Ajker Patrika

লিটন–মিরাজদের ‘মনের চোট’ সারান তিনি

তাসনীম হাসান, ঢাকা
আপডেট : ০২ জুলাই ২০২১, ১১: ২৪
লিটন–মিরাজদের ‘মনের চোট’ সারান তিনি

গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে ওয়াসিম আকরাম শরণ নিতেন মনোবিদের। কখনো সমুদ্রের ধারে বসে মনোবিদের সহায়তায় নিজেকে তৈরি করতেন। পাকিস্তানের কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার অবশ্য ‘মনের চিকিৎসক’ হিসেবে পেয়েছিলেন নিজের স্ত্রীকেই। হার্ট ও কিডনির সমস্যায় ২০০৯ সালে পরপারে চলে যাওয়া হুমা মুফতিকে এখনো জীবন বদলে দেওয়ার পেছনের বড় শক্তি হিসেবে মানেন ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ফাস্ট বোলার।

তাসকিন আহমেদও পেয়েছেন একজন মনোবিদের সন্ধান। বাংলাদেশ পেসারের এই মনোচিকিৎসকের নাম সাবিত রায়হান। প্রায় হারিয়ে যেতে বসা তাসকিনের ফিরে আসার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে তাঁর। শুধু তাসকিনই নন; সাবিতের সেশনে অংশ নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ, ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, এনামুল হক বিজয়রাও। ‘তাসকিনের পরিচিত একজনের মাধ্যমে আমার সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ’–ক্রিকেটারদের সঙ্গে তাঁর পরিচয়ের প্রথম অভিজ্ঞতার কথা আজকের পত্রিকাকে বলছিলেন সাবিত। 

সাবিতের সেশনে থাকেন সৌম্য সরকারও২০১৯ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) চলার সময়ে শুরু, এরপর দেশে কিংবা বিদেশে সফর–যেখানেই থাকুন প্রায় প্রতিদিনই সাবিতের সেশনে নিয়মিত অংশ নেন তাসকিন। দেশে থাকলে সামনাসামনি, আর দেশের বাইরে থাকলে মুঠোফোনের পর্দায় চলে ক্লাস। 

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শুরুতে দারুণ সাফল্য পাওয়া তাসকিনের ভিন্ন পৃথিবী দেখতেও সময় লাগেনি। ২০১৮ সাল থেকে ক্রমেই হারিয়ে ফেলেন বোলিংয়ের ধার। চোট, পারফরম্যান্স তো আছেই, মাঠের বাইরের জীবন নিয়েও কম আলোচিত ছিলেন না তাসকিন। ধারাবাহিক ব্যর্থতায় হাবুডুবু খেতে থাকা তাসকিনের আত্মবিশ্বাসও ঠেকেছিল তলানিতে। ব্যর্থতার সাগরে যখন তলিয়ে যাচ্ছিলেন, সেই অন্ধকার সময়েই তাসকিন খোঁজ পান সাবিতের। ‘তিনি আমার মাইন্ড ট্রেনার। কোচের মতো। শরীর সুস্থ রাখতে ফিটনেস ট্রেনিং করি, মনের জন্য যে ট্রেনিং দরকার, সেটি করান সাবিত ভাই’—জিম্বাবুয়ে যাওয়ার আগে বলছিলেন তাসকিন। 

সাবিতের সেশনে অংশ নিয়ে এনামুলও পেয়েছেন উপকার। বাংলাদেশ দলের বাইরে থাকা এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান কাল বলছিলেন, ‘আমি তাঁর (সাবিত) সেশনে অংশ নিয়ে বেশ উপকৃত হয়েছি।’ 

এনামুল হক বিজয়ও মনের চোট সারাতে যান সাবিতের কাছেতাসকিন–ইমরুলদের মনের রোগ সারাতে নোটবুকে কী কী থাকে—এ প্রশ্নে মোবাইল ফোনে সাবিত বলছিলেন, ‘মন ও শরীর একসঙ্গেই কাজ করে। ক্রিকেটারদের স্কিল ও ফিটনেস ঠিকঠাক কাজে লাগাতে যে মানসিকতা দরকার, সেসব নিয়ে ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাজ করি। নেতিবাচক কিছু মনে এলে সেটা পারফরম্যান্সেও প্রভাব পড়ে। এসব বিষয় কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেটিও থাকে সেশনে। মনের পরিবর্তনটা যাতে দীর্ঘমেয়াদি হয়, সেসবই শেখাই।’ 

ক্রিকেটারদের সঙ্গে অনলাইন–অফলাইন দুভাবেই সেশনে যুক্ত হন সাবিত। ক্রিকেটাররা দেশের বাইরে থাকলে চলে অনলাইন সেশন। অবশ্য ক্রিকেটারদের মনোবিদের শরণ নেওয়া নতুন নয়। গত কয়েক বছরে একাধিকবার কানাডাপ্রবাসী মনোবিদ আলী আজহার খানের ক্লাসে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়েরা। তবে এটি নিয়মিত নয়, হয় মাঝেমধ্যে। হতাশা, অবসাদ, তীব্র চাপ সামলাতে এখন বেশির ভাগ ক্রিকেটার শরণ নিচ্ছেন সাবিতের মতো মাইন্ড ট্রেনারের। 

সাবিতের স্বপ্ন, একদিন পুরো বাংলাদেশ দলের জন্যই কাজ করবেন তিনি, ‘দলের অনেকের সঙ্গে কাজ করছি। যদি বিসিবি থেকে সুযোগ আসে, ক্রিকেটারদের মানসিকতা এভাবেই গড়তে চাইব, যাতে তাঁরা বিশ্বকাপ জয় নিয়ে চিন্তা করতে পারেন। এটি করতে কীভাবে নিজেদের মানসিকতা গড়ে তুলবেন তাঁরা, সেসব নিয়ে কাজ করতে চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিলুপ্তের সিদ্ধান্ত হয়নি, নাহিদের মন্তব্যের জবাবে উমামা

জাতীয় নির্বাচন: ভোট কমিটির নেতৃত্বে ডিসি–ইউএনওকে না রাখার চিন্তা

আ.লীগ নেতার গ্রেপ্তার নিয়ে রাজশাহীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ

খামেনিকে চিঠি দিয়ে যে প্রস্তাব দিলেন ট্রাম্প

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারী বাধ্যতামূলক ছুটিতে, মামলা এখন আদালতের এখতিয়ারে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত