কামরুল হাসান

লাশকাটা ঘরে পড়ে আছে লাশটি। ঠিকানা নেই, তাই মর্গের খাতায় নাম ওঠেনি। নাম নেই পুলিশের কাগজপত্রেও। এর নাম বেওয়ারিশ লাশ। ঢাকায় প্রতিদিন ছয়-সাতজন এভাবে বেওয়ারিশ হয়। ওই তরুণীও সেভাবেই বেওয়ারিশ হয়েছিলেন। যখন পরিচয় পাওয়া গেল, ততক্ষণে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম তাঁকে দাফন করে ফেলেছে। কে জানত, এত জনপ্রিয় মেয়েটি!
জনকণ্ঠের কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা ছিলেন সালাউদ্দিন আহমেদ। একদিন সন্ধ্যায় শার্টের বুক পকেটে করে একটি লাশের ছবি নিয়ে অফিসে হাজির। বললেন, ‘বস, এইডা একটু ছাপাইয়া দ্যান। দ্যাকতে বড় লোকের মাইয়ার মতন লাগে।' সালাউদ্দিনের বর্ণনা ছিল, চীন-মৈত্রী সেতুর পশ্চিম দিক থেকে ১১ নম্বর পিলারের ওপর লাশটি পড়ে ছিল। কেরানীগঞ্জ থানার এএসআই শফিউদ্দিন লাশ উদ্ধার করেছেন। পুলিশ মনে করছে, মেয়েটি আত্মহত্যার জন্য বুড়িগঙ্গা ব্রিজ থেকে লাফ দিয়েছিল। কিন্তু পানিতে না পড়ে পিলারের ওপর পড়েছে। মিটফোর্ড মর্গে লাশ আছে, চার দিনে কেউ তাঁর খোঁজ নিতে আসেনি। পত্রিকায় ছবি ছাপা হলে হয়তো পরিচয় মিলবে। ২০০২ সালের কথা বলছি। তখন সংবাদপত্রে লাশের ছবি ছাপা নিয়ে অত রাখঢাক ছিল না। হরদম ছাপা হতো।
ছবিটি নিয়ে চিফ রিপোর্টারকে দেখালাম, পাত্তা পেলাম না। পরদিন বার্তা সম্পাদককে অনুরোধ করতেই বললেন, ‘পেজ টু-এ দিয়ে দেন।’ ‘এই তরুণীর পরিচয় নেই’ শিরোনামে তিন কলামজুড়ে ছাপা হলো অজ্ঞাত তরুণীর লাশের ছবি।
এটা ২০০২ সালের ১৬ নভেম্বর। ওই দিন দুপুরে ধানমন্ডি থেকে ফোন দিলেন অনু নামের এক যুবক। বললেন, ছাপা ছবিটির মূল ছবি তাঁরা দেখতে চান। সেটা দেখতে একটি পরিবার আমার অফিসে আসবে। কলাবাগান থেকে ইস্কাটনে জনকণ্ঠ ভবনে তাঁরা এলেন সন্ধ্যার দিকে। ছবিটি হাতে নিতেই সুজন নামে একজন বলে উঠলেন, ‘ঠিকই তো আছে।’ পাশে থাকা এক নারী ছবির দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলেন। তাঁর দেখাদেখি আরেকজনও শুরু করলেন কান্না। যতই চুপ করতে বলি, কেউ কথা শোনেন না। বললাম, এটা কার ছবি? কেউ বলেন না। তাঁদের সঙ্গে আসা অনু বললেন, এটা মডেল তিন্নি ওরফে সৈয়দা তানিয়া মাহবুবের ছবি। কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। মাঝবয়সী এক নারীকে দেখিয়ে বললেন, ‘উনি তিন্নির ফুফু’।
একজন একটু শান্ত হয়ে জানতে চাইলেন, এখন তাঁদের কী করতে হবে। বললাম, আগে মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। সবাই গাড়িতে উঠে চলে গেলেন।
ঘণ্টা দেড়েক পর অনুর ফোন: ‘ভাই, মর্গে তো লাশ নেই। আজ বিকেলে আঞ্জুমান জুরাইন কবরস্থানে দাফন কইরা ফেলছে।’ বললাম, এবার কেরানীগঞ্জ থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। তিন্নির চাচা সৈয়দ রেজাউল করিমও সম্ভবত তাঁদের সঙ্গে ছিলেন।
পরদিন ফলোআপ করতে তিন্নিদের কলাবাগানের বাড়িতে গেলাম। মনে হলো সবাই খুব ভয়ে আছেন। কেউ কিছু বললেন না। কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা হলো। তদন্ত শুরু করলেন এসআই কাইয়ুম আলী সরদার। তিনি তদন্তের শুরুতেই তিন্নির স্বামী শাফকাত হোসেন পিয়ালকে গ্রেপ্তার করলেন। পুলিশ ধরে নিয়েছিল, এ ঘটনার কয়েক দিন আগে তিন্নির সঙ্গে পিয়ালের ছাড়াছাড়ি হয়। সেই ক্ষোভেই পিয়াল মেয়েটিকে খুন করেছেন।
কেরানীগঞ্জ থানায় গিয়ে পিয়ালের সঙ্গে কথা বলতেই পেয়ে গেলাম আসল খবর। পিয়ালের এক বন্ধু সে সময় থানায় ছিলেন। বললেন, নামকরা একটি পত্রিকার কাভার ফটো হওয়ার পর রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যান তিন্নি। এরপর খুব কম সময়ে তিনি অনেকগুলো নামী পণ্যের মডেল হন। তাঁর এই সাফল্যের পেছনের মানুষ ছিলেন স্বামী শাফকাত হোসেন পিয়াল। তাঁদের তিন বছরের সংসারে দেড় বছরের একটি মেয়ে ছিল।
একদিন একটি পাঁচতারকা হোটেলের পার্টিতে এসে তিন্নির সঙ্গে পরিচয় হয় সাবেক সাংসদ গোলাম ফারুক অভির। অভির প্রেমে পড়ে যান তিন্নি। তখন অভি থাকতেন নিউ ইস্কাটনের প্রোপার্টি এনক্লেভের একটি ফ্ল্যাটে। সেখানে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন তিন্নি। অভির সঙ্গে কয়েকবার বিদেশেও যান। নতুন সম্পর্ক নিয়ে পিয়ালের সঙ্গে বিরোধ বাধে তিন্নির। তিন্নি সিদ্ধান্ত নেন পিয়ালকে ছেড়ে অভিকেই বিয়ে করবেন।
২০০২ সালের ৬ নভেম্বর পিয়ালের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করে দেড় বছরের মেয়েকে স্বামীর কাছে রেখে অভির ইস্কাটনের ফ্ল্যাটে চলে আসেন তিন্নি। সেখানে থাকার সময় ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর রাতে তিনি খুন হন।
এই খুনের মামলা যাঁরা তদন্ত করেছিলেন, তাঁদের একজন সিআইডির এএসপি আরমান আলী। অভির গাড়িচালক, গৃহকর্মী ও ফ্ল্যাটের নিরাপত্তাকর্মীকে জেরা করেন তিনি। আরমান আলী আমাকে বলেছিলেন, ইস্কাটনের বাড়িতে এসে বিয়ের জন্য অভিকে চাপ দিতে থাকেন তিন্নি। কিন্তু অভি রাজি হচ্ছিলেন না। একপর্যায়ে গণমাধ্যমের কাছে এ ঘটনা ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অভি তিন্নির মাথায় আঘাত করেন। সঙ্গে সঙ্গে নিস্তেজ হয়ে পড়েন তিন্নি। এরপর গভীর রাতে অভি সেই মরদেহ গাড়িতে তুলে বুড়িগঙ্গা ব্রিজের কাছে যান। এরপর ব্রিজের ওপর থেকে লাশটি নদীতে ফেলে দেন। কিন্তু পানিতে না পড়ে লাশ পড়ে ব্রিজের পিলারের মাথার ওপর।
সাতজন তদন্তকারী এই মামলার তদন্ত করেন। ছয় বছর পর ২০০৮ সালের ৮ নভেম্বর চার্জশিট দিয়েছিলেন সিআইডির এএসপি মোজাম্মেল হক। অভিনেত্রী তমালিকা কর্মকার, অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় ও নাট্যকার এজাজ খান এই মামলার সাক্ষী ছিলেন। আরেক সাক্ষী ছিলেন শীর্ষসন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন। ইমন পুলিশকে বলেছিলেন, তিন্নি খুনের পর অভি ঢাকা থেকে পালিয়ে নেপাল হয়ে কলকাতায় যান। কলকাতায় তাঁর আশ্রয়ে থাকার সময় তিন্নিকে খুন করার কথা স্বীকার করেন অভি।
এবার অভিকে নিয়ে কিছু বলতেই হয়। বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ধামুড়া গ্রামের আরশাদ আহমেদের চার ছেলে ও চার মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে ছোট গোলাম ফারুক অভি। অসম্ভব মেধাবী অভি এসএসসিতে মেধাতালিকায় স্থান পান। ভাইবোনদের সবাই উচ্চশিক্ষিত, কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কেউ পদস্থ সরকারি চাকুরে। একজন নামকরা সাংবাদিক। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ‘হিফজুল বাহার’-এ সওয়ার হয়েছিলেন ছাত্রজীবনে। তারপর জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে ভিড়ে যান। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদকও হন। আরেক ছাত্রনেতা নীরুর সঙ্গে মিলে গড়ে তোলেন বিশাল এক বাহিনী। ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি তাঁরা নানা ধরনের সন্ত্রাসী কাজে জড়িয়ে পড়েন।
এরশাদবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন তখন তুঙ্গে। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে ছাত্রদল প্রকাশ্যে থাকলেও অভি-নীরু গোপনে এরশাদের সঙ্গে আঁতাত করেন। এর মধ্যে ১৯৮৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হল থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন অভি। এতে তাঁর ভাগ্য খুলে যায়। জেলে এরশাদের লোকজন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরশাদের পক্ষে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জেল থেকে বেরিয়ে আসেন অভি। ১৯৯০-এর ২৭ নভেম্বর এরশাদের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় দখলে নেতৃত্ব দেন অভি-নীরু। ওই দিন গুলিতে ডা. মিলন নিহত হলে পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে ওঠে। কয়েক দিন পর এরশাদের পতন হয়।
এনএসআইয়ের সাবেক পরিচালক সফিক উল্লাহ তাঁর বই ‘এক পুলিশের ডায়েরি’তে লিখেছেন, এরশাদের এক সেনা কর্মকর্তার নির্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দখল করতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে অভিদের জন্য সরকারি গুলি সরবরাহ করা হয়। পরে সেই গুলির কিছু অংশ রাজারবাগে ফেরতও দেওয়া হয়। রাজারবাগের অস্ত্রাগারের নথিতে এসব তথ্য রয়েছে।
ডা. মিলন হত্যার পর গোপনে কলকাতায় চলে যান অভি। ফিরে এসে বরিশাল-২ আসন থেকে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হন ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে। ২০০১ সালের নির্বাচনে ওই আসনে বিএনপির মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের কাছে হেরে যান।
অভির জীবন ছিল বেপরোয়া। বহু অভিনেত্রী, মডেল ও চিত্রনায়িকা তাঁর লালসার শিকার হয়েছেন। একবার ব্যক্তিগত ছবি ফাঁস করার অভিযোগে এক অভিনেত্রী তাঁর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলেন। অভির সর্বশেষ শিকার মডেল তিন্নি।
অভির বিরুদ্ধে তিন্নি খুনের অভিযোগ ওঠে লাশ উদ্ধারের চার-পাঁচ দিন পর। এরপরই গা-ঢাকা দেন তিনি। শুনেছিলাম, একটি ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সহায়তায় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নেপালে যান। সেখান থেকে কলকাতা হয়ে থিতু হন কানাডায়। রমনা থানার একটি অস্ত্র মামলায় অভির ১৭ বছরের সাজা হয়েছে। তাঁকে ধরতে ইন্টারপোল কয়েক দফা রেড নোটিশ জারি করেছিল। সব মিলিয়ে পুলিশি তৎপরতা বলতে ছিল এটুকুই।
এই লেখাটা শেষ করার আগে তিন্নির ফেলে আসা পরিবারের খোঁজ নিলাম। তাঁর মেয়ে এখন বাবার সঙ্গে বিদেশে থাকেন। তিন্নিরা ছিলেন দুই বোন, ছোট বোন এয়ারহোস্টেস। তাঁর প্রবাসী বাবা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান এখন দেশে একাই থাকেন। তিন্নির মা স্বামীকে ছেড়ে পাকিস্তানে চলে গেছেন। কলাবাগানে ফুফুর যে বাড়িতে তিন্নিরা থাকতেন, অভির ভয়ে সেটাও বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয় পরিবারটি। এভাবে একটি খুন লন্ডভন্ড করে দেয় গোটা একটি পরিবারকে। অথচ ঘটনার মূল হোতা অভি থেকে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে।
আসলে, ধর্মের কলও অনেক সময় বাতাসে নড়ে না।
আরও পড়ুন:

লাশকাটা ঘরে পড়ে আছে লাশটি। ঠিকানা নেই, তাই মর্গের খাতায় নাম ওঠেনি। নাম নেই পুলিশের কাগজপত্রেও। এর নাম বেওয়ারিশ লাশ। ঢাকায় প্রতিদিন ছয়-সাতজন এভাবে বেওয়ারিশ হয়। ওই তরুণীও সেভাবেই বেওয়ারিশ হয়েছিলেন। যখন পরিচয় পাওয়া গেল, ততক্ষণে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম তাঁকে দাফন করে ফেলেছে। কে জানত, এত জনপ্রিয় মেয়েটি!
জনকণ্ঠের কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা ছিলেন সালাউদ্দিন আহমেদ। একদিন সন্ধ্যায় শার্টের বুক পকেটে করে একটি লাশের ছবি নিয়ে অফিসে হাজির। বললেন, ‘বস, এইডা একটু ছাপাইয়া দ্যান। দ্যাকতে বড় লোকের মাইয়ার মতন লাগে।' সালাউদ্দিনের বর্ণনা ছিল, চীন-মৈত্রী সেতুর পশ্চিম দিক থেকে ১১ নম্বর পিলারের ওপর লাশটি পড়ে ছিল। কেরানীগঞ্জ থানার এএসআই শফিউদ্দিন লাশ উদ্ধার করেছেন। পুলিশ মনে করছে, মেয়েটি আত্মহত্যার জন্য বুড়িগঙ্গা ব্রিজ থেকে লাফ দিয়েছিল। কিন্তু পানিতে না পড়ে পিলারের ওপর পড়েছে। মিটফোর্ড মর্গে লাশ আছে, চার দিনে কেউ তাঁর খোঁজ নিতে আসেনি। পত্রিকায় ছবি ছাপা হলে হয়তো পরিচয় মিলবে। ২০০২ সালের কথা বলছি। তখন সংবাদপত্রে লাশের ছবি ছাপা নিয়ে অত রাখঢাক ছিল না। হরদম ছাপা হতো।
ছবিটি নিয়ে চিফ রিপোর্টারকে দেখালাম, পাত্তা পেলাম না। পরদিন বার্তা সম্পাদককে অনুরোধ করতেই বললেন, ‘পেজ টু-এ দিয়ে দেন।’ ‘এই তরুণীর পরিচয় নেই’ শিরোনামে তিন কলামজুড়ে ছাপা হলো অজ্ঞাত তরুণীর লাশের ছবি।
এটা ২০০২ সালের ১৬ নভেম্বর। ওই দিন দুপুরে ধানমন্ডি থেকে ফোন দিলেন অনু নামের এক যুবক। বললেন, ছাপা ছবিটির মূল ছবি তাঁরা দেখতে চান। সেটা দেখতে একটি পরিবার আমার অফিসে আসবে। কলাবাগান থেকে ইস্কাটনে জনকণ্ঠ ভবনে তাঁরা এলেন সন্ধ্যার দিকে। ছবিটি হাতে নিতেই সুজন নামে একজন বলে উঠলেন, ‘ঠিকই তো আছে।’ পাশে থাকা এক নারী ছবির দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলেন। তাঁর দেখাদেখি আরেকজনও শুরু করলেন কান্না। যতই চুপ করতে বলি, কেউ কথা শোনেন না। বললাম, এটা কার ছবি? কেউ বলেন না। তাঁদের সঙ্গে আসা অনু বললেন, এটা মডেল তিন্নি ওরফে সৈয়দা তানিয়া মাহবুবের ছবি। কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। মাঝবয়সী এক নারীকে দেখিয়ে বললেন, ‘উনি তিন্নির ফুফু’।
একজন একটু শান্ত হয়ে জানতে চাইলেন, এখন তাঁদের কী করতে হবে। বললাম, আগে মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। সবাই গাড়িতে উঠে চলে গেলেন।
ঘণ্টা দেড়েক পর অনুর ফোন: ‘ভাই, মর্গে তো লাশ নেই। আজ বিকেলে আঞ্জুমান জুরাইন কবরস্থানে দাফন কইরা ফেলছে।’ বললাম, এবার কেরানীগঞ্জ থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। তিন্নির চাচা সৈয়দ রেজাউল করিমও সম্ভবত তাঁদের সঙ্গে ছিলেন।
পরদিন ফলোআপ করতে তিন্নিদের কলাবাগানের বাড়িতে গেলাম। মনে হলো সবাই খুব ভয়ে আছেন। কেউ কিছু বললেন না। কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা হলো। তদন্ত শুরু করলেন এসআই কাইয়ুম আলী সরদার। তিনি তদন্তের শুরুতেই তিন্নির স্বামী শাফকাত হোসেন পিয়ালকে গ্রেপ্তার করলেন। পুলিশ ধরে নিয়েছিল, এ ঘটনার কয়েক দিন আগে তিন্নির সঙ্গে পিয়ালের ছাড়াছাড়ি হয়। সেই ক্ষোভেই পিয়াল মেয়েটিকে খুন করেছেন।
কেরানীগঞ্জ থানায় গিয়ে পিয়ালের সঙ্গে কথা বলতেই পেয়ে গেলাম আসল খবর। পিয়ালের এক বন্ধু সে সময় থানায় ছিলেন। বললেন, নামকরা একটি পত্রিকার কাভার ফটো হওয়ার পর রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যান তিন্নি। এরপর খুব কম সময়ে তিনি অনেকগুলো নামী পণ্যের মডেল হন। তাঁর এই সাফল্যের পেছনের মানুষ ছিলেন স্বামী শাফকাত হোসেন পিয়াল। তাঁদের তিন বছরের সংসারে দেড় বছরের একটি মেয়ে ছিল।
একদিন একটি পাঁচতারকা হোটেলের পার্টিতে এসে তিন্নির সঙ্গে পরিচয় হয় সাবেক সাংসদ গোলাম ফারুক অভির। অভির প্রেমে পড়ে যান তিন্নি। তখন অভি থাকতেন নিউ ইস্কাটনের প্রোপার্টি এনক্লেভের একটি ফ্ল্যাটে। সেখানে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন তিন্নি। অভির সঙ্গে কয়েকবার বিদেশেও যান। নতুন সম্পর্ক নিয়ে পিয়ালের সঙ্গে বিরোধ বাধে তিন্নির। তিন্নি সিদ্ধান্ত নেন পিয়ালকে ছেড়ে অভিকেই বিয়ে করবেন।
২০০২ সালের ৬ নভেম্বর পিয়ালের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করে দেড় বছরের মেয়েকে স্বামীর কাছে রেখে অভির ইস্কাটনের ফ্ল্যাটে চলে আসেন তিন্নি। সেখানে থাকার সময় ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর রাতে তিনি খুন হন।
এই খুনের মামলা যাঁরা তদন্ত করেছিলেন, তাঁদের একজন সিআইডির এএসপি আরমান আলী। অভির গাড়িচালক, গৃহকর্মী ও ফ্ল্যাটের নিরাপত্তাকর্মীকে জেরা করেন তিনি। আরমান আলী আমাকে বলেছিলেন, ইস্কাটনের বাড়িতে এসে বিয়ের জন্য অভিকে চাপ দিতে থাকেন তিন্নি। কিন্তু অভি রাজি হচ্ছিলেন না। একপর্যায়ে গণমাধ্যমের কাছে এ ঘটনা ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অভি তিন্নির মাথায় আঘাত করেন। সঙ্গে সঙ্গে নিস্তেজ হয়ে পড়েন তিন্নি। এরপর গভীর রাতে অভি সেই মরদেহ গাড়িতে তুলে বুড়িগঙ্গা ব্রিজের কাছে যান। এরপর ব্রিজের ওপর থেকে লাশটি নদীতে ফেলে দেন। কিন্তু পানিতে না পড়ে লাশ পড়ে ব্রিজের পিলারের মাথার ওপর।
সাতজন তদন্তকারী এই মামলার তদন্ত করেন। ছয় বছর পর ২০০৮ সালের ৮ নভেম্বর চার্জশিট দিয়েছিলেন সিআইডির এএসপি মোজাম্মেল হক। অভিনেত্রী তমালিকা কর্মকার, অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় ও নাট্যকার এজাজ খান এই মামলার সাক্ষী ছিলেন। আরেক সাক্ষী ছিলেন শীর্ষসন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন। ইমন পুলিশকে বলেছিলেন, তিন্নি খুনের পর অভি ঢাকা থেকে পালিয়ে নেপাল হয়ে কলকাতায় যান। কলকাতায় তাঁর আশ্রয়ে থাকার সময় তিন্নিকে খুন করার কথা স্বীকার করেন অভি।
এবার অভিকে নিয়ে কিছু বলতেই হয়। বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ধামুড়া গ্রামের আরশাদ আহমেদের চার ছেলে ও চার মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে ছোট গোলাম ফারুক অভি। অসম্ভব মেধাবী অভি এসএসসিতে মেধাতালিকায় স্থান পান। ভাইবোনদের সবাই উচ্চশিক্ষিত, কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কেউ পদস্থ সরকারি চাকুরে। একজন নামকরা সাংবাদিক। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ‘হিফজুল বাহার’-এ সওয়ার হয়েছিলেন ছাত্রজীবনে। তারপর জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে ভিড়ে যান। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদকও হন। আরেক ছাত্রনেতা নীরুর সঙ্গে মিলে গড়ে তোলেন বিশাল এক বাহিনী। ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি তাঁরা নানা ধরনের সন্ত্রাসী কাজে জড়িয়ে পড়েন।
এরশাদবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন তখন তুঙ্গে। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে ছাত্রদল প্রকাশ্যে থাকলেও অভি-নীরু গোপনে এরশাদের সঙ্গে আঁতাত করেন। এর মধ্যে ১৯৮৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হল থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন অভি। এতে তাঁর ভাগ্য খুলে যায়। জেলে এরশাদের লোকজন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরশাদের পক্ষে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জেল থেকে বেরিয়ে আসেন অভি। ১৯৯০-এর ২৭ নভেম্বর এরশাদের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় দখলে নেতৃত্ব দেন অভি-নীরু। ওই দিন গুলিতে ডা. মিলন নিহত হলে পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে ওঠে। কয়েক দিন পর এরশাদের পতন হয়।
এনএসআইয়ের সাবেক পরিচালক সফিক উল্লাহ তাঁর বই ‘এক পুলিশের ডায়েরি’তে লিখেছেন, এরশাদের এক সেনা কর্মকর্তার নির্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দখল করতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে অভিদের জন্য সরকারি গুলি সরবরাহ করা হয়। পরে সেই গুলির কিছু অংশ রাজারবাগে ফেরতও দেওয়া হয়। রাজারবাগের অস্ত্রাগারের নথিতে এসব তথ্য রয়েছে।
ডা. মিলন হত্যার পর গোপনে কলকাতায় চলে যান অভি। ফিরে এসে বরিশাল-২ আসন থেকে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হন ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে। ২০০১ সালের নির্বাচনে ওই আসনে বিএনপির মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের কাছে হেরে যান।
অভির জীবন ছিল বেপরোয়া। বহু অভিনেত্রী, মডেল ও চিত্রনায়িকা তাঁর লালসার শিকার হয়েছেন। একবার ব্যক্তিগত ছবি ফাঁস করার অভিযোগে এক অভিনেত্রী তাঁর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলেন। অভির সর্বশেষ শিকার মডেল তিন্নি।
অভির বিরুদ্ধে তিন্নি খুনের অভিযোগ ওঠে লাশ উদ্ধারের চার-পাঁচ দিন পর। এরপরই গা-ঢাকা দেন তিনি। শুনেছিলাম, একটি ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সহায়তায় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নেপালে যান। সেখান থেকে কলকাতা হয়ে থিতু হন কানাডায়। রমনা থানার একটি অস্ত্র মামলায় অভির ১৭ বছরের সাজা হয়েছে। তাঁকে ধরতে ইন্টারপোল কয়েক দফা রেড নোটিশ জারি করেছিল। সব মিলিয়ে পুলিশি তৎপরতা বলতে ছিল এটুকুই।
এই লেখাটা শেষ করার আগে তিন্নির ফেলে আসা পরিবারের খোঁজ নিলাম। তাঁর মেয়ে এখন বাবার সঙ্গে বিদেশে থাকেন। তিন্নিরা ছিলেন দুই বোন, ছোট বোন এয়ারহোস্টেস। তাঁর প্রবাসী বাবা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান এখন দেশে একাই থাকেন। তিন্নির মা স্বামীকে ছেড়ে পাকিস্তানে চলে গেছেন। কলাবাগানে ফুফুর যে বাড়িতে তিন্নিরা থাকতেন, অভির ভয়ে সেটাও বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয় পরিবারটি। এভাবে একটি খুন লন্ডভন্ড করে দেয় গোটা একটি পরিবারকে। অথচ ঘটনার মূল হোতা অভি থেকে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে।
আসলে, ধর্মের কলও অনেক সময় বাতাসে নড়ে না।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

লাশকাটা ঘরে পড়ে আছে লাশটি। ঠিকানা নেই, তাই মর্গের খাতায় নাম ওঠেনি। নাম নেই পুলিশের কাগজপত্রেও। এর নাম বেওয়ারিশ লাশ। ঢাকায় প্রতিদিন ছয়-সাতজন এভাবে বেওয়ারিশ হয়। ওই তরুণীও সেভাবেই বেওয়ারিশ হয়েছিলেন। যখন পরিচয় পাওয়া গেল, ততক্ষণে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম তাঁকে দাফন করে ফেলেছে। কে জানত, এত জনপ্রিয় মেয়েটি!
জনকণ্ঠের কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা ছিলেন সালাউদ্দিন আহমেদ। একদিন সন্ধ্যায় শার্টের বুক পকেটে করে একটি লাশের ছবি নিয়ে অফিসে হাজির। বললেন, ‘বস, এইডা একটু ছাপাইয়া দ্যান। দ্যাকতে বড় লোকের মাইয়ার মতন লাগে।' সালাউদ্দিনের বর্ণনা ছিল, চীন-মৈত্রী সেতুর পশ্চিম দিক থেকে ১১ নম্বর পিলারের ওপর লাশটি পড়ে ছিল। কেরানীগঞ্জ থানার এএসআই শফিউদ্দিন লাশ উদ্ধার করেছেন। পুলিশ মনে করছে, মেয়েটি আত্মহত্যার জন্য বুড়িগঙ্গা ব্রিজ থেকে লাফ দিয়েছিল। কিন্তু পানিতে না পড়ে পিলারের ওপর পড়েছে। মিটফোর্ড মর্গে লাশ আছে, চার দিনে কেউ তাঁর খোঁজ নিতে আসেনি। পত্রিকায় ছবি ছাপা হলে হয়তো পরিচয় মিলবে। ২০০২ সালের কথা বলছি। তখন সংবাদপত্রে লাশের ছবি ছাপা নিয়ে অত রাখঢাক ছিল না। হরদম ছাপা হতো।
ছবিটি নিয়ে চিফ রিপোর্টারকে দেখালাম, পাত্তা পেলাম না। পরদিন বার্তা সম্পাদককে অনুরোধ করতেই বললেন, ‘পেজ টু-এ দিয়ে দেন।’ ‘এই তরুণীর পরিচয় নেই’ শিরোনামে তিন কলামজুড়ে ছাপা হলো অজ্ঞাত তরুণীর লাশের ছবি।
এটা ২০০২ সালের ১৬ নভেম্বর। ওই দিন দুপুরে ধানমন্ডি থেকে ফোন দিলেন অনু নামের এক যুবক। বললেন, ছাপা ছবিটির মূল ছবি তাঁরা দেখতে চান। সেটা দেখতে একটি পরিবার আমার অফিসে আসবে। কলাবাগান থেকে ইস্কাটনে জনকণ্ঠ ভবনে তাঁরা এলেন সন্ধ্যার দিকে। ছবিটি হাতে নিতেই সুজন নামে একজন বলে উঠলেন, ‘ঠিকই তো আছে।’ পাশে থাকা এক নারী ছবির দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলেন। তাঁর দেখাদেখি আরেকজনও শুরু করলেন কান্না। যতই চুপ করতে বলি, কেউ কথা শোনেন না। বললাম, এটা কার ছবি? কেউ বলেন না। তাঁদের সঙ্গে আসা অনু বললেন, এটা মডেল তিন্নি ওরফে সৈয়দা তানিয়া মাহবুবের ছবি। কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। মাঝবয়সী এক নারীকে দেখিয়ে বললেন, ‘উনি তিন্নির ফুফু’।
একজন একটু শান্ত হয়ে জানতে চাইলেন, এখন তাঁদের কী করতে হবে। বললাম, আগে মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। সবাই গাড়িতে উঠে চলে গেলেন।
ঘণ্টা দেড়েক পর অনুর ফোন: ‘ভাই, মর্গে তো লাশ নেই। আজ বিকেলে আঞ্জুমান জুরাইন কবরস্থানে দাফন কইরা ফেলছে।’ বললাম, এবার কেরানীগঞ্জ থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। তিন্নির চাচা সৈয়দ রেজাউল করিমও সম্ভবত তাঁদের সঙ্গে ছিলেন।
পরদিন ফলোআপ করতে তিন্নিদের কলাবাগানের বাড়িতে গেলাম। মনে হলো সবাই খুব ভয়ে আছেন। কেউ কিছু বললেন না। কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা হলো। তদন্ত শুরু করলেন এসআই কাইয়ুম আলী সরদার। তিনি তদন্তের শুরুতেই তিন্নির স্বামী শাফকাত হোসেন পিয়ালকে গ্রেপ্তার করলেন। পুলিশ ধরে নিয়েছিল, এ ঘটনার কয়েক দিন আগে তিন্নির সঙ্গে পিয়ালের ছাড়াছাড়ি হয়। সেই ক্ষোভেই পিয়াল মেয়েটিকে খুন করেছেন।
কেরানীগঞ্জ থানায় গিয়ে পিয়ালের সঙ্গে কথা বলতেই পেয়ে গেলাম আসল খবর। পিয়ালের এক বন্ধু সে সময় থানায় ছিলেন। বললেন, নামকরা একটি পত্রিকার কাভার ফটো হওয়ার পর রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যান তিন্নি। এরপর খুব কম সময়ে তিনি অনেকগুলো নামী পণ্যের মডেল হন। তাঁর এই সাফল্যের পেছনের মানুষ ছিলেন স্বামী শাফকাত হোসেন পিয়াল। তাঁদের তিন বছরের সংসারে দেড় বছরের একটি মেয়ে ছিল।
একদিন একটি পাঁচতারকা হোটেলের পার্টিতে এসে তিন্নির সঙ্গে পরিচয় হয় সাবেক সাংসদ গোলাম ফারুক অভির। অভির প্রেমে পড়ে যান তিন্নি। তখন অভি থাকতেন নিউ ইস্কাটনের প্রোপার্টি এনক্লেভের একটি ফ্ল্যাটে। সেখানে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন তিন্নি। অভির সঙ্গে কয়েকবার বিদেশেও যান। নতুন সম্পর্ক নিয়ে পিয়ালের সঙ্গে বিরোধ বাধে তিন্নির। তিন্নি সিদ্ধান্ত নেন পিয়ালকে ছেড়ে অভিকেই বিয়ে করবেন।
২০০২ সালের ৬ নভেম্বর পিয়ালের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করে দেড় বছরের মেয়েকে স্বামীর কাছে রেখে অভির ইস্কাটনের ফ্ল্যাটে চলে আসেন তিন্নি। সেখানে থাকার সময় ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর রাতে তিনি খুন হন।
এই খুনের মামলা যাঁরা তদন্ত করেছিলেন, তাঁদের একজন সিআইডির এএসপি আরমান আলী। অভির গাড়িচালক, গৃহকর্মী ও ফ্ল্যাটের নিরাপত্তাকর্মীকে জেরা করেন তিনি। আরমান আলী আমাকে বলেছিলেন, ইস্কাটনের বাড়িতে এসে বিয়ের জন্য অভিকে চাপ দিতে থাকেন তিন্নি। কিন্তু অভি রাজি হচ্ছিলেন না। একপর্যায়ে গণমাধ্যমের কাছে এ ঘটনা ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অভি তিন্নির মাথায় আঘাত করেন। সঙ্গে সঙ্গে নিস্তেজ হয়ে পড়েন তিন্নি। এরপর গভীর রাতে অভি সেই মরদেহ গাড়িতে তুলে বুড়িগঙ্গা ব্রিজের কাছে যান। এরপর ব্রিজের ওপর থেকে লাশটি নদীতে ফেলে দেন। কিন্তু পানিতে না পড়ে লাশ পড়ে ব্রিজের পিলারের মাথার ওপর।
সাতজন তদন্তকারী এই মামলার তদন্ত করেন। ছয় বছর পর ২০০৮ সালের ৮ নভেম্বর চার্জশিট দিয়েছিলেন সিআইডির এএসপি মোজাম্মেল হক। অভিনেত্রী তমালিকা কর্মকার, অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় ও নাট্যকার এজাজ খান এই মামলার সাক্ষী ছিলেন। আরেক সাক্ষী ছিলেন শীর্ষসন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন। ইমন পুলিশকে বলেছিলেন, তিন্নি খুনের পর অভি ঢাকা থেকে পালিয়ে নেপাল হয়ে কলকাতায় যান। কলকাতায় তাঁর আশ্রয়ে থাকার সময় তিন্নিকে খুন করার কথা স্বীকার করেন অভি।
এবার অভিকে নিয়ে কিছু বলতেই হয়। বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ধামুড়া গ্রামের আরশাদ আহমেদের চার ছেলে ও চার মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে ছোট গোলাম ফারুক অভি। অসম্ভব মেধাবী অভি এসএসসিতে মেধাতালিকায় স্থান পান। ভাইবোনদের সবাই উচ্চশিক্ষিত, কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কেউ পদস্থ সরকারি চাকুরে। একজন নামকরা সাংবাদিক। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ‘হিফজুল বাহার’-এ সওয়ার হয়েছিলেন ছাত্রজীবনে। তারপর জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে ভিড়ে যান। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদকও হন। আরেক ছাত্রনেতা নীরুর সঙ্গে মিলে গড়ে তোলেন বিশাল এক বাহিনী। ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি তাঁরা নানা ধরনের সন্ত্রাসী কাজে জড়িয়ে পড়েন।
এরশাদবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন তখন তুঙ্গে। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে ছাত্রদল প্রকাশ্যে থাকলেও অভি-নীরু গোপনে এরশাদের সঙ্গে আঁতাত করেন। এর মধ্যে ১৯৮৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হল থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন অভি। এতে তাঁর ভাগ্য খুলে যায়। জেলে এরশাদের লোকজন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরশাদের পক্ষে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জেল থেকে বেরিয়ে আসেন অভি। ১৯৯০-এর ২৭ নভেম্বর এরশাদের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় দখলে নেতৃত্ব দেন অভি-নীরু। ওই দিন গুলিতে ডা. মিলন নিহত হলে পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে ওঠে। কয়েক দিন পর এরশাদের পতন হয়।
এনএসআইয়ের সাবেক পরিচালক সফিক উল্লাহ তাঁর বই ‘এক পুলিশের ডায়েরি’তে লিখেছেন, এরশাদের এক সেনা কর্মকর্তার নির্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দখল করতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে অভিদের জন্য সরকারি গুলি সরবরাহ করা হয়। পরে সেই গুলির কিছু অংশ রাজারবাগে ফেরতও দেওয়া হয়। রাজারবাগের অস্ত্রাগারের নথিতে এসব তথ্য রয়েছে।
ডা. মিলন হত্যার পর গোপনে কলকাতায় চলে যান অভি। ফিরে এসে বরিশাল-২ আসন থেকে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হন ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে। ২০০১ সালের নির্বাচনে ওই আসনে বিএনপির মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের কাছে হেরে যান।
অভির জীবন ছিল বেপরোয়া। বহু অভিনেত্রী, মডেল ও চিত্রনায়িকা তাঁর লালসার শিকার হয়েছেন। একবার ব্যক্তিগত ছবি ফাঁস করার অভিযোগে এক অভিনেত্রী তাঁর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলেন। অভির সর্বশেষ শিকার মডেল তিন্নি।
অভির বিরুদ্ধে তিন্নি খুনের অভিযোগ ওঠে লাশ উদ্ধারের চার-পাঁচ দিন পর। এরপরই গা-ঢাকা দেন তিনি। শুনেছিলাম, একটি ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সহায়তায় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নেপালে যান। সেখান থেকে কলকাতা হয়ে থিতু হন কানাডায়। রমনা থানার একটি অস্ত্র মামলায় অভির ১৭ বছরের সাজা হয়েছে। তাঁকে ধরতে ইন্টারপোল কয়েক দফা রেড নোটিশ জারি করেছিল। সব মিলিয়ে পুলিশি তৎপরতা বলতে ছিল এটুকুই।
এই লেখাটা শেষ করার আগে তিন্নির ফেলে আসা পরিবারের খোঁজ নিলাম। তাঁর মেয়ে এখন বাবার সঙ্গে বিদেশে থাকেন। তিন্নিরা ছিলেন দুই বোন, ছোট বোন এয়ারহোস্টেস। তাঁর প্রবাসী বাবা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান এখন দেশে একাই থাকেন। তিন্নির মা স্বামীকে ছেড়ে পাকিস্তানে চলে গেছেন। কলাবাগানে ফুফুর যে বাড়িতে তিন্নিরা থাকতেন, অভির ভয়ে সেটাও বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয় পরিবারটি। এভাবে একটি খুন লন্ডভন্ড করে দেয় গোটা একটি পরিবারকে। অথচ ঘটনার মূল হোতা অভি থেকে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে।
আসলে, ধর্মের কলও অনেক সময় বাতাসে নড়ে না।
আরও পড়ুন:

লাশকাটা ঘরে পড়ে আছে লাশটি। ঠিকানা নেই, তাই মর্গের খাতায় নাম ওঠেনি। নাম নেই পুলিশের কাগজপত্রেও। এর নাম বেওয়ারিশ লাশ। ঢাকায় প্রতিদিন ছয়-সাতজন এভাবে বেওয়ারিশ হয়। ওই তরুণীও সেভাবেই বেওয়ারিশ হয়েছিলেন। যখন পরিচয় পাওয়া গেল, ততক্ষণে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম তাঁকে দাফন করে ফেলেছে। কে জানত, এত জনপ্রিয় মেয়েটি!
জনকণ্ঠের কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা ছিলেন সালাউদ্দিন আহমেদ। একদিন সন্ধ্যায় শার্টের বুক পকেটে করে একটি লাশের ছবি নিয়ে অফিসে হাজির। বললেন, ‘বস, এইডা একটু ছাপাইয়া দ্যান। দ্যাকতে বড় লোকের মাইয়ার মতন লাগে।' সালাউদ্দিনের বর্ণনা ছিল, চীন-মৈত্রী সেতুর পশ্চিম দিক থেকে ১১ নম্বর পিলারের ওপর লাশটি পড়ে ছিল। কেরানীগঞ্জ থানার এএসআই শফিউদ্দিন লাশ উদ্ধার করেছেন। পুলিশ মনে করছে, মেয়েটি আত্মহত্যার জন্য বুড়িগঙ্গা ব্রিজ থেকে লাফ দিয়েছিল। কিন্তু পানিতে না পড়ে পিলারের ওপর পড়েছে। মিটফোর্ড মর্গে লাশ আছে, চার দিনে কেউ তাঁর খোঁজ নিতে আসেনি। পত্রিকায় ছবি ছাপা হলে হয়তো পরিচয় মিলবে। ২০০২ সালের কথা বলছি। তখন সংবাদপত্রে লাশের ছবি ছাপা নিয়ে অত রাখঢাক ছিল না। হরদম ছাপা হতো।
ছবিটি নিয়ে চিফ রিপোর্টারকে দেখালাম, পাত্তা পেলাম না। পরদিন বার্তা সম্পাদককে অনুরোধ করতেই বললেন, ‘পেজ টু-এ দিয়ে দেন।’ ‘এই তরুণীর পরিচয় নেই’ শিরোনামে তিন কলামজুড়ে ছাপা হলো অজ্ঞাত তরুণীর লাশের ছবি।
এটা ২০০২ সালের ১৬ নভেম্বর। ওই দিন দুপুরে ধানমন্ডি থেকে ফোন দিলেন অনু নামের এক যুবক। বললেন, ছাপা ছবিটির মূল ছবি তাঁরা দেখতে চান। সেটা দেখতে একটি পরিবার আমার অফিসে আসবে। কলাবাগান থেকে ইস্কাটনে জনকণ্ঠ ভবনে তাঁরা এলেন সন্ধ্যার দিকে। ছবিটি হাতে নিতেই সুজন নামে একজন বলে উঠলেন, ‘ঠিকই তো আছে।’ পাশে থাকা এক নারী ছবির দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলেন। তাঁর দেখাদেখি আরেকজনও শুরু করলেন কান্না। যতই চুপ করতে বলি, কেউ কথা শোনেন না। বললাম, এটা কার ছবি? কেউ বলেন না। তাঁদের সঙ্গে আসা অনু বললেন, এটা মডেল তিন্নি ওরফে সৈয়দা তানিয়া মাহবুবের ছবি। কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। মাঝবয়সী এক নারীকে দেখিয়ে বললেন, ‘উনি তিন্নির ফুফু’।
একজন একটু শান্ত হয়ে জানতে চাইলেন, এখন তাঁদের কী করতে হবে। বললাম, আগে মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। সবাই গাড়িতে উঠে চলে গেলেন।
ঘণ্টা দেড়েক পর অনুর ফোন: ‘ভাই, মর্গে তো লাশ নেই। আজ বিকেলে আঞ্জুমান জুরাইন কবরস্থানে দাফন কইরা ফেলছে।’ বললাম, এবার কেরানীগঞ্জ থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। তিন্নির চাচা সৈয়দ রেজাউল করিমও সম্ভবত তাঁদের সঙ্গে ছিলেন।
পরদিন ফলোআপ করতে তিন্নিদের কলাবাগানের বাড়িতে গেলাম। মনে হলো সবাই খুব ভয়ে আছেন। কেউ কিছু বললেন না। কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা হলো। তদন্ত শুরু করলেন এসআই কাইয়ুম আলী সরদার। তিনি তদন্তের শুরুতেই তিন্নির স্বামী শাফকাত হোসেন পিয়ালকে গ্রেপ্তার করলেন। পুলিশ ধরে নিয়েছিল, এ ঘটনার কয়েক দিন আগে তিন্নির সঙ্গে পিয়ালের ছাড়াছাড়ি হয়। সেই ক্ষোভেই পিয়াল মেয়েটিকে খুন করেছেন।
কেরানীগঞ্জ থানায় গিয়ে পিয়ালের সঙ্গে কথা বলতেই পেয়ে গেলাম আসল খবর। পিয়ালের এক বন্ধু সে সময় থানায় ছিলেন। বললেন, নামকরা একটি পত্রিকার কাভার ফটো হওয়ার পর রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যান তিন্নি। এরপর খুব কম সময়ে তিনি অনেকগুলো নামী পণ্যের মডেল হন। তাঁর এই সাফল্যের পেছনের মানুষ ছিলেন স্বামী শাফকাত হোসেন পিয়াল। তাঁদের তিন বছরের সংসারে দেড় বছরের একটি মেয়ে ছিল।
একদিন একটি পাঁচতারকা হোটেলের পার্টিতে এসে তিন্নির সঙ্গে পরিচয় হয় সাবেক সাংসদ গোলাম ফারুক অভির। অভির প্রেমে পড়ে যান তিন্নি। তখন অভি থাকতেন নিউ ইস্কাটনের প্রোপার্টি এনক্লেভের একটি ফ্ল্যাটে। সেখানে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন তিন্নি। অভির সঙ্গে কয়েকবার বিদেশেও যান। নতুন সম্পর্ক নিয়ে পিয়ালের সঙ্গে বিরোধ বাধে তিন্নির। তিন্নি সিদ্ধান্ত নেন পিয়ালকে ছেড়ে অভিকেই বিয়ে করবেন।
২০০২ সালের ৬ নভেম্বর পিয়ালের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করে দেড় বছরের মেয়েকে স্বামীর কাছে রেখে অভির ইস্কাটনের ফ্ল্যাটে চলে আসেন তিন্নি। সেখানে থাকার সময় ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর রাতে তিনি খুন হন।
এই খুনের মামলা যাঁরা তদন্ত করেছিলেন, তাঁদের একজন সিআইডির এএসপি আরমান আলী। অভির গাড়িচালক, গৃহকর্মী ও ফ্ল্যাটের নিরাপত্তাকর্মীকে জেরা করেন তিনি। আরমান আলী আমাকে বলেছিলেন, ইস্কাটনের বাড়িতে এসে বিয়ের জন্য অভিকে চাপ দিতে থাকেন তিন্নি। কিন্তু অভি রাজি হচ্ছিলেন না। একপর্যায়ে গণমাধ্যমের কাছে এ ঘটনা ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অভি তিন্নির মাথায় আঘাত করেন। সঙ্গে সঙ্গে নিস্তেজ হয়ে পড়েন তিন্নি। এরপর গভীর রাতে অভি সেই মরদেহ গাড়িতে তুলে বুড়িগঙ্গা ব্রিজের কাছে যান। এরপর ব্রিজের ওপর থেকে লাশটি নদীতে ফেলে দেন। কিন্তু পানিতে না পড়ে লাশ পড়ে ব্রিজের পিলারের মাথার ওপর।
সাতজন তদন্তকারী এই মামলার তদন্ত করেন। ছয় বছর পর ২০০৮ সালের ৮ নভেম্বর চার্জশিট দিয়েছিলেন সিআইডির এএসপি মোজাম্মেল হক। অভিনেত্রী তমালিকা কর্মকার, অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় ও নাট্যকার এজাজ খান এই মামলার সাক্ষী ছিলেন। আরেক সাক্ষী ছিলেন শীর্ষসন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন। ইমন পুলিশকে বলেছিলেন, তিন্নি খুনের পর অভি ঢাকা থেকে পালিয়ে নেপাল হয়ে কলকাতায় যান। কলকাতায় তাঁর আশ্রয়ে থাকার সময় তিন্নিকে খুন করার কথা স্বীকার করেন অভি।
এবার অভিকে নিয়ে কিছু বলতেই হয়। বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ধামুড়া গ্রামের আরশাদ আহমেদের চার ছেলে ও চার মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে ছোট গোলাম ফারুক অভি। অসম্ভব মেধাবী অভি এসএসসিতে মেধাতালিকায় স্থান পান। ভাইবোনদের সবাই উচ্চশিক্ষিত, কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কেউ পদস্থ সরকারি চাকুরে। একজন নামকরা সাংবাদিক। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ‘হিফজুল বাহার’-এ সওয়ার হয়েছিলেন ছাত্রজীবনে। তারপর জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে ভিড়ে যান। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদকও হন। আরেক ছাত্রনেতা নীরুর সঙ্গে মিলে গড়ে তোলেন বিশাল এক বাহিনী। ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি তাঁরা নানা ধরনের সন্ত্রাসী কাজে জড়িয়ে পড়েন।
এরশাদবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন তখন তুঙ্গে। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে ছাত্রদল প্রকাশ্যে থাকলেও অভি-নীরু গোপনে এরশাদের সঙ্গে আঁতাত করেন। এর মধ্যে ১৯৮৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হল থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন অভি। এতে তাঁর ভাগ্য খুলে যায়। জেলে এরশাদের লোকজন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরশাদের পক্ষে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জেল থেকে বেরিয়ে আসেন অভি। ১৯৯০-এর ২৭ নভেম্বর এরশাদের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় দখলে নেতৃত্ব দেন অভি-নীরু। ওই দিন গুলিতে ডা. মিলন নিহত হলে পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে ওঠে। কয়েক দিন পর এরশাদের পতন হয়।
এনএসআইয়ের সাবেক পরিচালক সফিক উল্লাহ তাঁর বই ‘এক পুলিশের ডায়েরি’তে লিখেছেন, এরশাদের এক সেনা কর্মকর্তার নির্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দখল করতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে অভিদের জন্য সরকারি গুলি সরবরাহ করা হয়। পরে সেই গুলির কিছু অংশ রাজারবাগে ফেরতও দেওয়া হয়। রাজারবাগের অস্ত্রাগারের নথিতে এসব তথ্য রয়েছে।
ডা. মিলন হত্যার পর গোপনে কলকাতায় চলে যান অভি। ফিরে এসে বরিশাল-২ আসন থেকে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হন ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে। ২০০১ সালের নির্বাচনে ওই আসনে বিএনপির মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের কাছে হেরে যান।
অভির জীবন ছিল বেপরোয়া। বহু অভিনেত্রী, মডেল ও চিত্রনায়িকা তাঁর লালসার শিকার হয়েছেন। একবার ব্যক্তিগত ছবি ফাঁস করার অভিযোগে এক অভিনেত্রী তাঁর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলেন। অভির সর্বশেষ শিকার মডেল তিন্নি।
অভির বিরুদ্ধে তিন্নি খুনের অভিযোগ ওঠে লাশ উদ্ধারের চার-পাঁচ দিন পর। এরপরই গা-ঢাকা দেন তিনি। শুনেছিলাম, একটি ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সহায়তায় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নেপালে যান। সেখান থেকে কলকাতা হয়ে থিতু হন কানাডায়। রমনা থানার একটি অস্ত্র মামলায় অভির ১৭ বছরের সাজা হয়েছে। তাঁকে ধরতে ইন্টারপোল কয়েক দফা রেড নোটিশ জারি করেছিল। সব মিলিয়ে পুলিশি তৎপরতা বলতে ছিল এটুকুই।
এই লেখাটা শেষ করার আগে তিন্নির ফেলে আসা পরিবারের খোঁজ নিলাম। তাঁর মেয়ে এখন বাবার সঙ্গে বিদেশে থাকেন। তিন্নিরা ছিলেন দুই বোন, ছোট বোন এয়ারহোস্টেস। তাঁর প্রবাসী বাবা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান এখন দেশে একাই থাকেন। তিন্নির মা স্বামীকে ছেড়ে পাকিস্তানে চলে গেছেন। কলাবাগানে ফুফুর যে বাড়িতে তিন্নিরা থাকতেন, অভির ভয়ে সেটাও বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয় পরিবারটি। এভাবে একটি খুন লন্ডভন্ড করে দেয় গোটা একটি পরিবারকে। অথচ ঘটনার মূল হোতা অভি থেকে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে।
আসলে, ধর্মের কলও অনেক সময় বাতাসে নড়ে না।
আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

লাশকাটা ঘরে পড়ে আছে লাশটি। ঠিকানা নেই, তাই মর্গের খাতায় নাম ওঠেনি। নাম নেই পুলিশের কাগজপত্রেও। এর নাম বেওয়ারিশ লাশ। ঢাকায় প্রতিদিন ৬-৭ জন এভাবে বেওয়ারিশ হয়। ওই তরুণীও সেভাবে বেওয়ারিশ হয়েছিল। যখন পরিচয় পাওয়া গেল, ততক্ষণে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম তাঁকে দাফন করে ফেলেছে।
৩০ অক্টোবর ২০২১
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

লাশকাটা ঘরে পড়ে আছে লাশটি। ঠিকানা নেই, তাই মর্গের খাতায় নাম ওঠেনি। নাম নেই পুলিশের কাগজপত্রেও। এর নাম বেওয়ারিশ লাশ। ঢাকায় প্রতিদিন ৬-৭ জন এভাবে বেওয়ারিশ হয়। ওই তরুণীও সেভাবে বেওয়ারিশ হয়েছিল। যখন পরিচয় পাওয়া গেল, ততক্ষণে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম তাঁকে দাফন করে ফেলেছে।
৩০ অক্টোবর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

লাশকাটা ঘরে পড়ে আছে লাশটি। ঠিকানা নেই, তাই মর্গের খাতায় নাম ওঠেনি। নাম নেই পুলিশের কাগজপত্রেও। এর নাম বেওয়ারিশ লাশ। ঢাকায় প্রতিদিন ৬-৭ জন এভাবে বেওয়ারিশ হয়। ওই তরুণীও সেভাবে বেওয়ারিশ হয়েছিল। যখন পরিচয় পাওয়া গেল, ততক্ষণে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম তাঁকে দাফন করে ফেলেছে।
৩০ অক্টোবর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

লাশকাটা ঘরে পড়ে আছে লাশটি। ঠিকানা নেই, তাই মর্গের খাতায় নাম ওঠেনি। নাম নেই পুলিশের কাগজপত্রেও। এর নাম বেওয়ারিশ লাশ। ঢাকায় প্রতিদিন ৬-৭ জন এভাবে বেওয়ারিশ হয়। ওই তরুণীও সেভাবে বেওয়ারিশ হয়েছিল। যখন পরিচয় পাওয়া গেল, ততক্ষণে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম তাঁকে দাফন করে ফেলেছে।
৩০ অক্টোবর ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে