কামরুল হাসান

বিমানবন্দর থেকে উত্তরার দিকে যেতে ডান পাশে র্যাব-১-এর যে ভবনটি চোখে পড়ে, তার দোতলায় বসতেন ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার (অধিনায়ক) লে. কর্নেল চৌধুরী ফজলুল বারী। অত শান-শওকত তখন ছিল না, চাইলে যে কেউ বিনা বাধায় ভেতরে যেতে পারত। দোতলার বারান্দায় উঠে দেখি হ্যান্ডকাফ পরা এক লোক টুলে বসে বাটিতে চানাচুর মেশানো মুড়ি খাচ্ছেন। সামনে অস্ত্র হাতে র্যাবের দুজন সদস্য। কাছে গিয়ে দেখি হ্যান্ডকাফ পরা লোকটির সঙ্গে তাঁরা গল্প করছেন।
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে তাঁদের গল্প শুনে হ্যান্ডকাপ পরা লোকটিকে জিজ্ঞেস করলাম–আপনার নাম কী? লোকটি অস্ত্রধারীদের দিকে তাকিয়ে বললেন, মো. আবদুল হান্নান। সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্রধারী একজন বললেন, আরে ব্যাটা বল, পিচ্চি হান্নান। লোকটি নীরব। আমি বললাম, ও! কারওয়ান বাজারের হান্নান? এবার তিনি মাথা নাড়লেন। একটু পরেই ডাক পড়ল অধিনায়কের কক্ষ থেকে। আমাকে দেখে চৌধুরী ফজলুল বারী বললেন, পিচ্চি হান্নানকে দেখলেন? ওকে নিয়ে অভিযানে বের হব, খবর পাবেন।
খবর পেলাম ঠিকই। সেই অভিযান হলো ২০০৪ সালের ২৬ জুন রাতে। পরদিন সব কাগজে বড় বড় হেডলাইনে ছাপা হলো—র্যাবের ক্রসফায়ারে শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নান নিহত। ক্রসফায়ারের ‘হাতেখড়ি’ নিল র্যাব। এর পরের ইতিহাস সবার জানা।
আমরা যাঁরা ক্রাইম রিপোর্টিং করতাম, তাঁরা এই হান্নানদের অত্যাচারে ঠিকমতো ঘুমাতেও পারতাম না। সেটা অবশ্য সন্ত্রাসী হুমকির জন্য নয়, তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য। তখন প্রতি রাতেই গোলাগুলি হতো। আজ কারওয়ান বাজারে বন্দুকযুদ্ধ, তো কাল তেজকুনিপাড়ায়, পরশু রেলগেটে। পরদিন রাজাবাজারে। গোলাগুলি হলেই নাওয়া–খাওয়া বাদ দিয়ে ছুটতে হতো ঘটনাস্থলে। একদিন দেখা গেল, রাতে অফিসের কাজ শেষ করে বাড়ি গেছি, হঠাৎ অফিস থেকে ফোন— মালিবাগে গোলাগুলি হচ্ছে। দিলাম দৌড়। এভাবে চলছিল মাসের পর মাস, বছরের পর বছর।
বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় এসে সন্ত্রাসীদের থামাতে প্রথম গঠন করল র্যাপিড অ্যাকশন টিম–সংক্ষেপে `র্যাট’। ডিসি মাজহারুল হক ছিলেন এর প্রধান। র্যাটের নাম নিয়ে লোকে হাসাহাসি করত। বলত ‘ইঁদুর বাহিনী’। পরে র্যাট বিলুপ্ত করে বানানো হলো র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তারা মাঠে এসেই শুরু করে দিল ক্রসফায়ার। যদিও সে সময় সন্ত্রাসীদের একটি বড় অংশ বিএনপির কয়েকজন নেতার প্রশ্রয় পেয়ে আসছিল। শীর্ষসন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নানও ছিলেন সেই তালিকার একজন।
যত দূর মনে পড়ে, হাতিরপুলে ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে ছিল হান্নানের শ্বশুরবাড়ি। এ এলাকায় আরেক হান্নান ছিলেন, যিনি লিয়াকতের ঘনিষ্ঠ। সেই হান্নান রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বেড়াতেন। দৈহিক গড়নে দুই হান্নানের মধ্যে কারওয়ান বাজারের হান্নান খাটো হওয়ায় সবাই তাঁকে পিচ্চি হান্নান নামে ডাকতে শুরু করে। সেই থেকে অপরাধজগতে তিনি পরিচয় পেয়ে যান পিচ্চি হান্নান নামে।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা তখন বলেছিলেন, চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জের চরদুখিয়া ইউনিয়নের ওয়াজিউল্লাহর পাঁচ সন্তানের দ্বিতীয় ছিলেন হান্নান। ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া। এরপর বাবার কাঁচামালের ব্যবসায় সহযোগিতা করতে চলে আসেন ঢাকায়, কারওয়ান বাজারে। সেখান থেকে ধীরে ধীরে ছোটখাটো চুরি, ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়া। কারওয়ান বাজার রেললাইনের পাশে তখন মাদক বেচাকেনা শুরু হয়েছে। সেই আস্তানা পুরোপুরি নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন হান্নান। ওই সময় কারওয়ান বাজারের উল্টো দিকে স্টার বেকারির পাশে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে হামলা চালায় তাঁর দল। সেখানে গুলি করে রানা নামের এক যুবককে হত্যা করে। এরপরই ঢাকার অপরাধজগতে নাম ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় সরকারি দলের প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তিদের সঙ্গেও গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পুলিশের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গেও সম্পর্ক ছিল তাঁর।
‘৯৬–৯৭ সালের পর খুব অল্প দিনের মধ্যে রাজধানীর একটি বড় অংশের মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ চলে আসে হান্নানের হাতে। শুরু করেন চাঁদাবাজি। খুব অল্প দিনেই বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হন। ব্যবসাও শুরু করেন।
পিচ্চি হান্নান চলাফেরা করতেন কড়া নিরাপত্তার মধ্যে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দেহরক্ষী চারপাশ ঘিরে থাকত। তাদের প্রত্যেকের হাতে থাকত স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র। কোনো এলাকায় তিনি যাওয়ার পরিকল্পনা করলে অগ্রবর্তী দল গিয়ে সংকেত দিত, এরপর তিনি রওনা হতেন। কেউ তাঁর কর্মকাণ্ডে বাধা দিলেই খুন করতেন। এভাবে তাঁর হাতে খুন হয়ে যান বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান মণ্ডল, ওয়ার্ড কমিশনার শাহাদাত হোসেন, এসআই হুমায়ুন কবিরসহ অনেকে। ২০০৪ সালে ধরা পড়ার সময় তাঁর বিরুদ্ধে ২১টি খুনের মামলা ছিল।
২০০১ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার যেসব সন্ত্রাসীকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করে, তাঁদের অনেকের সঙ্গে পিচ্চি হান্নানের ঘনিষ্ঠতা ছিল। এর মধ্যে মিল ব্যারাকের কচি একজন। এ ছাড়া সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদ, টিক্কা, জয়, কিলার আব্বাস, নিটেল, কালা জাহাঙ্গীর, টোকাই সাগরের সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক ছিল। তাঁরা রাজধানীতে এলাকা ভাগাভাগি করে চাঁদাবাজি করতেন।
ওই সময় চলচ্চিত্রেও বিপুল টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন পিচ্চি হান্নান। তবে তিনি সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী নেতা শাহাবুদ্দিনের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে। শাহাবুদ্দিন পিচ্চি হান্নানকে সামাল দিতে আরেকটি গ্রুপ ভাড়া করেন। এ ছাড়া শাহাবুদ্দিন বিভিন্ন দপ্তরে পিচ্চি হান্নানের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিবরণ দিয়ে চিঠি পাঠাতে শুরু করেন। এতে প্রশাসনের নজর পড়ে যায় হান্নানের ওপর। পিচ্চি হান্নান নিহত হওয়ার পর শাহাবুদ্দিনও ক্রসফায়ারে নিহত হন।
র্যাবের একজন কর্মকর্তা আমাকে বলেছিলেন, একজন সাবেক সাংসদকে হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছেন পিচ্চি হান্নান। তাঁকে ধরতেই হবে। ২০০৪ সালের ২৪ জুন রাতে উত্তরার একটি বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। হান্নান সে সময় দলবল নিয়ে বৈঠকে বসে ছিলেন। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায় সবাই। র্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। গুলিতে হান্নান আহত হন। ভর্তি হন আশুলিয়ার ইনসাফ ক্লিনিকে।
পরদিন সেই ক্লিনিকে অভিযান চালান র্যাবের ক্যাপ্টেন কাজী আলমগীর ও লেফটেন্যান্ট আরমান। তাঁরা দেখতে পান, হাসপাতালের দোতলায় একটি ছোট ঘরে শুয়ে আছেন হান্নান। তিনি প্রথমে নিজেকে সাইফুল পরিচয় দেন। পাশের বিছানায় বসে থাকা সাহেব আলী নিজেকে হান্নানের ভাই পরিচয় দেন। তাঁর কথাবার্তায় সন্দেহ হলে র্যাব সদস্যরা আরও জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরিচয় প্রকাশ করেই উপস্থিত র্যাব কর্মকর্তাদের হান্নান বলেন, ‘স্যার, আমাকে গ্রেপ্তার করে লাভ নেই। তার চেয়ে কিছু সময় অপেক্ষা করুন। আপনাদের ৫০ লাখ টাকা দিই, নিয়ে চলে যান। যদি মনে করেন আরও বেশি টাকার দরকার, সেটাও বলতে পারেন।’ এ সময় উপস্থিত একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আপাতত র্যাব কার্যালয়ে চলো। হান্নানের সঙ্গে ধরা পড়েন সাহেব আলী ও নিটেল। এই নিটেল ছিলেন কালা জাহাঙ্গীরের সহযোগী। কালা জাহাঙ্গীরের মা পেয়ারা বেগম আমাকে নিটেলের কথা বলেছিলেন। কালা জাহাঙ্গীর নিহত হওয়ার পর তাঁর পরিবারকে দেখাশোনা করতেন নিটেল। পরে তিনিও ক্রসফায়ারে মারা যান।
২০০৪ সালের ২৬ জুন পিচ্চি হান্নানকে নিয়ে অভিযানে যায় র্যাব। অভিযান শেষে রাত ৮টার দিকে সাংবাদিকদের ডাকা হয় র্যাব কার্যালয়ে। আমরা গিয়ে দেখি পিচ্চি হান্নানকে, সাদা শার্ট ও সাদা চাদর পরে মেঝেতে পড়ে আছে পিচ্চি হান্নানের দেহ। বুক থেকে নাভি পর্যন্ত ব্যান্ডেজ বাঁধা। বাঁ পায়েও আরেকটি ব্যান্ডেজ। হাতে-পায়ে পুরোনো অসংখ্য কাটা চিহ্ন। বাঁ পায়ের তিনটি আঙুল নেই।
অবৈধ উপার্জনের মাধ্যমে তৈরি সাম্রাজ্য ও বৈভব যার, সেই হান্নানের পরিণতি এমনই। নিজের জন্মস্থান চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার সন্তোষপুরে গ্রাম যার শেষ আশ্রয়।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

বিমানবন্দর থেকে উত্তরার দিকে যেতে ডান পাশে র্যাব-১-এর যে ভবনটি চোখে পড়ে, তার দোতলায় বসতেন ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার (অধিনায়ক) লে. কর্নেল চৌধুরী ফজলুল বারী। অত শান-শওকত তখন ছিল না, চাইলে যে কেউ বিনা বাধায় ভেতরে যেতে পারত। দোতলার বারান্দায় উঠে দেখি হ্যান্ডকাফ পরা এক লোক টুলে বসে বাটিতে চানাচুর মেশানো মুড়ি খাচ্ছেন। সামনে অস্ত্র হাতে র্যাবের দুজন সদস্য। কাছে গিয়ে দেখি হ্যান্ডকাফ পরা লোকটির সঙ্গে তাঁরা গল্প করছেন।
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে তাঁদের গল্প শুনে হ্যান্ডকাপ পরা লোকটিকে জিজ্ঞেস করলাম–আপনার নাম কী? লোকটি অস্ত্রধারীদের দিকে তাকিয়ে বললেন, মো. আবদুল হান্নান। সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্রধারী একজন বললেন, আরে ব্যাটা বল, পিচ্চি হান্নান। লোকটি নীরব। আমি বললাম, ও! কারওয়ান বাজারের হান্নান? এবার তিনি মাথা নাড়লেন। একটু পরেই ডাক পড়ল অধিনায়কের কক্ষ থেকে। আমাকে দেখে চৌধুরী ফজলুল বারী বললেন, পিচ্চি হান্নানকে দেখলেন? ওকে নিয়ে অভিযানে বের হব, খবর পাবেন।
খবর পেলাম ঠিকই। সেই অভিযান হলো ২০০৪ সালের ২৬ জুন রাতে। পরদিন সব কাগজে বড় বড় হেডলাইনে ছাপা হলো—র্যাবের ক্রসফায়ারে শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নান নিহত। ক্রসফায়ারের ‘হাতেখড়ি’ নিল র্যাব। এর পরের ইতিহাস সবার জানা।
আমরা যাঁরা ক্রাইম রিপোর্টিং করতাম, তাঁরা এই হান্নানদের অত্যাচারে ঠিকমতো ঘুমাতেও পারতাম না। সেটা অবশ্য সন্ত্রাসী হুমকির জন্য নয়, তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য। তখন প্রতি রাতেই গোলাগুলি হতো। আজ কারওয়ান বাজারে বন্দুকযুদ্ধ, তো কাল তেজকুনিপাড়ায়, পরশু রেলগেটে। পরদিন রাজাবাজারে। গোলাগুলি হলেই নাওয়া–খাওয়া বাদ দিয়ে ছুটতে হতো ঘটনাস্থলে। একদিন দেখা গেল, রাতে অফিসের কাজ শেষ করে বাড়ি গেছি, হঠাৎ অফিস থেকে ফোন— মালিবাগে গোলাগুলি হচ্ছে। দিলাম দৌড়। এভাবে চলছিল মাসের পর মাস, বছরের পর বছর।
বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় এসে সন্ত্রাসীদের থামাতে প্রথম গঠন করল র্যাপিড অ্যাকশন টিম–সংক্ষেপে `র্যাট’। ডিসি মাজহারুল হক ছিলেন এর প্রধান। র্যাটের নাম নিয়ে লোকে হাসাহাসি করত। বলত ‘ইঁদুর বাহিনী’। পরে র্যাট বিলুপ্ত করে বানানো হলো র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তারা মাঠে এসেই শুরু করে দিল ক্রসফায়ার। যদিও সে সময় সন্ত্রাসীদের একটি বড় অংশ বিএনপির কয়েকজন নেতার প্রশ্রয় পেয়ে আসছিল। শীর্ষসন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নানও ছিলেন সেই তালিকার একজন।
যত দূর মনে পড়ে, হাতিরপুলে ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে ছিল হান্নানের শ্বশুরবাড়ি। এ এলাকায় আরেক হান্নান ছিলেন, যিনি লিয়াকতের ঘনিষ্ঠ। সেই হান্নান রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বেড়াতেন। দৈহিক গড়নে দুই হান্নানের মধ্যে কারওয়ান বাজারের হান্নান খাটো হওয়ায় সবাই তাঁকে পিচ্চি হান্নান নামে ডাকতে শুরু করে। সেই থেকে অপরাধজগতে তিনি পরিচয় পেয়ে যান পিচ্চি হান্নান নামে।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা তখন বলেছিলেন, চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জের চরদুখিয়া ইউনিয়নের ওয়াজিউল্লাহর পাঁচ সন্তানের দ্বিতীয় ছিলেন হান্নান। ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া। এরপর বাবার কাঁচামালের ব্যবসায় সহযোগিতা করতে চলে আসেন ঢাকায়, কারওয়ান বাজারে। সেখান থেকে ধীরে ধীরে ছোটখাটো চুরি, ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়া। কারওয়ান বাজার রেললাইনের পাশে তখন মাদক বেচাকেনা শুরু হয়েছে। সেই আস্তানা পুরোপুরি নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন হান্নান। ওই সময় কারওয়ান বাজারের উল্টো দিকে স্টার বেকারির পাশে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে হামলা চালায় তাঁর দল। সেখানে গুলি করে রানা নামের এক যুবককে হত্যা করে। এরপরই ঢাকার অপরাধজগতে নাম ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় সরকারি দলের প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তিদের সঙ্গেও গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পুলিশের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গেও সম্পর্ক ছিল তাঁর।
‘৯৬–৯৭ সালের পর খুব অল্প দিনের মধ্যে রাজধানীর একটি বড় অংশের মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ চলে আসে হান্নানের হাতে। শুরু করেন চাঁদাবাজি। খুব অল্প দিনেই বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হন। ব্যবসাও শুরু করেন।
পিচ্চি হান্নান চলাফেরা করতেন কড়া নিরাপত্তার মধ্যে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দেহরক্ষী চারপাশ ঘিরে থাকত। তাদের প্রত্যেকের হাতে থাকত স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র। কোনো এলাকায় তিনি যাওয়ার পরিকল্পনা করলে অগ্রবর্তী দল গিয়ে সংকেত দিত, এরপর তিনি রওনা হতেন। কেউ তাঁর কর্মকাণ্ডে বাধা দিলেই খুন করতেন। এভাবে তাঁর হাতে খুন হয়ে যান বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান মণ্ডল, ওয়ার্ড কমিশনার শাহাদাত হোসেন, এসআই হুমায়ুন কবিরসহ অনেকে। ২০০৪ সালে ধরা পড়ার সময় তাঁর বিরুদ্ধে ২১টি খুনের মামলা ছিল।
২০০১ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার যেসব সন্ত্রাসীকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করে, তাঁদের অনেকের সঙ্গে পিচ্চি হান্নানের ঘনিষ্ঠতা ছিল। এর মধ্যে মিল ব্যারাকের কচি একজন। এ ছাড়া সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদ, টিক্কা, জয়, কিলার আব্বাস, নিটেল, কালা জাহাঙ্গীর, টোকাই সাগরের সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক ছিল। তাঁরা রাজধানীতে এলাকা ভাগাভাগি করে চাঁদাবাজি করতেন।
ওই সময় চলচ্চিত্রেও বিপুল টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন পিচ্চি হান্নান। তবে তিনি সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী নেতা শাহাবুদ্দিনের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে। শাহাবুদ্দিন পিচ্চি হান্নানকে সামাল দিতে আরেকটি গ্রুপ ভাড়া করেন। এ ছাড়া শাহাবুদ্দিন বিভিন্ন দপ্তরে পিচ্চি হান্নানের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিবরণ দিয়ে চিঠি পাঠাতে শুরু করেন। এতে প্রশাসনের নজর পড়ে যায় হান্নানের ওপর। পিচ্চি হান্নান নিহত হওয়ার পর শাহাবুদ্দিনও ক্রসফায়ারে নিহত হন।
র্যাবের একজন কর্মকর্তা আমাকে বলেছিলেন, একজন সাবেক সাংসদকে হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছেন পিচ্চি হান্নান। তাঁকে ধরতেই হবে। ২০০৪ সালের ২৪ জুন রাতে উত্তরার একটি বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। হান্নান সে সময় দলবল নিয়ে বৈঠকে বসে ছিলেন। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায় সবাই। র্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। গুলিতে হান্নান আহত হন। ভর্তি হন আশুলিয়ার ইনসাফ ক্লিনিকে।
পরদিন সেই ক্লিনিকে অভিযান চালান র্যাবের ক্যাপ্টেন কাজী আলমগীর ও লেফটেন্যান্ট আরমান। তাঁরা দেখতে পান, হাসপাতালের দোতলায় একটি ছোট ঘরে শুয়ে আছেন হান্নান। তিনি প্রথমে নিজেকে সাইফুল পরিচয় দেন। পাশের বিছানায় বসে থাকা সাহেব আলী নিজেকে হান্নানের ভাই পরিচয় দেন। তাঁর কথাবার্তায় সন্দেহ হলে র্যাব সদস্যরা আরও জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরিচয় প্রকাশ করেই উপস্থিত র্যাব কর্মকর্তাদের হান্নান বলেন, ‘স্যার, আমাকে গ্রেপ্তার করে লাভ নেই। তার চেয়ে কিছু সময় অপেক্ষা করুন। আপনাদের ৫০ লাখ টাকা দিই, নিয়ে চলে যান। যদি মনে করেন আরও বেশি টাকার দরকার, সেটাও বলতে পারেন।’ এ সময় উপস্থিত একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আপাতত র্যাব কার্যালয়ে চলো। হান্নানের সঙ্গে ধরা পড়েন সাহেব আলী ও নিটেল। এই নিটেল ছিলেন কালা জাহাঙ্গীরের সহযোগী। কালা জাহাঙ্গীরের মা পেয়ারা বেগম আমাকে নিটেলের কথা বলেছিলেন। কালা জাহাঙ্গীর নিহত হওয়ার পর তাঁর পরিবারকে দেখাশোনা করতেন নিটেল। পরে তিনিও ক্রসফায়ারে মারা যান।
২০০৪ সালের ২৬ জুন পিচ্চি হান্নানকে নিয়ে অভিযানে যায় র্যাব। অভিযান শেষে রাত ৮টার দিকে সাংবাদিকদের ডাকা হয় র্যাব কার্যালয়ে। আমরা গিয়ে দেখি পিচ্চি হান্নানকে, সাদা শার্ট ও সাদা চাদর পরে মেঝেতে পড়ে আছে পিচ্চি হান্নানের দেহ। বুক থেকে নাভি পর্যন্ত ব্যান্ডেজ বাঁধা। বাঁ পায়েও আরেকটি ব্যান্ডেজ। হাতে-পায়ে পুরোনো অসংখ্য কাটা চিহ্ন। বাঁ পায়ের তিনটি আঙুল নেই।
অবৈধ উপার্জনের মাধ্যমে তৈরি সাম্রাজ্য ও বৈভব যার, সেই হান্নানের পরিণতি এমনই। নিজের জন্মস্থান চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার সন্তোষপুরে গ্রাম যার শেষ আশ্রয়।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

বিমানবন্দর থেকে উত্তরার দিকে যেতে ডান পাশে র্যাব-১-এর যে ভবনটি চোখে পড়ে, তার দোতলায় বসতেন ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার (অধিনায়ক) লে. কর্নেল চৌধুরী ফজলুল বারী। অত শান-শওকত তখন ছিল না, চাইলে যে কেউ বিনা বাধায় ভেতরে যেতে পারত। দোতলার বারান্দায় উঠে দেখি হ্যান্ডকাফ পরা এক লোক টুলে বসে বাটিতে চানাচুর মেশানো মুড়ি খাচ্ছেন। সামনে অস্ত্র হাতে র্যাবের দুজন সদস্য। কাছে গিয়ে দেখি হ্যান্ডকাফ পরা লোকটির সঙ্গে তাঁরা গল্প করছেন।
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে তাঁদের গল্প শুনে হ্যান্ডকাপ পরা লোকটিকে জিজ্ঞেস করলাম–আপনার নাম কী? লোকটি অস্ত্রধারীদের দিকে তাকিয়ে বললেন, মো. আবদুল হান্নান। সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্রধারী একজন বললেন, আরে ব্যাটা বল, পিচ্চি হান্নান। লোকটি নীরব। আমি বললাম, ও! কারওয়ান বাজারের হান্নান? এবার তিনি মাথা নাড়লেন। একটু পরেই ডাক পড়ল অধিনায়কের কক্ষ থেকে। আমাকে দেখে চৌধুরী ফজলুল বারী বললেন, পিচ্চি হান্নানকে দেখলেন? ওকে নিয়ে অভিযানে বের হব, খবর পাবেন।
খবর পেলাম ঠিকই। সেই অভিযান হলো ২০০৪ সালের ২৬ জুন রাতে। পরদিন সব কাগজে বড় বড় হেডলাইনে ছাপা হলো—র্যাবের ক্রসফায়ারে শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নান নিহত। ক্রসফায়ারের ‘হাতেখড়ি’ নিল র্যাব। এর পরের ইতিহাস সবার জানা।
আমরা যাঁরা ক্রাইম রিপোর্টিং করতাম, তাঁরা এই হান্নানদের অত্যাচারে ঠিকমতো ঘুমাতেও পারতাম না। সেটা অবশ্য সন্ত্রাসী হুমকির জন্য নয়, তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য। তখন প্রতি রাতেই গোলাগুলি হতো। আজ কারওয়ান বাজারে বন্দুকযুদ্ধ, তো কাল তেজকুনিপাড়ায়, পরশু রেলগেটে। পরদিন রাজাবাজারে। গোলাগুলি হলেই নাওয়া–খাওয়া বাদ দিয়ে ছুটতে হতো ঘটনাস্থলে। একদিন দেখা গেল, রাতে অফিসের কাজ শেষ করে বাড়ি গেছি, হঠাৎ অফিস থেকে ফোন— মালিবাগে গোলাগুলি হচ্ছে। দিলাম দৌড়। এভাবে চলছিল মাসের পর মাস, বছরের পর বছর।
বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় এসে সন্ত্রাসীদের থামাতে প্রথম গঠন করল র্যাপিড অ্যাকশন টিম–সংক্ষেপে `র্যাট’। ডিসি মাজহারুল হক ছিলেন এর প্রধান। র্যাটের নাম নিয়ে লোকে হাসাহাসি করত। বলত ‘ইঁদুর বাহিনী’। পরে র্যাট বিলুপ্ত করে বানানো হলো র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তারা মাঠে এসেই শুরু করে দিল ক্রসফায়ার। যদিও সে সময় সন্ত্রাসীদের একটি বড় অংশ বিএনপির কয়েকজন নেতার প্রশ্রয় পেয়ে আসছিল। শীর্ষসন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নানও ছিলেন সেই তালিকার একজন।
যত দূর মনে পড়ে, হাতিরপুলে ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে ছিল হান্নানের শ্বশুরবাড়ি। এ এলাকায় আরেক হান্নান ছিলেন, যিনি লিয়াকতের ঘনিষ্ঠ। সেই হান্নান রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বেড়াতেন। দৈহিক গড়নে দুই হান্নানের মধ্যে কারওয়ান বাজারের হান্নান খাটো হওয়ায় সবাই তাঁকে পিচ্চি হান্নান নামে ডাকতে শুরু করে। সেই থেকে অপরাধজগতে তিনি পরিচয় পেয়ে যান পিচ্চি হান্নান নামে।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা তখন বলেছিলেন, চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জের চরদুখিয়া ইউনিয়নের ওয়াজিউল্লাহর পাঁচ সন্তানের দ্বিতীয় ছিলেন হান্নান। ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া। এরপর বাবার কাঁচামালের ব্যবসায় সহযোগিতা করতে চলে আসেন ঢাকায়, কারওয়ান বাজারে। সেখান থেকে ধীরে ধীরে ছোটখাটো চুরি, ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়া। কারওয়ান বাজার রেললাইনের পাশে তখন মাদক বেচাকেনা শুরু হয়েছে। সেই আস্তানা পুরোপুরি নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন হান্নান। ওই সময় কারওয়ান বাজারের উল্টো দিকে স্টার বেকারির পাশে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে হামলা চালায় তাঁর দল। সেখানে গুলি করে রানা নামের এক যুবককে হত্যা করে। এরপরই ঢাকার অপরাধজগতে নাম ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় সরকারি দলের প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তিদের সঙ্গেও গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পুলিশের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গেও সম্পর্ক ছিল তাঁর।
‘৯৬–৯৭ সালের পর খুব অল্প দিনের মধ্যে রাজধানীর একটি বড় অংশের মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ চলে আসে হান্নানের হাতে। শুরু করেন চাঁদাবাজি। খুব অল্প দিনেই বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হন। ব্যবসাও শুরু করেন।
পিচ্চি হান্নান চলাফেরা করতেন কড়া নিরাপত্তার মধ্যে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দেহরক্ষী চারপাশ ঘিরে থাকত। তাদের প্রত্যেকের হাতে থাকত স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র। কোনো এলাকায় তিনি যাওয়ার পরিকল্পনা করলে অগ্রবর্তী দল গিয়ে সংকেত দিত, এরপর তিনি রওনা হতেন। কেউ তাঁর কর্মকাণ্ডে বাধা দিলেই খুন করতেন। এভাবে তাঁর হাতে খুন হয়ে যান বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান মণ্ডল, ওয়ার্ড কমিশনার শাহাদাত হোসেন, এসআই হুমায়ুন কবিরসহ অনেকে। ২০০৪ সালে ধরা পড়ার সময় তাঁর বিরুদ্ধে ২১টি খুনের মামলা ছিল।
২০০১ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার যেসব সন্ত্রাসীকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করে, তাঁদের অনেকের সঙ্গে পিচ্চি হান্নানের ঘনিষ্ঠতা ছিল। এর মধ্যে মিল ব্যারাকের কচি একজন। এ ছাড়া সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদ, টিক্কা, জয়, কিলার আব্বাস, নিটেল, কালা জাহাঙ্গীর, টোকাই সাগরের সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক ছিল। তাঁরা রাজধানীতে এলাকা ভাগাভাগি করে চাঁদাবাজি করতেন।
ওই সময় চলচ্চিত্রেও বিপুল টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন পিচ্চি হান্নান। তবে তিনি সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী নেতা শাহাবুদ্দিনের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে। শাহাবুদ্দিন পিচ্চি হান্নানকে সামাল দিতে আরেকটি গ্রুপ ভাড়া করেন। এ ছাড়া শাহাবুদ্দিন বিভিন্ন দপ্তরে পিচ্চি হান্নানের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিবরণ দিয়ে চিঠি পাঠাতে শুরু করেন। এতে প্রশাসনের নজর পড়ে যায় হান্নানের ওপর। পিচ্চি হান্নান নিহত হওয়ার পর শাহাবুদ্দিনও ক্রসফায়ারে নিহত হন।
র্যাবের একজন কর্মকর্তা আমাকে বলেছিলেন, একজন সাবেক সাংসদকে হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছেন পিচ্চি হান্নান। তাঁকে ধরতেই হবে। ২০০৪ সালের ২৪ জুন রাতে উত্তরার একটি বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। হান্নান সে সময় দলবল নিয়ে বৈঠকে বসে ছিলেন। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায় সবাই। র্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। গুলিতে হান্নান আহত হন। ভর্তি হন আশুলিয়ার ইনসাফ ক্লিনিকে।
পরদিন সেই ক্লিনিকে অভিযান চালান র্যাবের ক্যাপ্টেন কাজী আলমগীর ও লেফটেন্যান্ট আরমান। তাঁরা দেখতে পান, হাসপাতালের দোতলায় একটি ছোট ঘরে শুয়ে আছেন হান্নান। তিনি প্রথমে নিজেকে সাইফুল পরিচয় দেন। পাশের বিছানায় বসে থাকা সাহেব আলী নিজেকে হান্নানের ভাই পরিচয় দেন। তাঁর কথাবার্তায় সন্দেহ হলে র্যাব সদস্যরা আরও জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরিচয় প্রকাশ করেই উপস্থিত র্যাব কর্মকর্তাদের হান্নান বলেন, ‘স্যার, আমাকে গ্রেপ্তার করে লাভ নেই। তার চেয়ে কিছু সময় অপেক্ষা করুন। আপনাদের ৫০ লাখ টাকা দিই, নিয়ে চলে যান। যদি মনে করেন আরও বেশি টাকার দরকার, সেটাও বলতে পারেন।’ এ সময় উপস্থিত একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আপাতত র্যাব কার্যালয়ে চলো। হান্নানের সঙ্গে ধরা পড়েন সাহেব আলী ও নিটেল। এই নিটেল ছিলেন কালা জাহাঙ্গীরের সহযোগী। কালা জাহাঙ্গীরের মা পেয়ারা বেগম আমাকে নিটেলের কথা বলেছিলেন। কালা জাহাঙ্গীর নিহত হওয়ার পর তাঁর পরিবারকে দেখাশোনা করতেন নিটেল। পরে তিনিও ক্রসফায়ারে মারা যান।
২০০৪ সালের ২৬ জুন পিচ্চি হান্নানকে নিয়ে অভিযানে যায় র্যাব। অভিযান শেষে রাত ৮টার দিকে সাংবাদিকদের ডাকা হয় র্যাব কার্যালয়ে। আমরা গিয়ে দেখি পিচ্চি হান্নানকে, সাদা শার্ট ও সাদা চাদর পরে মেঝেতে পড়ে আছে পিচ্চি হান্নানের দেহ। বুক থেকে নাভি পর্যন্ত ব্যান্ডেজ বাঁধা। বাঁ পায়েও আরেকটি ব্যান্ডেজ। হাতে-পায়ে পুরোনো অসংখ্য কাটা চিহ্ন। বাঁ পায়ের তিনটি আঙুল নেই।
অবৈধ উপার্জনের মাধ্যমে তৈরি সাম্রাজ্য ও বৈভব যার, সেই হান্নানের পরিণতি এমনই। নিজের জন্মস্থান চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার সন্তোষপুরে গ্রাম যার শেষ আশ্রয়।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

বিমানবন্দর থেকে উত্তরার দিকে যেতে ডান পাশে র্যাব-১-এর যে ভবনটি চোখে পড়ে, তার দোতলায় বসতেন ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার (অধিনায়ক) লে. কর্নেল চৌধুরী ফজলুল বারী। অত শান-শওকত তখন ছিল না, চাইলে যে কেউ বিনা বাধায় ভেতরে যেতে পারত। দোতলার বারান্দায় উঠে দেখি হ্যান্ডকাফ পরা এক লোক টুলে বসে বাটিতে চানাচুর মেশানো মুড়ি খাচ্ছেন। সামনে অস্ত্র হাতে র্যাবের দুজন সদস্য। কাছে গিয়ে দেখি হ্যান্ডকাফ পরা লোকটির সঙ্গে তাঁরা গল্প করছেন।
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে তাঁদের গল্প শুনে হ্যান্ডকাপ পরা লোকটিকে জিজ্ঞেস করলাম–আপনার নাম কী? লোকটি অস্ত্রধারীদের দিকে তাকিয়ে বললেন, মো. আবদুল হান্নান। সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্রধারী একজন বললেন, আরে ব্যাটা বল, পিচ্চি হান্নান। লোকটি নীরব। আমি বললাম, ও! কারওয়ান বাজারের হান্নান? এবার তিনি মাথা নাড়লেন। একটু পরেই ডাক পড়ল অধিনায়কের কক্ষ থেকে। আমাকে দেখে চৌধুরী ফজলুল বারী বললেন, পিচ্চি হান্নানকে দেখলেন? ওকে নিয়ে অভিযানে বের হব, খবর পাবেন।
খবর পেলাম ঠিকই। সেই অভিযান হলো ২০০৪ সালের ২৬ জুন রাতে। পরদিন সব কাগজে বড় বড় হেডলাইনে ছাপা হলো—র্যাবের ক্রসফায়ারে শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নান নিহত। ক্রসফায়ারের ‘হাতেখড়ি’ নিল র্যাব। এর পরের ইতিহাস সবার জানা।
আমরা যাঁরা ক্রাইম রিপোর্টিং করতাম, তাঁরা এই হান্নানদের অত্যাচারে ঠিকমতো ঘুমাতেও পারতাম না। সেটা অবশ্য সন্ত্রাসী হুমকির জন্য নয়, তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য। তখন প্রতি রাতেই গোলাগুলি হতো। আজ কারওয়ান বাজারে বন্দুকযুদ্ধ, তো কাল তেজকুনিপাড়ায়, পরশু রেলগেটে। পরদিন রাজাবাজারে। গোলাগুলি হলেই নাওয়া–খাওয়া বাদ দিয়ে ছুটতে হতো ঘটনাস্থলে। একদিন দেখা গেল, রাতে অফিসের কাজ শেষ করে বাড়ি গেছি, হঠাৎ অফিস থেকে ফোন— মালিবাগে গোলাগুলি হচ্ছে। দিলাম দৌড়। এভাবে চলছিল মাসের পর মাস, বছরের পর বছর।
বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় এসে সন্ত্রাসীদের থামাতে প্রথম গঠন করল র্যাপিড অ্যাকশন টিম–সংক্ষেপে `র্যাট’। ডিসি মাজহারুল হক ছিলেন এর প্রধান। র্যাটের নাম নিয়ে লোকে হাসাহাসি করত। বলত ‘ইঁদুর বাহিনী’। পরে র্যাট বিলুপ্ত করে বানানো হলো র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তারা মাঠে এসেই শুরু করে দিল ক্রসফায়ার। যদিও সে সময় সন্ত্রাসীদের একটি বড় অংশ বিএনপির কয়েকজন নেতার প্রশ্রয় পেয়ে আসছিল। শীর্ষসন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নানও ছিলেন সেই তালিকার একজন।
যত দূর মনে পড়ে, হাতিরপুলে ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে ছিল হান্নানের শ্বশুরবাড়ি। এ এলাকায় আরেক হান্নান ছিলেন, যিনি লিয়াকতের ঘনিষ্ঠ। সেই হান্নান রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বেড়াতেন। দৈহিক গড়নে দুই হান্নানের মধ্যে কারওয়ান বাজারের হান্নান খাটো হওয়ায় সবাই তাঁকে পিচ্চি হান্নান নামে ডাকতে শুরু করে। সেই থেকে অপরাধজগতে তিনি পরিচয় পেয়ে যান পিচ্চি হান্নান নামে।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা তখন বলেছিলেন, চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জের চরদুখিয়া ইউনিয়নের ওয়াজিউল্লাহর পাঁচ সন্তানের দ্বিতীয় ছিলেন হান্নান। ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া। এরপর বাবার কাঁচামালের ব্যবসায় সহযোগিতা করতে চলে আসেন ঢাকায়, কারওয়ান বাজারে। সেখান থেকে ধীরে ধীরে ছোটখাটো চুরি, ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়া। কারওয়ান বাজার রেললাইনের পাশে তখন মাদক বেচাকেনা শুরু হয়েছে। সেই আস্তানা পুরোপুরি নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন হান্নান। ওই সময় কারওয়ান বাজারের উল্টো দিকে স্টার বেকারির পাশে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে হামলা চালায় তাঁর দল। সেখানে গুলি করে রানা নামের এক যুবককে হত্যা করে। এরপরই ঢাকার অপরাধজগতে নাম ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় সরকারি দলের প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তিদের সঙ্গেও গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পুলিশের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গেও সম্পর্ক ছিল তাঁর।
‘৯৬–৯৭ সালের পর খুব অল্প দিনের মধ্যে রাজধানীর একটি বড় অংশের মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ চলে আসে হান্নানের হাতে। শুরু করেন চাঁদাবাজি। খুব অল্প দিনেই বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হন। ব্যবসাও শুরু করেন।
পিচ্চি হান্নান চলাফেরা করতেন কড়া নিরাপত্তার মধ্যে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দেহরক্ষী চারপাশ ঘিরে থাকত। তাদের প্রত্যেকের হাতে থাকত স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র। কোনো এলাকায় তিনি যাওয়ার পরিকল্পনা করলে অগ্রবর্তী দল গিয়ে সংকেত দিত, এরপর তিনি রওনা হতেন। কেউ তাঁর কর্মকাণ্ডে বাধা দিলেই খুন করতেন। এভাবে তাঁর হাতে খুন হয়ে যান বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান মণ্ডল, ওয়ার্ড কমিশনার শাহাদাত হোসেন, এসআই হুমায়ুন কবিরসহ অনেকে। ২০০৪ সালে ধরা পড়ার সময় তাঁর বিরুদ্ধে ২১টি খুনের মামলা ছিল।
২০০১ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার যেসব সন্ত্রাসীকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করে, তাঁদের অনেকের সঙ্গে পিচ্চি হান্নানের ঘনিষ্ঠতা ছিল। এর মধ্যে মিল ব্যারাকের কচি একজন। এ ছাড়া সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদ, টিক্কা, জয়, কিলার আব্বাস, নিটেল, কালা জাহাঙ্গীর, টোকাই সাগরের সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক ছিল। তাঁরা রাজধানীতে এলাকা ভাগাভাগি করে চাঁদাবাজি করতেন।
ওই সময় চলচ্চিত্রেও বিপুল টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন পিচ্চি হান্নান। তবে তিনি সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী নেতা শাহাবুদ্দিনের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে। শাহাবুদ্দিন পিচ্চি হান্নানকে সামাল দিতে আরেকটি গ্রুপ ভাড়া করেন। এ ছাড়া শাহাবুদ্দিন বিভিন্ন দপ্তরে পিচ্চি হান্নানের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিবরণ দিয়ে চিঠি পাঠাতে শুরু করেন। এতে প্রশাসনের নজর পড়ে যায় হান্নানের ওপর। পিচ্চি হান্নান নিহত হওয়ার পর শাহাবুদ্দিনও ক্রসফায়ারে নিহত হন।
র্যাবের একজন কর্মকর্তা আমাকে বলেছিলেন, একজন সাবেক সাংসদকে হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছেন পিচ্চি হান্নান। তাঁকে ধরতেই হবে। ২০০৪ সালের ২৪ জুন রাতে উত্তরার একটি বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। হান্নান সে সময় দলবল নিয়ে বৈঠকে বসে ছিলেন। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায় সবাই। র্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। গুলিতে হান্নান আহত হন। ভর্তি হন আশুলিয়ার ইনসাফ ক্লিনিকে।
পরদিন সেই ক্লিনিকে অভিযান চালান র্যাবের ক্যাপ্টেন কাজী আলমগীর ও লেফটেন্যান্ট আরমান। তাঁরা দেখতে পান, হাসপাতালের দোতলায় একটি ছোট ঘরে শুয়ে আছেন হান্নান। তিনি প্রথমে নিজেকে সাইফুল পরিচয় দেন। পাশের বিছানায় বসে থাকা সাহেব আলী নিজেকে হান্নানের ভাই পরিচয় দেন। তাঁর কথাবার্তায় সন্দেহ হলে র্যাব সদস্যরা আরও জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরিচয় প্রকাশ করেই উপস্থিত র্যাব কর্মকর্তাদের হান্নান বলেন, ‘স্যার, আমাকে গ্রেপ্তার করে লাভ নেই। তার চেয়ে কিছু সময় অপেক্ষা করুন। আপনাদের ৫০ লাখ টাকা দিই, নিয়ে চলে যান। যদি মনে করেন আরও বেশি টাকার দরকার, সেটাও বলতে পারেন।’ এ সময় উপস্থিত একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আপাতত র্যাব কার্যালয়ে চলো। হান্নানের সঙ্গে ধরা পড়েন সাহেব আলী ও নিটেল। এই নিটেল ছিলেন কালা জাহাঙ্গীরের সহযোগী। কালা জাহাঙ্গীরের মা পেয়ারা বেগম আমাকে নিটেলের কথা বলেছিলেন। কালা জাহাঙ্গীর নিহত হওয়ার পর তাঁর পরিবারকে দেখাশোনা করতেন নিটেল। পরে তিনিও ক্রসফায়ারে মারা যান।
২০০৪ সালের ২৬ জুন পিচ্চি হান্নানকে নিয়ে অভিযানে যায় র্যাব। অভিযান শেষে রাত ৮টার দিকে সাংবাদিকদের ডাকা হয় র্যাব কার্যালয়ে। আমরা গিয়ে দেখি পিচ্চি হান্নানকে, সাদা শার্ট ও সাদা চাদর পরে মেঝেতে পড়ে আছে পিচ্চি হান্নানের দেহ। বুক থেকে নাভি পর্যন্ত ব্যান্ডেজ বাঁধা। বাঁ পায়েও আরেকটি ব্যান্ডেজ। হাতে-পায়ে পুরোনো অসংখ্য কাটা চিহ্ন। বাঁ পায়ের তিনটি আঙুল নেই।
অবৈধ উপার্জনের মাধ্যমে তৈরি সাম্রাজ্য ও বৈভব যার, সেই হান্নানের পরিণতি এমনই। নিজের জন্মস্থান চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার সন্তোষপুরে গ্রাম যার শেষ আশ্রয়।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

বিমানবন্দর থেকে উত্তরার দিকে যেতে ডান পাশে র্যাব-১-এর যে ভবনটি চোখে পড়ে, তার দোতলায় বসতেন ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার (অধিনায়ক) লে. কর্নেল চৌধুরী ফজলুল বারী। অত শান-শওকত তখন ছিল না, চাইলে যে কেউ বিনা বাধায় ভেতরে যেতে পারত। দোতলার বারান্দায় উঠে দেখি হ্যান্ডকাফ পরা এক লোক টুলে বসে বাটিতে চানাচুর মেশ
১৭ জুলাই ২০২১
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

বিমানবন্দর থেকে উত্তরার দিকে যেতে ডান পাশে র্যাব-১-এর যে ভবনটি চোখে পড়ে, তার দোতলায় বসতেন ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার (অধিনায়ক) লে. কর্নেল চৌধুরী ফজলুল বারী। অত শান-শওকত তখন ছিল না, চাইলে যে কেউ বিনা বাধায় ভেতরে যেতে পারত। দোতলার বারান্দায় উঠে দেখি হ্যান্ডকাফ পরা এক লোক টুলে বসে বাটিতে চানাচুর মেশ
১৭ জুলাই ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

বিমানবন্দর থেকে উত্তরার দিকে যেতে ডান পাশে র্যাব-১-এর যে ভবনটি চোখে পড়ে, তার দোতলায় বসতেন ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার (অধিনায়ক) লে. কর্নেল চৌধুরী ফজলুল বারী। অত শান-শওকত তখন ছিল না, চাইলে যে কেউ বিনা বাধায় ভেতরে যেতে পারত। দোতলার বারান্দায় উঠে দেখি হ্যান্ডকাফ পরা এক লোক টুলে বসে বাটিতে চানাচুর মেশ
১৭ জুলাই ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিমানবন্দর থেকে উত্তরার দিকে যেতে ডান পাশে র্যাব-১-এর যে ভবনটি চোখে পড়ে, তার দোতলায় বসতেন ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার (অধিনায়ক) লে. কর্নেল চৌধুরী ফজলুল বারী। অত শান-শওকত তখন ছিল না, চাইলে যে কেউ বিনা বাধায় ভেতরে যেতে পারত। দোতলার বারান্দায় উঠে দেখি হ্যান্ডকাফ পরা এক লোক টুলে বসে বাটিতে চানাচুর মেশ
১৭ জুলাই ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৪ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৩ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৩ দিন আগে