অনলাইন ডেস্ক
ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের প্রতিক্রিয়া স্বরূপ রাশিয়া থেকে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মিত্র ইউরোপীয় দেশগুলোকেও একই পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু ইউরোপ এতে খুব একটা সাড়া হয়নি। বরং তারা রাশিয়ার কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তা ছাড়া মার্কিনদের পারিবারিক ব্যয় কমানোর জন্য বাইডেন সরকারের প্রতিশ্রুতি ও পদক্ষেপ বাস্তবায়ন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ যে জটিল করে তুলবে তাতে সন্দেহ নেই।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন মূলত দ্বিদলীয় চাপের মুখেই রাশিয়ার জ্বালানি খাতের বিরুদ্ধে এমন বিরল পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর আগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নানাভাবে, নানা সময়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও পশ্চিমারা এই খাতটিতে কখনো সেভাবে হাত দেয়নি। ইউক্রেন আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমারা ক্রেমলিনকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করলেও, এটা সত্য এবং এই বাস্তবতা এড়ানো প্রায় অসম্ভব যে, ইউরোপ রাশিয়ার তেলের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।
কিন্তু রাশিয়ার আয়ের উৎস সীমিত করা না গেলে কোনো নিষেধাজ্ঞাই কার্যকর হবে না। এই কথাটি প্রেসিডেন্ট বাইডেনও মানছেন। এ কারণেই অনিচ্ছা সত্ত্বেও এমন পদক্ষেপ তিনি নিয়েছেন। এবং তিনি স্বীকার করেছেন—এর ফলে মার্কিন গাড়িচালকদের জ্বালানির পেছনে আরও বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে। যদিও তিনি ‘স্বাধীনতা রক্ষার জন্য মূল্য দিতে হচ্ছে’ বলে জাতিকে বোঝাতে চেয়েছেন।
অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে রাশিয়ার তেল-গ্যাসের ওপর যুক্তরাষ্ট্র কতটা নির্ভরশীল। সর্বশেষ এই নিষেধাজ্ঞার আগেও রুশ তেল আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও ইউরোপের তুলনায় তাদের নির্ভরশীলতা অনেক কম।
দেশীয় উৎপাদনের অনেক বেশি জ্বালানি তেল খরচ করে যুক্তরাষ্ট্র। এনার্জি ইনফরমেশন এজেন্সির তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র ২০২১ সালে রাশিয়া থেকে প্রতিদিন প্রায় ৬ লাখ ৭২ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল এবং পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানি করেছে। এটি মোট মার্কিন আমদানির প্রায় ৮ শতাংশ। শুধু জ্বালানি তেলের হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের মোট আমদানির ৩ শতাংশ আসে রাশিয়া থেকে, যা দৈনিক প্রায় ২ লাখ ব্যারেল।
যুক্তরাষ্ট্র বেশিরভাগ তেল এবং সংশ্লিষ্ট পণ্য আমদানি করে কানাডা থেকে। কানাডা তাদের প্রতিবেশী দেশটিতে আমদানির ৫১ শতাংশের বেশি সরবরাহ করে। মেক্সিকো এবং সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রে অন্যতম সরবরাহকারী। প্রকৃতপক্ষে লাতিন আমেরিকার ছোট কিছু দেশ এবং পশ্চিম আফ্রিকা যে পরিমাণ তেল যুক্তরাষ্ট্রে সরবরাহ করে তা রাশিয়ার তুলনায় অনেক বেশিই।
এক দশকের মধ্যে ২০২১ সালের মাঝামাঝিতে রাশিয়া থেকে সর্বাধিক পরিমাণ তেল আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই বাণিজ্যে ঊর্ধ্বগতিই দেখা গেছে। যদিও মোট আমদানির তুলনায় রাশিয়ার হিস্যা সব সময়ই অনেক কম ছিল এবং এখনো আছে।
যুক্তরাষ্ট্র উপসাগরীয় উপকূল দিয়ে দৈনিক লাখ লাখ ব্যারেল তেল রপ্তানি করে। এরপরও তাকে রাশিয়ার কাছ থেকে কেন তেল আমদানি করতে হয়? এ প্রশ্নের উত্তরটি সোজা। এক শতাব্দী আগে পাস হওয়া জোনস অ্যাক্ট যুক্তরাষ্ট্রের বন্দর থেকে বন্দরে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল কার্যকর ভাবে সীমিত করেছে। এতে করে পশ্চিম ও পূর্ব উপকূলের ক্রেতাদের উপসাগরীয় উপকূল থেকে তেলের সরবরাহ পেতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই আইন।
গত ডিসেম্বরে উপসাগরীয় উপকূল থেকে তেল কোম্পানিগুলো দৈনিক প্রায় ৩০ লাখ ব্যারেল তেল নিয়েছে। মূলত পাইপলাইনের মাধ্যমে পশ্চিম টেক্সাসের পারমিয়ান বেসিন, নিউ মেক্সিকো এবং ওকলাহোমার কাশিংয়ের সঙ্গে তারা যুক্ত। কাশিং হলো যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম তেল মজুতকেন্দ্র।
পূর্ব ও পশ্চিম উপকূল থেকে এত কম পরিমাণ সরবরাহ দিয়ে ক্রেতাদের পোষায় না। কারণ পরিশোধনাগারগুলো পারমিয়ান এবং কাশিং থেকে যথেষ্ট পাইপলাইন সংযোগ নেই। তারা মূলত আমদানির ওপর নির্ভর করে।
আরেকটি বড় কারণ হলো মার্কিন পরিশোধনাগারগুলোতে বিভিন্ন ধরনের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল প্রয়োজন হয়। উৎপাদন সক্ষমতার চূড়ায় উঠতে বিভিন্ন গ্রেডের উচ্চ সালফারযুক্ত অপরিশোধিত তেলের দরকার পড়ে। এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করতে হয়। কয়েক দশক আগে যুক্তরাষ্ট্রে পরিশোধনাগারগুলোকে ভারী গ্রেডের অপরিশোধিত তেলের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এগুলোতে সাধারণত উচ্চমাত্রায় সালফার থাকে। অভ্যন্তরীণ সরবরাহে যখন ঘাটতি ছিল তখন এসব পরিশোধনাগার তৈরি করা হয়েছিল বলে কনফিগারেশন এমন।
তাছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরান ও ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার ফলে যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে সে স্থান পূরণ করছে রাশিয়া। এখন নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে ইরান ও ভেনেজুয়েলা থেকে তেল আমদানির চেষ্টা করছেন বাইডেন।
রাশিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্র যে তেল আমদানি করে তার প্রায় অর্ধেক যায় পশ্চিম উপকূলে। সেখানে পরিশোধনাগারগুলো বিদেশ থেকে অপরিশোধিত তেল নেয়, কারণ তারা যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম তেলক্ষেত্র পারমিয়ান বেসিনের সঙ্গে পাইপলাইনে যুক্ত নয়। পশ্চিম উপকূলের পরিশোধনাগারগুলোতে রাশিয়ার তেল যায়, যা আসে প্রশান্ত মহাসাগরে দেশের পূর্ব দিকে অবস্থিত কোজমিনো বন্দর থেকে।
রাশিয়া থেকে আমদানির এক চতুর্থাংশ, বা প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার ব্যারেল যায় পূর্ব উপকূলে। সেখানকার রিফাইনারিগুলোও মার্কিন উৎসগুলোর সঙ্গে পাইপলাইনে যুক্ত নয়। অবশিষ্ট এক চতুর্থাংশ যায় উপসাগরীয় উপকূলে।
রাশিয়া থেকে আমদানি বন্ধ হওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে উল্লেখযোগ্য কোনো প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না। কিন্তু একই গ্রেডের তেল পশ্চিম আফ্রিকা বা উত্তর সাগর থেকে আনতে বেশি খরচ পড়বে। মূল খরচই হবে পরিবহনে। উপসাগরীয় উপকূলে যেখানে উচ্চ সালফারযুক্ত রুশ তেল আসে সেখানে মেক্সিকো উপসাগর থেকে আসা তেলে কাজ চালাতে হবে। আর পূর্ব উপকূলের রিফাইনারিগুলোকে ব্যবহার করতে হবে অন্যান্য দেশ থেকে আসা ক্রুড।
এখন রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ হলে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশকে নিঃসন্দেহে মূল্য দিতে হবে। এরই মধ্যে বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহে বড় ধাক্কা লেগেছে। যদিও এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য বড় ভোক্তা দেশগুলো সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে তাদের জরুরি মজুত থেকে ৬ কোটি ব্যারেল অবমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে। এরপরও সরবরাহ সংকটের আশঙ্কায় তেল গ্যাসের দাম কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে এখনো বেশি। এর মধ্যে অনেক রিফাইনারি নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ার ভয়ে রাশিয়া থেকে আমদানিতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে। বিশ্ব বাজারের বড় খেলোয়াড়দেরও এই অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে রাশিয়ার বিকল্প কী হতে পারে তা ভেবে কূল পাচ্ছে না।
এতকিছুর পরও শুধু পুতিনকে ঠেকাতে শেষ চেষ্টা হিসেবে রাশিয়ার অর্থনীতিতে বড় আঘাত দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। যেখানে রাশিয়ার বার্ষিক রাজস্বের ৪০ শতাংশের বেশি আসে তেল-গ্যাস রপ্তানি থেকে।
ব্যাপক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাব এবং ইউক্রেনে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার বিষয়ে উদ্বেগের কারণে অনেক সংস্থা এরই মধ্যেই রাশিয়া থেকে কেনাকাটা বন্ধ করে দিয়েছে। গ্যাস বাডি বিশ্লেষক প্যাট্রিক ডি হ্যান সম্প্রতি দ্য নিউইয়র্ক পোস্টকে বলেন, যুদ্ধের পর এমনিতেই সরবরাহে টান পড়েছে। এর মধ্যে নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার তেল রপ্তানির গলাটিপে ধরার মতো অবস্থা হয়েছে।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের প্রতিক্রিয়া স্বরূপ রাশিয়া থেকে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মিত্র ইউরোপীয় দেশগুলোকেও একই পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু ইউরোপ এতে খুব একটা সাড়া হয়নি। বরং তারা রাশিয়ার কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তা ছাড়া মার্কিনদের পারিবারিক ব্যয় কমানোর জন্য বাইডেন সরকারের প্রতিশ্রুতি ও পদক্ষেপ বাস্তবায়ন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ যে জটিল করে তুলবে তাতে সন্দেহ নেই।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন মূলত দ্বিদলীয় চাপের মুখেই রাশিয়ার জ্বালানি খাতের বিরুদ্ধে এমন বিরল পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর আগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নানাভাবে, নানা সময়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও পশ্চিমারা এই খাতটিতে কখনো সেভাবে হাত দেয়নি। ইউক্রেন আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমারা ক্রেমলিনকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করলেও, এটা সত্য এবং এই বাস্তবতা এড়ানো প্রায় অসম্ভব যে, ইউরোপ রাশিয়ার তেলের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।
কিন্তু রাশিয়ার আয়ের উৎস সীমিত করা না গেলে কোনো নিষেধাজ্ঞাই কার্যকর হবে না। এই কথাটি প্রেসিডেন্ট বাইডেনও মানছেন। এ কারণেই অনিচ্ছা সত্ত্বেও এমন পদক্ষেপ তিনি নিয়েছেন। এবং তিনি স্বীকার করেছেন—এর ফলে মার্কিন গাড়িচালকদের জ্বালানির পেছনে আরও বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে। যদিও তিনি ‘স্বাধীনতা রক্ষার জন্য মূল্য দিতে হচ্ছে’ বলে জাতিকে বোঝাতে চেয়েছেন।
অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে রাশিয়ার তেল-গ্যাসের ওপর যুক্তরাষ্ট্র কতটা নির্ভরশীল। সর্বশেষ এই নিষেধাজ্ঞার আগেও রুশ তেল আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও ইউরোপের তুলনায় তাদের নির্ভরশীলতা অনেক কম।
দেশীয় উৎপাদনের অনেক বেশি জ্বালানি তেল খরচ করে যুক্তরাষ্ট্র। এনার্জি ইনফরমেশন এজেন্সির তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র ২০২১ সালে রাশিয়া থেকে প্রতিদিন প্রায় ৬ লাখ ৭২ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল এবং পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানি করেছে। এটি মোট মার্কিন আমদানির প্রায় ৮ শতাংশ। শুধু জ্বালানি তেলের হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের মোট আমদানির ৩ শতাংশ আসে রাশিয়া থেকে, যা দৈনিক প্রায় ২ লাখ ব্যারেল।
যুক্তরাষ্ট্র বেশিরভাগ তেল এবং সংশ্লিষ্ট পণ্য আমদানি করে কানাডা থেকে। কানাডা তাদের প্রতিবেশী দেশটিতে আমদানির ৫১ শতাংশের বেশি সরবরাহ করে। মেক্সিকো এবং সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রে অন্যতম সরবরাহকারী। প্রকৃতপক্ষে লাতিন আমেরিকার ছোট কিছু দেশ এবং পশ্চিম আফ্রিকা যে পরিমাণ তেল যুক্তরাষ্ট্রে সরবরাহ করে তা রাশিয়ার তুলনায় অনেক বেশিই।
এক দশকের মধ্যে ২০২১ সালের মাঝামাঝিতে রাশিয়া থেকে সর্বাধিক পরিমাণ তেল আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই বাণিজ্যে ঊর্ধ্বগতিই দেখা গেছে। যদিও মোট আমদানির তুলনায় রাশিয়ার হিস্যা সব সময়ই অনেক কম ছিল এবং এখনো আছে।
যুক্তরাষ্ট্র উপসাগরীয় উপকূল দিয়ে দৈনিক লাখ লাখ ব্যারেল তেল রপ্তানি করে। এরপরও তাকে রাশিয়ার কাছ থেকে কেন তেল আমদানি করতে হয়? এ প্রশ্নের উত্তরটি সোজা। এক শতাব্দী আগে পাস হওয়া জোনস অ্যাক্ট যুক্তরাষ্ট্রের বন্দর থেকে বন্দরে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল কার্যকর ভাবে সীমিত করেছে। এতে করে পশ্চিম ও পূর্ব উপকূলের ক্রেতাদের উপসাগরীয় উপকূল থেকে তেলের সরবরাহ পেতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই আইন।
গত ডিসেম্বরে উপসাগরীয় উপকূল থেকে তেল কোম্পানিগুলো দৈনিক প্রায় ৩০ লাখ ব্যারেল তেল নিয়েছে। মূলত পাইপলাইনের মাধ্যমে পশ্চিম টেক্সাসের পারমিয়ান বেসিন, নিউ মেক্সিকো এবং ওকলাহোমার কাশিংয়ের সঙ্গে তারা যুক্ত। কাশিং হলো যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম তেল মজুতকেন্দ্র।
পূর্ব ও পশ্চিম উপকূল থেকে এত কম পরিমাণ সরবরাহ দিয়ে ক্রেতাদের পোষায় না। কারণ পরিশোধনাগারগুলো পারমিয়ান এবং কাশিং থেকে যথেষ্ট পাইপলাইন সংযোগ নেই। তারা মূলত আমদানির ওপর নির্ভর করে।
আরেকটি বড় কারণ হলো মার্কিন পরিশোধনাগারগুলোতে বিভিন্ন ধরনের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল প্রয়োজন হয়। উৎপাদন সক্ষমতার চূড়ায় উঠতে বিভিন্ন গ্রেডের উচ্চ সালফারযুক্ত অপরিশোধিত তেলের দরকার পড়ে। এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করতে হয়। কয়েক দশক আগে যুক্তরাষ্ট্রে পরিশোধনাগারগুলোকে ভারী গ্রেডের অপরিশোধিত তেলের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এগুলোতে সাধারণত উচ্চমাত্রায় সালফার থাকে। অভ্যন্তরীণ সরবরাহে যখন ঘাটতি ছিল তখন এসব পরিশোধনাগার তৈরি করা হয়েছিল বলে কনফিগারেশন এমন।
তাছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরান ও ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার ফলে যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে সে স্থান পূরণ করছে রাশিয়া। এখন নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে ইরান ও ভেনেজুয়েলা থেকে তেল আমদানির চেষ্টা করছেন বাইডেন।
রাশিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্র যে তেল আমদানি করে তার প্রায় অর্ধেক যায় পশ্চিম উপকূলে। সেখানে পরিশোধনাগারগুলো বিদেশ থেকে অপরিশোধিত তেল নেয়, কারণ তারা যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম তেলক্ষেত্র পারমিয়ান বেসিনের সঙ্গে পাইপলাইনে যুক্ত নয়। পশ্চিম উপকূলের পরিশোধনাগারগুলোতে রাশিয়ার তেল যায়, যা আসে প্রশান্ত মহাসাগরে দেশের পূর্ব দিকে অবস্থিত কোজমিনো বন্দর থেকে।
রাশিয়া থেকে আমদানির এক চতুর্থাংশ, বা প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার ব্যারেল যায় পূর্ব উপকূলে। সেখানকার রিফাইনারিগুলোও মার্কিন উৎসগুলোর সঙ্গে পাইপলাইনে যুক্ত নয়। অবশিষ্ট এক চতুর্থাংশ যায় উপসাগরীয় উপকূলে।
রাশিয়া থেকে আমদানি বন্ধ হওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে উল্লেখযোগ্য কোনো প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না। কিন্তু একই গ্রেডের তেল পশ্চিম আফ্রিকা বা উত্তর সাগর থেকে আনতে বেশি খরচ পড়বে। মূল খরচই হবে পরিবহনে। উপসাগরীয় উপকূলে যেখানে উচ্চ সালফারযুক্ত রুশ তেল আসে সেখানে মেক্সিকো উপসাগর থেকে আসা তেলে কাজ চালাতে হবে। আর পূর্ব উপকূলের রিফাইনারিগুলোকে ব্যবহার করতে হবে অন্যান্য দেশ থেকে আসা ক্রুড।
এখন রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ হলে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশকে নিঃসন্দেহে মূল্য দিতে হবে। এরই মধ্যে বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহে বড় ধাক্কা লেগেছে। যদিও এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য বড় ভোক্তা দেশগুলো সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে তাদের জরুরি মজুত থেকে ৬ কোটি ব্যারেল অবমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে। এরপরও সরবরাহ সংকটের আশঙ্কায় তেল গ্যাসের দাম কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে এখনো বেশি। এর মধ্যে অনেক রিফাইনারি নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ার ভয়ে রাশিয়া থেকে আমদানিতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে। বিশ্ব বাজারের বড় খেলোয়াড়দেরও এই অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে রাশিয়ার বিকল্প কী হতে পারে তা ভেবে কূল পাচ্ছে না।
এতকিছুর পরও শুধু পুতিনকে ঠেকাতে শেষ চেষ্টা হিসেবে রাশিয়ার অর্থনীতিতে বড় আঘাত দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। যেখানে রাশিয়ার বার্ষিক রাজস্বের ৪০ শতাংশের বেশি আসে তেল-গ্যাস রপ্তানি থেকে।
ব্যাপক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাব এবং ইউক্রেনে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার বিষয়ে উদ্বেগের কারণে অনেক সংস্থা এরই মধ্যেই রাশিয়া থেকে কেনাকাটা বন্ধ করে দিয়েছে। গ্যাস বাডি বিশ্লেষক প্যাট্রিক ডি হ্যান সম্প্রতি দ্য নিউইয়র্ক পোস্টকে বলেন, যুদ্ধের পর এমনিতেই সরবরাহে টান পড়েছে। এর মধ্যে নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার তেল রপ্তানির গলাটিপে ধরার মতো অবস্থা হয়েছে।
ইউক্রেনের ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র সারা বিশ্বে আতঙ্ক সৃষ্টি করলেও, রাশিয়ার এ ধরনের আক্রমণকে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে মেনে নেওয়া হয়েছে—যেমনটি ইসরায়েল উত্তর গাজাকে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে হয়েছে।
২ দিন আগেট্রাম্প ফিরে আসায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতিতে দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষেত্রে বাইডেন প্রশাসনের ধারাবাহিকতাই বজায় থাকতে পারে, সামান্য কিছু পরিবর্তন নিয়ে। ট্রাম্পের নতুন মেয়াদে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান পেছনের সারিতে থাকলেও বাংলাদেশ,
২ দিন আগেড. ইউনূস যখন অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন পুরো জাতি তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিল। তবে তাঁকে পরিষ্কারভাবে এই পরিকল্পনা প্রকাশ করতে হবে যে, তিনি কীভাবে দেশ শাসন করবেন এবং ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।
৩ দিন আগেসম্প্রতি দুই বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন ডলারনির্ভর বন্ড বিক্রি করেছে চীন। গত তিন বছরের মধ্যে এবারই প্রথম দেশটি এমন উদ্যোগ নিয়েছে। ঘটনাটি বিশ্লেষকদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাঁরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি বার্তা দিয়েছে চীন।
৪ দিন আগে