকায় বাড়ি কেনাবেচার ব্যবসায় বেশ নামডাক করেছেন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

অভ্যর্থনা কক্ষ থেকে কে যেন ফোন করে বললেন, এক নারী দুই বাচ্চা নিয়ে দেখা করতে এসেছেন। সঙ্গে এক বন্ধু-সাংবাদিক। একটু পর এলেন সেই নারী–সঙ্গে এক ছেলে, এক মেয়ে। মার্জিত পোশাক, কথাবার্তায় ভীষণ বিনয়ী। পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘আমি মাহবুবা রসুল লিপি।’
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

অভ্যর্থনা কক্ষ থেকে কে যেন ফোন করে বললেন, এক নারী দুই বাচ্চা নিয়ে দেখা করতে এসেছেন। সঙ্গে এক বন্ধু-সাংবাদিক। একটু পর এলেন সেই নারী–সঙ্গে এক ছেলে, এক মেয়ে। মার্জিত পোশাক, কথাবার্তায় ভীষণ বিনয়ী। পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘আমি মাহবুবা রসুল লিপি।’
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অভ্যর্থনা কক্ষ থেকে কে যেন ফোন করে বললেন, এক নারী দুই বাচ্চা নিয়ে দেখা করতে এসেছেন। সঙ্গে এক বন্ধু-সাংবাদিক। একটু পর এলেন সেই নারী–সঙ্গে এক ছেলে, এক মেয়ে। মার্জিত পোশাক, কথাবার্তায় ভীষণ বিনয়ী। পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘আমি মাহবুবা রসুল লিপি।’
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অভ্যর্থনা কক্ষ থেকে কে যেন ফোন করে বললেন, এক নারী দুই বাচ্চা নিয়ে দেখা করতে এসেছেন। সঙ্গে এক বন্ধু-সাংবাদিক। একটু পর এলেন সেই নারী–সঙ্গে এক ছেলে, এক মেয়ে। মার্জিত পোশাক, কথাবার্তায় ভীষণ বিনয়ী। পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘আমি মাহবুবা রসুল লিপি।’
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে