Ajker Patrika

বিষণ্নতা দূর করে খাবার

লিনা আকতার
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২১, ১১: ৩৬
বিষণ্নতা দূর করে খাবার

‘অতন্দ্র চোখে স্বপ্ন শিহরে/আজি বিষণ্ন রাতে,/শীতলক্ষ্যা তীরে গেছি মোরা/লক্ষ্মীপূর্ণিমাতে।।’ রাতও বিষণ্ন হয়। বুদ্ধদেব বসু নন শুধু, এভাবে নানা মুহূর্তে নানা আবহে বিষণ্নতার দেখা পেয়েছেন, পাচ্ছেন অনেকে। বিষণ্নতা এমনই, কার যে কী কারণে হবে—ঠিক করে বলার সুযোগ তেমন নেই। এই করোনাকালে ঘরবন্দী জীবন, চাকরি হারানো বা হারানোর চিন্তা, অর্থনৈতিক সমস্যা, বাইরের প্রাকৃতিক পরিবেশের কাছাকাছি যেতে না পারা, সামাজিক দূরত্ব ও সরাসরি যোগাযোগের অভাব, কারও অতিরিক্ত কাজের চাপ, একাকিত্ব, একঘেয়েমি বা অন্য কোনো মেডিকেল সমস্যা হতে পারে বিষণ্নতার কারণ। এগুলোর পাশাপাশি গবেষণায় দেখা গেছে, খাদ্যের ওপর আমাদের মানসিক ও শারীরিক প্রভাব রয়েছে, বিশেষ করে ডিপ্রেশন ও দুশ্চিন্তার ওপর। আর এটি দীর্ঘদিন চলতে থাকলে হতে পারে মনোযোগের ঘাটতি বা দুর্বল মনোযোগ, চিন্তাভাবনা ধীর হয়ে যাওয়া, ভুলে যাওয়া, ঘন ঘন মেজাজ পরিবর্তন বা আবেগী আচরণ, শুনতে অসুবিধা। তাই বিষয়টিকে অবহেলা না করে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

বিষণ্নতা দূর করতে কী খাবেন:
বিষণ্নতা বা হতাশা দূর করতে দুটি হরমোনের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ—একটি হলো সেরোটোনিন, যা হ্যাপি হরমোন নামে পরিচিত। অন্যটি হলো ডোপামিন হরমোন। এটি কোনো কিছু শিখতে, কাজ করতে, স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে, অনুপ্রেরণা জোগাতে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা রাখে। এসব হরমোনকে ঠিক রাখে খাবার।

হলুদ: হলুদে থাকা কারকুমিন নামের উপাদান, যা শরীরে সেরোটোনিন ও ডোপামিন মাত্রা বাড়ায়। এটি অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টের মতো কাজ করে। এ জন্য খেতে পারেন হলুদ চা। এ ছাড়া দুধের সঙ্গে মিশিয়েও হলুদ খাওয়া যায়। খাবারে হলুদ যোগ করবেন রান্না শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে।

জাফরান: জাফরান প্রাকৃতিক প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। এটি সেরোটোনিন হরমোনের কার্যকারিতা বাড়ায়। জাফরান হতাশার ক্ষেত্রে বেশ ভালো ভূমিকা রাখে।

মাছের তেল বিষণ্নতা হ্রাস করতে সহায়তা করেমাছের তেল: মাছের তেলে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ও সেলেনিয়াম। এটি মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত কার্যকর। মাছের তেল বিষণ্নতা হ্রাস করতে সহায়তা করে। এ জন্য সপ্তাহে দু–তিনবার এটি খাওয়া উচিত।

ট্রিপটোফ্যান: ট্রিপটোফ্যান একটি প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড। এটি সেরোটোনিন ও মেলাটোনিনের পূর্বসূরি। মেলাটোনিন মনকে শিথিল করে ও উদ্বেগ থেকে মুক্তি দেয়। এ জন্য খেতে পারেন দুধ, দই, পনির। শোয়ার আগে এক গ্লাস গরম দুধের সঙ্গে জায়ফল পাউডার যোগ করে খেতে পারেন। এটি বেশ কার্যকর। পনিরে আছে টিরামিন আর দইয়ে আছে প্রোবায়োটিকস উপাদান। এ দুটি উপাদান ডোপামিনের মাত্রা বাড়ায়। এ ছাড়া ট্রিপটোফ্যান সমৃদ্ধ খাবার হলো ডিমের কুসুম, কলা, আনারস, মিষ্টি আলু ইত্যাদি।

বাদাম: বাদাম মস্তিষ্কের সেরোটোনিন মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে। এ ছাড়া বাদামে আছে ভিটামিন বি৬, ম্যাগনেশিয়াম, জিংক ও আয়রন। এগুলো ডোপামিন তৈরি করতে এবং ভারসাম্যপূর্ণ মেজাজ বজায় রাখতে সহায়তা করে। আখরোট ও হ্যাজেল নাট এ ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর। তবে অন্য বাদামগুলোতেও ভালো পুষ্টি আছে, যা বিষণ্নতা দূর করতে ভালো সহায়তা করবে।

ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড: গবেষণায় দেখা গেছে, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ডোপামিনের স্তরকে স্বাভাবিক করতে এবং উদ্বেগ কমাতে সহায়তা করে। এ জন্য সামুদ্রিক মাছ, চিয়াবীজ, সূর্যমুখী বীজ, কুমড়োর বীজ খেতে পারেন। আপনি সালাদ, শাকসবজি, শেক, স্মুদিতে দিয়েও খেতে পারেন।

মিষ্টি আলু: মিষ্টি আলু ট্রিপটোফ্যান সমৃদ্ধ। এ ছাড়াও রয়েছে ভিটামিন বি৬, ফাইবার, ম্যাগনেশিয়াম, যা প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট হিসেবে কাজ করে।

ডার্ক চকলেট করটিসোল হরমোন কমিয়ে মানসিক চাপ কমায়ডার্ক চকলেট: ডার্ক চকলেটে থাকে কোকো বীজ ও ম্যাগনেশিয়াম, যা ডোপামিন নিউরোট্রান্সমিটার ফাংশনে সহায়তা করে স্ট্রেস ও উদ্বেগ কমাতে সহায়তা করে। ডার্ক চকলেট করটিসোল হরমোন কমিয়ে মানসিক চাপ কমায়।

বেরি জাতীয় খাবার: বেরি জাতীয় খাবার, যেমন স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, ক্র্যানবেরির ইত্যাদিতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন থাকে। ফলে এগুলো বিষণ্নতা দূর করতে ভালো ভূমিকা রাখে।

শস্যদানা: পুরো শস্য ম্যাগনেশিয়াম, ট্রিপটোফ্যান ও ফাইবার সমৃদ্ধ। এটি উদ্বেগ ও হতাশা কমাতে সহায়তা করে। এ ক্ষেত্রে লাল চাল, ওটস, রাই, বার্লি ইত্যাদি খেতে পারেন।

ছোলা: ছোলাতে উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন বি৬ থাকে। এটি শরীরে সেরোটোনিন উৎপাদন করতে সহায়তা করে। শরীরে ভিটামিন বি৬–এর অভাব থাকলে ঘুম ব্যাহত হতে পারে। ছোলার সঙ্গে শসা ও কাঁচা মরিচ মিশিয়ে খেলে দারুণ উপকার পাবেন।

কুমড়োর বীজে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, যা মানসিক উদ্বেগ কমাতে সহায়তা করেফলমূল ও শাকসবজি: গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও আঁশসমৃদ্ধ ফলমূল ও শাকসবজি, যেগুলোতে ক্যালসিয়াম, ফলেট ও আয়রন থাকে, সেগুলো ডোপামিন ও সেরোটোনিন উৎপাদনে কার্যকর। কলা, কমলা স্ট্রবেরি, টমেটো, মটরশুঁটি, অ্যাভোকাডো, পালংশাক, লালশাক, কচুশাক ইত্যাদি রয়েছে এ তালিকায়।

ভিটামিন সি জাতীয় খাবার: ভিটামিন সি স্লিপ অ্যাপিনিয়ার উন্নতিতে উপকারী হতে পারে, যা বিষণ্নতা কাটাতে সাহায্য করে। এ জন্য খেতে পারেন কমলা, পেয়ারা, লেবু, মাল্টাসহ যেকোনো টক জাতীয় ফল ও টাটকা সবুজ শাক–সবজি।

পানি: পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান হজম প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে এবং দেহকে পানিশূন্যতা থেকে মুক্তি দেয়। এটি মনকে বিষণ্নতা থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করে।

কিছু টিপস:
সৃষ্টিশীল থাকুন। এটি আপনার মনকে অনেক নেতিবাচক বিষয় থেকে দূরে সরিয়ে রাখবে।

  • শোয়ার আগে টেলিভিশন, মোবাইল, কম্পিউটার এড়িয়ে চলুন। এগুলো আপনার মনকে উদ্দীপিত করে ও মনকে অশান্ত করে।
  • ক্যাফেইন, অ্যালকোহল, ধূমপান এড়িয়ে চলুন।
  • একটি রুটিন তৈরি করুন, যা আপনার প্রতিদিনের স্বাস্থ্যকর অভ্যাস তৈরি করবে ধীরে ধীরে।
  • আপনার রাতের খাবার ঘুমানোর ৩ ঘণ্টা আগে শেষ করুন। এতে হজমশক্তি বাড়বে ও রাতে ভালো ঘুম হবে।
  • প্রতিদিন নিয়ম করে সকালের সূর্যের আলো গায়ে লাগান। এতে পাবেন ভিটামিন ডি। এটি আপনাকে হতাশা ও বিষণ্নতা থেকে দূরে রাখবে।
  • পর্যাপ্ত ঘুমান। এটি শরীরে হরমোন মুক্ত করে দেহে ভারসাম্য আনবে।
  • উচ্চ শব্দ বা কোলাহলপূর্ণ জায়গা থেকে দূরে শান্ত নিরিবিলি পরিবেশে থাকুন।
  • অহেতুক প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি থেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করুন।
  • নিয়মিত কিছু ব্যায়াম করুন। এটি মনকে কেন্দ্রীভূত, আবেগ শান্ত ও স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

লিনা আকতার: পুষ্টিবিদ, ঠাকুরগাঁও ডায়াবেটিক ও স্বাস্থ্যসেবা হাসপাতাল।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আপনার প্রিয় সাজের সামগ্রী কত দিন নিরাপদ

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
নতুন বছর শুরুর আগে আপনার সাজের সংগ্রহটি করে ফেলুন সতেজ, নিরাপদ এবং আরও আকর্ষণীয়। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
নতুন বছর শুরুর আগে আপনার সাজের সংগ্রহটি করে ফেলুন সতেজ, নিরাপদ এবং আরও আকর্ষণীয়। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

ক্যালেন্ডারের পাতায় বছর শেষ। উৎসবের আমেজ আর নতুন বছরের প্রস্তুতির ভিড়ে আমরা অনেকেই নতুন করে গুছিয়ে নিচ্ছি আমাদের ঘরবাড়ি। কিন্তু বছর শেষ হওয়ার আগে একবার কি আপনার ড্রেসিং টেবিলের দিকে নজর দিয়েছেন? যে মেকআপ আইটেমগুলো দিয়ে আপনি নিজেকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলেন, সেগুলোর মেয়াদ ঠিকঠাক আছে তো?

লিপ গ্লো অয়েল হোক কিংবা টম ফোর্ড আইশ্যাডো প্যালেট—প্রিয় মেকআপ ব্র্যান্ডগুলোর সংগ্রহ আমাদের অনেকের কাছেই অমূল্য। কিন্তু হীরা বা অকৃত্রিম বন্ধুত্বের মতো মেকআপের সরঞ্জামগুলো চিরস্থায়ী নয়। আমরা যতই সেগুলো ভালোবেসে ড্রয়ারে সাজিয়ে রাখি না কেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর সেগুলোর গুণমান নষ্ট হয়ে যায়। কেবল সৌন্দর্যের জন্য নয়; বরং ত্বকের সুস্বাস্থ্যের খাতিরেই আমাদের জানা প্রয়োজন, কোন প্রসাধনী কত দিন ব্যবহার করা নিরাপদ।

ঠোঁটের প্রসাধনী টেকে ১ থেকে ৩ বছর। আপনার ঠোঁটের প্রসাধনীর বয়স কত? ছবি: ফ্রিপিক
ঠোঁটের প্রসাধনী টেকে ১ থেকে ৩ বছর। আপনার ঠোঁটের প্রসাধনীর বয়স কত? ছবি: ফ্রিপিক

আপনার ত্বকের সুস্বাস্থ্য এবং সাজের নিখুঁত ফিনিশিং ধরে রাখতে ড্রেসিং টেবিলের এই মেকআপ ক্লিন আউট বা অকেজো পণ্য ছেঁটে ফেলা এখন সময়ের দাবি। নতুন বছর শুরু করার আগে আপনার সাজের সংগ্রহটি করে ফেলুন সতেজ, নিরাপদ এবং আরও আকর্ষণীয়।

মেয়াদোত্তীর্ণ মেকআপ কেন বিপজ্জনক

আইলাইনার বা মাসকারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এগুলোর মেয়াদ শেষ হয়েছে কি না খুঁজে দেখুন। ছবি: ফ্রিপিক
আইলাইনার বা মাসকারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এগুলোর মেয়াদ শেষ হয়েছে কি না খুঁজে দেখুন। ছবি: ফ্রিপিক

মেকআপের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে তার রাসায়নিক গঠন বদলে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেয়াদ শেষ হওয়া পণ্য ব্যবহারে ত্বকে সংক্রমণ, প্রদাহ (কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস) এমনকি রাসায়নিক পোড়া ভাবও দেখা দিতে পারে।

চোখের প্রসাধনী, যেমন আইলাইনার বা মাসকারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এ পণ্যগুলো চোখের খুব আর্দ্র পরিবেশে ব্যবহৃত হয় বলে সেখানে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক জন্মায়, যা থেকে আঞ্জনি বা কনজাংটিভাইটিসের মতো সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া মেয়াদ ফুরোলে ফাউন্ডেশন বা কনসিলার ত্বকের লোমকূপ বন্ধ করে দেয়, যা থেকে ব্রণের সমস্যা প্রকট হয়।

মেয়াদ বোঝার সহজ উপায়

প্রসাধনীর মোড়কের গায়ে তাকালেই আপনি একটি খোলা কৌটার ছোট ছবি দেখতে পাবেন। তার পাশে লেখা থাকে ৬ এম, ১২ এম বা ২৪ এম। এগুলোর মানে হলো, পণ্যটির মুখ খোলার পর তা যথাক্রমে ৬, ১২ বা ২৪ মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা নিরাপদ। তবে যদি এ চিহ্ন খুঁজে না পান, তবে নিজের ইন্দ্রিয় ব্যবহার করুন। যদি দেখেন লিপস্টিক বা ফাউন্ডেশন থেকে অদ্ভুত গন্ধ আসছে, তরল মেকআপের ওপর তেলের স্তর জমে গেছে কিংবা আইশ্যাডোর ওপর পাউরুটির মতো কালো বা ধূসর ছাতা পড়েছে, তবে বুঝে নেবেন সেটি বিদায় করার সময় হয়েছে।

কোন পণ্য কত দিন টেকে

চোখের সাজ টেকে ৩ থেকে ৬ মাস: মাসকারা ও তরল আইলাইনার সবচেয়ে কম সময় ভালো থাকে। যেহেতু এগুলো সরাসরি চোখের সংস্পর্শে আসে, তাই প্রতি ৩ থেকে ৬ মাস অন্তর এগুলো বদলে ফেলা বুদ্ধিমানের কাজ।

ঠোঁটের প্রসাধনী টেকে ১ থেকে ৩ বছর: লিপস্টিক সাধারণত পানির পরিমাণ কম থাকলে ৩ বছর পর্যন্ত ভালো থাকতে পারে। তবে লিপগ্লসের মেয়াদ সাধারণত ১ বছরের বেশি হয় না।

বেস মেকআপ টেকে ২ বছর: ফাউন্ডেশন, কনসিলার কিংবা ফেস পাউডার সাধারণত ২ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। তবে তরল ফাউন্ডেশনের উপাদান আলাদা হয়ে গেলে তা আর ব্যবহার করবেন না।

ব্লাশ ও ব্রোঞ্জার ৩ বছর: পাউডার জাতীয় ব্লাশ বা ব্রোঞ্জার সঠিক যত্নে থাকলে ৩ বছর পর্যন্ত আপনার ড্রেসিং টেবিলের শোভা বাড়াতে পারে।

পারফিউম ও নেলপলিশ টেকে ৩ থেকে ৫ বছর: সুগন্ধি বা পারফিউম ৩ থেকে ৫ বছর অনায়াসে ব্যবহার করা যায়। আর নেলপলিশের ক্ষেত্রে রঙের পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত ৩ বছরের বেশি সময় এটি নিরাপদ থাকে।

প্রসাধনী দীর্ঘস্থায়ী করার কিছু টিপস

আপনার প্রিয় প্রসাধনীগুলো যাতে মেয়াদের পুরোটা সময় ভালো থাকে সে জন্য:

  • প্রসাধনী নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে দিন।
  • বাথরুমের মতো স্যাঁতসেঁতে জায়গায় না রেখে শোয়ার ঘরের ঠান্ডা ও শুষ্ক জায়গায় রাখুন।
  • ক্রিমের কৌটায় সরাসরি হাত না দিয়ে ব্রাশ বা স্প্যাচুলা ব্যবহার করুন।
  • বছরের এই শেষ সময়ে নিয়ম করে একবার সব চেক করুন। এতে আপনার ত্বক ও সাজ ভালো থাকার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।

সূত্র: ভোগ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: ঝগড়া করার খুব ইচ্ছা হবে, ঘরের বসকে মেনে চলুন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ২৬
আজকের রাশিফল: ঝগড়া করার খুব ইচ্ছা হবে, ঘরের বসকে মেনে চলুন

মেষ

আপনি আজ মানসিক শান্তিতে থাকবেন। কারণ, হয়তো সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ফোনটা চার্জে দিতে ভুলে গিয়েছিলেন! আধ্যাত্মিকতায় মন বসবে, কিন্তু মনে রাখবেন অফিসের বস কিন্তু ভগবান নন, তাই কাজে ফাঁকি দেবেন না। বন্ধুদের কাছে আজ বেশি ‘হিরোগিরি’ দেখাতে যাবেন না, মানসম্মান নিয়ে টানাটানি হতে পারে।

বৃষ

আজ আপনার অর্থভাগ্যে একটু ‘ব্রেকফাস্ট’ লেগেছে, মানে খরচ বেশি। অচেনা লোক দেখলে আজ একটু দূরত্ব বজায় রাখুন, বিশেষ করে যারা বিমা বা ক্রেডিট কার্ড বিক্রি করতে আসে। বাবার কথা আজ শুনে নিন, না হলে পকেট গড়ের মাঠ হতে সময় লাগবে না। পেটের দিকে একটু নজর দিন, রাস্তার চপ-শিঙাড়া আজ বিষবৎ!

মিথুন

গ্রহরা বলছে আপনার আজ ঝগড়া করার খুব ইচ্ছা হবে। কিন্তু দয়া করে তা বাড়ির লোকের ওপর প্রয়োগ করবেন না। ধৈর্য ধরুন, না হলে রাতে কিন্তু না খেয়ে শুতে হতে পারে! কথা বলার আগে দুবার ভাবুন। আপনি ভাবছেন আপনি রসিকতা করছেন, কিন্তু সামনের জন হয়তো ভাবছে আপনাকে ব্লক করবে!

কর্কট

আজ আপনার জন্য ‘শুভ’ দিন। নতুন ব্যবসার আইডিয়া মাথায় আসতে পারে, যেমন ধরুন ‘অনলাইন ধৈর্য বিক্রয় কেন্দ্র’। শেয়ারবাজারে আজ আপনার পোয়াবারো হতে পারে, তবে পকেট সামলে। বিয়ের সিদ্ধান্তে সবাই খুশি হবে, কিন্তু আপনি নিজে কি খুশি? সেটা একবার আয়নায় নিজেকে জিজ্ঞাসা করে নিন।

সিংহ

স্ত্রীর সঙ্গে আজ বিবাদ হতে পারে। মনে রাখবেন, তর্ক করে সিংহের মতো গর্জন করলে শেষে কিন্তু বিড়ালের মতো রান্নাঘরে গিয়েই লুকাতে হবে। সন্তানদের কারণে আনন্দ পাবেন। খরচ নিয়ন্ত্রণে না রাখলে শেষমেশ মুড়ি খেয়ে দিন কাটাতে হবে।

কন্যা

আজ আপনার আয় দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা! হয়তো পুরোনো জিনসের পকেটে ৫০০ টাকার নোট খুঁজে পাবেন। তবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হওয়ার চান্স ১০০%।

বসের সামনে কথা বলার সময় জিব একটু নিয়ন্ত্রণে রাখুন। বস মানেই ঠিক—এই নীতিতে চললে আজ দিনটা বেঁচে যাবেন।

তুলা

আজ পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হতে পারে। তারা আপনার কাছে টাকা ধার চাইবে নাকি খাওয়াতে চাইবে—সেটা আপনার গ্রহ ঠিক করবে। সম্পর্কে স্বচ্ছতা আসবে।সন্ধ্যায় প্রিয়জনের সঙ্গে সিনেমা দেখতে যান, তবে পপকর্নের দাম দেখে আবার হার্ট অ্যাটাক করবেন না!

বৃশ্চিক

আজ আপনার কপালে ‘ঘোর দুর্দিন’ লেখা নেই, তবে একটু সাবধান থাকাই ভালো। আয়ের উৎস ভালো থাকবে। আপনার কথা শুনে সবাই মুগ্ধ হবে (অথবা বিরক্ত হয়ে চলে যাবে)। আজ বাদাম বা শুকনা রুটি দান করুন, এতে অন্তত কারও পেটে খাবার জুটবে!

ধনু

আজ আপনি খুব দয়ালু হয়ে উঠতে পারেন। পাড়ার কুকুর থেকে শুরু করে অফিসের পিওন—সবাইকে সাহায্য করতে চাইবেন। কর্মক্ষেত্রে বসের নেক নজরে থাকবেন।

বেশি আবেগপ্রবণ হবেন না, আবেগ দিয়ে তো আর ইনকাম ট্যাক্স ফাইল করা যায় না!

মকর

তাড়াহুড়ো করলেই আজ বিপদ! রাস্তা পার হওয়ার সময় হোক বা অফিসের মেইল পাঠানোর সময়—একটু ধীরে চলুন। ব্যবসায়িক পরিকল্পনা নিয়ে বেশি লাফালাফি করবেন না। আপনার আজ অলসতা গ্রাস করবে। বিছানা থেকে উঠতে গেলেই মনে হবে বিছানা আপনাকে জড়িয়ে ধরে বলছে, 'যেও না'!

কুম্ভ

আজ অর্থভাগ্যে তেমন কোনো বিপর্যয় নেই, কিন্তু শরীরটা নিয়ে চিন্তা আছে। পিঠের ব্যথা বা ঘাড়ের ব্যথা হতে পারে—হয়তো সারা দিন রিলস দেখার ফল! চুক্তিতে সই করার সময় চশমাটা সঙ্গে রাখবেন। বন্ধুরা ডাকলে আজ এড়িয়ে চলাই মঙ্গল, না হলে বিলটা আপনার কাঁধেই পড়বে।

মীন

আপনি আজ নতুন কিছু করার ইচ্ছা অনুভব করবেন, যেমন ধরুন নতুন ডায়েট শুরু করা (যা দুপুরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে)। সন্তানের আচরণে একটু চিন্তিত হতে পারেন। যদি কারও কাছে টাকা ধার নিয়ে থাকেন, আজ তার ফোন না ধরাই ভালো। কারণ, সে টাকা ফেরত চাইতে পারে!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২০২৬ সালে যে অভ্যাসগুলো আপনাকে সফল করে তুলতে পারে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
সংখ্যাতত্ত্ব অনুসারে ২০২৬ সাল হলো সূর্যের বছর। সূর্য আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্ব, নতুন শুরু, শক্তি এবং কর্তৃত্বের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক
সংখ্যাতত্ত্ব অনুসারে ২০২৬ সাল হলো সূর্যের বছর। সূর্য আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্ব, নতুন শুরু, শক্তি এবং কর্তৃত্বের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক

‘বছরটা খুব একটা ভালো গেল না’! ২০২৫ সাল নিয়ে এমন ভাবনা আছে অনেকের। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, এ বছর পৃথিবীর ওপর ছিল মঙ্গলগ্রহের প্রভাব। ফলে বছরটি কম-বেশি সবার জন্যই খারাপ গেছে। অর্থনৈতিক ক্ষতি, সম্পর্কে ভাঙন, সংসারে অশান্তি, প্রিয়জনের মৃত্যু, ব্যবসায়ে লোকসান—এসব ঘটনা কোনো না কোনোভাবে আমাদের প্রভাবিত করেছে পুরো বছর। এ বছর লাল রঙের পোশাক যতটা এড়িয়ে যাওয়া যায়, সে পরামর্শই দিয়েছিলেন অনেকেই।

আর কিছুদিন পরই ২০২৬ সালে প্রবেশ করতে যাচ্ছি আমরা। নতুন বছর সবার জন্যই রোমাঞ্চকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জানলে হয়তো খুশি হবেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় হয়তো পড়েও ফেলেছেন যে, ২০২৬ সালকে সম্ভাবনার বছর বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সংখ্যাতত্ত্ব অনুসারে ২০২৬ সাল হলো সূর্যের বছর। সূর্য আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্ব, নতুন শুরু, শক্তি এবং কর্তৃত্বের প্রতিনিধিত্ব করে। এটি একটি চমৎকার বছর হতে চলেছে, যা ব্যক্তিগত ও পেশাদার উন্নয়ন, সম্প্রসারণ এবং নতুন শুরু দিকনির্দেশনা দেবে বলে আশাবাদী জ্য়োতিষশাস্ত্র।

সূর্যের রঙের পোশাক পরুন। হলুদ ও সোনালি সাধারণত সূর্যের রং হিসেবে পরিচিত। প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস
সূর্যের রঙের পোশাক পরুন। হলুদ ও সোনালি সাধারণত সূর্যের রং হিসেবে পরিচিত। প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস

এ শাস্ত্র মতে, সূর্যের বছরে মানুষ জীবনে নতুন কিছু অন্বেষণ করবে এবং তাদের ভাগ্য গঠনের দায়িত্ব নেবে। এ বছর আপনার জীবন তার গন্তব্য দেখিয়ে দেবে, জীবনে এগিয়ে যেতে, নেতৃত্ব নিতে এবং নেতৃত্বদানের স্থান বুঝতে সাহায্য করবে।

সূর্যের রাজত্বের বছরে দৈনন্দিন জীবনযাপনে এমন কিছু অভ্যাস গড়ে তুলুন, যেগুলো জীবনে অপার শক্তি ও প্রাচুর্য হয়ে ধরা দেয়।

সৌর চক্রকে শক্তিশালী করুন

সৌর চক্র সূর্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। সুফল পেতে আপনাকে ২০২৬ সালে এই বিশেষ চক্রের ওপর কাজ করতে হবে। আপনি কীভাবে এ চক্র উন্নত করতে পারেন? সে পরামর্শ রইল এখানে।

প্রতিদিন গায়ে রোদ লাগান। দুপুর ১২টার আগে সূর্যের আলোতে বসুন, এরপর নয়। এতে শরীরে ভিটামিন ‘ডি’র ঘাটতি তো পূরণ হবেই, পাশাপাশি কাজকর্মে উদ্যমী হয়ে উঠবেন আপনি। ঠান্ডা বা সাইনাসের মতো অসুখ যাঁদের লেগেই থাকে, তাঁরাও সেরে উঠবেন। সূর্যের আলো মন ফুরফুরে রাখতে সাহায্য় করে। ফলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্কটাও জোরালো হবে।

সকালে নরম সূর্যের আলোতে বসে যোগব্যায়াম করুন। ফিট থাকতে তো বটেই, মুড ভালো রাখতেও এটি জরুরি। হাতে সময় কম থাকায় সূর্য নমস্কার আসনটিই বেছে নিন। এতে একের ভেতর অনেকগুলো আসন সেরে ফেলা যায়। এতে আপনার সৌরশক্তিও বৃদ্ধি পাবে।

সূর্যকে বলা হয় গ্রহদের রাজা। তাই পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্কটা এ বছর আরেকটু ভালো করার চেষ্টা করুন। তাঁদের যত্ন নিন, সময় দিন।

তামার প্লেট, বাটি, গ্লাস, জগ, হাঁড়ি ইত্যাদি ব্যবহার করুন। তামা হলো সূর্যগ্রহের ধাতু, যা শক্তি ও সাহসের প্রতিনিধিত্ব করে। ছবি: পেক্সেলস
তামার প্লেট, বাটি, গ্লাস, জগ, হাঁড়ি ইত্যাদি ব্যবহার করুন। তামা হলো সূর্যগ্রহের ধাতু, যা শক্তি ও সাহসের প্রতিনিধিত্ব করে। ছবি: পেক্সেলস

দৈনন্দিন জীবনে যা মেনে চলতে পারেন

সকালে উঠে জানালা খুলে পর্দা সরিয়ে দিন। প্রতিটি ঘরে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে দিন। এতে করে ঘরের স্যাঁতসেঁতে ভাব কেটে যাবে ও পোকামাকড়ের উপদ্রবও কমবে।

২০২৬-এ রান্নাঘর ও ডাইনিং টেবিলে তামার প্লেট, বাটি, গ্লাস, জগ, হাঁড়ি ব্যবহার করুন। তামা হলো সূর্যগ্রহের ধাতু, যা শক্তি ও সাহসের প্রতিনিধিত্ব করে। সারা রাত তামার পাত্রে পানি রেখে প্রতিদিন সকালে তা পান করার চেষ্টা করুন। এতে শরীরে শক্তি সঞ্চার হবে ও বাড়বে জীবনীশক্তিও।

২০২৬-এ সূর্যের রঙের পোশাক পরুন। কী সেই রং? হলুদ ও সোনালি। এই রং দেখতে যেমন উজ্জ্বল, তেমনি মনও ফুরফুরে রাখবে।

রান্নায় জাফরান ব্যবহার করুন এবং ঘরে ওয়ার্ম বাল্ব ব্যবহার করুন। প্রতিটি ঘরে ওয়ার্ম বাল্ব ব্যবহার করা সম্ভব না হলে বাড়ির সেন্টার পয়েন্টে উষ্ণ আলো ব্যবহার করুন।

বাড়ির সেন্টার পয়েন্টে বেশি আসবাব রাখবেন না। অপ্রয়োজনীয় ও অব্যবহৃত জিনিস দান করে দিন বা বিক্রি করে ফেলুন।

প্রতিদিন ঘর মোছার সময় পানিতে লবণ মিশিয়ে তারপর মুছে নিন। ঘরে তরতাজা ভাব বিরাজ করবে। আর ঘর পরিচ্ছন্ন থাকলে কাজকর্মেও মন বসবে। তাহলেই না সবকিছু ঠিকঠাক চলবে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডায়াবেটিসের রোগীদের কেন সময় মতো খাবার খাওয়া জরুরি

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
খাবার খাওয়ার নির্দিষ্ট সময় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক
খাবার খাওয়ার নির্দিষ্ট সময় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রতীকী ছবি: ফ্রিপিক

ডায়াবেটিসে রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি বা খুব কম—দুটোই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। রক্তে শর্করাকে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে পারলে জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। বেশির ভাগ মানুষ জানেন, কোন খাবার রক্তে শর্করার ওপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু অনেকে হয়তো জানেন না, খাবার খাওয়ার সময়ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যেখানে শর্করাজাতীয় খাবার বিপাকের জন্য শরীরে যতটুকু ইনসুলিন প্রয়োজন হয়, ততটুকু থাকে না। আপনারা জেনে থাকবেন, ডায়াবেটিস দুই ধরনের হয়—টাইপ-১ ও টাইপ-২। টাইপ-১ ডায়াবেটিসে ইনসুলিন একেবারেই থাকে না। তাই রোগ ধরা পড়ার সময় থেকে ইনসুলিন নিতে হয়। আর টাইপ-২ ডায়াবেটিসে শরীরে ইনসুলিন থাকে, কিন্তু ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের জন্য তা কাজ করতে পারে না। যেহেতু ডায়াবেটিস রোগে শর্করাজাতীয় খাবারের বিপাকে সমস্যা হয়, তাই আমরা চিকিৎসকেরা এ ধরনের খাবার; যেমন চিনি, মিষ্টি, ভাত, মিষ্টি ফল, মধু ইত্যাদি পরিমাণমতো খেতে বলি। ডা. মাজহারুল হক তানিম, হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ

কেন খাবারের সময় মেনে চলা জরুরি

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন একই সময়ে নিয়মিত খাবার ও প্রয়োজন অনুযায়ী হালকা নাশতা খেলে রক্তে শর্করা তুলনামূলক স্থিতিশীল থাকে এবং শরীরের শক্তির মাত্রাও বজায় থাকে। বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ টাইপ-১ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এবং সেই সব টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য, যারা ইনসুলিন বা কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ গ্রহণ করেন।

খাবার বাদ দিলে কী সমস্যা হয়

খাবার না খেলে অনেক সময় পরে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। এতে রক্তে শর্করা হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে। আবার নিয়মিত খাবার না খেলে রাতে ঘুমের মধ্যেও রক্তে শর্করা কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, যাকে বলা হয় রাতের হাইপোগ্লাইসেমিয়া। এটি বিপজ্জনক হতে পারে; কারণ, ঘুমের মধ্যে অনেক সময় বোঝা যায় না কী হচ্ছে। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে রক্তে শর্করা কমে গেলেও কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। একে বলা হয় হাইপোগ্লাইসেমিয়া আন অ্যাওয়ারনেস। এটি গাড়ি চালানো বা ব্যায়ামের সময় ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

সকালের নাশতা গুরুত্বপূর্ণ

বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সকালের নাশতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর নাশতা দিনের শুরুতে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং সারা দিন শক্তি ধরে রাখে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে ভালোভাবে খেয়ে দুপুর ও রাতের খাবার তুলনামূলক হালকা রাখলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ওজন ও রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ইনসুলিনের প্রয়োজনও কমে। অন্যদিকে, নাশতা বাদ দিলে বিকেল ও রাতে রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। অনেক ক্ষেত্রে মানুষ পরে সেই ঘাটতি পুষিয়ে নিতে অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলেন।

দুপুর ও রাতের খাবার

দুপুর ও রাতের খাবারে প্রতিদিন প্রায় একই পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট রাখা ভালো। এতে রক্তে শর্করার ওঠানামা কম হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, খুব দেরিতে রাতের খাবার খাওয়া উচিত নয়। ঘুমানোর খুব কাছাকাছি সময়ে রাতের খাবার খেলে ওজন এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

নাশতার প্রয়োজন

সব ডায়াবেটিস রোগীর নিয়মিত নাশতার প্রয়োজন হয় না। রক্তে শর্করার মাত্রা ও ক্ষুধার ওপর বিষয়টি নির্ভর করে। তবে ইনসুলিন গ্রহণকারী বা যাঁদের রক্তে শর্করা কমে যাওয়ার ঝুঁকি আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে হালকা নাশতা উপকারী হতে পারে। রাতে রক্তে শর্করা কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকলে ঘুমের আগে অল্প নাশতা উপকারী হতে পারে।

ব্যায়াম ও খাবারের সময়

খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট পর হালকা ব্যায়াম করলে রক্তে শর্করা কমাতে সাহায্য করে; বিশেষ করে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে। তবে যারা ইনসুলিন বা কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ নেন, তাঁদের ব্যায়ামের আগে বা পরে সামান্য খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। ব্যায়ামের সময় পেশি বেশি গ্লুকোজ ব্যবহার করে, ফলে রক্তে শর্করা কমে যেতে পারে। তাই ব্যায়ামের সময় খাবার ও ইনসুলিনের সমন্বয় চিকিৎসকের পরামর্শে করা উচিত।

নিজের জন্য সঠিক পরিকল্পনা কীভাবে করবেন

ডায়াবেটিসে খাবারের সময় ও ধরন ব্যক্তিভেদে আলাদা হতে পারে। তাই নিজের শরীরের প্রতিক্রিয়া বুঝে পরিকল্পনা করা জরুরি। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো—

  • প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে সুষম খাবার খান।
  • কী খাচ্ছেন ও কখন খাচ্ছেন, তার সঙ্গে রক্তে শর্করার মাত্রা নোট করুন।
  • প্রয়োজন হলে স্বাস্থ্যকর নাশতা রাখুন।
  • ব্যায়ামের আগে ও পরে রক্তে শর্করা পরীক্ষা করুন।

চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের সঙ্গে আলোচনা করে খাবারের সময়সূচি ঠিক করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।

সূত্র: হেলথ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত