হরিপদ দত্ত
কাঁঠালিচাঁপার ঝোপের পাশে এক সন্ধ্যাকালে পিতাকে সে দেখেছিল নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকতে। তখন মেয়েটির চোখ থেকে ঝরছিল বিস্ময়ের বৃষ্টি। এক কি দুপলক। পরমুহূর্তেই বাড়ি ছুটে গিয়েছিল মাকে কথাটা জানাতে। মা ঘরে ছিল না। শাক কুড়াতে গিয়েছিল মাঠের ধানখেতের আলে। কার্তিকের মাঠে তখন কুয়াশা কিংবা ওস্ ঝরছিল। ওস্ ভেজা ঘেসো পথে পা ফেলে ছুটছিল আট বছরের মেয়েটি। কাকতাড়ুয়ার মতো জনশূন্য ধানের মাঠে মাকে সটান দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সে। মায়ের আঁচলে হেলেঞ্চা শাক। তেতো শাক।
ও আম্মা, কী করস? আব্বায় ফিরা আইছে, মেয়েটি ছুটতে গিয়ে হামলে পড়ে মায়ের ওপর। দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য।
‘ক্যাডা, ক্যাডা ফিরা আইছে, তর আব্বায়নি?’ আইনুল বিবি কেঁদে ফেলে। সে বুঝতে পারে মেয়ের দৃষ্টিভ্রম ঘটেছে। নিখোঁজ কিংবা খুন হওয়া মরা মানুষ কী করে ফেরে? মেয়েকে কি জিন এসে মতিভ্রষ্ট করেছে? তবে সে এটা বিশ্বাস করে, মৃত স্বামী না ফিরলেও আদম-হাওয়া আজও অজ পাড়াগাঁয়ে ফিরে আসে। সেই কবেকার দুনিয়ার কথা আর ফেরেশতাদের কথা গীতের স্বরে বলে যায়। আরও বলে যায় পুত্র হাবিল আর কাবিলের কথা, যে একজন ভ্রাতৃঘাতক। দুনিয়ায় প্রথম খুনি।
মেয়ের নয়, মায়েরই মাঝেমধ্যে মতিভ্রম ঘটে। রাত-বিরাতে ছনের নড়বড়ে চালের ঘরের ভেতর জোনাক ঢুকলেও তা সাপের শরীরের মতো আঁকাবাঁকা হয়ে পড়ে থাকে। কেবল এক চিলতে উঠোন, পাশে যার বাতাবি লেবু বা জাম্বুরা গাছ, তার ছায়া পড়ে আর অবশিষ্ট জায়গায় লেপটে থাকে নরম ভেজাটে জোনাক। সেই গাছের জোছনার ছায়ায় এসে নির্জনে দাঁড়িয়ে থাকুক তার মৃত স্বামীর অজাগতিক শরীর, এমনটা করুণ সাধ তার। অনতি দূরে জোছনার ভেতর ঝিঁঝি কিংবা জোনাকির ওড়াউড়ি, ডাকাডাকি করলেও সেসবে মন নেই ওর।
এক রাতে যারা ওকে পড়শির পরিচয়ে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়েছিল এবং যে যাত্রা শেষে মানুষটি আর ঘরে ফেরেনি, তারা ওকে খোদার রহমতের কথা শোনায়। তাদের প্রত্যেকের চোখে সে দেখেছিল আজরাইলের মশাল। তারাই তাকে গাঙের নয়া চর জাগার কথা বারবার শোনায় এবং মেয়েকে নিয়ে নতুন ঠিকানায় চলে যাক, সে ঠিকানাও দেখায়। বাড়িটাসমেত মাত্র সাড়ে তিন বিঘের ভূমি খোদার এই অন্তহীন ফসলের আদিগন্ত জমিনের দেশে যত ক্ষুদ্রই হোক, মাটির আকালের কালে তা বড় কম নয়। সেই ভূমির অধিকার ছাড়তে রাজি ছিল না বলেই কি নিখোঁজ হয়ে গেল লোকটা? অথচ আইনুল বিবি বাড়ি ছেড়ে যেতে আজ তৈরি। আসছে মহররমের শেষে মেয়ের হাত ধরে আইনুল বিবি চলে যাবে খোদার রহমতের গাঙের সেই নয়া চরে। তার স্বামীর আঙুলের টিপসই দেওয়া গোপন জাল দলিলও ওদের হাতেই দেখেছে সে। বাড়ি-জমিন নাকি সে বিক্রি করে দিয়েছে সেই কবে। বাকি যে ছিল সেই পাঁচ হাজার টাকা তো পেয়েছে আইনুল। মা-মেয়ে ঠিক করেছে এই জোনাক পক্ষের রাত থাকতে থাকতেই ওরা চলে যাবে সোনার বাংলার সোনা ছড়ানোর ঠিকানার গাঙের চরে। কিন্তু সঙ্গী হবে কোন পুরুষ? পুরুষহীন নারী এ দেশে পাপের শক্তি।
পুরুষ জাতির দখলের এই রাজ্যে পুরুষ বিনে কী করে মা-মেয়ে অজানা ঠিকানায় পা ফেলবে? কিন্তু আতঙ্ক নেই। যাদের নামে দলিল তারাই ওদের সঙ্গী হবে। ওখানে সরকারি গুচ্ছগ্রাম আছে। খোদার অশেষ রহমত বানের পানির মতো থইথই করছে। মাঠে মাঠে সোনার ফসল। সেই নয়া দুনিয়ায় পুরাতন পৃথিবীর বাসিন্দা নানা জাতির পাখ-পাখালিরাও বসত গড়ে তুলছে। সবজির খেতে সূর্যের আলো আর রাতের জোনাক ফকফক করে। নীল আকাশ আর চরের শেষ সীমানায় বহমান গাঙ স্রোতের শব্দের ভেতর গান গায়। ছিন্নমূল ভূমিহীন মানুষের এ যেন এক মায়াবী দুনিয়া।
যাবে। নিশ্চয়ই যাবে আইনুল বিবি। দূর গাঁয়ের ভাইয়েরা আর বিচলিত হবে না অকাল বিধবা কিংবা নিরুদ্দেশ স্বামীর বোনের জন্য। পিতার ঘরে আশ্রয় নেবে না বলে তারা হয়েছে দায়মুক্ত। বোনের বোঝা বোনই নিজে বইবে বলে খোদার কাছে কৃতজ্ঞ ওরা। আইনুল বিবি ভাবে, গ্রামটি ছেড়ে পথে নামার সময় কী কী পেছনে ফেলে যাবে সে? স্বামীর সঙ্গে ঘর-সংসারের স্মৃতি, দেহমিলন, গর্ভধারণ, সন্তান জন্মদান। আর কী কী স্মৃতি? পাড়ার নজু খালা, খাতুন ফুপি, জব্বার চাচা। ভিটেবাড়ি, জোত-জমিন, না এসবে তার মায়া-মহব্বত নেই। ওরা দুশমন, ওকে তো লাথি মেরে তাড়িয়েই দিচ্ছে, তবে কোন মহব্বত? গাঁয়ের একটা মানুষও তার পক্ষে দাঁড়াল না। দু-একজন কথা বললেও শাসানিতে থুবড়ে গেছে। তবে যেখানেই থাক, বর্ষা, শীত এবং অন্য সব মৌসুমের গ্রাম, বাপের বাড়ির পথ, বিল, মাঠ সব মনে পড়বে তার। বাড়ির পাশের মোল্লাদের প্রাচীন জারুল গাছের মগডালে প্রতিবছর যে দুটো চিল বাসা বেঁধে ডিম ফোটায় তাদের কথা খুব মনে পড়বে। নিজের গর্ভধারণ তো পাখির ডিমেরই স্মৃতি।
কিন্তু নিখোঁজ লোকটা গেল কোথায়? পাশের গাঁয়ের শমসের গুনিন বলেছে, হারানো মানুষটা একদিন না একদিন ফিরে আসবে। তার পরামর্শে আইনুল বিবি দুই শুক্রবার রোজাও রেখেছে। গুনিন বলেছে, ওর স্বামী কোনো এক ফকির-দরবেশের মুরিদ হয়ে গেছে। তাই এক রাতে সে ফকিরের বেশে ফিরে আসবে আর খোদার অসীম ক্ষমতার কথা বলবে গাঁয়ের সবাইকে। তার হাতে থাকবে পাঁচ পলতের চেরাগ। বিশ্বাস করেছে আইনুল বিবি। মায়ার সংসারত্যাগী মানুষটি হয়তো তাকে আর মেয়েকে দোয়া বরকতের জন্য নিয়ে যাবে ফকির আলেমের আস্তানায়। ও হবে ভাগ্যবতী।
মা মেয়েকে প্রবোধ দিয়ে বলে, ‘তর বাপে ফিরব কোনো এক জোনাক রাইতে, লইয়া যাইব ফকিরের আস্তানায় দোয়া লইতে, তারপরে পথ চিনাইয়া হাঁটব গাঙের চরের ঠিকানায়, ফকিরি ছাইড়া মানুষটা আবার ফিকিরির দুনিয়াদারি হইব দ্যাহিস।’
‘তবে কবে আইব আব্বায়? ফকিরি কাপড় পরলে আমি নি চিনতে পারমু?’
‘পারবি না ক্যান, যে তরে পয়দা দিছে দুনিয়ার মাটিতে, মাইয়া হইয়া তারে চিনতে বুঝি ভুল করবি?’
‘যদি আব্বার লগে জিন থাহে, ডরামু না ত।’
‘চেরাগের আলো থাকব লগে, তবে আবার ডর কি?’
না। ভয় নাই। মেয়ে ভাবে। তাই রাতের প্রথম প্রহরে বাড়ি ছাড়িয়ে মোল্লাবাড়ির কারখানার ভাঁট ঝোপে জোনাকির আলো দেখতে পায় মেয়ে। পলকহীন তাকিয়ে থেকে ভাবে, ওখানে কি তার বাপ পাঁচ পলতের চেরাগ হাতে দাঁড়িয়ে আছে? তাই সে জোরে পিতাকে ডাকে, ‘অ আব্বা, কবরখানায় কী কর? বাড়িত আইবা না?’
মা পাশে এসে দাঁড়ায়। দূরের জোনাকির আলো একপলক দেখে নিয়ে কেঁদে ফেলে, ‘কবরখানায় কি বাপেরে দ্যাখছস? না, কিচ্ছু না, ঘরের ভিতরে যা, ডরাবি, কী না কী দেইখ্যা।’
মেয়ের হাত ধরে চালাঘরে ঢুকে যায় মা। কুপির আলো জ্বলছে। সে আলোর দিকে তাকিয়ে মা বলে, ‘গাঙের চরে নয়া বসতভিটায় গিয়া জমিনে চাষের কাম করতে পারবি না আমার লগে-পিছে? তর বাপে থাকতে আমি কি তার লগে জমিনে কাম করি নাই?’
‘হ, পারমু না ক্যান আম্মা, এই বাড়ির লাহান পাকঘরের পিছনে থাকব বারমাইসা একটা কালামরিচের গাছ, আমগাছের গোড়ায় থাকব গন্ধবাদালি লতার ঝোপ, তারপরে থাকব ফণিমনসার গাছ, সাপ আইব না বাড়িত—ঠিক না আম্মা?’
‘হ, বেবাকই ঠিক। আমি খালি তর আব্বারে কই, ক্যামন মানুষ তুমি, বাড়িঘর-সংসার ছাইড়া দরবেশের মুরিদ অইয়া পালাইলা? সংসারের দায় কি আমার একলার? খেত-জমিনের কাম কি খালি তুমি একলাই করতা? তুমার আর লাঙলের পাছে আমি মাঠে ঘুরি নাই? আমার কতা ছাড়, মাইয়া যে পয়দা দিলা তার দায় কার?’
‘আব্বারে দুইষ না আম্মা, খোদায় বেজার অইব। দ্যাখবা আব্বায় ফিরা আইব, আমার লাইগা না হইলেও তুমার লাইগা আইব।’
‘কী কইলি তুই? আমার লাইগানি ফিরা আইব? বাপ যে কী জিনিস আইজও চিনলি নারে মাইয়া। মাইয়া হইল বাপের রক্তের পয়দা, বউ পরের মাইয়া। কার টান বেশি?’
এই সংসারে কার জন্য যে কার অধিক টান তা বোঝা সহজ কথা নয়। মেয়ের টান, বউয়ের টান, বাড়িঘরের টান, মাটির টান, গ্রামের টান, কোনোটাই কম নয়। এত জটিল হিসাব অশিক্ষিত গ্রাম্য চাষির বউ যতটুকু বুঝতে পারে, তার চেয়ে অধিক টের পায় ক্ষুধা-দারিদ্র্য আর উপার্জনের একমাত্র মানুষটির নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি। এ যেন অন্ধকার রাতে একাকী অচেনা পথে হাঁটতে গিয়ে দৃষ্টিভ্রমে পড়ে যাওয়া। চারদিকে কেবলই জীবন্ত চলমান নর-কঙ্কালের ভয়ংকর ছায়ামূর্তি! অট্টহাসি!
এক মধ্যরাতে আইনুল বিবির নিরুদ্দিষ্ট স্বামী বাড়ি ফিরে আসে। এই নির্মম নিষ্ঠুর দুনিয়ার কেউ না জানলেও সে জানত লোকটি তার কাছে ফিরে আসবেই। কেননা, খোদার হুকুমে তাঁকে সাক্ষী করেই বিয়ের আসরে সে কবুল উচ্চারণ করেছিল। আইনুল বিবি যা জানত না তা হচ্ছে, এই প্রত্যাগমন ঘটবে অজাগতিক। মনোলোক, দৃষ্টি এবং মস্তিষ্কের এক ভ্রম-প্রপঞ্চ হচ্ছে এই অজাগতিক পরিভ্রমণের অতিপ্রাকৃত কথা। অথচ আইনুল বিবির কাছে তা হচ্ছে পরম সত্য। মতিভ্রম নয়, বাস্তব সত্য।
আদপে সেই রাতে কোনো জোনাক ছিল না। চাঁদ অদৃশ্য। কিন্তু আকাশভরা তারা আর তারা। না জোনাক, না আঁধার অর্থাৎ কাঁই অন্ধকার। ওরা তিনজন গাঙের জেগে ওঠা নতুন বালির চরের উদ্দেশে হাঁটছে। আইনুল বিবি, তার কন্যা এবং অজাগতিক দুনিয়া থেকে ফেরা স্বামী। ওরা পরস্পর দৃষ্টি বিনিময় করলেও কন্যার কাছে ছিল সবই অদৃশ্য। সে তার জন্মদাতাকে দেখতে পায় না যেমনি, ঠিক তেমনি তাদের বাক্যালাপও শুনতে পায় না। নির্জন মাঠ। আলো-আঁধারির ছড়াছড়ি। কাঁই অন্ধকারে তাদের ফসলশূন্য জমিনের এক কোণে নিমগাছটির পাতায় পাতায় পানসে আঁধার। ওই দূরের বাঁশবনের জমাট ঘন অন্ধকারের ভেতর একটি প্যাঁচা ডেকে ওঠে। পরপর তিনটে ডাক।
‘আমরা যে গাঙের চরে যাইতাছি, সেহানে সরকার খালি ঘর দিছে, জমিন ত দেয় নাই, তয় খামু কী?’ স্বামীর কাছে জানতে চায় আইনুল বিবি।
‘তুই-আমি দূর গেরামে গিয়া অন্যের খেতে জন খাটমু’, উত্তর দেয় অজাগতিক দেহধারী স্বামী।
‘তুমার কি ফেলাইয়া যাওয়া বাড়ি-জমিনের লাইগ্যা মায়া নাই?’
‘দুনিয়ার ফসলখেতের মায়া করলে খোদা বেরাজি হইব।’
এখনই বাক্যালাপে পথ কাটে ওরা। আইনুল বিবির সব সংসারী সাধ আর স্বপ্নেরা সঙ্গে চলে। সে ভুলে যায়, যে মানুষটা স্বামীর রূপ ধরে সঙ্গে হাঁটছে, সে একটি গোলকধাঁধা। তাকে ছোঁয়া যায় না। অন্য শরীরী মানুষ সে। তাই এ কথা ওর মনে আসার কথা নয়, মানুষটি নিত্যদিন এবং কবরে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সুখ-দুঃখের অঙ্গীকারবদ্ধ সঙ্গী। কাঁই অন্ধকারের সঙ্গী কি মা হাওয়ার সেই বাবা আদম ছিল না। হঠাৎ এখন কেন গাঁয়ের সেসব মানুষের কথা মনে পড়ছে, যারা অসীম ক্ষমতাবান? যারা ভূমিহীন ছিন্নমূল করে তাদের দেশছাড়া করেছে, তাদের অন্তরে মমতা ছিল না কেন? কেন এত গোনাহে পূর্ণ? নাকি জাহান্নামকে পূর্ণ করার জন্য?
এসব কথা মনে হতেই হঠাৎ আইনুল বিবির দৃষ্টি চারপাশের আলো-আঁধারির দুনিয়ায় বাতাসের মতো আছড়ে পড়ে। সে তার স্বামীকে কোথাও দেখতে পায় না। অদৃশ্য দূরে নদীর রেখা। গুচ্ছগ্রামের ভৌতিক ছায়া নাচে। আকাশের কোণে মরা পশুর কঙ্কালের বুকের হাড়ের মতো বাঁকা নিষ্ঠুর চাঁদ। ঘরে ফেরা এবং তার সঙ্গী হয়ে পথচলা অদৃশ্য দূর-দিগন্তের মানুষটি কি সত্যি মিথ্যে মরীচিকা? খোদার এই দুনিয়ায় তার কি কোনো অস্তিত্বই নেই? কান্নায় ভেঙে পড়ে আইনুল বিবি কন্যাকে জড়িয়ে ধরে। এ কান্না খোদার সপ্ত আসমানভেদী।
কাঁঠালিচাঁপার ঝোপের পাশে এক সন্ধ্যাকালে পিতাকে সে দেখেছিল নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকতে। তখন মেয়েটির চোখ থেকে ঝরছিল বিস্ময়ের বৃষ্টি। এক কি দুপলক। পরমুহূর্তেই বাড়ি ছুটে গিয়েছিল মাকে কথাটা জানাতে। মা ঘরে ছিল না। শাক কুড়াতে গিয়েছিল মাঠের ধানখেতের আলে। কার্তিকের মাঠে তখন কুয়াশা কিংবা ওস্ ঝরছিল। ওস্ ভেজা ঘেসো পথে পা ফেলে ছুটছিল আট বছরের মেয়েটি। কাকতাড়ুয়ার মতো জনশূন্য ধানের মাঠে মাকে সটান দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সে। মায়ের আঁচলে হেলেঞ্চা শাক। তেতো শাক।
ও আম্মা, কী করস? আব্বায় ফিরা আইছে, মেয়েটি ছুটতে গিয়ে হামলে পড়ে মায়ের ওপর। দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য।
‘ক্যাডা, ক্যাডা ফিরা আইছে, তর আব্বায়নি?’ আইনুল বিবি কেঁদে ফেলে। সে বুঝতে পারে মেয়ের দৃষ্টিভ্রম ঘটেছে। নিখোঁজ কিংবা খুন হওয়া মরা মানুষ কী করে ফেরে? মেয়েকে কি জিন এসে মতিভ্রষ্ট করেছে? তবে সে এটা বিশ্বাস করে, মৃত স্বামী না ফিরলেও আদম-হাওয়া আজও অজ পাড়াগাঁয়ে ফিরে আসে। সেই কবেকার দুনিয়ার কথা আর ফেরেশতাদের কথা গীতের স্বরে বলে যায়। আরও বলে যায় পুত্র হাবিল আর কাবিলের কথা, যে একজন ভ্রাতৃঘাতক। দুনিয়ায় প্রথম খুনি।
মেয়ের নয়, মায়েরই মাঝেমধ্যে মতিভ্রম ঘটে। রাত-বিরাতে ছনের নড়বড়ে চালের ঘরের ভেতর জোনাক ঢুকলেও তা সাপের শরীরের মতো আঁকাবাঁকা হয়ে পড়ে থাকে। কেবল এক চিলতে উঠোন, পাশে যার বাতাবি লেবু বা জাম্বুরা গাছ, তার ছায়া পড়ে আর অবশিষ্ট জায়গায় লেপটে থাকে নরম ভেজাটে জোনাক। সেই গাছের জোছনার ছায়ায় এসে নির্জনে দাঁড়িয়ে থাকুক তার মৃত স্বামীর অজাগতিক শরীর, এমনটা করুণ সাধ তার। অনতি দূরে জোছনার ভেতর ঝিঁঝি কিংবা জোনাকির ওড়াউড়ি, ডাকাডাকি করলেও সেসবে মন নেই ওর।
এক রাতে যারা ওকে পড়শির পরিচয়ে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়েছিল এবং যে যাত্রা শেষে মানুষটি আর ঘরে ফেরেনি, তারা ওকে খোদার রহমতের কথা শোনায়। তাদের প্রত্যেকের চোখে সে দেখেছিল আজরাইলের মশাল। তারাই তাকে গাঙের নয়া চর জাগার কথা বারবার শোনায় এবং মেয়েকে নিয়ে নতুন ঠিকানায় চলে যাক, সে ঠিকানাও দেখায়। বাড়িটাসমেত মাত্র সাড়ে তিন বিঘের ভূমি খোদার এই অন্তহীন ফসলের আদিগন্ত জমিনের দেশে যত ক্ষুদ্রই হোক, মাটির আকালের কালে তা বড় কম নয়। সেই ভূমির অধিকার ছাড়তে রাজি ছিল না বলেই কি নিখোঁজ হয়ে গেল লোকটা? অথচ আইনুল বিবি বাড়ি ছেড়ে যেতে আজ তৈরি। আসছে মহররমের শেষে মেয়ের হাত ধরে আইনুল বিবি চলে যাবে খোদার রহমতের গাঙের সেই নয়া চরে। তার স্বামীর আঙুলের টিপসই দেওয়া গোপন জাল দলিলও ওদের হাতেই দেখেছে সে। বাড়ি-জমিন নাকি সে বিক্রি করে দিয়েছে সেই কবে। বাকি যে ছিল সেই পাঁচ হাজার টাকা তো পেয়েছে আইনুল। মা-মেয়ে ঠিক করেছে এই জোনাক পক্ষের রাত থাকতে থাকতেই ওরা চলে যাবে সোনার বাংলার সোনা ছড়ানোর ঠিকানার গাঙের চরে। কিন্তু সঙ্গী হবে কোন পুরুষ? পুরুষহীন নারী এ দেশে পাপের শক্তি।
পুরুষ জাতির দখলের এই রাজ্যে পুরুষ বিনে কী করে মা-মেয়ে অজানা ঠিকানায় পা ফেলবে? কিন্তু আতঙ্ক নেই। যাদের নামে দলিল তারাই ওদের সঙ্গী হবে। ওখানে সরকারি গুচ্ছগ্রাম আছে। খোদার অশেষ রহমত বানের পানির মতো থইথই করছে। মাঠে মাঠে সোনার ফসল। সেই নয়া দুনিয়ায় পুরাতন পৃথিবীর বাসিন্দা নানা জাতির পাখ-পাখালিরাও বসত গড়ে তুলছে। সবজির খেতে সূর্যের আলো আর রাতের জোনাক ফকফক করে। নীল আকাশ আর চরের শেষ সীমানায় বহমান গাঙ স্রোতের শব্দের ভেতর গান গায়। ছিন্নমূল ভূমিহীন মানুষের এ যেন এক মায়াবী দুনিয়া।
যাবে। নিশ্চয়ই যাবে আইনুল বিবি। দূর গাঁয়ের ভাইয়েরা আর বিচলিত হবে না অকাল বিধবা কিংবা নিরুদ্দেশ স্বামীর বোনের জন্য। পিতার ঘরে আশ্রয় নেবে না বলে তারা হয়েছে দায়মুক্ত। বোনের বোঝা বোনই নিজে বইবে বলে খোদার কাছে কৃতজ্ঞ ওরা। আইনুল বিবি ভাবে, গ্রামটি ছেড়ে পথে নামার সময় কী কী পেছনে ফেলে যাবে সে? স্বামীর সঙ্গে ঘর-সংসারের স্মৃতি, দেহমিলন, গর্ভধারণ, সন্তান জন্মদান। আর কী কী স্মৃতি? পাড়ার নজু খালা, খাতুন ফুপি, জব্বার চাচা। ভিটেবাড়ি, জোত-জমিন, না এসবে তার মায়া-মহব্বত নেই। ওরা দুশমন, ওকে তো লাথি মেরে তাড়িয়েই দিচ্ছে, তবে কোন মহব্বত? গাঁয়ের একটা মানুষও তার পক্ষে দাঁড়াল না। দু-একজন কথা বললেও শাসানিতে থুবড়ে গেছে। তবে যেখানেই থাক, বর্ষা, শীত এবং অন্য সব মৌসুমের গ্রাম, বাপের বাড়ির পথ, বিল, মাঠ সব মনে পড়বে তার। বাড়ির পাশের মোল্লাদের প্রাচীন জারুল গাছের মগডালে প্রতিবছর যে দুটো চিল বাসা বেঁধে ডিম ফোটায় তাদের কথা খুব মনে পড়বে। নিজের গর্ভধারণ তো পাখির ডিমেরই স্মৃতি।
কিন্তু নিখোঁজ লোকটা গেল কোথায়? পাশের গাঁয়ের শমসের গুনিন বলেছে, হারানো মানুষটা একদিন না একদিন ফিরে আসবে। তার পরামর্শে আইনুল বিবি দুই শুক্রবার রোজাও রেখেছে। গুনিন বলেছে, ওর স্বামী কোনো এক ফকির-দরবেশের মুরিদ হয়ে গেছে। তাই এক রাতে সে ফকিরের বেশে ফিরে আসবে আর খোদার অসীম ক্ষমতার কথা বলবে গাঁয়ের সবাইকে। তার হাতে থাকবে পাঁচ পলতের চেরাগ। বিশ্বাস করেছে আইনুল বিবি। মায়ার সংসারত্যাগী মানুষটি হয়তো তাকে আর মেয়েকে দোয়া বরকতের জন্য নিয়ে যাবে ফকির আলেমের আস্তানায়। ও হবে ভাগ্যবতী।
মা মেয়েকে প্রবোধ দিয়ে বলে, ‘তর বাপে ফিরব কোনো এক জোনাক রাইতে, লইয়া যাইব ফকিরের আস্তানায় দোয়া লইতে, তারপরে পথ চিনাইয়া হাঁটব গাঙের চরের ঠিকানায়, ফকিরি ছাইড়া মানুষটা আবার ফিকিরির দুনিয়াদারি হইব দ্যাহিস।’
‘তবে কবে আইব আব্বায়? ফকিরি কাপড় পরলে আমি নি চিনতে পারমু?’
‘পারবি না ক্যান, যে তরে পয়দা দিছে দুনিয়ার মাটিতে, মাইয়া হইয়া তারে চিনতে বুঝি ভুল করবি?’
‘যদি আব্বার লগে জিন থাহে, ডরামু না ত।’
‘চেরাগের আলো থাকব লগে, তবে আবার ডর কি?’
না। ভয় নাই। মেয়ে ভাবে। তাই রাতের প্রথম প্রহরে বাড়ি ছাড়িয়ে মোল্লাবাড়ির কারখানার ভাঁট ঝোপে জোনাকির আলো দেখতে পায় মেয়ে। পলকহীন তাকিয়ে থেকে ভাবে, ওখানে কি তার বাপ পাঁচ পলতের চেরাগ হাতে দাঁড়িয়ে আছে? তাই সে জোরে পিতাকে ডাকে, ‘অ আব্বা, কবরখানায় কী কর? বাড়িত আইবা না?’
মা পাশে এসে দাঁড়ায়। দূরের জোনাকির আলো একপলক দেখে নিয়ে কেঁদে ফেলে, ‘কবরখানায় কি বাপেরে দ্যাখছস? না, কিচ্ছু না, ঘরের ভিতরে যা, ডরাবি, কী না কী দেইখ্যা।’
মেয়ের হাত ধরে চালাঘরে ঢুকে যায় মা। কুপির আলো জ্বলছে। সে আলোর দিকে তাকিয়ে মা বলে, ‘গাঙের চরে নয়া বসতভিটায় গিয়া জমিনে চাষের কাম করতে পারবি না আমার লগে-পিছে? তর বাপে থাকতে আমি কি তার লগে জমিনে কাম করি নাই?’
‘হ, পারমু না ক্যান আম্মা, এই বাড়ির লাহান পাকঘরের পিছনে থাকব বারমাইসা একটা কালামরিচের গাছ, আমগাছের গোড়ায় থাকব গন্ধবাদালি লতার ঝোপ, তারপরে থাকব ফণিমনসার গাছ, সাপ আইব না বাড়িত—ঠিক না আম্মা?’
‘হ, বেবাকই ঠিক। আমি খালি তর আব্বারে কই, ক্যামন মানুষ তুমি, বাড়িঘর-সংসার ছাইড়া দরবেশের মুরিদ অইয়া পালাইলা? সংসারের দায় কি আমার একলার? খেত-জমিনের কাম কি খালি তুমি একলাই করতা? তুমার আর লাঙলের পাছে আমি মাঠে ঘুরি নাই? আমার কতা ছাড়, মাইয়া যে পয়দা দিলা তার দায় কার?’
‘আব্বারে দুইষ না আম্মা, খোদায় বেজার অইব। দ্যাখবা আব্বায় ফিরা আইব, আমার লাইগা না হইলেও তুমার লাইগা আইব।’
‘কী কইলি তুই? আমার লাইগানি ফিরা আইব? বাপ যে কী জিনিস আইজও চিনলি নারে মাইয়া। মাইয়া হইল বাপের রক্তের পয়দা, বউ পরের মাইয়া। কার টান বেশি?’
এই সংসারে কার জন্য যে কার অধিক টান তা বোঝা সহজ কথা নয়। মেয়ের টান, বউয়ের টান, বাড়িঘরের টান, মাটির টান, গ্রামের টান, কোনোটাই কম নয়। এত জটিল হিসাব অশিক্ষিত গ্রাম্য চাষির বউ যতটুকু বুঝতে পারে, তার চেয়ে অধিক টের পায় ক্ষুধা-দারিদ্র্য আর উপার্জনের একমাত্র মানুষটির নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি। এ যেন অন্ধকার রাতে একাকী অচেনা পথে হাঁটতে গিয়ে দৃষ্টিভ্রমে পড়ে যাওয়া। চারদিকে কেবলই জীবন্ত চলমান নর-কঙ্কালের ভয়ংকর ছায়ামূর্তি! অট্টহাসি!
এক মধ্যরাতে আইনুল বিবির নিরুদ্দিষ্ট স্বামী বাড়ি ফিরে আসে। এই নির্মম নিষ্ঠুর দুনিয়ার কেউ না জানলেও সে জানত লোকটি তার কাছে ফিরে আসবেই। কেননা, খোদার হুকুমে তাঁকে সাক্ষী করেই বিয়ের আসরে সে কবুল উচ্চারণ করেছিল। আইনুল বিবি যা জানত না তা হচ্ছে, এই প্রত্যাগমন ঘটবে অজাগতিক। মনোলোক, দৃষ্টি এবং মস্তিষ্কের এক ভ্রম-প্রপঞ্চ হচ্ছে এই অজাগতিক পরিভ্রমণের অতিপ্রাকৃত কথা। অথচ আইনুল বিবির কাছে তা হচ্ছে পরম সত্য। মতিভ্রম নয়, বাস্তব সত্য।
আদপে সেই রাতে কোনো জোনাক ছিল না। চাঁদ অদৃশ্য। কিন্তু আকাশভরা তারা আর তারা। না জোনাক, না আঁধার অর্থাৎ কাঁই অন্ধকার। ওরা তিনজন গাঙের জেগে ওঠা নতুন বালির চরের উদ্দেশে হাঁটছে। আইনুল বিবি, তার কন্যা এবং অজাগতিক দুনিয়া থেকে ফেরা স্বামী। ওরা পরস্পর দৃষ্টি বিনিময় করলেও কন্যার কাছে ছিল সবই অদৃশ্য। সে তার জন্মদাতাকে দেখতে পায় না যেমনি, ঠিক তেমনি তাদের বাক্যালাপও শুনতে পায় না। নির্জন মাঠ। আলো-আঁধারির ছড়াছড়ি। কাঁই অন্ধকারে তাদের ফসলশূন্য জমিনের এক কোণে নিমগাছটির পাতায় পাতায় পানসে আঁধার। ওই দূরের বাঁশবনের জমাট ঘন অন্ধকারের ভেতর একটি প্যাঁচা ডেকে ওঠে। পরপর তিনটে ডাক।
‘আমরা যে গাঙের চরে যাইতাছি, সেহানে সরকার খালি ঘর দিছে, জমিন ত দেয় নাই, তয় খামু কী?’ স্বামীর কাছে জানতে চায় আইনুল বিবি।
‘তুই-আমি দূর গেরামে গিয়া অন্যের খেতে জন খাটমু’, উত্তর দেয় অজাগতিক দেহধারী স্বামী।
‘তুমার কি ফেলাইয়া যাওয়া বাড়ি-জমিনের লাইগ্যা মায়া নাই?’
‘দুনিয়ার ফসলখেতের মায়া করলে খোদা বেরাজি হইব।’
এখনই বাক্যালাপে পথ কাটে ওরা। আইনুল বিবির সব সংসারী সাধ আর স্বপ্নেরা সঙ্গে চলে। সে ভুলে যায়, যে মানুষটা স্বামীর রূপ ধরে সঙ্গে হাঁটছে, সে একটি গোলকধাঁধা। তাকে ছোঁয়া যায় না। অন্য শরীরী মানুষ সে। তাই এ কথা ওর মনে আসার কথা নয়, মানুষটি নিত্যদিন এবং কবরে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সুখ-দুঃখের অঙ্গীকারবদ্ধ সঙ্গী। কাঁই অন্ধকারের সঙ্গী কি মা হাওয়ার সেই বাবা আদম ছিল না। হঠাৎ এখন কেন গাঁয়ের সেসব মানুষের কথা মনে পড়ছে, যারা অসীম ক্ষমতাবান? যারা ভূমিহীন ছিন্নমূল করে তাদের দেশছাড়া করেছে, তাদের অন্তরে মমতা ছিল না কেন? কেন এত গোনাহে পূর্ণ? নাকি জাহান্নামকে পূর্ণ করার জন্য?
এসব কথা মনে হতেই হঠাৎ আইনুল বিবির দৃষ্টি চারপাশের আলো-আঁধারির দুনিয়ায় বাতাসের মতো আছড়ে পড়ে। সে তার স্বামীকে কোথাও দেখতে পায় না। অদৃশ্য দূরে নদীর রেখা। গুচ্ছগ্রামের ভৌতিক ছায়া নাচে। আকাশের কোণে মরা পশুর কঙ্কালের বুকের হাড়ের মতো বাঁকা নিষ্ঠুর চাঁদ। ঘরে ফেরা এবং তার সঙ্গী হয়ে পথচলা অদৃশ্য দূর-দিগন্তের মানুষটি কি সত্যি মিথ্যে মরীচিকা? খোদার এই দুনিয়ায় তার কি কোনো অস্তিত্বই নেই? কান্নায় ভেঙে পড়ে আইনুল বিবি কন্যাকে জড়িয়ে ধরে। এ কান্না খোদার সপ্ত আসমানভেদী।
দ্য ভেজিটেরিয়ানের পর হান কাঙের পরের উপন্যাস ছিল ‘দ্য উইন্ড ব্লোজ, গো’। এই উপন্যাস লেখার সময়ই ঘটে বিপত্তি! হান অনুভব করেন তিনি আর লিখতে পারছেন না। গত বছর নিজের পঞ্চম উপন্যাস ‘গ্রিক লেসন’ ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত হলে স্পেনের এল-পাইস পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছিলেন তিনি।
২০ দিন আগে‘প্রগাঢ় কাব্যিক গদ্যে ঐতিহাসিক ক্ষত তুলে ধরা এবং মানবজীবনের নাজুক পরিস্থিতির উন্মোচনের জন্য’ তাঁকে বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাবান পুরস্কারের জন্য বেছে নিয়েছে নোবেল কমিটি।
২১ দিন আগেতানভীর মুহাম্মদ ত্বকীর জন্মদিন উপলক্ষে ‘দশম জাতীয় ত্বকী চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা’–এর আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের প্রথম দশ জনকে সনদ, বই ও ক্রেস্ট দেওয়া হবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীকে বই, বিশেষ ক্রেস্ট ও সনদ এবং প্রথম স্থান অধিকারীকে ‘ত্বকী পদক ২০২৪’ দেওয়া হবে। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী
০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও পরে সরকার পতনের আন্দোলনে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নেতারা আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর হিসেবে কাজ করেছেন। তাঁদের কর্মকাণ্ডে প্রতীয়মান তাঁরা গণহত্যার সমর্থক। এ কারণে একটি গণ আদালত গঠন করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের এই নেতাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর দাবি জানিয়েছে উদীচী।
১৭ আগস্ট ২০২৪