Ajker Patrika

লিটন–মিরাজদের ‘মনের চোট’ সারান তিনি

তাসনীম হাসান, ঢাকা
আপডেট : ০২ জুলাই ২০২১, ১১: ২৪
লিটন–মিরাজদের ‘মনের চোট’ সারান তিনি

গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে ওয়াসিম আকরাম শরণ নিতেন মনোবিদের। কখনো সমুদ্রের ধারে বসে মনোবিদের সহায়তায় নিজেকে তৈরি করতেন। পাকিস্তানের কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার অবশ্য ‘মনের চিকিৎসক’ হিসেবে পেয়েছিলেন নিজের স্ত্রীকেই। হার্ট ও কিডনির সমস্যায় ২০০৯ সালে পরপারে চলে যাওয়া হুমা মুফতিকে এখনো জীবন বদলে দেওয়ার পেছনের বড় শক্তি হিসেবে মানেন ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ফাস্ট বোলার।

তাসকিন আহমেদও পেয়েছেন একজন মনোবিদের সন্ধান। বাংলাদেশ পেসারের এই মনোচিকিৎসকের নাম সাবিত রায়হান। প্রায় হারিয়ে যেতে বসা তাসকিনের ফিরে আসার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে তাঁর। শুধু তাসকিনই নন; সাবিতের সেশনে অংশ নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ, ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, এনামুল হক বিজয়রাও। ‘তাসকিনের পরিচিত একজনের মাধ্যমে আমার সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ’–ক্রিকেটারদের সঙ্গে তাঁর পরিচয়ের প্রথম অভিজ্ঞতার কথা আজকের পত্রিকাকে বলছিলেন সাবিত। 

সাবিতের সেশনে থাকেন সৌম্য সরকারও২০১৯ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) চলার সময়ে শুরু, এরপর দেশে কিংবা বিদেশে সফর–যেখানেই থাকুন প্রায় প্রতিদিনই সাবিতের সেশনে নিয়মিত অংশ নেন তাসকিন। দেশে থাকলে সামনাসামনি, আর দেশের বাইরে থাকলে মুঠোফোনের পর্দায় চলে ক্লাস। 

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শুরুতে দারুণ সাফল্য পাওয়া তাসকিনের ভিন্ন পৃথিবী দেখতেও সময় লাগেনি। ২০১৮ সাল থেকে ক্রমেই হারিয়ে ফেলেন বোলিংয়ের ধার। চোট, পারফরম্যান্স তো আছেই, মাঠের বাইরের জীবন নিয়েও কম আলোচিত ছিলেন না তাসকিন। ধারাবাহিক ব্যর্থতায় হাবুডুবু খেতে থাকা তাসকিনের আত্মবিশ্বাসও ঠেকেছিল তলানিতে। ব্যর্থতার সাগরে যখন তলিয়ে যাচ্ছিলেন, সেই অন্ধকার সময়েই তাসকিন খোঁজ পান সাবিতের। ‘তিনি আমার মাইন্ড ট্রেনার। কোচের মতো। শরীর সুস্থ রাখতে ফিটনেস ট্রেনিং করি, মনের জন্য যে ট্রেনিং দরকার, সেটি করান সাবিত ভাই’—জিম্বাবুয়ে যাওয়ার আগে বলছিলেন তাসকিন। 

সাবিতের সেশনে অংশ নিয়ে এনামুলও পেয়েছেন উপকার। বাংলাদেশ দলের বাইরে থাকা এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান কাল বলছিলেন, ‘আমি তাঁর (সাবিত) সেশনে অংশ নিয়ে বেশ উপকৃত হয়েছি।’ 

এনামুল হক বিজয়ও মনের চোট সারাতে যান সাবিতের কাছেতাসকিন–ইমরুলদের মনের রোগ সারাতে নোটবুকে কী কী থাকে—এ প্রশ্নে মোবাইল ফোনে সাবিত বলছিলেন, ‘মন ও শরীর একসঙ্গেই কাজ করে। ক্রিকেটারদের স্কিল ও ফিটনেস ঠিকঠাক কাজে লাগাতে যে মানসিকতা দরকার, সেসব নিয়ে ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাজ করি। নেতিবাচক কিছু মনে এলে সেটা পারফরম্যান্সেও প্রভাব পড়ে। এসব বিষয় কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেটিও থাকে সেশনে। মনের পরিবর্তনটা যাতে দীর্ঘমেয়াদি হয়, সেসবই শেখাই।’ 

ক্রিকেটারদের সঙ্গে অনলাইন–অফলাইন দুভাবেই সেশনে যুক্ত হন সাবিত। ক্রিকেটাররা দেশের বাইরে থাকলে চলে অনলাইন সেশন। অবশ্য ক্রিকেটারদের মনোবিদের শরণ নেওয়া নতুন নয়। গত কয়েক বছরে একাধিকবার কানাডাপ্রবাসী মনোবিদ আলী আজহার খানের ক্লাসে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়েরা। তবে এটি নিয়মিত নয়, হয় মাঝেমধ্যে। হতাশা, অবসাদ, তীব্র চাপ সামলাতে এখন বেশির ভাগ ক্রিকেটার শরণ নিচ্ছেন সাবিতের মতো মাইন্ড ট্রেনারের। 

সাবিতের স্বপ্ন, একদিন পুরো বাংলাদেশ দলের জন্যই কাজ করবেন তিনি, ‘দলের অনেকের সঙ্গে কাজ করছি। যদি বিসিবি থেকে সুযোগ আসে, ক্রিকেটারদের মানসিকতা এভাবেই গড়তে চাইব, যাতে তাঁরা বিশ্বকাপ জয় নিয়ে চিন্তা করতে পারেন। এটি করতে কীভাবে নিজেদের মানসিকতা গড়ে তুলবেন তাঁরা, সেসব নিয়ে কাজ করতে চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতের বিপক্ষে কি সমতায় ফিরতে পারবে শ্রীলঙ্কা

ক্রীড়া ডেস্ক    
সমতায় ফিরতে আজ বিশাখাপত্তনমে ভারতের মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা নারী ক্রিকেট দল। ছবি: ক্রিকইনফো
সমতায় ফিরতে আজ বিশাখাপত্তনমে ভারতের মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা নারী ক্রিকেট দল। ছবি: ক্রিকইনফো

বিশাখাপত্তনমে গত পরশু সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কাকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আজ সমতায় ফিরতে নামবে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে ভারত-শ্রীলঙ্কা সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি। বিগ ব্যাশ, আন্তর্জাতিক লিগ টি-টোয়েন্টিরও ম্যাচ রয়েছে আজ। এক নজরে দেখে নিন টিভিতে কী কী খেলা রয়েছে।

ক্রিকেট খেলা সরাসরি

বিগ ব্যাশ লিগ

অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স-মেলবোর্ন স্টার্স

বেলা ২টা ১৫ মিনিট

সরাসরি

স্টার স্পোর্টস ২

আইএল টি -২০

গালফ জায়ান্টস-এমআই এমিরেটস

রাত ৮টা ৩০ মিনিট

সরাসরি

টি স্পোর্টস

নারী টি-টোয়েন্টি

ভারত-শ্রীলঙ্কা

সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিট

সরাসরি

স্টার স্পোর্টস ১ (হিন্দি )

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আফগানিস্তানে কেন বুলেটপ্রুফ গাড়িতে চড়েন রশিদ খান

ক্রীড়া ডেস্ক    
আফগানিস্তানে বুলেটপ্রুফ গাড়িতে ঘোরাফেরা করতে হয় বলে জানিয়েছেন রশিদ খান। ছবি: ক্রিকইনফো
আফগানিস্তানে বুলেটপ্রুফ গাড়িতে ঘোরাফেরা করতে হয় বলে জানিয়েছেন রশিদ খান। ছবি: ক্রিকইনফো

ক্রিকেট বিশ্বে অল্প সময়ে সমীহ জাগানিয়া দল হয়ে উঠেছে আফগানিস্তান। মেজর টুর্নামেন্টে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কার মতো দলগুলোকে হারিয়ে চমকে দিয়েছে আফগানরা। তবে ১৬ বছরে মোহাম্মদ নবী, রশিদ খানরা ঘরের মাঠে এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে পারেননি। রশিদ খান জানালেন, নিজের দেশে তাঁকে বুলেটপ্রুফ গাড়িতে ঘোরাফেরা করতে হয়।

কেভিন পিটারসেনের সঙ্গে এক পডকাস্টে রশিদ খান বলেছেন আফগানিস্তানে তাঁর জীবনযাত্রা নিয়ে। আলোচনার এক পর্যায়ে রশিদ খান বলেন, ‘আফগানিস্তানের রাস্তায় আমি হাঁটতে পারি না। আমার বুলেটপ্রুফ গাড়ি আছে।’ আফগান তারকা লেগস্পিনারের কাছে পিটারসেন জানতে চাইলেন, কেন তাঁকে (রশিদ) বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করতে হয়। উত্তরে আফগান লেগস্পিনার বলেন, ‘নিরাপত্তার কারণে বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করি। আপনি ভুল জায়গায় ভুল পরিস্থিতিতে নিশ্চয়ই পড়তে চাইবেন না। আফগানিস্তানে এটা স্বাভাবিক ঘটনা। প্রত্যেকেই ব্যবহার করেন।’

২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো তাদের বাহিনী সরিয়ে নিলে আফগানিস্তানের শাসনক্ষমতায় বসে তালেবান। বিগত চার বছরে তালেবান সরকারের সমালোচনা করে একরকম চক্ষুশূল হয়েছেন রশিদ খান। বিশেষ করে নারী শিক্ষা ও অধিকার নিয়ে তালেবানদের পলিসি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদ করেন আফগান লেগস্পিনার। এমনকি যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে ক্রিকেট খেলাটাই একটা পর্যায়ে তাঁর জন্য অসম্ভব হয়ে গিয়েছিল। পিটারসেনের সঙ্গে আলাপচারিতায় রশিদ খান বলেন, ‘আমি বাইরে বের হতে পারতাম না। ক্রিকেট খেলার কোনো অনুমতি ছিল না। আফগানিস্তানের হয়ে খেলা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন ছিল।’

একটা সময় যে রশিদ খানের ক্রিকেটে আসাটাই অসম্ভব হয়ে পড়েছিল, এখন তিনিই রাজত্ব করছেন। লেগস্পিন, গুগলিতে বিশ্বের তারকা ব্যাটারদের বোকা বানাচ্ছেন আফগান তারকা লেগস্পিনার। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ৫০৪ ম্যাচে ৬.৫৮ ইকোনমিতে নিয়েছেন ৬৮৫ উইকেট। ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে আফগানিস্তানের হয়ে অভিষেক হয় রশিদের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ বছরে ২৩১ ম্যাচে নিয়েছেন ৪৩৭ উইকেট। যদিও আফগানিস্তানের জার্সিতে নিজ দেশে এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচ খেলা হয়নি তাঁর। তবে আফগানিস্তানে প্রায়ই আয়োজন করা হয় তাদের বিভিন্ন ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এবার ‘বিপর্যস্ত’ যুক্তরাষ্ট্রের পাশে দাঁড়াল আইসিসি

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২২
যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটারদের বেতন দেবে আইসিসি। ছবি: ক্রিকইনফো
যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটারদের বেতন দেবে আইসিসি। ছবি: ক্রিকইনফো

গুরুতর অপরাধের কারণে সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি)। আইসিসির এই সহযোগী সদস্যদেশের সাময়িক কারণে সদস্যপদ স্থগিত হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট বোর্ড। দেউলিয়া হয়ে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটের পাশে দাঁড়াচ্ছে ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা।

অচলাবস্থার মধ্য দিয়ে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটারদের যেন ক্ষতি না হয়, তাতে নতুন উদ্যোগ নিচ্ছে আইসিসি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের বেতনের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে আইসিসি। ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থার সঙ্গে এ ব্যাপারে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্রের অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক কমিটি (ইউএসওপিসি)। আইসিসি বলেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটের স্থগিতাদেশ চলা অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের হাই পারফরম্যান্স প্রোগ্রামের সবকিছু পরিচালনা করবে আইসিসি। প্রয়োজনে অর্থ বিনিয়োগ করতেও রাজি আইসিসি। যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের বেতন পরিশোধও আইসিসির এই প্রোগ্রামের অন্তর্ভুক্ত।’

দেউলিয়া ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটকে আইসিসি ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। তাতে করে খেলোয়াড় ও হাই পারফরম্যান্স স্টাফদের বেতন পরিশোধ করা যেত। তবে ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট (ইউএসএ ক্রিকেট)। এক বিবৃতিতে ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা বলেছে, ‘দুর্ভাগ্যবশত যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি। যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটের হয়ে সরাসরি সেই অর্থ প্রদান করা যায় কি না আইসিসি এখন সেটা দেখছে।’

যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটের অচলাবস্থা যেন কোনোভাবেই বৈশ্বিক আসরে দেশটির অংশগ্রহণের ব্যাপারে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সে ব্যাপারে আপ্রাণ চেষ্টা করছে আইসিসি। ২০২৬ সালে দুটি আইসিসি ইভেন্টে অংশ নেবে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর ২০২৮ সালে হবে লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক। এই অলিম্পিক দিয়ে ১০০ বছর পর অলিম্পিকে ফিরছে ক্রিকেট। আইসিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।

এ বছরের জুলাইয়ে বার্ষিক সাধারণ সভায় আইসিসি যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটকে তিন মাস সময় দিয়েছিল সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন এবং প্রশাসনিক সংস্কার করার জন্য। সেই সময় ইউএসএ ক্রিকেট বোর্ডকে সতর্ক করে বলা হয়েছিল, সংস্কারের অগ্রগতির ওপর ভিত্তি করে আইসিসি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে নির্ধারিত সময় পেরোলেও প্রত্যাশিত পরিবর্তন না আসায় সদস্যপদ স্থগিতের শাস্তি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটকে।

জানুয়ারিতে নামিবিয়া, জিম্বাবুয়ের যৌথ আয়োজনে শুরু হচ্ছে ওয়ানডে সংস্করণে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ। বুলাওয়েতে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে মাঠে নামছে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র। বয়সভিত্তিক এই টুর্নামেন্টে ‘বি’ গ্রুপে রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র। পরের মাসে আইসিসির আরেক ইভেন্টে মাঠে নামবে যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় দল। ভারত-শ্রীলঙ্কায় হতে যাওয়া দশম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হচ্ছে ২০ দলের। পাঁচটি করে দল করে চার গ্রুপ করা হয়েছে। ‘এ’ গ্রুপে পড়েছে ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, নামিবিয়া ও নেদারল্যান্ডস। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কেন ব্যর্থ বাজবল

অলিভার হল্ট
অ্যাশেজ হারে হতাশাচ্ছন্ন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস। পরশু অ্যাডিলেডে। ছবি: এএফপি
অ্যাশেজ হারে হতাশাচ্ছন্ন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস। পরশু অ্যাডিলেডে। ছবি: এএফপি

অ্যাডিলেডের রোববারটা নানা প্রতীকে ভরা। ক্রিসমাসের ঠিক আগের এই রোববারে সেন্ট পিটার্স ক্যাথেড্রালে কোরাস দলের ঢিলেঢালা লাল পোশাকের সদস্যরা জড়ো হয়ে চ্যান্সেলে দাঁড়িয়ে নিজেদের মধ্যে আলাপ করছিলেন, খ্রিষ্টধর্মীয় ভোজনোৎসবের মহড়ার শুরুর অপেক্ষায়। ২০০১ সালে এখানেই হয়েছিল স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের স্মরণসভা। অতীতে অ্যাডিলেড ওভালের এক প্রান্তের নাম যে উপাসনালয়ের নামে—কিং উইলিয়াম রোড ধরে কয়েক শ গজ দূরের সেই গির্জায় টেস্ট ক্রিকেটাররা কখনো কখনো খানিকটা মানসিক শান্তি খুঁজতে আশ্রয় নিতেন।

কিন্তু ক্রিসমাসের আগের শেষ সে রোববারে ইংল্যান্ড ক্রিকেটারদের কেউ ক্ষমা প্রার্থনা করতে আসেননি, কেউ প্রার্থনায় মুক্তি খোঁজেননি। টানা তৃতীয় টেস্টে বিধ্বস্ত হয়ে হারার আশঙ্কা আর মাত্র ১১ দিনের মধ্যেই ‘টাইটানিক লড়াই’ হিসেবে প্রচারিত সিরিজে অ্যাশেজ হারানোর ভয় থেকে বাঁচার আকুতি জানাতেও দেখা যায়নি দলের কাউকে।

তার বদলে তাঁরা আশ্রয় খুঁজেছেন ড্রেসিংরুমে; যেখানে কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও অধিনায়ক বেন স্টোকস গড়ে তুলেছেন ‘ভাইয়ের দল’সুলভ এক বন্ধন, যার উদ্দেশ্য বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে হেসে ওঠা।

অ্যাডিলেড টেস্টের শেষ দিনটি ছিল কার্যত ‘বাজবল’-এর শেষকৃত্যের। অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া রেকর্ড ৪৩৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ইংল্যান্ডের শুধু লোয়ার অর্ডার ব্যাটাররাই প্রশংসনীয় লড়াই করলেন। কিন্তু স্কট বোল্যান্ডের বল জশ টাংয়ের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে স্লিপে যখন তালুবন্দী হলেন মার্নাস লাবুশেনের, তখনই অ্যাশেজ রোমাঞ্চের সমাপ্তি।

৮২ রানে হার ইংল্যান্ডের। পার্থ ও ব্রিসবেনের পর টানা তৃতীয় হার। সিরিজে ৩-০। মাত্র ১১ দিনের মধ্যেই অ্যাশেজ হাতছাড়া। অস্ট্রেলিয়া প্রতিটি বিভাগে শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়ে বুঝিয়ে দিল, টেস্ট ক্রিকেট মানে শৃঙ্খলা, নিরবচ্ছিন্ন চাপ আর নিষ্ঠুর বাস্তবতা। সেখানে ইংল্যান্ডের ‘বাজবল’ দর্শন নগ্ন হয়ে পড়ল—দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার এক আরামদায়ক অজুহাত হিসেবে।

এটা বুঝতে শুরু করেছিলেন খোদ বেন স্টোকস নিজেও। তিনি চেয়েছিলেন বাজবল বদলে যাক, বিকশিত হোক। খেলোয়াড়দের মধ্যে আরও ‘লড়াকু মানসিকতা দেখতে চেয়েছিলেন। অ্যাডিলেডে আসার আগেই বাজবল তার বিশুদ্ধ রূপ হারাতে বসেছিল। ম্যাচ শেষে স্টোকস বললেন, বাইরের চাপ কমানোই ছিল এই দর্শনের মূল লক্ষ্য। ভুল হলে তা থেকে শেখার কথাও বললেন তিনি। জ্যাক ক্রলির দ্বিতীয় ইনিংসের উদাহরণ টেনে জানালেন, পরিস্থিতি বুঝে খেলাটাই আসল।

তবু বাস্তবতা কঠিন। ইংল্যান্ড এখন মেলবোর্নে যাচ্ছে সিরিজ হারের যন্ত্রণা উপশমের প্রলেপের খোঁজে, নতুন করে ভাবতে—এরপর কী? নিছক আগ্রাসন নয়, চাই বাস্তববাদী ও দীপ্ত পথচলা; যেখানে শৈল্পিকতা থাকবে, কিন্তু সে শৈল্পিকতায় থাকবে দায়িত্ববোধও। আর যদি এর একটা নাম দিতেই হয়, তবে তার স্রষ্টার নামেই ডাকা যায়—‘বেনবল’।

অনেকে বাজবলের পতনে আনন্দ পাবে। তাদের চোখে এটি ছিল দায়িত্বজ্ঞানহীন সাহসিকতা, ক্রিকেটের মতো গম্ভীর খেলাকে হালকা করে দেখার এক দর্শন। আর বাজবল খেলাটাকে বদলাতে চেয়েছিল বলেও অনেকেই একে ঘৃণা করেছে। তবে অ্যাডিলেডে ‘পুরোনো ধাঁচে’ হেরে যাওয়াতেও বিশেষ সান্ত্বনা নেই।

আমিও বাজবলের ভক্ত। টেস্ট ক্রিকেটে যে দুঃসাহস, রোমাঞ্চ আর অনিশ্চয়তা নিয়ে এসেছে এই বাজবল, তা উপভোগ করেছি। কিন্তু এই সফরে ম্যাককালাম নিজের দর্শনের সঙ্গেই বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। প্রস্তুতি ও বাস্তবায়নে অতিরিক্ত ‘ফ্রিস্টাইল’ নীতি নিয়েছিলেন। এই অ্যাশেজ বিপর্যয়ের দায় যদি কারও কাঁধে পড়তেই হয়, তবে সেটি তাঁরই।

হ্যাঁ, এই নির্মম সিরিজে বাজবলকে সিংহাসনচ্যুত করা হয়েছে। হয়তো তাঁর সময় শেষ। কিন্তু তাঁর আগের যুগের নিরানন্দ, পরাজয় মানা ক্রিকেটে ফেরার আকাঙ্ক্ষা—সেটা যেন আর কখনো না ফিরে আসে।

লেখক: ডেইলি মেইলের প্রধান ক্রীড়া লেখক (ডেইলি মেইল থেকে সংক্ষেপিত)।

থাকতে চান ম্যাককালাম

অ্যাশেজে হতাশাজনক পরাজয়ের পরও নিজের দায়িত্বে অটল থাকতে চান ইংল্যান্ড কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, তাঁর ভবিষ্যৎ এখন নিজের হাতে নেই। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে মাত্র ১১ দিনের মধ্যে ৩-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছে ইংল্যান্ড। পদত্যাগের প্রশ্নে ব্রিটিশ গণমাধ্যমকে ম্যাককালাম বলেন, ‘আমি শুধু আমার কাজটা করে যাওয়ার চেষ্টা করব। যেসব জায়গায় আমরা ঠিকভাবে কাজ করতে পারিনি, সেগুলো থেকে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করব এবং কিছু সমন্বয় আনার চেষ্টা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত